মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুসলিম ব্যক্তি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যে, সফর তার জীবনের এক আবশ্যকীয় ও জরুরি অবিচ্ছেদ্য বিষয়; কেননা, হাজ্জ, ওমরা, যুদ্ধ, জ্ঞান অর্জন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভাই-বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ— এসব ফরয ও ওয়াজিব বিষয় সফর করা ব্যতীত পালন করা সম্ভব নয়। আর এ কারণেই শরী‘য়ত প্রবর্তক সফর এবং তার বিধিবিধান ও আদবসমূহের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে; আর একজন আদর্শ মুসলিম ব্যক্তির দায়িত্ব হল তা শিখে নেওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা।
সফরের বিধি-বিধানসমূহ নিম্নরূপ:
১. চার রাকা‘য়াত বিশিষ্ট সালাতকে ‘কসর’ করা; সুতরাং সে শুধু দুই রাকা‘য়াত দুই রাকা‘য়াত করে সালাত আদায় করবে; তবে মাগরিবের সালাত তিন রাকা‘য়াতই আদায় করবে। আর সে যে শহরে বা গ্রামে বাস করে, তা থেকে প্রস্থান করা থেকে ‘কসর’ শুরু করবে এবং সেখানে পুনরায় ফিরে আসা পর্যন্ত ‘কসর’ করবে; তবে যে শহরে সে সফর করেছে, সেখানে চার দিন বা তার বেশি অবস্থান করার নিয়ত করলে সে অবস্থায় পূর্ণ সালাত আদায় করবে, ‘কসর’ করবে না; কিন্তু যখন সে নিজ শহরে ফিরে আসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবে, তখন আবার ‘কসর’ শুরু করবে এবং বাড়িতে পৌঁছা পর্যন্ত ‘কসর’ চালিয়ে যাবে; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে, তখন সালাত ‘কসর’ করলে তোমাদের কোনো দোষ নেই।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০১] তাছাড়া আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
« خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ ، فَكَانَ يُصَلِّى ( الرباعية ) رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ حَتَّى رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ » . ( متفقٌ عَلَيْهِ ).
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মদীনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলাম; আমরা মদীনায় ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি (চার রাকা‘য়াত বিশিষ্ট সালাতকে ‘কসর’ করে) দুই রাকা‘য়াত দুই রাকা‘য়াত করে সালাত আদায় করতেন।” [বুখারী, হাদিস নং- ১০৩১; মুসলিম, হাদিস নং- ১৬১৮]
২. তিনদিন তিনরাত মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ; কেননা, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
« جَعَلَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيَهُنَّ لِلْمُسَافِرِ ، وَلِلْمُقِيمِ يَوْمًا وَلَيْلَةً الْمَسْحَ عَلَى الْخُفَّيْنِ » . ( رواه أحمد و مسلم و النسائي و ابن ماجه ).
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে মোজার উপর মাসেহ করার বিধান দিয়েছেন— মুসাফির তথা পর্যটকের জন্য তিনদিন তিনরাত এবং মুকীম তথা নিজ বাসস্থানে বসবাসকারীর জন্য একদিন একরাত।” [আহমাদ, মুসলিম, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ।]
৩. তায়াম্মুম করা বৈধ, যদি সে পানি না পায়, অথবা পানি সংগ্রহ করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে যায়, অথবা তার জন্য পানির দাম অনেক বেশি হয়; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম কর; সুতরাং মাসেহ কর তোমরা তোমাদের চেহারা ও হাত।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৩]
৪. সাওম ভঙ্গ করার সুযোগ বা অবকাশ প্রদান; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪]
৫. বাহনের উপর বসে যে কোনো দিকে ফিরে নফল সালাত আদায় করার বৈধতা; কেননা, আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন:
« إنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّى سُبْحَتَهُ ( النافلة ) حَيْثُمَا تَوَجَّهَتْ بِهِ نَاقَتُهُ » . ( متفقٌ عَلَيْهِ ).
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাহনে (নফল) সালাত আদায় করতেন, তাঁর উট তাঁকে নিয়ে যে দিকেই ফিরে থাকুক না কেন।” [বুখারী, হাদিস নং- ৯৫৫; মুসলিম, হাদিস নং- ১৬৪৪]
৬. যোহর ও আসর, অথবা মাগরিব ও এশা’র সালাতকে একত্র করে আদায় করা বৈধ; সুতরাং সে যোহর ও আসরের সালাতকে একত্র করে যোহরের ওয়াক্তে আদায় করবে এবং মাগরিব ও এশা’র সালাতকে একত্র করে মাগরিবের ওয়াক্তে আদায় করবে; অথবা যোহরের সালাতকে আসরের প্রথম ওয়াক্ত পর্যন্ত বিলম্বিত করে যোহর ও আসরকে এক সাথে আদায় করবে এবং মাগরিবকে এশা’র সময় পর্যন্ত বিলম্বিত করে এক সাথে আদায় করবে। কেননা, মু‘য়ায রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
« خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِى غَزْوَةِ تَبُوكَ ، فَكَانَ يُصَلِّى الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا ، وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا » . ( رواه مسلم ).
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাবুকের যুদ্ধে বের হলাম; তারপর তিনি (আমাদেরকে নিয়ে) যোহর ও আসরের সালাতকে একত্রে আদায় করতেন এবং মাগরিব ও এশার সালাতকে একত্রে আদায় করতেন।” [মুসলিম, হাদিস নং- ১৬৬৫]
আর সফরের আদবসমূহ নিম্নরূপ:
১. যুলুম করে দখল করা সম্পদ ও আমানতের অর্থ তার মালিকের নিকট ফেরত দেয়া; কেননা, সফর হল মৃত্যুর আলামত।
২. হালাল দ্রব্য থেকে তার খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করা এবং স্ত্রী, সন্তান ও পিতামাতার মত যাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব তার উপর, তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করে যাওয়া বা তাদের জন্য অর্থসম্পদ রেখে যাওয়া।
৩. তার পরিবার-পরিজন, ভাই ও বন্ধু-বান্ধবদেরকে বিদায় জানানো এবং যাদেরকে বিদায় জানানো হবে, তাদের জন্য এ দো‘য়া পাঠ করা:
(আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে ‘তাকওয়া’ দান করুন, তোমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন এবং তুমি যখন কোনো দিকে রওয়ানা করবে, তখন তিনি যেন তোমাকে কল্যাণের দিকে পরিচালিত করেন)। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« إنَّ لُقمانَ قال : إنَّ اللهَ تعالى إذا استُودِعَ شَيْاً حَفِظَهُ » . ( رواه النسائي ).
“লুকমান আ. বলেন: আল্লাহ তা‘আলার কাছে যখন কোনো কিছু আমানত রাখা হয়, তখন তিনি তা হেফাজত করেন।” [নাসায়ী রহ. উৎকৃষ্ট সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।] আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অনুসারীকে বলতেন:
« أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكَ ، وَأمَانَتَكَ ، وَخَواتِيمَ عَمَلِكَ » . ( رواه أَبُو داود و الترمذي ).
“আমি তোমার দীন, তোমার আমানত ও তোমার শেষ আমলকে আল্লাহর নিকট সোপর্দ করছি।” [আবূ দাউদ, নাসায়ী ও তিরমিযী (সহীহ)।]
৪. তার সাথে সফরের জন্য ভালো হবে এমন তিনজন বা চারজন সাথীকে বাছাই করার পর তাদের সাথে সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়া; কেননা, সফরের ব্যাপারে যেমন বলা হয়: " مَخْبَرُ الرجال "(ব্যক্তির পরীক্ষাগার); আর সফরকে (সফর) বলে নামকরণ করার কারণ হল, যেহেতু সফর ব্যক্তির চরিত্রকে উন্মুক্ত করে দেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« الرَّاكِبُ شَيْطَانٌ ، وَالرَّاكِبَانِ شَيْطَانَانِ ، وَالثَّلاَثَةُ رَكْبٌ » . ( رواه أَبُو داود و النسائي و الترمذي ).
“একজন আরোহী হচ্ছে একটি শয়তান; আর দুইজন আরোহী হল দুইটি শয়তান; আর তিনজন আরোহী হচ্ছে কাফেলা।” [আবূ দাউদ, নসায়ী ও তিরমিযী এবং হাদিসটি ‘সহীহ’।] তিনি আরও বলেন:
“একাকী সফর করার মধ্যে কি কি ক্ষতি আছে সে সম্পর্কে আমি যা জানি, জনগণ যদি তা জানত, তাহলে কোনো ভ্রমণকারী রাতে একাকী ভ্রমণ করত না।” [বুখারী, হাদিস নং- ২৮৩৬]
৫. ভ্রমণকারীগণ কর্তৃক তাদের মধ্য থেকে এমন একজনকে আমীর বা নেতা বানিয়ে নেওয়া, যিনি তাদের সাথে পরমর্শ করে তাদেরকে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« إِذَا خَرَجَ ثَلاَثَةٌ في سَفَرٍ فَليُؤَمِّرُوا أحَدَهُمْ » . ( رواه أَبُو داود ).
“যখন তিনজন কোনো সফরে বের হয়, তখন তারা যেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে আমীর নিযুক্ত করে।” [আবূ দাউদ।]
৬. সফরের পূর্বে ‘সালাতুল ইস্তিখারা’ আদায় করা; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন, এমনকি তিনি বিষয়টি তাদেরকে এমনভাবে শিক্ষা দিতেন, যেমনিভাবে তিনি তাদেরকে আল-কুরআনুল কারীমের কোনো সূরা শিক্ষা দিতেন। [বুখারী।]
(আল্লাহর নামে বের হচ্ছি এবং তাঁর উপর ভরসা করছি। আর অসৎকাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং সৎকাজ করার কারও ক্ষমতা নেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই যেন আমি পথভ্রষ্ট না হই অথবা আমাকে পথভ্রষ্ট করা না হয়; অথবা আমি যেন দীন থেকে সরে না যাই অথবা আমাকে দীন থেকে সরিয়ে দেয়া না হয়; অথবা আমি যেন কারও উপর যুলুম না করি অথবা আমার উপর যুলুম করা না হয়)। [আবূ দাউদ ও তিরমিযী।] আর যখন যানবাহনে আরোহণ করবে, তখন বলবে:
(আল্লাহর নামে আরোহণ করছি; আর আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাচ্ছি; আল্লাহ সবচেয়ে মহান। আর আল্লাহর উপর ভরসা করছি। আর অসৎকাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং সৎকাজ করার কারও ক্ষমতা নেই মহান আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য ছাড়া। আল্লাহ যা চান, তাই হয়; আর তিনি যা চান না, তা হয় না। পাক পবিত্র সেই সত্তা, যিনি এটাকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন, অথচ আমাদের পক্ষে তা করার শক্তি ছিল না। হে আল্লাহ! আমাদের এ সফরে আমরা তোমার কাছে নেকী (পুণ্য) ও তাকওয়ার প্রার্থনা করছি এবং সেই আমল চাচ্ছি, যার প্রতি তুমি সন্তুষ্ট। হে আল্লাহ! আমাদের এ সফরকে আমাদের জন্য সহজ করে দাও এবং এর দূরত্বকে আমাদের জন্য সঙ্কুচিত করে দাও। হে আল্লাহ! সফরে তুমিই আমাদের সাথী বা রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং আমাদের পরিবার-পরিজন ও সম্পদের অভিভাবক। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই কষ্ট ও কাঠিন্য থেকে, মর্মান্তিক দৃশ্যের উদ্ভব থেকে এবং নিজেদের ধন-সম্পদ, পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্তুতির মধ্যে খারাপভাবে ফিরে আসা থেকে)। [মুসলিম ও আবূ দাউদ।]
৮. বৃহস্পতিবারে দিনের প্রথম প্রহরে সফরে বের হওয়া [বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত।]; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« اللَّهُمَّ باركْ لأُمَّتِي في بُكُورِها ، وكان إذا بعث سَرِيَّة أَو جيشا بعثهم من أوَّل النهار » . ( رواه أَبُو داود و الترمذي ).
“হে আল্লাহ! তুমি আমার উম্মতকে তার সকাল বেলায় বরকত দান কর; আর তিনি যখন কোনো সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করতেন, তখন তাদেরকে দিনের প্রথম প্রহরে প্রেরণ করতেন।” [আবূ দাউদ ও তিরমিযী।] তাছাড়া হাদিসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃহস্পতিবারে তাঁর সফরে বের হতেন। [উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১৭৭]
“এক ব্যক্তি আরজ করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমি সফর করার পরিকল্পনা করেছি, কাজেই আমাকে উপদেশ দিন; তখন তিনি বললেন: তুমি অবশ্যই তাকওয়া তথা আল্লাহকে ভয় করার নীতি অবলম্বন করবে এবং প্রত্যেক উঁচু জায়গায় (উঠার সময়) ‘তাকবীর’ বলবে।” [তিরমিযী রহ. হাদিসটি হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।]
(অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমরা তাদেরকে তোমার মুখোমুখি করছি এবং তাদের অনিষ্টকারিতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি); কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দো‘য়া পাঠ করতেন। [আবূ দাউদ ও নাসায়ী রহ. হাদিসটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।]
১১. সফরে সে আল্লাহ তা‘আলার নিকট দো‘য়া করবে এবং তাঁর নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ চাইবে; কেননা, সফর অবস্থার দো‘য়া কবুল করা হয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“তিনটি দো‘য়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই: মাযলুমের দো‘য়া, মুসাফিরের দো‘য়া এবং পিতামাতা কর্তৃক তার সন্তানের জন্য করা বদদো‘য়া।” [তিরমিযী রহ. হাদিসটি হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।]
১২. যখন সে কোন স্থানে অবস্থান করার জন্য অবতরণ করে, তখন বলবে:
“আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাগুলো দ্বারা সে বস্তুর অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাই, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন।” [মুসলিম।] আর যখন সফর অবস্থায় রাতের আগমন ঘটবে, তখন বলবে:
“হে যমীন! আমার ও তোমার রব হলেন আল্লাহ। আমি আশ্রয় চাই তোমার অনিষ্টতা থেকে ও তোমার ভিতরে যা আছে তার অনিষ্টতা থেকে; আর তোমার মধ্যে যা কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে তার অনিষ্টতা থেকে এবং তোমার উপরে যা কিছু চরে বেড়ায় তার অনিষ্টতা থেকে। আর আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই বাঘ-সিংহ ও কাল সাপের অনিষ্টতা থেকে এবং সকল প্রকার সাপ ও বিচ্ছুর অনিষ্টতা থেকে; আরও আশ্রয় চাই শহরবাসীদের অনিষ্টতা থেকে এবং জন্মদানকারী ও যা জন্ম লাভ করেছে তার অনিষ্টতা থেকে।” [আবূ দাউদ, হাদিস নং- ২৬০৫]
১৩. যখন নির্জনতা বা বন্য জন্তুর ভয় করবে, তখন বলবে:
“আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, তুমি বাদশা, অতিশয় পবিত্র এবং সকল ফেরেশ্তা ও বিশেষ করে জিব্রাঈল আ. এর রব; তোমার শক্তি ও অসীম দাপটে আসমানসমূহ ও যমীন বিস্তৃত হয়ে আছে।” [ইবনুস সিন্নী আল-খারতায়ী।]
১৪. যখন সে রাতের প্রথম ভাগে ঘুমাবে, তখন তার বাহু বা হাত যমীনে বিছিয়ে দেবে; আর যদি রাতের শেষ ভাগে ঘুমায়, তাহলে তার বাহু বা হাত দাঁড় করিয়ে দিবে এবং হাতের তালুতে তার মাথা রাখবে, যাতে ভারী ঘুম না হয় এবং ফযরের সালাত কাযা হয়ে না যায়।
১৫. যখন কোনো শহরের প্রতি দৃষ্টি পড়বে, তখন বলবে:
« اللهم اجعل لنا بها قراراً ، وارْزُقنا فيهَا رزقًا حلالًا . اللَّهُمَّ إني أَسأَلُكَ مِنْ خَيرِ هذه المَدينَةِ ، وَخَيرَ مَا فيها ، وَأعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا ، وَشَرِّ ما فيها »
(হে আল্লাহ! আমাদের জন্য তাতে স্থিতি ও প্রশান্তি দান কর এবং সেখানে আমাদের জন্য হালাল রিযিকের ব্যবস্থা কর। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ শহরের কল্যাণ ও তার মধ্যকার কল্যাণ প্রার্থনা করছি; আর তোমার কাছে তার অকল্যাণ ও তার মধ্যকার অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চাই)। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দো‘য়া পাঠ করতেন। [উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১৭৮]
১৬. যখন তার সফরের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাবে, তখন দ্রুত নিজ শহর ও পরিবার-পরিজনের নিকট প্রত্যাবর্তন করা; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“সফর হচ্ছে এক প্রকার আযাব; যা তোমাদের যে কারো পানাহার ও নিদ্রায় বাধা দেয়। সুতরাং যখন তোমাদের কারোর সফরের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়ে যায়, তখন সে যেন দ্রুত তার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে আসে।” [বুখারী ও মুসলিম।]
১৭. যখন (সফর থেকে) ফিরে আসবে, তখন তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর দিবে এবং বলবে:
(আমরা সফর থেকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমারা আমাদের প্রভুর প্রশংসাকারী) এবং এই দো‘য়াটি বারবার পাঠ করবে; কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজটি করতেন।” [বুখারী ও মুসলিম।]
১৮. সফর থেকে রাতের বেলায় পরিবারবর্গের নিকট ফিরে না আসা; বরং তার পূর্বে কাউকে পাঠিয়ে তাদেরকে সুসংবাদ দেয়া, যাতে তার আগমন হঠাৎ করে তাদেরকে হতভম্ব করে না দেয়; কেননা, এটা ছিল নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। [উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১৭৯]
১৯. নারী তার স্বীয় মাহরাম পুরুষ সাথী ছাড়া একদিন ও একরাতের দূরত্বের পথ সফর করবে না; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“যে নারী আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমান এনেছে, তার জন্য মাহরাম পুরুষ সাথী ছাড়া একদিন ও একরাতের দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়।” [বুখারী, হাদিস নং- ১০৩৮; মুসলিম, হাদিস নং- ৩৩৩১]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/537/34
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।