মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
পঞ্চম অধ্যায়: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মুমিন বান্দার আদব
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/537/7
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে পরিপূর্ণ আদব রক্ষা করার আবশ্যকতার বিষয়টি মুসলিম ব্যক্তি তার মনে প্রাণে অনুভব করে; আর এ আবশ্যকতার ব্যাপারটি নিম্নোক্ত কারণে:
১. আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মুমিন পুরুষ ও নারীর উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে পরিপূর্ণ আদব রক্ষা করে চলার বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর নিজেদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল, তার সাথে সেরূপ উচ্চস্বরে কথা বলো না; এ আশঙ্কায় যে, তোমাদের সকল কাজ বিনষ্ট হয়ে যাবে, অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।” [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ২] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
“নিশ্চয় যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরীক্ষা করে নিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।” [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ৩] আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরও বলেন:
“নিশ্চয় যারা হুজরাসমূহের পিছন থেকে আপনাকে উচ্চস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই বুঝে না। আর আপনি বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করত, তবে তা-ই তাদের জন্য উত্তম হত।” [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ৪ - ৫] তিনি আরও বলেন:
“মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তারা অনুমতি ছাড়া সরে পড়ে না।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬২] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
“নিশ্চয় যারা আপনার অনুমতি প্রার্থনা করে, তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান রাখে। অতএব তারা তাদের কোনো কাজের জন্য আপনার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছে আপনি অনুমতি দেবেন।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬২] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন রাসূলের সাথে চুপি চুপি কথা বলতে চাও, তখন তোমাদের এরূপ কথার পূর্বে কিছু সাদাকাহ্ পেশ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় ও পরিশোধক; কিন্তু যদি তোমরা অক্ষম হও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-মুজাদালা, আয়াত: ১২]
২. আল্লাহ তা‘আলা মুমিনগণের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করার বিষয়টিকে ফরয করে দিয়েছেন, ঠিক তেমনিভাবে তাঁকে মহব্বত করার বিষয়টিকেও তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“কাজেই যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬৩] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
“আমরা তো আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছি, যাতে আপনি আল্লাহ আপনাকে যা জানিয়েছেন, সে অনুযায়ী মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা করতে পারেন।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৫] তিনি আরও বলেন:
“আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, আপনি সে অনুযায়ী বিচার নিষ্পত্তি করুন এবং আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না।” [সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৪৯] তিনি আরও বলেন:
“কিন্তু না, আপনার রবের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচারের ভার আপনার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫] তিনি আরও বলেন:
“অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ, তার জন্য যে আশা রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের।” [সূরা, আল-আহযাব, আয়াত: ২১]
আর ইমাম ও বিচারকের সাথে ভদ্রতা ও সভ্যতা বজায় রেখে চলার বিষয়টিকে শরী‘য়তের বিধিবিধানসমূহ ফরয করে দিয়েছে, বিবেক-বুদ্ধি তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সঠিক যুক্তি তাকে মেনে নিয়েছে।
৪. আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে মহব্বত করার বিষয়টিকে তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের) ভাষায় ফরয করে দিয়েছেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“সেই সত্তার কসম করে বলছি, যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার সন্তান-সন্ততি, তার পিতামাতা ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হব।” [বুখারী, হাদিস নং- ১৪ ও ১৫; মুসলিম, হাদিস নং- ১৭৮] আর যাঁকে ভালোবাসা আবশ্যক, তাঁর সাথে আদব রক্ষা করে চলাটাও বাধ্যতামূলক এবং তাঁর সাথে সভ্য আচরণ করা বাঞ্ছনীয়।
৫. যাঁকে তাঁর রব আল্লাহ তা‘আলা শারীরিক গঠনাকৃতি ও নৈতিক চরিত্রের সৌন্দর্যের দ্বারা বিশেষিত করেছেনে এবং যাঁকে আত্মসম্মান ও বৈশিষ্ট্যের পূর্ণতা দান করেছেন, তিনি হলেন সবচেয়ে সুন্দর ও শ্রেষ্ঠতর সৃষ্টি; সুতরাং যাঁর এ অবস্থা, তাঁর সাথে ভদ্র ও সভ্য আচরণ করার বিষয়টি আবশ্যক হবে না কিভাবে!
