hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

১৭
প্রথমত: স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার:
স্বামীর উপর ওয়াজিব হলো তার স্ত্রীর সাথে নিম্নোক্ত আদবসমূহ রক্ষা করে চলা:

১. তার সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করা; কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ ﴾ [ النساء : ١٩ ]

“আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন কর।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৯] সুতরাং সে যখন খাবে, তখন সে তাকেও খাওয়াবে এবং যখন সে পোশাক পরিধান করবে, তখন তাকেও পোশাক পরিধান করাবে; আর যখন সে তার স্ত্রীর অবাধ্যতার আশঙ্কা করবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে নারীদেরকে আদব শিক্ষা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে তাকে আদব শিক্ষা দিবে; অর্থাৎ তাকে উপদেশ দিবে কোনো প্রকার গালিগালাজ ও মন্দ কথা না বলে, তারপর সে যদি অনুগত হয়ে যায়, তাহলে তো ভালো, নতুবা তার বিছানা আলাদা করে দিবে; অতঃপর সে যদি অনুগত হয়ে যায়, তাহলে তো ভালো কথা, নতুবা তাকে প্রহার করবে চেহারা ব্যতীত অন্য যে কোনো স্থানে, তবে প্রচণ্ডভাবে প্রহার করবে না, রক্তাক্ত করবে না, আহত করবে না, অথবা কোনো অঙ্গকে বিকলাঙ্গ বা নষ্ট করবে না; কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱلَّٰتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِي ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَيۡهِنَّ سَبِيلًاۗ ﴾ [ النساء : ٣٤ ]

“আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর, তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অন্বেষণ করো না।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৪] তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কোনো এক সাহাবী প্রশ্ন করলেন: আমাদের কারও উপর তার স্ত্রীর কী অধিকার রয়েছে? তখন তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:

« أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ ، وَلاَ تَضْرِبِ الْوَجْهَ ، وَلاَ تُقَبِّحْ وَلاَ تَهْجُرْ إِلاَّ فِى الْبَيْتِ » . ( رواه أَبُو دَاوُدَ ).

“যখন তুমি খাবে, তখন তাকেও খাওয়াবে; যখন তুমি পোশাক পরিধান করবে, তখন তাকেও পোশাক পরিধান করাবে; তার মুখমণ্ডলে প্রহার করবে না এবং তাকে মন্দ বলবে না; আর তার বিছানা আলাদা করতে হলে তা ঘরের মধ্যেই করবে।” [আবূ দাউদ রহ. হাদিসটি ‘হাসান’ সনদে বর্ণনা করেছেন, হাদিস নং- ২১৪৪] তিনি আরও বলেন:

« ألاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ في كِسْوَتِهنَّ وَطَعَامِهنَّ » . ( رواه الترمذي ).

“জেনে রাখবে, তোমাদের উপর তাদের অধিকার হল— তোমরা তাদের ভরণ-পোষণের ক্ষেত্রে তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।” [তিরমিযী, হাদিস নং- ৩০৮৭] নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:

« لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا ، رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ » . ( رواه مسلم ).

“কোন মুমিন পুরুষ যেন কোন মুমিন নারীর প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ না করে; কেননা, তার কোন একটি দিক তার কাছে খারাপ লাগলেও অন্য একটি দিক তার পছন্দ হবে।” [মুসলিম, হাদিস নং- ২৭২১]

২. দীনের জরুরি বিষয়গুলো তাকে শিক্ষা দিবে, যদি এগুলো তার জানা না থাকে, অথবা এগুলো শিখার জন্য তাকে শিক্ষামূলক বৈঠকসমূহে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুমতি প্রদান করবে; কারণ, তার দীনকে সংশোধন ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তাটা তাকে আবশ্যকীয়ভাবে সরবরাহ করা খাদ্য ও পানীয়’র প্রয়োজনীয়তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا ﴾ [ التحريم : ٦ ]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর জাহান্নামের আগুন থেকে।” [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৬] আর স্ত্রীও পরিবারের একজন; আর তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে হবে ঈমান ও ভালো কাজোর মাধ্যমে; আর শরী‘য়ত যেভাবে চায়, সেভাবে ভালো কাজ সম্পন্ন করতে হলে শরী‘য়তের বিধানাবলী সম্পর্কে জানতে হবে; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« ألا وَاسْتَوصُوا بالنِّساءِ خَيْراً ، فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٌ أسِيْرَاتٌ - عِنْدَكُمْ » . ( رواه الترمذي ).

“সাবধান, তোমরা নারীদের মঙ্গল কামনা কর; কারণ, তারা (বন্দীর মত) তোমাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।” [তিরমিযী, হাদিস নং- ৩০৮৭] আর নারীর মঙ্গল কামনা করার অন্যতম একটি দিক হলো তাকে এমনভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাতে সে তার দ্বারা তার দীনকে মার্জিত করতে পারে এবং তাকে এমনভাবে আদব শিখানোর ব্যবস্থা করা, যা তাকে যথাযথভাবে মর্যাদা রক্ষা করে চলতে সহযোগিতা করবে।

৩. ইসলামের শিক্ষা, নির্দেশ ও আদবসমূহ তাকে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া এবং এগুলোর ব্যাপারে তাকে কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা; সুতরাং সে তাকে ভ্রমণ করতে অথবা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়াতে নিষেধ করবে এবং মাহরাম পুরুষ ব্যতীত অন্যান্য পুরুষদের মাঝে অবাধে বিচরণ করতে বাধা দিবে। অনুরূপভাবে তার দায়িত্ব হলো তার স্ত্রীর সতীত্ব রক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা এবং ভালোভাবে তাকে তত্ত্বাবধান করা; সুতরাং সে তাকে তার চরিত্র বা দীন নষ্ট করার সুযোগ দিবে না এবং তাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশসমূহ অমান্য করার বা পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার অবকাশ দিবে না; কারণ, সে তার অভিভাবক এবং তাকে তার (স্ত্রীর) ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে; তাছাড়া তাকে তার রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ ﴾ [ النساء : ٣٤ ]

“পুরুষরা নারীদের কর্তা।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৪] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ » . ( متفق عليه ).

“আর পরুষ ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, আর তাকে তার দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।” [বুখারী, হাদিস নং- ৮৫৩; মুসলিম, হাদিস নং- ৪৮২৮]

৪. সে তার মাঝে ও তার সতীনের মাঝে ইনসাফপূর্ণ আচরণ করবে, যদি তার সতীন থাকে; তাদের মাঝে খাবার, পানীয়, পোশাক, বাসস্থান ও বিছানায় রাত যাপনের ক্ষেত্রে সমান ও ন্যায় আচরণ করবে; এর কোনো একটির ব্যাপারেও যুলুম ও অন্যায় আচরণ করবে না; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا تَعۡدِلُواْ فَوَٰحِدَةً أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُمۡۚ ﴾ [ النساء : ٣ ]

“আর যদি আশঙ্কা কর যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকেই বা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকেই গ্রহণ কর।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ব্যাপারে উত্তম উপদেশ ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন, তিনি বলেন:

« خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِهِ , وَأَنَا خَيْرُكُمْ لِأَهْلِي » . ( رواه الطبراني ).

“তোমাদের মাঝে সে ব্যক্তিই উত্তম, যে ব্যক্তি তোমাদের মধ্যে তার পরিবারের নিকট উত্তম; আর আমি তোমাদের মাঝে আমার পরিবারের কাছে সবচেয়ে উত্তম।” [ত্ববারানী রহ. হাদিসটি ‘হাসান’ সনদে বর্ণনা করেছেন।]

৫. তার কোনো গোপন বিষয় প্রকাশ না করা এবং তার মধ্যকার কোনো দোষোর আলোচনা না করা; কেননা, সে তার বিশ্বস্ত তত্ত্বাবধায়ক এবং তাকে দেখাশুনা ও রক্ষা করার ব্যাপারে দায়ী ব্যক্তি। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« إِنَّ مِنْ أَشَرِّ النَّاسِ عِنْدَ اللَّهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ الرَّجُلَ يُفْضِى إِلَى امْرَأَتِهِ ، وَتُفْضِى إِلَيْهِ ثُمَّ يَنْشُرُ سِرَّهَا » . ( رواه مسلم ).

“কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মর্যাদার দিক থেকে নিকৃষ্টতম হবে ঐ ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর সাথে শয্যা গ্রহণ করে এবং তার স্ত্রীও তার সাথে শয্যা গ্রহণ করে; অতঃপর তাদের পরস্পরের গোপন বিষয় লোকদের নিকট প্রকাশ করে দেয়।” [মুসলিম, হাদিস নং- ৩৬১৫]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন