HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
যা না জানলেই নয়
লেখকঃ নোমান বিন আবুল বাশার
তাওহীদের শরয়ী সংজ্ঞা হচ্ছে: আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ হিসেবে মান্য করা এবং তাঁরই ইবাদত করা। আল্লাহ বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : 56]
আমি জিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যে সৃষ্টি করেছি।’’ (সুরা যারিয়াত: ৫৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا﴾ [ النساء : 36]
‘‘তোমরা আল্লাহ তা’আলার ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকেও শরিক করনা।’’ (সুরা নিসা: ৩৬)
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : 56]
আমি জিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যে সৃষ্টি করেছি।’’ (সুরা যারিয়াত: ৫৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا﴾ [ النساء : 36]
‘‘তোমরা আল্লাহ তা’আলার ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকেও শরিক করনা।’’ (সুরা নিসা: ৩৬)
তাওহীদ ৩ ভাগে বিভক্ত।
তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ্ : আল্লাহ্ তা’আলাকে সৃষ্টি, লালন- পালন ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে একক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ বলে।
তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ : আল্লাহ তা’আলাকে একমাত্র ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ।
তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত: আল্লাহ তা’আলার সকল নাম ও গুণাবলিতে তাঁকে একক হিসেবে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত বলে।
আল্লাহ তাআলার গুণাবলির মধ্য হতে অন্যতম গুণ হলো, আল্লাহ আরশে সমাসীন। এ ব্যাপারে আমদের দৃঢ় ঈমান রাখা অতীব জরুরি।
উল্লেখ্য, কোন ব্যক্তিকে মু’মিন হতে হলে উপরে বর্ণিত তিন প্রকার তাওহীদই অর্জন করতে হবে। কোন একটিকে পূর্ণ বা আংশিকভাবে অবিশ্বাস বা অস্বীকার করলে অথবা সন্দেহ পোষণ করলে, সে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার নিকট মু’মিন বলে বিবেচিত হবে না।
তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ্ : আল্লাহ্ তা’আলাকে সৃষ্টি, লালন- পালন ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে একক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ বলে।
তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ : আল্লাহ তা’আলাকে একমাত্র ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ।
তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত: আল্লাহ তা’আলার সকল নাম ও গুণাবলিতে তাঁকে একক হিসেবে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত বলে।
আল্লাহ তাআলার গুণাবলির মধ্য হতে অন্যতম গুণ হলো, আল্লাহ আরশে সমাসীন। এ ব্যাপারে আমদের দৃঢ় ঈমান রাখা অতীব জরুরি।
উল্লেখ্য, কোন ব্যক্তিকে মু’মিন হতে হলে উপরে বর্ণিত তিন প্রকার তাওহীদই অর্জন করতে হবে। কোন একটিকে পূর্ণ বা আংশিকভাবে অবিশ্বাস বা অস্বীকার করলে অথবা সন্দেহ পোষণ করলে, সে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার নিকট মু’মিন বলে বিবেচিত হবে না।
দুনিয়া ও আখেরাতের নানা ধরনের বিপদ আপদ ও দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ লাভের প্রধান অবলম্বন হচ্ছে তাওহীদ। এখানে তাওহীদের কয়েকটি ফজিলত উল্লেখ করা হলো:
তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির জন্যে রয়েছে পূর্ণ হিদায়াত ও নিরাপত্তা : আল্লাহ বলেন:
﴿الَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ﴾ [ الأنعام : 82]
‘‘যারা ঈমান এনেছে এবং ঈমানের সাথে জুলুম (শিরক) এর সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যে রয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা এবং তারাই হিদায়াত প্রাপ্ত।’’ (সুরান আনআম: ৮২)
তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তা’আলা দয়াশীল : সাহাবি ইতবান ইবনে মালেক রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আছে- ‘‘আল্লাহ তা’আলা এমন ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু বলেছে।’’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ তা’আলা তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির গুনাহ ক্ষমা করে দেন: আনাস রা. বলেন: আমি রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছি, ‘‘আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে আদম সন্তান তুমি দুনিয়া ব্যাপী গুনাহ নিয়ে আমার নিকট শিরক না করা অবস্থায় উপস্থিত হলে, আমি দুনিয়া ব্যাপী মাগফিরাত নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে আসব। (তিরমিজি)
তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির জন্যে রয়েছে পূর্ণ হিদায়াত ও নিরাপত্তা : আল্লাহ বলেন:
﴿الَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ﴾ [ الأنعام : 82]
‘‘যারা ঈমান এনেছে এবং ঈমানের সাথে জুলুম (শিরক) এর সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যে রয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা এবং তারাই হিদায়াত প্রাপ্ত।’’ (সুরান আনআম: ৮২)
তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তা’আলা দয়াশীল : সাহাবি ইতবান ইবনে মালেক রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আছে- ‘‘আল্লাহ তা’আলা এমন ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু বলেছে।’’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ তা’আলা তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তির গুনাহ ক্ষমা করে দেন: আনাস রা. বলেন: আমি রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছি, ‘‘আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে আদম সন্তান তুমি দুনিয়া ব্যাপী গুনাহ নিয়ে আমার নিকট শিরক না করা অবস্থায় উপস্থিত হলে, আমি দুনিয়া ব্যাপী মাগফিরাত নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে আসব। (তিরমিজি)
শিরকের সংজ্ঞা : আল্লাহর ইবাদতে অংশীদার স্থাপন করাকে শিরক বলা হয়। ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে শরিক করার অর্থ হল: আল্লাহকে ডাকার মত অন্যকে ডাকা, আল্লাহকে ভয় করার মত অন্যকে ভয় করা, তাঁর কাছে কামনা করা হয়, অন্যের কাছে তা কামনা করা। তাঁকে ভালোবাসার মত অন্যকেও ভালোবাসা। আল্লাহর জন্যে সম্পাদনযোগ্য ইবাদতসমূহের যে কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা।
শিরক দুই প্রকার।
শিরকে আকবর বা বড় শিরক।
শিরকে আসগর বা ছোট শিরক।
শিরকে আকবর: যে সকল ‘ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করা হয়, সেগুলোর কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করাকে শিরকে আকবর বলে। যেমন, গাইরুল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা, তার নামে জবেহ করা, জিন ও শয়তান ইত্যাদির নামে মানত করা। মৃত ব্যক্তি, জিন, শয়তান ইত্যাদিকে ক্ষতি করার বা সুস্থ অসুস্থ করার মালিক মনে করা। আর যে সকল কার্যাদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ সমাধান করতে পারে না তা অন্যের কাছে আশা করা।
শিরকে আসগর : যে সব কথা ও কাজের মাধ্যমে মানুষ শিরকের দিকে ধাবিত হয়, সেসব কথা ও কাজই শিরকে আসগর বা ছোট শিরক। এ প্রকারের শিরক মুসলমানকে ঈমান হতে বের করে না বটে; তবে তাওহীদকে দুর্বল করে দেয় এবং শিরকে আকবরের পথকে সুগম করে। এর উদাহরণ গাইরুল্লাহর নামে কসম করা, রিয়া বা লোক দেখানো কাজ করা ইত্যাদি।
শিরকে আকবর বা বড় শিরক।
শিরকে আসগর বা ছোট শিরক।
শিরকে আকবর: যে সকল ‘ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করা হয়, সেগুলোর কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করাকে শিরকে আকবর বলে। যেমন, গাইরুল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা, তার নামে জবেহ করা, জিন ও শয়তান ইত্যাদির নামে মানত করা। মৃত ব্যক্তি, জিন, শয়তান ইত্যাদিকে ক্ষতি করার বা সুস্থ অসুস্থ করার মালিক মনে করা। আর যে সকল কার্যাদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ সমাধান করতে পারে না তা অন্যের কাছে আশা করা।
শিরকে আসগর : যে সব কথা ও কাজের মাধ্যমে মানুষ শিরকের দিকে ধাবিত হয়, সেসব কথা ও কাজই শিরকে আসগর বা ছোট শিরক। এ প্রকারের শিরক মুসলমানকে ঈমান হতে বের করে না বটে; তবে তাওহীদকে দুর্বল করে দেয় এবং শিরকে আকবরের পথকে সুগম করে। এর উদাহরণ গাইরুল্লাহর নামে কসম করা, রিয়া বা লোক দেখানো কাজ করা ইত্যাদি।
শিরকের মাধ্যমে সৃষ্টিকে স্রষ্টার আসনে বসানো হয়, যা মহা অপরাধ এবং রীতি মত অবিচার। আল্লাহ বলেন:
﴿إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ﴾ [ لقمان : 13]
‘‘নিশ্চয়ই শিরক একটি মস্ত বড় অন্যায়’’ (সুরা লোকমান: ১৩)
আল্লাহ তা’আলা শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন-
﴿إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا﴾ [ النساء : 48]
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবে’’ (সুরা নিসা: ৪৮)
আল্লাহ তা’আলা মুশরিকদের জন্যে জান্নাত হারাম বলে ঘোষণা করেছেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ﴾ [ المائدة : 72]
‘‘নিশ্চয় যে আল্লাহ’র সাথে শিরক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।’’ (সূরা মায়িদাহ: ৭২)
শিরক সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। আল্লাহ বলেন,
﴿وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ الأنعام : 88]
‘‘আর যদি তারা শিরক করে তাহলে তাদের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে।’’ (সুরা আনআম: ৮৮)
শিরকই হল সবচেয়ে বড় গুনাহ। নবী করিম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘‘আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? আর তা হল, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা।’’ (বুখারি-মুসলিম)
সম্মানিত পাঠক!
শিরকের ক্ষতি এবং তার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে জানার পর শিরক থেকে নিজে বাঁচা এবং অপরকে বাঁচানোর জন্যে সচেষ্ট হওয়া আমাদের সকলের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের এ দায়িত্ব পালনে তাওফীক দান করুন।
আমিন!
﴿إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ﴾ [ لقمان : 13]
‘‘নিশ্চয়ই শিরক একটি মস্ত বড় অন্যায়’’ (সুরা লোকমান: ১৩)
আল্লাহ তা’আলা শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন-
﴿إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا﴾ [ النساء : 48]
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবে’’ (সুরা নিসা: ৪৮)
আল্লাহ তা’আলা মুশরিকদের জন্যে জান্নাত হারাম বলে ঘোষণা করেছেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ﴾ [ المائدة : 72]
‘‘নিশ্চয় যে আল্লাহ’র সাথে শিরক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।’’ (সূরা মায়িদাহ: ৭২)
শিরক সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। আল্লাহ বলেন,
﴿وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ الأنعام : 88]
‘‘আর যদি তারা শিরক করে তাহলে তাদের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে।’’ (সুরা আনআম: ৮৮)
শিরকই হল সবচেয়ে বড় গুনাহ। নবী করিম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘‘আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? আর তা হল, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা।’’ (বুখারি-মুসলিম)
সম্মানিত পাঠক!
শিরকের ক্ষতি এবং তার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে জানার পর শিরক থেকে নিজে বাঁচা এবং অপরকে বাঁচানোর জন্যে সচেষ্ট হওয়া আমাদের সকলের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের এ দায়িত্ব পালনে তাওফীক দান করুন।
আমিন!
নবী আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইত্তেবা তথা অনুসরণ ইসলামের অন্যতম মূল ভিত্তি। এ প্রসঙ্গে কুরআন ও হাদিসে প্রচুর উদ্ধৃতি বিদ্যমান। যেমন: আল্লাহ বলেন:
﴿وَمَا آَتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾ [ الحشر : 7]
‘‘রাসূল তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’’ (সুরা হাশর: ০৭)
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন:
﴿مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا﴾ [ النساء : 80]
‘‘যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে প্রকারান্তরে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, আমি আপনাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি।’’ (সূরা নিসা: ৮০)
ইত্তেবার অর্থ: আভিধানিক অর্থে ইত্তেবা অর্থ হল; কারো পদচিহ্ন দেখে দেখে চলা।। এ শব্দটি অনুসরণ, অনুকরণ, মান্যকরণ, আদর্শজ্ঞান করণ ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
শরিয়তের পরিভাষায় ইত্তেবা:
দ্বীনের সকল বিষয় তথা ‘আক্বিদা-বিশ্বাস, কথা, কাজ, গ্রহণ- বর্জন সহ সর্বক্ষেত্রে রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করাকে ইত্তেবা বলে।
রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কাজটি যেভাবে করেছেন সেটি ঠিক সেভাবে করা। যেমন, রাসূল যে বিষয়কে ওয়াজিব হিসেবে বিশ্বাস করেছেন, আমাদেরকেও তা ওয়াজিব হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। সুন্নত, মুসতাহাব ও মাকরূহের ব্যাপারেও ঠিক তা-ই।
ইত্তেবার বিপরীত হল মুখালাফা:
ইত্তেবার বিপরীত হল মুখালাফা বা বিরোধিতা। এটিও বিশ্বাস, কথা- কর্ম ও গ্রহণ- বর্জন সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ই‘তেক্বাদ বা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিরোধিতা হল, কোন একটি বিষয়ে রাসূল যেরূপ বিশ্বাস পোষণ করতেন, কেউ উক্ত বিষয়ে তাঁর বিপরীত বিশ্বাস করা। যেমন, শরিয়তের কোন হালাল বিষয়কে হারাম বলে বিশ্বাস করল অথবা স্বীকৃত কোন বিদ‘আতকে ওয়াজিব বলে বিশ্বাস করল।
﴿وَمَا آَتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾ [ الحشر : 7]
‘‘রাসূল তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’’ (সুরা হাশর: ০৭)
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন:
﴿مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا﴾ [ النساء : 80]
‘‘যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে প্রকারান্তরে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, আমি আপনাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি।’’ (সূরা নিসা: ৮০)
ইত্তেবার অর্থ: আভিধানিক অর্থে ইত্তেবা অর্থ হল; কারো পদচিহ্ন দেখে দেখে চলা।। এ শব্দটি অনুসরণ, অনুকরণ, মান্যকরণ, আদর্শজ্ঞান করণ ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
শরিয়তের পরিভাষায় ইত্তেবা:
দ্বীনের সকল বিষয় তথা ‘আক্বিদা-বিশ্বাস, কথা, কাজ, গ্রহণ- বর্জন সহ সর্বক্ষেত্রে রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করাকে ইত্তেবা বলে।
রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কাজটি যেভাবে করেছেন সেটি ঠিক সেভাবে করা। যেমন, রাসূল যে বিষয়কে ওয়াজিব হিসেবে বিশ্বাস করেছেন, আমাদেরকেও তা ওয়াজিব হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। সুন্নত, মুসতাহাব ও মাকরূহের ব্যাপারেও ঠিক তা-ই।
ইত্তেবার বিপরীত হল মুখালাফা:
ইত্তেবার বিপরীত হল মুখালাফা বা বিরোধিতা। এটিও বিশ্বাস, কথা- কর্ম ও গ্রহণ- বর্জন সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ই‘তেক্বাদ বা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিরোধিতা হল, কোন একটি বিষয়ে রাসূল যেরূপ বিশ্বাস পোষণ করতেন, কেউ উক্ত বিষয়ে তাঁর বিপরীত বিশ্বাস করা। যেমন, শরিয়তের কোন হালাল বিষয়কে হারাম বলে বিশ্বাস করল অথবা স্বীকৃত কোন বিদ‘আতকে ওয়াজিব বলে বিশ্বাস করল।
(১) ইত্তেবা ‘ইবাদত কবুলের শর্ত:
কোন ইবাদত কবুল হবে না যতক্ষণ না তাতে নবী আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পূর্ণ অনুসরণ পাওয়া যাবে এবং তাঁর আনীত শরীয়তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বরং রাসূলের অনুসরণ ব্যতীত কৃত ইবাদত দ্বারা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে দূরত্ব বাড়তেই থাকবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত তো তাঁর নির্দেশ অনুযায়ীই সম্পাদিত হতে হবে। নিজের খেয়াল খুশি মত নয়। রাসূল স. বলেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল যে ব্যাপারে আমাদের নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)
(২) ইত্তেবা ইসলামের দু’টি মৌলিক বিষয়ের একটি:
ইসলাম কবুল হওয়ার মৌলিক বিষয় দু’টি।
(ক) ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহকেই ইলাহ (মা’বুদ) হিসেবে গণ্য করে তাঁর ইবাদত করা।
(খ) মুহাম্মদ স. কে রাসূল হিসেবে মেনে নিয়ে তাঁর ইত্তেবা বা অনুসরণ করা। কোন ব্যক্তির ইসলাম ততক্ষণ পর্যন্ত প্রমাণিত হবে না এবং তার কোন কথা, আমল ও বিশ্বাস গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ না ইত্তেবা ও ইখলাসের বাস্তবায়ন ঘটবে এবং তদনুযায়ী আমল করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿فَمَنْ كَانَ يَرْجُوا لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا﴾ [ الكهف : 110]
‘‘যে ব্যক্তি তার পালন কর্তার সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার পালন কর্তার ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’’ (সুরা কাহফ: ১১০)
(৩) ইত্তেবা জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম:
রাসূল স. বলেন: অস্বীকারকারীগণ ব্যতীত আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অস্বীকারকারী কারা? তিনি বললেন: যারা আমার অনুসরণ করে তারা জান্নাতে যাবে আর যারা আমার বিরোধিতা করে তারাই অস্বীকারকারী। (বুখারি) উক্ত বাণী একথার প্রমাণ বহন করে যে, রাসূলের অনুসরণ ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া অসম্ভব।
(৪) রাসূলের আনুগত্য আল্লাহ তাআলার মুহববতের দলিল:
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾ [ آل عمران : 31]
(হে নবী!) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তাআলা ও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।’’ (আলে ইমরান: ৩১)
কতিপয় সালাফে সালেহীন বলেছেন, যখন রাসূল স. এর যুগে একদল লোক আল্লাহকে মুহববত করে বলে দাবি করল, তখন আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াত নাজিল করেন। আয়াতে আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট করে দিলেন যে, তাঁর মুহববত রাসূলের অনুসরণকে অপরিহার্য করে। আর রাসূল স. এর অনুসরণ বান্দার জন্যে আল্লাহর মুহববত অপরিহার্য করে। এখানে আল্লাহ তা’আলা মুহববতের দাবিদারদের পরীক্ষা নিলেন। যারা অনুসরণ করবে তাদের দাবি সত্য বলে বিবেচিত হবে। যারা অনুসরণ করবে না তারা মিথ্যাবাদী বলে পরিগণিত হবে।
(৫) ইত্তেবা রাসূল স. এর মুহববতের অন্যতম পন্থা:
আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর রাসূলকে মুহববত ওয়াজিব করে দিয়েছেন। হাদিসে এসেছ- তোমাদের কেউ মু’মিন বলে বিবেচিত হবে না যতক্ষণ না আমি তার নিকট স্বীয় পিতা, সন্তানসহ অন্যান্য সকল মানুষ অপেক্ষা বেশি প্রিয়ভাজন না হব। (বুখারি, মুসলিম)
রাসূলের এ মুহববত পরিপূর্ণ ইত্তেবা ব্যতীত হাসিল করা সম্ভব নয়।
(৬) ইত্তেবা মুমিনের অন্যতম অপরিহার্য গুণ:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾ [ النور : 51]
মু’মিনদের বক্তব্য এই যে, যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম এবং তারাই প্রকৃত সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ থেকে বেঁচে থাকে, তারাই কৃতকার্য। (সুরা নূর: ৫১)
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে রাসূলের আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর ইবাদত করার তাওফীক দান করুন। আমিন!
কোন ইবাদত কবুল হবে না যতক্ষণ না তাতে নবী আকরাম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পূর্ণ অনুসরণ পাওয়া যাবে এবং তাঁর আনীত শরীয়তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বরং রাসূলের অনুসরণ ব্যতীত কৃত ইবাদত দ্বারা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে দূরত্ব বাড়তেই থাকবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত তো তাঁর নির্দেশ অনুযায়ীই সম্পাদিত হতে হবে। নিজের খেয়াল খুশি মত নয়। রাসূল স. বলেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল যে ব্যাপারে আমাদের নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)
(২) ইত্তেবা ইসলামের দু’টি মৌলিক বিষয়ের একটি:
ইসলাম কবুল হওয়ার মৌলিক বিষয় দু’টি।
(ক) ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহকেই ইলাহ (মা’বুদ) হিসেবে গণ্য করে তাঁর ইবাদত করা।
(খ) মুহাম্মদ স. কে রাসূল হিসেবে মেনে নিয়ে তাঁর ইত্তেবা বা অনুসরণ করা। কোন ব্যক্তির ইসলাম ততক্ষণ পর্যন্ত প্রমাণিত হবে না এবং তার কোন কথা, আমল ও বিশ্বাস গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ না ইত্তেবা ও ইখলাসের বাস্তবায়ন ঘটবে এবং তদনুযায়ী আমল করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿فَمَنْ كَانَ يَرْجُوا لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا﴾ [ الكهف : 110]
‘‘যে ব্যক্তি তার পালন কর্তার সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার পালন কর্তার ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’’ (সুরা কাহফ: ১১০)
(৩) ইত্তেবা জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম:
রাসূল স. বলেন: অস্বীকারকারীগণ ব্যতীত আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অস্বীকারকারী কারা? তিনি বললেন: যারা আমার অনুসরণ করে তারা জান্নাতে যাবে আর যারা আমার বিরোধিতা করে তারাই অস্বীকারকারী। (বুখারি) উক্ত বাণী একথার প্রমাণ বহন করে যে, রাসূলের অনুসরণ ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া অসম্ভব।
(৪) রাসূলের আনুগত্য আল্লাহ তাআলার মুহববতের দলিল:
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾ [ آل عمران : 31]
(হে নবী!) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তাআলা ও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।’’ (আলে ইমরান: ৩১)
কতিপয় সালাফে সালেহীন বলেছেন, যখন রাসূল স. এর যুগে একদল লোক আল্লাহকে মুহববত করে বলে দাবি করল, তখন আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াত নাজিল করেন। আয়াতে আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট করে দিলেন যে, তাঁর মুহববত রাসূলের অনুসরণকে অপরিহার্য করে। আর রাসূল স. এর অনুসরণ বান্দার জন্যে আল্লাহর মুহববত অপরিহার্য করে। এখানে আল্লাহ তা’আলা মুহববতের দাবিদারদের পরীক্ষা নিলেন। যারা অনুসরণ করবে তাদের দাবি সত্য বলে বিবেচিত হবে। যারা অনুসরণ করবে না তারা মিথ্যাবাদী বলে পরিগণিত হবে।
(৫) ইত্তেবা রাসূল স. এর মুহববতের অন্যতম পন্থা:
আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর রাসূলকে মুহববত ওয়াজিব করে দিয়েছেন। হাদিসে এসেছ- তোমাদের কেউ মু’মিন বলে বিবেচিত হবে না যতক্ষণ না আমি তার নিকট স্বীয় পিতা, সন্তানসহ অন্যান্য সকল মানুষ অপেক্ষা বেশি প্রিয়ভাজন না হব। (বুখারি, মুসলিম)
রাসূলের এ মুহববত পরিপূর্ণ ইত্তেবা ব্যতীত হাসিল করা সম্ভব নয়।
(৬) ইত্তেবা মুমিনের অন্যতম অপরিহার্য গুণ:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾ [ النور : 51]
মু’মিনদের বক্তব্য এই যে, যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম এবং তারাই প্রকৃত সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ থেকে বেঁচে থাকে, তারাই কৃতকার্য। (সুরা নূর: ৫১)
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে রাসূলের আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর ইবাদত করার তাওফীক দান করুন। আমিন!
সংজ্ঞা: যে আক্বীদাহ বা আমল আল্লাহ ও তদীয় রাসূল স. দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করেননি এবং নির্দেশ দেননি, সেই ধরনের বিশ্বাস বা কাজকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করা এবং এর অঙ্গ বলে সাব্যস্ত করা, এহেন কর্ম আল্লাহ নৈকট্য লাভের উপায় মনে করে করার নাম বেদআত। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
﴿وَمَا آَتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾ [ الحشر : 7]
‘‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’’ (সূরা হাশর: ৭)
নবী স. বলেন: যে ব্যক্তি এমন আমল করে যার ব্যাপারে আমার নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারি, মুসলিম)
তিনি অন্য এক হাদিসে বলেন: ‘‘তোমাদের উপর আমার সুন্নাত ও আমার পরবর্তী খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত আঁকড়ে ধরা অপরিহার্য এবং তা দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরবে। মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে। সাবধান! কখনও দ্বীনে নব প্রবর্তিত কোন বিষয় স্থান দেবে না। কেননা দ্বীনের ব্যাপারে প্রত্যেক নব আবিষ্কারই বেদআত এবং প্রত্যেক বেদআতই ভ্রষ্টতা। উল্লেখিত হাদিসসমূহে বেদআত প্রবর্তনের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্ক বাণী উচ্চারণ করা হয়েছে এবং উম্মতকে এর ভয়াবহতা ও কুফল সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে।
﴿وَمَا آَتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾ [ الحشر : 7]
‘‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’’ (সূরা হাশর: ৭)
নবী স. বলেন: যে ব্যক্তি এমন আমল করে যার ব্যাপারে আমার নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারি, মুসলিম)
তিনি অন্য এক হাদিসে বলেন: ‘‘তোমাদের উপর আমার সুন্নাত ও আমার পরবর্তী খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত আঁকড়ে ধরা অপরিহার্য এবং তা দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরবে। মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে। সাবধান! কখনও দ্বীনে নব প্রবর্তিত কোন বিষয় স্থান দেবে না। কেননা দ্বীনের ব্যাপারে প্রত্যেক নব আবিষ্কারই বেদআত এবং প্রত্যেক বেদআতই ভ্রষ্টতা। উল্লেখিত হাদিসসমূহে বেদআত প্রবর্তনের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্ক বাণী উচ্চারণ করা হয়েছে এবং উম্মতকে এর ভয়াবহতা ও কুফল সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে।
নিম্নে বিদ‘আতের কতিপয় অপকারিতা ও কুফল নিয়ে আলোচনা করা হল।
বেদআত মানুষকে পথভ্রষ্ট করে।
বেদ‘আত রাসূল স. এর আনুগত্য থেকে মানুষকে বের করে দেয় ও সুন্নাহর বিলুপ্তি ঘটায়।
বেদআত আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করে।
বেদআত ইসলামের উপর একটি আঘাত।
বেদআত রাসূল স. এর বিরুদ্ধে খিয়ানতের এক ধরনের অভিযোগ।
বেদআত মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করে ও ঐক্য- সংহতিতে আঘাত হানে।
বেদআতীর তাওবা করার সুযোগ হয় না।
বেদআত প্রচলনকারী রাসূলে করিম স. এর সুপারিশ পাবে না।
বেদআত মুসলিম সমাজে কুরআন ও হাদিসের গুরুত্ব কমিয়ে দেয়।
বেদআত প্রচলনকারী অহংকারের দোষে দুষ্ট হয়ে পড়ে ও নিজেদের ব্যবসায়ী স্বার্থে দ্বীনকে ব্যবহার ও বিকৃত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে।
মোট কথা, বেদআত বা নতুন কোন প্রথার সংযোজন মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল স. এর বিধানের সুস্পষ্ট বিরোধিতা।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآَخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : 21]
‘‘প্রকৃতপক্ষে তোমাদের মধ্যে যারা পরকালের আশা রাখে এবং আল্লাহকে খুব বেশি করে স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’’ (সূরা আহযাব: ২১)
অতএব, পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে আমাদের জীবন গড়া অত্যাবশ্যক এবং বেদআত থেকে দূরে থাকা ঈমানের দাবি ও একান্ত প্রয়োজন।
বেদআত মানুষকে পথভ্রষ্ট করে।
বেদ‘আত রাসূল স. এর আনুগত্য থেকে মানুষকে বের করে দেয় ও সুন্নাহর বিলুপ্তি ঘটায়।
বেদআত আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করে।
বেদআত ইসলামের উপর একটি আঘাত।
বেদআত রাসূল স. এর বিরুদ্ধে খিয়ানতের এক ধরনের অভিযোগ।
বেদআত মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করে ও ঐক্য- সংহতিতে আঘাত হানে।
বেদআতীর তাওবা করার সুযোগ হয় না।
বেদআত প্রচলনকারী রাসূলে করিম স. এর সুপারিশ পাবে না।
বেদআত মুসলিম সমাজে কুরআন ও হাদিসের গুরুত্ব কমিয়ে দেয়।
বেদআত প্রচলনকারী অহংকারের দোষে দুষ্ট হয়ে পড়ে ও নিজেদের ব্যবসায়ী স্বার্থে দ্বীনকে ব্যবহার ও বিকৃত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে।
মোট কথা, বেদআত বা নতুন কোন প্রথার সংযোজন মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল স. এর বিধানের সুস্পষ্ট বিরোধিতা।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآَخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : 21]
‘‘প্রকৃতপক্ষে তোমাদের মধ্যে যারা পরকালের আশা রাখে এবং আল্লাহকে খুব বেশি করে স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’’ (সূরা আহযাব: ২১)
অতএব, পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে আমাদের জীবন গড়া অত্যাবশ্যক এবং বেদআত থেকে দূরে থাকা ঈমানের দাবি ও একান্ত প্রয়োজন।
মানুষের সাথে আত্মার সম্পর্ক সুগভীর। শুধু তাই নয়, মানবতার বিকাশে আত্মার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আল্লাহ রাববুল আলামিন ক্বলব বা আত্মার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। সমস্ত নবী- রাসূল এবং আসমানি কিতাবসমূহের একমাত্র মিশনই হল মানবাত্মার সংশোধন। আত্মার সংশোধন শুধু একজন মানুষের জন্যেই নয়, বরং ইহকালীন জীবনের শান্তি শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধি এর উপর নির্ভরশীল।
রাসূল স. বলেন: ‘‘নিশ্চয় প্রত্যেক দেহে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে যখন সেটি ঠিক হয়ে যায়, তখন দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক হয়ে যায়। আর যদি তা নষ্ট হয় তাহলে সমস্ত অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যায়। আর সিট হল ক্বলব বা মানবাত্মা।’’
আবু হুরাইরা রাস. বলেন: ‘‘আত্মা হল শাসক, আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হল তার প্রজা। যখন শাসক ভাল হয় তার প্রজারাও ভাল হয় আর যখন শাসক খারাপ হয় তখন তার প্রজারাও খারাপ হয়।’’
সুতরাং আত্মাই হল মানুষের চালিকাশক্তি ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নিয়ন্ত্রক। আত্মার ওপর নির্ভর করে মানুষের ইহকালীন এবং পরকালীন কল্যাণ ও সফলতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ (88) إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ﴾ [ الشعراء : 88، 89]
যে দিবসে ধন- সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না কিন্তু সেইদিন সেই উপকৃত হবে যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে।’’ (সুরা শুআরা:৮৮,৮৯)
রাসূল স. বলেন: ‘‘নিশ্চয় প্রত্যেক দেহে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে যখন সেটি ঠিক হয়ে যায়, তখন দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক হয়ে যায়। আর যদি তা নষ্ট হয় তাহলে সমস্ত অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যায়। আর সিট হল ক্বলব বা মানবাত্মা।’’
আবু হুরাইরা রাস. বলেন: ‘‘আত্মা হল শাসক, আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হল তার প্রজা। যখন শাসক ভাল হয় তার প্রজারাও ভাল হয় আর যখন শাসক খারাপ হয় তখন তার প্রজারাও খারাপ হয়।’’
সুতরাং আত্মাই হল মানুষের চালিকাশক্তি ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নিয়ন্ত্রক। আত্মার ওপর নির্ভর করে মানুষের ইহকালীন এবং পরকালীন কল্যাণ ও সফলতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ (88) إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ﴾ [ الشعراء : 88، 89]
যে দিবসে ধন- সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না কিন্তু সেইদিন সেই উপকৃত হবে যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে।’’ (সুরা শুআরা:৮৮,৮৯)
মানুষের সাথে সীমাতিরিক্ত মেলামেশা :
মানুষের সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেলামেশা মানুষের আত্মার জন্য ক্ষতিকরণ। এর ফলে জাগতিক কথাবার্তা, অধিক হাসি-ঠাট্টা, খেল-তামাশা, সমালোচনা, মিথ্যা, অপবাদ ইত্যাদি সংঘটিত হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿الْأَخِلَّاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا الْمُتَّقِينَ﴾ [ الزخرف : 67]
‘‘সেদিন বন্ধুবর্গ একে অপরের শত্রু হবে, তবে আল্লাহ ভীরুরা নয়।’’ (সুরা যুখরুফ: ৬৭)
অনর্থক কথা বলা :
অতিরিক্ত কথার কারণে মানবাত্মা দুর্বল হয় এবং গুনাহের প্রবণতা বাড়তে থাকে। রাসূল স. বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (বুখারি, মুসলিম)
অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ :
অধিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করা মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকরণ। এতে মানুষের কুপ্রবৃত্তির চাহিদা বেড়ে যায় এবং শয়তানি আত্মার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। ফলে অন্যায় প্রতিরোধের ইচ্ছা দুর্বল হয়ে যায়। পক্ষান্তরে কম খাদ্য গ্রহণ করার দ্বারা আত্মা নরম হয় এবং নফ্সের কার্যক্ষমতা দুর্বল হয়। রাসূল স. বলেন, ‘‘মানুষ তার উদরের চেয়ে অধিক খারাপ আর কোন পাত্রকে পূর্ণ করে না। বনী আদমের জন্য কয়েক লোকমাই যথেষ্ট যা দ্বারা সে তার মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে।’’ (তিরমিজি)
খারাপ বস্ত্তর দিকে অধিক দৃষ্টিপাত :
অনর্থক দৃষ্টি মানবাত্মার জন্য হুমকি স্বরূপ। দৃষ্টিই সকল গুনাহের প্রাথমিক স্তর। রাসূল স. বলেন, দৃষ্টি শয়তানের তীর। যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিকে নিচু করে রাখে আল্লাহ তার অন্তরে এমন নূর দান করবেন, যার স্বাদ সে সর্বদা অনুভব করবে।
অতিরিক্ত নিদ্রা:
অধিক ঘুমের কারণে মানবাত্মার মৃত্যু ঘটে। দেহ ভারী হয়ে কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, সময়ের অপচয় হয় এবং অলসতা ও অমনোযোগিতা বাড়তে থাকে।
অধিক আশা :
আশা এমন এক সমুদ্র যার কোন কুল কিনারা নেই। মানুষের অন্তরে হাজারও আশার জন্ম হয়। এর মধ্যে মানুষ হাবুডুবু খেতে থাকে। একমাত্র মৃত্যুই তার আশার সমাপ্তি ঘটাতে পারে।
গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন :
গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন অন্তরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকরণ। গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা মানেই হল আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং মহৎ উদ্দেশ্য হাসিল করা থেকে বাদ পড়া। আল্লাহ বলেন, ‘‘তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করেছে, যাতে করে ওরা তাদের সাহায্যকারী হয়। কখনই নয়। অচিরেই ওরা (উপাস্যরা) তাদের ইবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষে চলে আসবে।’’
মানুষের সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেলামেশা মানুষের আত্মার জন্য ক্ষতিকরণ। এর ফলে জাগতিক কথাবার্তা, অধিক হাসি-ঠাট্টা, খেল-তামাশা, সমালোচনা, মিথ্যা, অপবাদ ইত্যাদি সংঘটিত হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿الْأَخِلَّاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا الْمُتَّقِينَ﴾ [ الزخرف : 67]
‘‘সেদিন বন্ধুবর্গ একে অপরের শত্রু হবে, তবে আল্লাহ ভীরুরা নয়।’’ (সুরা যুখরুফ: ৬৭)
অনর্থক কথা বলা :
অতিরিক্ত কথার কারণে মানবাত্মা দুর্বল হয় এবং গুনাহের প্রবণতা বাড়তে থাকে। রাসূল স. বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (বুখারি, মুসলিম)
অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ :
অধিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করা মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকরণ। এতে মানুষের কুপ্রবৃত্তির চাহিদা বেড়ে যায় এবং শয়তানি আত্মার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। ফলে অন্যায় প্রতিরোধের ইচ্ছা দুর্বল হয়ে যায়। পক্ষান্তরে কম খাদ্য গ্রহণ করার দ্বারা আত্মা নরম হয় এবং নফ্সের কার্যক্ষমতা দুর্বল হয়। রাসূল স. বলেন, ‘‘মানুষ তার উদরের চেয়ে অধিক খারাপ আর কোন পাত্রকে পূর্ণ করে না। বনী আদমের জন্য কয়েক লোকমাই যথেষ্ট যা দ্বারা সে তার মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে।’’ (তিরমিজি)
খারাপ বস্ত্তর দিকে অধিক দৃষ্টিপাত :
অনর্থক দৃষ্টি মানবাত্মার জন্য হুমকি স্বরূপ। দৃষ্টিই সকল গুনাহের প্রাথমিক স্তর। রাসূল স. বলেন, দৃষ্টি শয়তানের তীর। যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিকে নিচু করে রাখে আল্লাহ তার অন্তরে এমন নূর দান করবেন, যার স্বাদ সে সর্বদা অনুভব করবে।
অতিরিক্ত নিদ্রা:
অধিক ঘুমের কারণে মানবাত্মার মৃত্যু ঘটে। দেহ ভারী হয়ে কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, সময়ের অপচয় হয় এবং অলসতা ও অমনোযোগিতা বাড়তে থাকে।
অধিক আশা :
আশা এমন এক সমুদ্র যার কোন কুল কিনারা নেই। মানুষের অন্তরে হাজারও আশার জন্ম হয়। এর মধ্যে মানুষ হাবুডুবু খেতে থাকে। একমাত্র মৃত্যুই তার আশার সমাপ্তি ঘটাতে পারে।
গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন :
গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন অন্তরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকরণ। গাইরুল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা মানেই হল আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং মহৎ উদ্দেশ্য হাসিল করা থেকে বাদ পড়া। আল্লাহ বলেন, ‘‘তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করেছে, যাতে করে ওরা তাদের সাহায্যকারী হয়। কখনই নয়। অচিরেই ওরা (উপাস্যরা) তাদের ইবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষে চলে আসবে।’’
ইসমালী বিধি-বিধান, রীতি-নীতি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা এবং কুরআন ও সহিহ্ হাদিসের আলোকে সঠিক আকীদা শিক্ষা লাভ করা আমাদের উপর ফরজ। এর বিপরীত পথ অবলম্বন করা ভ্রষ্টতা। ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়ের কারণে মানুষ শিরক ও কুফর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বরং এর মাধ্যমে মানুষ মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে যায়। যা একজন মুসলমানের জন্য চরম দুর্ভাগ্য ও পরিতাপের বিষয়। তাই নীচে অতি সংক্ষিপ্তাকারে ইসলাম বিনষ্টকারী কতিপয় বিষয় তুলে ধরা হল:
আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করা:
আল্লাহ বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁর সাথে শরিক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। এতদ্ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ ও বান্দার মাখে মধ্যস্থতা স্থাপন করা:
যে ব্যক্তি তার ও আল্লাহর মাঝে কোন মধ্যস্থতাকারী স্থাপন করে তাকে ডাকে, অথবা তার নিকট দু‘আ করে অথবা তার কাছে সুপারিশ প্রার্থনা করে, তার উপর ভরসা করে সে ব্যক্তি কুফরি করল। আল্লাহ বলেন:
﴿وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ﴾ [ يونس : 18]
‘আর তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্ত্তসমূহের যেগুলো না তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে; আর না উপকার করতে পারে।’ (সুরা ইউনুস: ১৮)
অমুসলিমদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ করা :
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপনকারী মুশরিকদের কাফের মনে না করে বা তাদের কুফরের ব্যাপারে সন্দেহ করে অথবা তাদের ধর্মীয় মতাদর্শকে সঠিক বলে বিশ্বাস করে, সে কাফের হয়ে যায়। কাফেরদের ব্যাপারে মুসলিমদের বিশ্বাস কি হওয়া উচিত সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
﴿إِنَّا بُرَآَءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّى تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ﴾ [ الممتحنة : 4]
‘‘তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের প্রত্যাখ্যান করি। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হলো শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য যদি না তোমরা এক আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন কর। (সূরা মুমতাহিনাঃ ৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শের চেয়ে অন্য আদর্শকে উত্তম বা সম পর্যায়ের মনে করা :
যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস করে যে, নবী করিম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ থেকে অন্য মতাদর্শ অধিক উপযোগী বা সমপর্যায়ভূক্ত এবং অন্যদের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা নবীর বিচার ও শাসন ব্যবস্থা থেকে উত্তম বা সম পর্যায়ের সে ব্যক্তি কাফের।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন.
﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾ [ النساء : 65]
‘‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তাদের মাঝে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ফয়সালা প্রদানকারী মনে করে। অতঃপর তোমরা মীমাংসার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন রকম সংকীর্ণতা অনুভব না করে এবং তা সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করে নিবে।’’ (সুরা নিসা : ৬৫)
রাসূলের পক্ষ থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত বিধানকে অপছন্দ করা:
যে ব্যক্তি নবী করিম স. এর আদর্শের কোন একটিকে অপছন্দ অথবা ঘৃণা করল সে কাফের হয়ে গেল, যদিও সে ঐ আদর্শ অনুযায়ী আমল করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ﴾ [ محمد : 9]
‘‘এটা এজন্য যে, আল্লাহ তা‘আলা নাজিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের সৎকর্ম বিনষ্ট করে দিলেন।’’ (সুরা মুহাম্মদ: ৯)
ইসলামের কোন একটি বিষয় নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করা :
যে ব্যক্তি রাসূল স. এর দ্বীনের কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করল অথবা তার সওয়াব নিয়ে উপহাস করল, সেও কুফরি করল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قُلْ أَبِاللَّهِ وَآَيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ (65) لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ﴾ [ التوبة : 65، 66]
‘‘হে নবী! আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ তাঁর আয়াত এবং তদীয় রাসূলের সাথে ঠাট্টা করেছিলে? ছলনা করনা, তোমরা ঈমান প্রকাশ করার পর কফের হয়ে গিয়েছ। (সুরা তাওবা: ৬৫-৬৬)
জাদু ও গণকের আশ্রয় নেয়া : যে ব্যক্তি জাদু জাতীয় কাজ করবে এবং তা পছন্দ করবে, এর উপর সন্তুষ্ট থাকবে তার এ কাজ কুফরি বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ﴾ [ البقرة : 102]
‘‘তারা (হারূত ও মারূত) এ কথা না বলে কাউকেই জাদু শিক্ষা দিত না যে, আমরা (যা করছি তা) পরীক্ষা স্বরূপ। কাজেই তুমি কুফরি করো না। (সূরা বাকারাহ: ১০৭)
এ আয়াতে জাদু শিক্ষা করাকে কুফরি বলা হয়েছে। যারা তা শিখবে, পছন্দ করবে বা তদনুযায়ী আমল করবে তারা কাফের হয়ে যাবে।
মুসলমানদের বিপক্ষে ইহুদি খৃষ্টান ও কাফেরদের সাহায্য করা : মুসলমানদের বিপক্ষে মুশরিক ও কাফেরদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করা, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা কুফরি। যারা এরূপ করে তারা কাফের হয়ে যায়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾ [ المائدة : 51]
‘তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা জালিমদেরকে হেদায়াত করেন না।’’ (মায়েদাহ-৫১)
নিজেকে শরয়ি বিধান পালনের উর্ধে মনে করা:
যারা এ ধারণা পোষণ করে যে, কোন কোন লোকের জন্য শরিয়ত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগ আছে অর্থাৎ তাদের জন্য ইসলামী
বিধি বিধান মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নেই, তারা কাফের। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾ [ آل عمران : 85]
‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছুকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করতে চায়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’’ (আলে ইমরানঃ ৮৫)
ইসলাম জীবন- পদ্ধতি থেকে বিমুখ হওয়া :
যে ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন বর্জন করল, তা থেকে বিমুখ হল এবং তা পালন ও শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত হল বস্ত্তত : সে কুফরি করল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآَيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنْتَقِمُونَ﴾ [ السجدة : 22]
‘‘যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াত সমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার চেয়ে বড় জালিম আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করব।’’ (সাজদাহ:২২)
উপরের আলোচনা থেকে আমরা ইসলাম বিনষ্টকারী যে সকল কারণ ও তার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারলাম তা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ঈমান রক্ষার জন্য আমাদের একমাত্র কুরআন ও সহীহ হাদিস অনুযায়ী আমল করতে হবে। সাথে সাথে সব ধরনের শিরক বিদ‘আত, কুফরি এবং ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহ থেকে সম্পূর্ণ দুরে থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম বিনষ্টকারী শিরক ও কুফরি কাজ থেকে বিরত থাকার তওফীক দান করুন। আমিন!
আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করা:
আল্লাহ বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁর সাথে শরিক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। এতদ্ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ ও বান্দার মাখে মধ্যস্থতা স্থাপন করা:
যে ব্যক্তি তার ও আল্লাহর মাঝে কোন মধ্যস্থতাকারী স্থাপন করে তাকে ডাকে, অথবা তার নিকট দু‘আ করে অথবা তার কাছে সুপারিশ প্রার্থনা করে, তার উপর ভরসা করে সে ব্যক্তি কুফরি করল। আল্লাহ বলেন:
﴿وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ﴾ [ يونس : 18]
‘আর তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্ত্তসমূহের যেগুলো না তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে; আর না উপকার করতে পারে।’ (সুরা ইউনুস: ১৮)
অমুসলিমদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ করা :
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপনকারী মুশরিকদের কাফের মনে না করে বা তাদের কুফরের ব্যাপারে সন্দেহ করে অথবা তাদের ধর্মীয় মতাদর্শকে সঠিক বলে বিশ্বাস করে, সে কাফের হয়ে যায়। কাফেরদের ব্যাপারে মুসলিমদের বিশ্বাস কি হওয়া উচিত সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
﴿إِنَّا بُرَآَءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّى تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ﴾ [ الممتحنة : 4]
‘‘তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের প্রত্যাখ্যান করি। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হলো শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য যদি না তোমরা এক আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন কর। (সূরা মুমতাহিনাঃ ৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শের চেয়ে অন্য আদর্শকে উত্তম বা সম পর্যায়ের মনে করা :
যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস করে যে, নবী করিম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ থেকে অন্য মতাদর্শ অধিক উপযোগী বা সমপর্যায়ভূক্ত এবং অন্যদের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা নবীর বিচার ও শাসন ব্যবস্থা থেকে উত্তম বা সম পর্যায়ের সে ব্যক্তি কাফের।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন.
﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾ [ النساء : 65]
‘‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তাদের মাঝে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ফয়সালা প্রদানকারী মনে করে। অতঃপর তোমরা মীমাংসার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন রকম সংকীর্ণতা অনুভব না করে এবং তা সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করে নিবে।’’ (সুরা নিসা : ৬৫)
রাসূলের পক্ষ থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত বিধানকে অপছন্দ করা:
যে ব্যক্তি নবী করিম স. এর আদর্শের কোন একটিকে অপছন্দ অথবা ঘৃণা করল সে কাফের হয়ে গেল, যদিও সে ঐ আদর্শ অনুযায়ী আমল করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ﴾ [ محمد : 9]
‘‘এটা এজন্য যে, আল্লাহ তা‘আলা নাজিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের সৎকর্ম বিনষ্ট করে দিলেন।’’ (সুরা মুহাম্মদ: ৯)
ইসলামের কোন একটি বিষয় নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করা :
যে ব্যক্তি রাসূল স. এর দ্বীনের কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করল অথবা তার সওয়াব নিয়ে উপহাস করল, সেও কুফরি করল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قُلْ أَبِاللَّهِ وَآَيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ (65) لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ﴾ [ التوبة : 65، 66]
‘‘হে নবী! আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ তাঁর আয়াত এবং তদীয় রাসূলের সাথে ঠাট্টা করেছিলে? ছলনা করনা, তোমরা ঈমান প্রকাশ করার পর কফের হয়ে গিয়েছ। (সুরা তাওবা: ৬৫-৬৬)
জাদু ও গণকের আশ্রয় নেয়া : যে ব্যক্তি জাদু জাতীয় কাজ করবে এবং তা পছন্দ করবে, এর উপর সন্তুষ্ট থাকবে তার এ কাজ কুফরি বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ﴾ [ البقرة : 102]
‘‘তারা (হারূত ও মারূত) এ কথা না বলে কাউকেই জাদু শিক্ষা দিত না যে, আমরা (যা করছি তা) পরীক্ষা স্বরূপ। কাজেই তুমি কুফরি করো না। (সূরা বাকারাহ: ১০৭)
এ আয়াতে জাদু শিক্ষা করাকে কুফরি বলা হয়েছে। যারা তা শিখবে, পছন্দ করবে বা তদনুযায়ী আমল করবে তারা কাফের হয়ে যাবে।
মুসলমানদের বিপক্ষে ইহুদি খৃষ্টান ও কাফেরদের সাহায্য করা : মুসলমানদের বিপক্ষে মুশরিক ও কাফেরদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করা, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা কুফরি। যারা এরূপ করে তারা কাফের হয়ে যায়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾ [ المائدة : 51]
‘তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা জালিমদেরকে হেদায়াত করেন না।’’ (মায়েদাহ-৫১)
নিজেকে শরয়ি বিধান পালনের উর্ধে মনে করা:
যারা এ ধারণা পোষণ করে যে, কোন কোন লোকের জন্য শরিয়ত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগ আছে অর্থাৎ তাদের জন্য ইসলামী
বিধি বিধান মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নেই, তারা কাফের। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾ [ آل عمران : 85]
‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছুকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করতে চায়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’’ (আলে ইমরানঃ ৮৫)
ইসলাম জীবন- পদ্ধতি থেকে বিমুখ হওয়া :
যে ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন বর্জন করল, তা থেকে বিমুখ হল এবং তা পালন ও শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত হল বস্ত্তত : সে কুফরি করল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآَيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنْتَقِمُونَ﴾ [ السجدة : 22]
‘‘যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াত সমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার চেয়ে বড় জালিম আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করব।’’ (সাজদাহ:২২)
উপরের আলোচনা থেকে আমরা ইসলাম বিনষ্টকারী যে সকল কারণ ও তার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারলাম তা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ঈমান রক্ষার জন্য আমাদের একমাত্র কুরআন ও সহীহ হাদিস অনুযায়ী আমল করতে হবে। সাথে সাথে সব ধরনের শিরক বিদ‘আত, কুফরি এবং ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহ থেকে সম্পূর্ণ দুরে থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম বিনষ্টকারী শিরক ও কুফরি কাজ থেকে বিরত থাকার তওফীক দান করুন। আমিন!
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন