hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

২০
(চ) প্রতিবেশীদের সাথে আদব:
এক প্রতিবেশীর জন্য তার আরেক প্রতিবেশীর উপর যেসব অধিকার পুরাপুরিভাবে আদায় করা এবং একে অপরের সাথে যেসব আদব রক্ষা করে চলা ওয়াজিব, মুসলিম ব্যক্তি সেগুলোর যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করে; আর এটা এ জন্য যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا وَبِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡجَارِ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ ﴾ [ النساء : ٣٦ ]

“আর তোমরা ... পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী ও দুর-প্রতিবেশীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ » . ( متفق عليه ) .

“জিব্রাঈল আ. এসে আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে অবিরত উপদেশ দিতে থাকলেন; এমনকি আমার মনে হল, হয়ত তিনি প্রতিবেশীকে ওয়ারিশ বানিয়ে দিবেন।” [বুখারী, হাদিস নং- ৫৬৬৯; মুসলিম, হাদিস নং- ৬৮৫২] তিনি আরও বলেন:

« مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ، فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ » . ( متفق عليه ) .

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।” [বুখারী, হাদিস নং- ৫৬৭৩; মুসলিম, হাদিস নং- ১৮২]

১. তাকে কথায় বা কাজের দ্বারা কষ্ট না দেওয়া; কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بالله وَاليَومِ الآخرِ ، فَلاَ يُؤْذِي جَارَهُ » . ( متفق عليه ) .

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।” [বুখারী, হাদিস নং- ৪৮৯০; মুসলিম, হাদিস নং- ১৮৩] তিনি আরও বলেন:

« واللهِ لاَ يُؤْمِنُ ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ ! قِيلَ : مَنْ يَا رَسُول الله ؟ قَالَ : الَّذِي لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ ! » . ( رواه البخاري ) .

“আল্লাহর শপথ! সে মুমিন নয়; আল্লাহর শপথ! সে মুমিন নয়; আল্লাহর শপথ! সে মুমিন নয়; জিজ্ঞেস করা হল: হে আল্লাহর রাসূল! কে সেই ব্যক্তি? তিনি বললেন: যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।” [বুখারী, হাদিস নং- ৫৬৭০] অপর এক হাদিসে এসেছে, একদল সাহাবী বললেন:

« يا رسولَ اللهِ ! إن فلانةَ تصومُ النهارَ , وتقومُ الليلَ , وتؤذي جيرانها , قال : هي في النار» . ( رواه أحمد و الحاكم ).

“হে আল্লাহর রাসূল! অমুক ব্যক্তি তো দিনে সাওম পালন করে এবং রাতে সালাত আদায় করে, অথচ তার প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয়! তিনি বললেন: সে জাহান্নামে যাবে।” [আহমাদ ও হাকেম এবং হাদিসের সনদ সহীহ।]

২. তার উপকার করা; আর এটা হবে— যখন সে তার কাছ সাহায্য চাইবে, তখন সে তাকে সাহায্য করবে; যখন সহযোগিতা চাইবে সহযোগিতা করবে; যখন সে অসুস্থ হবে, তখন তার সেবা করবে; যখন সে আনন্দিত হবে, তখন তার আনন্দের অংশীদার হবে; আর যখন বিপদগ্রস্ত হবে, তখন তাকে সমবেদনা জ্ঞাপন করবে; যখন সে কোনো কিছুর অভাব অনুভব করবে, তখন তাকে সহযোগিতা করবে; তাকে আগে আগে সালাম প্রদান করবে; তার সাথে কোমল ব্যবহার করবে; তার সন্তানের সাথে কথা বলার সময় মমতা দেখাবে; যে পথে তার দীন ও দুনিয়ার কল্যাণ হবে, তাকে সে পথ দেখাবে; তার দিকে খেয়াল রাখবে এবং তার সীমানা সংরক্ষণ করবে; তার ভুল-ভ্রান্তি মার্জনা করবে এবং তার গোপন বিষয় জানার চেষ্টা করবে না; তার ভবন বা চলার পথকে সংকীর্ণ করে দেবে না; ছাদের পানি নিষ্কাশনের নল দ্বারা বা ময়লা দ্বারা অথবা তার বাড়ির সামনে আবর্জনা নিক্ষেপ করার দ্বারা তাকে কষ্ট দেবে না; আর এসব কিছুর মানেই হল তার প্রতি ইহসান বা সদ্ব্যবহার করা, যে ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে; আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱلۡجَارِ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ ﴾ [ النساء : ٣٦ ]

“আর তোমরা ... নিকট প্রতিবেশী ও দুর-প্রতিবেশীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ، فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ » . ( رواه مسلم ).

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করে।” [মুসলিম, হাদিস নং- ১৮৫]

৩. তাকে ভালো ও কল্যাণকর কিছু দেয়ার মাধ্যমে সম্মান করা; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« يَا نِسَاء المُسْلِمَاتِ ! لاَ تَحْقِرَنَّ جَارةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاة » . ( رواه البخاري ).

