মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সুতরাং তোমাকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা ব্যাপকভাবে প্রচার কর এবং মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। নিশ্চয় আমি তোমার জন্য উপহাসকারীদের বিপক্ষে যথেষ্ট। যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ নির্ধারণ করে। অতএব তারা অচিরেই জানতে পারবে। (হিজর : ৯৪-৯৬)
এই নির্দেশ পেয়েই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার লোকদের সম্মুখে তাঁর শিরক পরিহার ও তাওহীদী আকীদা গ্রহণের দাওয়াত প্রকাশ্যভাবে পেশ করার উদ্দেশ্যে সাফা পর্বতের শীর্ষে দাঁড়িয়ে মক্কাবাসীকে সমবেত হওয়ার জন্য আহবান জানালেন। লোকেরা দ্রুত ঘর থেকে বাইরে এসে উপরের দিকে তাকিয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পেয়ে এ আহবানের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারল। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জিজ্ঞাসার জবাবে তারা এক বাক্যে বললঃ আমরা এ পর্যন্ত তোমাকে সত্যবাদী পেয়েছি তুমি মিথ্যা বলনা, কাউকে ধোঁকা দাওনা। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্বতের শিখরে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি পর্বতের উভয় দিকই সমানভাবে দেখছিলেন। ভেতরে জনবসতির দিক এবং বাইরের উন্মুক্ত দিক একই সাথে গোচরীভুত ছিল। কিন্তু পর্বতের পাদদেশের সমবেত জনতা কিছুটা ভেতরের দিকে থাকায় বাইরের দিক ছিল তাদের চোখের আড়ালে তারা মাত্র একটি দিকই দেখতে পাচ্ছিল। মূলত জ্ঞান ও অবহতির দিক থেকে জনসাধারণ ও তাঁর মধ্যে এটাই ছিল পার্থক্যের মৌল বিন্দু। সাধারণ মানুষ শুধু হইকাল ও ইহজীবন্ত বস্তুগত দিকটিই দেখতে পায়, তাদের নিজস্ব জ্ঞান শুধু এই বস্তুজগতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহকাল-ইহজীবন তথা বস্তুজগত সম্পর্কিত জ্ঞান ও অবহতির সঙ্গে সঙ্গে পরকালীন জীবন তথা আত্মিক ও আধ্যাত্মিক জীবন সম্পর্কিত জ্ঞানেরও অধিকারী ছিলেন।
তিনি নিজের সত্যতা ও সত্যবাদিতার সাধারণ স্বীকৃতি আদায় করে বললেনঃ
বল, আমি তো তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছিঃ তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুজন অথবা এক একজন করে দাঁড়িয়ে যাও, অতপর চিন্তা করে দেখ তোমাদের সাথীর মধ্যে কোন পাগলামী নেই। সেতো আসন্ন কঠোর আযাব সম্পর্কে তোমাদের একজন সতর্ককারী বৈ কিছু নয়। বল, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনি, বরং তা তোমাদেরই। আমার প্রতিদান তো কেবল আল্লাহর নিকট এবং তিনি সবকিছুর উপরই স্বাক্ষী। (সাবা : ৪৬-৪৭)
এই প্রকাশ্য দাওয়াত শুরু হওয়ার পর প্রথমে ঠাট্টা-বিদ্রুপ-উপহাস এবং পরে মারাত্মক শুত্রুতা শুরু হয়ে যায়। এই সময় খোদ রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং তাঁর এই বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত দুর্বল স্তরের মুমিনগণের উপর জুলুম, নির্যাতন ও নিপীড়নের পাহাড় ভেঙ্গে পড়ে তিনি আল্লাহর নির্দেশ এবং তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে সবকিছুই নীরবে সহ্য করেছিলেন। দুর্বল স্তরের মুমিনগণ অত্যাচার-নিপীড়নে অতীষ্ঠ হয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে ফরিয়াদ করতেন ইয়া রাসূলুল্লাহ! আর তো সহ্য করতে পারছি না। অনেকে বলতেন, আপনি অনুমতি দিন আমরা এর মুকাবিলায় ওদেরই মত অস্ত্র ব্যবহার করি। অস্ত্র আমাদেরও আছে আর আমরাও তাঁর ব্যবহার করতে জানি। এসময় মক্কী সমাজের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে কিছু সংখ্যক মুসলমান হাবশায় (প্রাচীন আবিসিনিয়া বা বর্তমান ইথিওপিয়া) হিজরত করে যায়।
কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে বিরুদ্ধ পক্ষকে প্রতিরোধ করার অনুমতি দেননি। তিনি তাদেরকে শুধুই সবর অবলম্বন করে অবিচল হয়ে থাকার উপদেশ দিতেন। তার দুটি কারণ সুস্পষ্ট। প্রথম, তখন পর্যন- আল্লাহর নিকট থেকে অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া যায়নি দ্বিতীয়, যে সামাজিক বিপ্লব রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর লক্ষ্য, তাতে প্রথম পর্যায় হচ্ছে প্রশিক্ষণমূলক, উদ্দেশ্য এমন ব্যক্তিদের গড়ে তোলা যাঁরা সত্য দীনের প্রতিষ্ঠায় হবেন অবিচল নির্ভরযোগ্য। বৈষয়িক স্বার্থ বা শত্রুদের নিপীড়ন কোন কিছুই তাদেরকে দীনের মহান আদর্শ থেকে বিরত বা বিচ্যুত করতে পারবেনা। আগুনে পোড়া স্বর্ণের খাটিত্ব যেমন নিঃসন্দেহে বিশ্বাসযোগ্য, কাঁচা মাটি নির্মিত ইট আগুনে জ্বালিয়ে পরিপক্ক করে তা দিয়ে যেমন পাকা দালান নির্মাণ করা হয় এ-ও ঠিক তেমনি। বস্তুত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামাজিক বিপ্লবের কার্যক্রমের স্বরূপ ছিল নির্ভীক বিপ্লবী ও আদর্শবাদী কর্মী বাহিনী ও অনমনীয় নেতা সৃষ্টির মাধ্যমে দীনি ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা সাধন নিছক নেতৃত্ব ও ক্ষমতার হাত বদল নয়। আদর্শতো বিমূর্ত (Abstract) ভাবমূলক নির্বস্তুক। তাকে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠার জন্য সেই ভাবধারার নির্ভরযোগ্য ধারক বাহক মানুষের প্রয়োজন।
আর সে মানুষ এরূপ একটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষার পর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করিয়ে নেয়ার মাধ্যমেই তৈরী করা যেতে পারে। ইতিহাস একাট্যভাবে সাক্ষ্য দেয়, প্রাথমিক পর্যায়ে ঈমান গ্রহণকারী ব্যক্তিরা বাস্তবতার অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসার (রা) তাঁর পিতা ও মাতা, হাবশী গোলাম হযরত বিলাল (রা), হযরত খাব্বাব ইবনুল আরাত, বনু মুমিনের ক্রীতদাসী লবীনা প্রমুখ প্রথম পর্যায়ের সাহাবীগণ এই অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তাঁদের কেউ শাহাদাত বরণ করনে, আবার কেউ সব সয়েও বেঁচে ছিলেন। এই সময়েই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সমর্থনকারী বংশের অন্যান্য লোকেরা দীর্ঘ তিনটি বছর পর্যন্ত মক্কার কুরাইশগণ কর্তৃক সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়ে একটি গিরি গুহায় অবরুদ্ধ থাকতে বাধ্য হন। এ সময়ে তাঁদের সাথে কেউ কোন সম্পর্ক রাখত না এবং কোন দ্রব্যও বিক্রয় করত না। তাঁর চাচা আবু তালেব তাঁকে মুশরিকদের সকল শত্রুতা থেকে আশ্রয় দিতেন। একদিন চাচা বললেনঃ ভাতিজা, ওদেরকে থামাতে পারছিনা। তোমার কাজ বন্ধ করলে ওরা তোমার নেতৃত্ব মেনে নেবে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওরা যদি আমার এক হাতে সূর্য এবং অপর হাতে চাঁদও তুলে দেয়, তবুও আমি আমার কাজ করতেই থাকব। তাতে আল্লাহ এ কাজে জয়ী করবেন কিংবা আমি ধ্বংস হয়ে যাই তার পরোয়া নেই।
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনের এক পর্যায়ে তাঁর সম্মুখে প্রলোভনের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়। কুরাইশ সরদার উতবা ইবনে রবীয়াকে পাঠিয়ে তাঁর নিকট প্রস্তাব পেশ করা হয়ঃ তোমার এ কাজের লক্ষ্য যদি হয় ধন-মাল সংগ্রহ, তাহলে বল আমরা তোমাকে এত বেশী ধন-সম্পদ দেব যে, তুমি আমাদের সকলের তুলনায় সেরা ধনী ব্যক্তি হয়ে যাবে। যদি তুমি মান-মর্যাদা লাভের ইচ্ছুক হয়ে থাক, তাহলে আমারা তোমাকে আমাদের সর্বোচ্চ নেতা বানিয়ে নেব। তোমার সিদ্ধান্ত আমরা সকলেই মেনে নেব। আর যদি তুমি বাদশাহ হতে চাও, তাহলে তোমাকে আমাদের বাদশাহ বানিয়ে নেব। আর যদি তোমাকে জ্বিন-পরীতে পেয়েছে মনে কর তাহলে বড় বড় চিকিৎসক দ্বারা তোমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব কথা চুপ করে শোনার পর সূরা ফুস্সিলাত(হা-মীমআস্ সিজদা) এর প্রথম থেকে ৩৮ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করেন। এই আয়াতসমূহে কুরআন আল্লাহর নাযিল করা কিতাব হওয়ার, রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা হওয়ার, তিনি একজন সাধারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর নিকট আল্লাহর ওহী আসার, যারা এই কালাম শোনে না, এর প্রতি ঈমান আনেনা তাদের মর্মান্তিক পরিণতি হওয়ার, যারা ঈমান এনেছে তাদের অপরিসীম শুভ ফল পাওয়ার, এই আসমান-জমিন মহান আল্লাহর সৃষ্টি হওয়ার, অতীতের যেসব জনগোষ্ঠী আল্লাহর নবীর দাওয়াত কবুল করেনি, তাদের উপর এই দুনিয়ায়ই কঠিন আযাব আসার, ঈমানদার লোকদের প্রতি সাহায্যকারী হিসাবে ফেরেশতা নাযিল হওয়ার, সমগ্র বিশ্বলোকের উপর একমাত্র আল্লাহর কর্তৃত্ব হওয়ার এবং কেবল তাঁরই বন্দেগী করার আহবান সম্বলিত নানা কথা রয়েছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের প্রলোভনকে প্রত্যাখ্যান করলেন।
তার যদি ধন-সম্পদের লিপ্সা থাকত, শুধু ক্ষমতা লাভই তাঁর ইচ্ছা হত, ক্ষমতায় আসীন হতে পারলেই তাঁর নিয়ে আসা বিধান বাস্তবায়িত করা সহজ ও সম্ভব হবে বলে যদি মনে করতেন তাহলে তিনি এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতেন না। কিন্তু তা গ্রহণ করলে আর যা-ই হোক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হতনা। তাঁর রাসূল হওয়াই ব্যর্থ হয়ে যেত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাওয়াতের সার কথা ছিলঃ
সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, এবং আমার আনুগত্য কর। (সূরা শুআরাঃ ১০৮)
অন্যকথায়, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তাঁর অনুসরণ ও অনুকরন কর। অর্থাৎ যে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব সমগ্র বিশ্ব জগতে সদা কার্যকর মানুষ সেই আল্লাহকে বিশ্বাস ও ভয় করে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে পাওয়া জীবন বিধান অনুযায়ী আপন জীবন ও সমাজ গঠন করবে এটাই ছিল তাঁর সামাজিক বিপ্লবের মূল চাবিকাঠি। কেননা মানুষ যতদিন পর্যন্ত এক আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নেবেনা ততদিন মানবীয় সমাজের ভিত্তিই রচিত হতে পারে না। ততদিন মানবীয় সার্বভৌমত্বই প্রবল ও প্রধান হয়ে থাকবে। মানুষ থাকবে মানুষের গোলাম হয়ে। আর তা-ই হচ্ছে মানবীয় সমাজের বিপর্যয়ের মৌল কারণ। আল্লাহকে ভয় করে রাসূলের নেতৃত্ব মেনে না নেয়া পর্যন্ত মানুষ কাফির-ফাসিক ও চরিত্রহীন লোকদের নেতৃত্ব মেনে চলতে বাধ্য হবে, আর তা-ই হচ্ছে সমস্ত অকল্যাণের মৌল কারণ। মুসলিম তথা ইসলামী সমাজের নাগরিক হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে তাই সর্বপ্রথম অন্য সব কিছুর প্রভুত্ব ও সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে এক আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং অন্য সকলের নেতৃত্ব অস্বীকার করে এক রাসূলের নেতৃত্ব মেনে নিতে হয় তাকে অকৃত্রিম বিশ্বাস সহকারে ঘোষণা করতে হয়।
বস্তুত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই বিপ্লবী দাওয়াতই হচ্ছে তাঁর সামাজিক বিপ্লবের মূল প্রকৃতি। যে অবস্থায় সমাজ রয়েছে তাকে আমূল পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে এই বিপ্লবী দাওয়াত। তাঁর এ দাওয়াত প্রতিষ্ঠিত সমাজকে প্রচন্ডভাবে নাড়া দিয়েছে তার অন্তঃসার শূন্যতাকে লোক সম্মুখে তুলে ধরেছে এবং নতুন সমাজ গঠনের পথ উন্মুক্ত করেছে। এভাবে সর্বদিক দিয়ে নতুন সমাজ গঠনের তাগিত প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে। পুরোনো সমাজকে চুরমার করে নতুন সমাজ নির্মাণের এই তাগিদই হচ্ছে সমাজ বিপ্লবের মৌল প্রেরণা। তাওহীদী দাওয়াতের এই প্রাথমিক পর্যায়ের কার্যক্রমের ফলে মক্কা এবং তার আশেপাশের বিভিন্ন গোত্রের বহু সংখ্যক লোকের পক্ষে ইসলাম গ্রহণ সম্ভবপর হয়।
ওদিকে হজ্জ্বের মৌসুমে বাইরের গোত্রসমূহের লোকদের পক্ষেও এই তাওহীদী দাওয়াত কবুল করার সুযোগ ঘটে। সর্বোপরি মদীনার আওস ও খাজরাজ গোত্রের লোকেরা হজ্জ্বের মৌসুমে মক্কায় এসে এ দাওয়াতের সাথে পরিচিত হয় এবং তাদের পরামর্শে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সুশিক্ষিত সাহাবী পাঠিয়ে মদীনার ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন। ফলে মক্কা ও মদীনা তদানীন্তন আরব উপদ্বীপ এর দুই প্রধান জনবসতিতে দীন ইসলামের বীজ অংকুরিত হয়ে একটি একক বৃক্ষের রূপ পরিগ্রহ করে। এই বৃক্ষের বিলষ্ঠতা বিধান, তার ছায়া বিস্তার ও সেই ছায়ার তলে নির্যাতিত-নিষ্পেষিত-বঞ্চিত মানবতাকে আশ্রয় দান এবং সেই সাথে তার সুমিষ্ট ফল দুনিয়ার দিকে দিকে ছড়িয়ে থাকা মজলুম ও বঞ্চিত মানবতার নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান সার্বভৌম আল্লাহরই নির্দেশক্রমে তাঁর আবাসস্থল পরিবর্তন করেন। তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় উপনীত হন। অতঃপর তাঁর মদীনা কেন্দ্রিক জীবনে ইসলাম মতাদর্শের পর্যায় থেকে বাস্তব পর্যায়ে উন্নীত হয়, যে তাওহীদী আদর্শ তিনি সুদীর্ঘ তেরটি বছর পর্যন্ত মুখে প্রচার করেছেন যার আলোকে লোকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন মদীনায় তারই ভিত্তিতে তিনি একটি বাস্তব সমাজ গঠনের কার্যক্রম শুরু করে দেন। ইতিহাসে এই স্থান বদলকেই হিজরত বলা হয়েছে। ইসলামী সমাজ বিপ্লবে হিজরত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হিজরতের কিছুদিন পূর্বেই আল্লাহ তাআলা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর একান্ত নিজস্ব এলাকায় নিয়ে যান, দেখিয়ে দেন ভূ-মন্ডল ও নভোমন্ডলের অন্তরালে নিহিত বিশাল অদৃশ্যলোক সেখান থেকে ফিরে আসার পর পরই সূরা আল-ইসরার (বনী ইসরাইলের) ২৩ থেকে ৩৯ আয়াতে ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের ১৪টি মৌলনীতি তাঁকে জানিয়ে দেয়া হয়। এরই ভিত্তিতে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় ইসলামী সমাজ কার্যত গঠন ও পরিচালনা করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/427/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।