এসব হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আদব রক্ষা করে চলার কিছু জরুরি বিষয় এবং এগুলো ছাড়া আরও অনেক বিষয় রয়েছে; কিন্তু কিভাবে আদব রক্ষা করা যাবে? আর কিসের দ্বারা সে আদব রক্ষা করা সম্ভব হবে? এ বিষয়টি ভালভাবে জানতে হবে!
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আদব হবে:
১. দীন ও দুনিয়ার সকল নিয়মনীতি ও কর্মপদ্ধতিতে তাঁর আনুগত্য করা, পদাঙ্ক অনুসরণ করা এবং তাঁর পদক্ষেপ অনুযায়ী পরিকল্পনা করা।
২. তাঁর প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও মর্যাদার উপর অপর কোনো সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা, অথবা সম্মান, বা মর্যাদাকে অগ্রাধিকার না দেওয়া।
৩. তিনি যাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতেন, তাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করা; তিনি যাকে শত্রু বলে গ্রহণ করতেন, তাকে শত্রুরূপে গ্রহণ করা; তিনি যাতে সন্তুষ্ট থাকতেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকা; আর তিনি যার প্রতি রাগান্বিত হতেন, তার প্রতি রাগ করা।
৪. তাঁর নামকে সম্মান করা এবং তাঁর নাম উচ্চারণের সময় শ্রদ্ধা করা; তাঁর প্রতি সালাত (দুরূদ) ও সালাম পেশ করা; তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা এবং তাঁর মহৎ গুণাবলী ও মর্যাদাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা।
৫. দীন ও দুনিয়ার বিষয়ে তিনি যেসব সংবাদ দিয়েছেন এবং দুনিয়ার জীবন ও আখিরাতের ব্যাপারে গায়েবী বিষয়ে যেসব তথ্য দিয়েছেন, সেসব ব্যাপারে তাঁকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করা।
৬. তাঁর সুন্নাতকে জীবিত করা এবং তাঁর শরী‘য়তকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা; আর তাঁর দা‘ওয়াতকে পৌঁছিয়ে দেওয়া এবং তাঁর অসীয়ত তথা নির্দেশসমূহ বাস্তবায়ন করা ।
৭. আল্লাহ তা‘আলা যাকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর ও মাসজিদে নববী যিয়ারত করার মত সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছেন, তাঁর কবরের নিকট এবং মাসজিদে নববীতে তার কণ্ঠস্বরকে নিম্নগামী করা।
৮. তাঁর ভালোবাসার কারণে সৎব্যক্তিগণকে ভালোবাসা ও বন্ধরূপে গ্রহণ করা; আর তাঁর ঘৃণার কারণে ফাসীকদেরকে ঘৃণা করা এবং তাদের সাথে শত্রুতা করা।
এগুলো হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আদব তথা শিষ্টাচারপূর্ণ ব্যবহারের কিছু বাহ্যিক চিত্র।
সুতরাং মুসলিম ব্যক্তি সেসব আদব পরিপূর্ণভাবে পালন ও সংরক্ষণের ব্যাপারে সব সময় সচেষ্ট থাকবে; কেননা, এর উপর তার জীবনের পরিপূর্ণতা ও সফলতা নির্ভর করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার নিকট আমাদের নিবেদন, তিনি যেন আমাদেরকে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আদব রক্ষা করে চলার তাওফীক দান করেন এবং আমাদেরকে তাঁর অনুসারী, সাহায্যকারী (আনসার) ও তাঁর অনুকরণকারীদের মাঝে আন্তর্ভুক্ত করে নেন; আর তিনি যেন আমাদেরকে তাঁর আনুগত্য করার সুযোগ করে দেন এবং আমাদেরকে তাঁর শাফা‘আত (সুপারিশ করা) থেকে বঞ্চিত না করেন। ‘আল্লাহুম্মা আমীন’ (হে আল্লাহ! আপনি আমাদের আবেদন কবুল করুন)। [উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১১৪ - ১১৫]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/537/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।