“হে মুসলিম রমনীগণ! কোনো প্রতিবেশিনী যেন অপর প্রতিবেশিনীকে তুচ্ছজ্ঞান না করে, এমনকি বকরীর একটি ক্ষুর উপঢৌকন পাঠালেও নয়।” [বুখারী, হাদিস নং- ২৪২৭] তিনি আরও বলেন:

« يَا أَبَا ذَرٍّ ! إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً ، فَأكثِرْ مَاءهَا ، وَتَعَاهَدْ جيرَانَكَ » . ( رواه مسلم ).

“হে আবূ যর! যখন তুমি তরকারি পাকাও, তখন তাতে একটু বেশি পানি দিয়ে ঝোল বাড়াও এবং তোমার প্রতিবেশিকে পৌঁছাও।” [মুসলিম, হাদিস নং- ৬৮৫৫] আর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লক্ষ্য করে বললেন: আমার তো দুইজন প্রতিবেশী আছে, আমি তাদের কার কাছে উপঢৌকন পৌঁছাবো? তখন তিনি বললেন:

« إِلَى أقْرَبِهِمَا مِنكِ بَاباً » . ( رواه البخاري ).

“উভয়ের মধ্যে যার ঘর তোমার বেশি কাছে হয়, তার কাছে পাঠাও।” [বুখারী, হাদিস নং- ২১৪০]

৪. তাকে সম্মান ও কদর করা; সুতরাং সে তাকে খুঁটি গাড়তে নিষেধ করবে না এবং তাকে জিজ্ঞাসা না করে তার সাথে সংযুক্ত বা তার নিকটবর্তী কোনো কিছু বিক্রয় করবে না বা ভাড়া দেবে না; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« لاَ يَمْنَعْ أَحَدُكُمْ جَارَهُ أَنْ يَغْرِزَ خَشَبَةً فِى جِدَارِهِ » . ( متفق عليه ).

“তোমাদের কেউ যেন তার দেয়ালের পাশে তার প্রতিবেশীকে খুঁটি গাড়তে নিষেধ না করে।” [বুখারী, হাদিস নং- ২৩৩১; মুসলিম, হাদিস নং- ৪২১৫] তিনি আরও বলেন:

« من كان له جارٌ فى حائط أو شريكٌ فَلَا يَبِعهُ حتى يَعْرِضَه عليهِ » . ( رواه الحاكم ).

“যে ব্যক্তির বাগানের প্রতিবেশী আছে, অথবা অংশীদার আছে, সে যেন তাকে না জানিয়ে তা বিক্রি না করে।” [হাকেম রহ. এবং তিনি হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।]

দু’টি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণী:

প্রথমত: মুসলিম ব্যক্তি যখন তার প্রতিবেশীদের কাছে ভালো কিংবা মন্দ হবে, তখন সে নিজেই নিজেকে চিনতে পারবে; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে প্রশ্নকারী ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন:

« إِذَا سَمِعْتَ جِيرَانَكَ يَقُولُونَ : قَدْ أَحْسَنْتَ ، فَقَدْ أَحْسَنْتَ ، وَإِذَا سَمِعْتَهُمْ يَقُولُونَ : قَدْ أَسَأْتَ ، فَقَدْ أَسَأْتَ » . ( رواه أحمد ).

“যখন তুমি তোমার প্রতিবেশীদেরকে বলতে শুনবে তুমি ভালো, তখন তুমি ভালো; আর যখন তুমি তাদেরকে বলতে শুনবে তুমি মন্দ, তখন তুমি মন্দ।” [আহমাদ রহ. উৎকৃষ্ট সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।]

দ্বিতীয়ত: যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর দ্বারা দুর্ভোগের শিকার হবে, তখন সে যেন ধৈর্যধারণ করে; কারণ, তার ধৈর্যধারণ অচিরেই তার থেকে তার মুক্তির কারণ হবে; কেননা, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন:

« اصبر ، ثم قال له في الرابعة أو الثالثة : اطْرح متاعَك في الطريقِ ، فَطَرَحَهُ ، فجعل الناس يمرون به ويقولون : ما لك ؟ فيقول : آذاه جاره ، فجعلوا يقولون : لعنهُ الله ، فجاءه جاره ، فقال : رد متاعك ، لا والله لا أوذيك أبدا » . ( رواه ابن حبان ).

“তুমি ধৈর্যধারণ কর; অতঃপর চতুর্থ অথবা তৃতীয় বারে তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন: তুমি তোমার মালমাত্তা রাস্তার মধ্যে ফেলে দাও, তারপর সে তাই করল; অতঃপর জনগণ তার পাশ দিয়ে পথ চলতে গিয়ে বলতে শুরু করল: তোমার কী হয়েছে? তখন সে বলল: তার প্রতিবেশী তাকে কষ্ট দিয়েছে; তারপর তারা বলতে শুরু করল: আল্লাহ তাকে ‘লানত’ করুন; তারপর তার প্রতিবেশী তার নিকট আসল এবং বলল: তুমি তোমার মাল ফিরিয়ে নাও; আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে আর কখনও কষ্ট দেব না।” [ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ, হাদিস নং- ৫২০]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন