hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

১০
(খ) মুরাকাবা (المراقبة ):
আর ‘মুরাকাবা’ হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তি কর্তৃক তার ‘নাফস’কে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা’র পর্যবেক্ষণে নিয়ে যাওয়া এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তাকে সেভাবে নিয়োজিত রাখা, এমনকি তার ব্যাপারে পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা অর্জিত হওয়া এমনভাবে যে, আল্লাহ তা‘আলা তার ব্যাপারে পূর্ণ অবগত, তিনি তার গোপন বিষয়সমূহ জানেন, তার কর্মকাণ্ডসমূহ পর্যবেক্ষণ করেন, তাকে তত্ত্ববধান করেন এবং প্রত্যেকটি ‘নাফস’ যা অর্জন করে তিনি তা নিবিড়ভাবে দেখাশুনা করেন; আর এর দ্বারা তার আত্মা পুরাপুরিভাবে আল্লাহ তা‘আলার পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে যাবে, তাঁর স্মরণে সে আনন্দ অনুভব করবে, তাঁর আনুগত্য করতে মজা পাবে, তাঁর সান্নিধ্য পেতে উৎসাহিতবোধ করবে, তাঁর দিকে এগিয়ে যাবে এবং তিনি ভিন্ন অন্যকে পরিহার করবে।

আর এটাই হলো আল্লাহ তা‘আলার বাণীতে উল্লেখিত নিজেকে আল্লাহর নিকট সমর্পণ করার অর্থ; তিনি বলেন:

﴿ وَمَنۡ أَحۡسَنُ دِينٗا مِّمَّنۡ أَسۡلَمَ وَجۡهَهُۥ لِلَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنٞ ﴾ [ النساء : ١٢٥ ]

“তার চেয়ে দ্বীনে আর কে উত্তম যে সৎকর্মপরায়ণ হয়ে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৫] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ ۞وَمَن يُسۡلِمۡ وَجۡهَهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنٞ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰۗ ﴾ [ لقمان : ٢٢ ]

“আর যে সৎকর্মপরায়ণ হয়ে নিজেকে আল্লাহ কাছে সমর্পণ করে, সে তো দৃঢ়ভাবে ধরলো এক মজবুত হাতল।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ২২] আর এটাই হলো ‘মুরাকাবা’-এর আসল বিষয়, যে দিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীর মধ্যে আহ্বান করেছেন, তিনি বলেন:

﴿ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِيٓ أَنفُسِكُمۡ فَٱحۡذَرُوهُۚ ﴾ [ البقرة : ٢٣٥ ]

“আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের অন্তরে যা আছে তা জানেন। কাজেই তাঁকে ভয় কর।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩৫] তিনি আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١ ﴾ [ النساء : ١ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَا تَكُونُ فِي شَأۡنٖ وَمَا تَتۡلُواْ مِنۡهُ مِن قُرۡءَانٖ وَلَا تَعۡمَلُونَ مِنۡ عَمَلٍ إِلَّا كُنَّا عَلَيۡكُمۡ شُهُودًا إِذۡ تُفِيضُونَ فِيهِۚ ﴾ [ يونس : ٦١ ]

“আর আপনি যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন এবং আপনি সে সম্পর্কে কুরআন থেকে যা-ই তিলাওয়াত করেন এবং তোমরা যে আমলই কর না কেন, আমরা তোমাদের সাক্ষী থাকি-- যখন তোমরা তাতে প্রবৃত্ত হও।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬১] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ » . ( متفق عليه ).

“তুমি আল্লাহ তা‘আলার ‘ইবাদত করবে এমনভাবে, মনে হয় যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ; আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে মনে রাখবে তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন।” [বুখারী ও মুসলিম।]

আর এটা এমন এক বিষয়, যাতে অভ্যস্ত হয়েছেন এ উম্মতের প্রথম দিকের সৎকর্মশীল বিশেষ ব্যক্তিবর্গ, যাঁরা এ বিষয়টিকে নিজেদের জীবনের ব্রত (লক্ষ্য) হিসেবে গ্রহণ করেছেন, এমনকি তাঁদের পূর্ণ একীন বা আস্থা অর্জিত হয়েছে এবং তাঁরা আল্লহর নিকটতম বান্দাদের মর্যাদায় উপনীত হয়েছেন; আর এখানে তাঁদের কিছু বিবরণ তুলে ধরা হলো, যা তাঁদের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে:

১. জুনাইদ রহ. কে জিজ্ঞাস করা হলো: দৃষ্টিকে অবনমিত রাখার জন্য কিসের সাহায্য নেয়া যেতে পারে? জবাবে তিনি বললেন: তোমার এ জ্ঞান দ্বারাই তা সম্ভব হবে যে, কোনো বস্তুর দিকে তোমার নজর যওয়ার চেয়ে তোমার দিকে দর্শক আল্লাহর নজর বা দৃষ্টি অনেক বেশি দ্রুতগামী। [উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১১৯]

২. সুফিয়ান সাওরী রহ. বলেন: তোমার উচিৎ হবে এমন সত্তাকে ভয় করা, যাঁর কাছে তোমার কোনো কিছুই গোপন থাকে না; তোমার কর্তব্য হলো এমন সত্তার নিকট কোনো কিছুর আশা করা, যিনি তা পুরণ করার ক্ষমতা রাখেন এবং তোমার উচিৎ হবে এমন এক সত্তার ব্যাপারে সাবধান হওয়া, যিনি শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। [প্রাগুক্ত]

৩. আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহ. জনৈক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বললেন: হে অমুক! তুমি আল্লাহকে ভয় কর; তখন লোকটি তাঁকে ‘মুরাকাবা’ তথা আল্লার ভয় সম্পকে জিজ্ঞাসা করলেন; জবাবে তিনি তাকে বললেন: তুমি সব সময় এমনভাবে জীবনযাপন করবে, মনে হয় যেন তুমি আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাচ্ছো। [প্রাগুক্ত]

৪. আবদুল্লাহ ইবন দিনার বলেন: আমি ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলাম এবং পথিমধ্যে আমরা বিশ্রামের জন্য অবস্থান করলাম, অতঃপর পাহাড় থেকে এক রাখাল আমাদের নিকট নেমে আসল; অতঃপর ওমর রা. তাকে লক্ষ্য করে বললেন: হে রাখাল! এ ছাগলের পাল থেকে একটি ছাগল আমাদের কাছে বিক্রি কর; তখন রাখাল বলল যে, সে গোলাম মাত্র (ছাগলের মালিক নয়); তারপর ওমর রা. তাকে বলল: তুমি তোমার মালিককে বলবে ছাগলটি বাঘে খেয়েছে; তখন গোলাম বলল: আল্লাহ কোথায় থাকবেন? এ কথা শুনে ওমর রা. কেঁদে ফেললেন এবং পরের দিন রাখালটির মালিকের নিকট গেলেন এবং তার কাছ থেকে তাকে (গোলামটিকে) ক্রয় করে নিয়ে মুক্ত করে দিলেন। [প্রাগুক্ত, পৃ. ১২০]

৫. কোনো এক সৎব্যক্তি থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদল লোকের নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করেন, যারা মল্লযুদ্ধ বা তীর নিক্ষেপের প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত, আর একজন তাদের থেকে দূরে বসে তা উপভোগ করছে; তারপর তিনি তার সাথে কথা বলার উদ্দেশ্যে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং তাকে বললেন: আমি (তোমার কাছে) আল্লাহর স্মরণ প্রত্যাশা করি; তখন সে বলল: তুমি কি একা? জবাবে তিনি বললেন: আমার সাথে আমার রব এবং আমার দুই ফেরেশ্তা আছেন; এবার তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: এদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি সবচেয়ে অগ্রগামী? জবাবে সে বলল: যাকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিয়েছেন; এবার সে তাকে জিজ্ঞাসা করল: রাস্তা কোথায়, অর্থাৎ কোথায় যাবেন? জবাবে তিনি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন এবং হাঁটতে শুরু করলেন। [প্রাগুক্ত]

৬. বর্ণিত আছে যে, যুলায়খা যখন ইউসূফ আ. কে নির্জনে একাকী পেল, তখন দাঁড়িয়ে গেল এবং তার (ঘরে সংরক্ষিত) মূর্তির চেহারা ঢেকে দিল; তারপর ইউসূফ আ. বললেন: তোমার কী হয়েছে? তুমি কি একটি নিষ্প্রাণ জড়পদার্থের দেখে ফেলবে বলে লজ্জা পাচ্ছো? তাহলে আমি কি মহাপরাক্রমশালী বাদশার পর্যবেক্ষণ বা পরিদর্শনকে লজ্জা পাবো না? [প্রাগুক্ত]

আবার কেউ কেই আবৃত্তি করেন:

إِذَا مَا خَلَوْتَ الدَّهْرَ يَوْمًا فَلا تَقُلْ خَلَوْتُ وَلَكِنْ قُلْ : عَلَيَّ رَقِيبُ

(যখনই তুমি একদিন সময় অতিবাহিত করবে, তখন তুমি বলবে না

আমি সময় অতিবাহিত করে ফেললাম, বরং তুমি বল: আমার উপর রয়েছেন এক পর্যবেক্ষ- প্রহরী)।

وَ لا تَحْسَبَنَّ اللهَ يَغْفَلُ سَاعَةً وَ لا أَنَّ مَا تُخْفي عَلَيْهِ يَغِيبُ

(আর তুমি আল্লাহকে এক মুহূর্তের জন্যও গাফেল বা অসতর্ক মনে করো না,

আর তুমি তাঁর কাছ থেকে যা কিছুই গোপন করবে, তাঁর কাছে তা গোপনও থাকবে না)।

ألم تر أن اليومَ أسرعُ ذاهبٍ و أن غداً للناظرين قريبُ

(তুমি কি দেখতে পাচ্ছ না যে, আজকের দিনটি কত দ্রুত চলে যাচ্ছে,

আর আগামী দিনটি দর্শকদের জন্য খুবই নিকটবর্তী) ? [প্রাগুক্ত]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন