hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম একমাত্র পরিপূর্ণ দীন

লেখকঃ মুহাম্মাদ আল-আমীন ইবন মুহাম্মাদ আল-মুখতার আশ্‌-শানকীতী

দ্বিতীয় মাসআলা: উপদেশ প্রসঙ্গে
সকল বিজ্ঞজন একমত পোষণ করেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা আকাশ থেকে পৃথিবীতে ‘পর্যবেক্ষণ ও জ্ঞান’ এ দু’টি উপদেশের চেয়ে বড় কোনো উপদেষ্টা ও ধমকদাতা প্রেরণ করেন নি। আর তা হচ্ছে এই যে, মানুষ এ-কথা খেয়াল রাখবে যে তাঁর সম্মানিত ও মহান প্রতিপালক তাকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং সে যা কিছু গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি সে সম্পর্কে জানেন।

আলিমগণ এই বড় উপদেষ্টা ও মহা ধমকদাতার জন্য এমন দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন, যার দ্বারা বোধগম্য জিনিস অনুভবযোগ্য জিনিসের মতো হয়ে যায়। তারা বলেন, যদি আমরা একজন বাদশাহকে ধরে নিই, যে বাদশাহ অত্যধিক রক্তপাতকারী, মানুষ হত্যাকারী এবং প্রচণ্ড আক্রমণকারী ও শাস্তিদাতা, আর তার জল্লাদ তার মাথার উপরে দাঁড়ানো এবং চামড়ার বিছানা [ النطع শব্দের অর্থ- চামড়ার বিছানা, যা অপরাধীদেরকে হত্যা করার জন্য বিছানো হয়। - অনুবাদক।] বিছানো, তরবারিটি থেকে রক্ত ঝরছে এবং ঐ বাদশার চারপাশে তার কন্যা ও স্ত্রীগণ; এমন ভয়ঙ্কর অবস্থায়, বাদশাহের চোখের সামনে ও তার উপস্থিতিতে উপস্থিত কোনো দর্শক কি ঐ বাদশার কন্যা ও স্ত্রীগণের নিকট থেকে অবৈধ কিছু অর্জনের চিন্তা করবে?! না, কখনও না! (আর আল্লাহর জন্য রয়েছে যাবতীয় মহত্তম দৃষ্টান্তসমূহ।) বরং তখন প্রত্যেক উপস্থিত ব্যক্তি হবে ভীত-সন্ত্রস্ত, তাদের হৃদয়সমূহ হবে অবনত, তাদের চক্ষুসমূহ হবে আতঙ্কগ্রস্ত, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো হবে হিম শীতল, তাদের চূড়ান্ত আশা হবে নিরাপদে প্রত্যাবর্তন। আর এতেও কোনো সন্দেহ নেই যে, (আর আল্লাহর জন্য রয়েছে মহত্তম দৃষ্টান্ত) আল্লাহ তা‘আলা হলেন মহাজ্ঞানী, ঐ বাদশার চেয়ে অধিক ও বিস্তৃত জ্ঞানের অধিকারী; সন্দেহ নেই যে, তিনি মহান শাস্তিদাতা, প্রচণ্ড শক্তিশালী ও কঠিন শাস্তিদাতা। তাঁর জমিনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হচ্ছে তাঁর নিষেধসমূহ।

এমনিভাবে যদি কোনো শহরবাসী জানে যে, শহরের আমীর বা শাসক তারা রাতের বেলায় যেসব কাজ করে তার সব কিছুই জানতে পারেন, তবে তারা আতঙ্কিত অবস্থায় রাত্রিযাপন করবে এবং তার ভয়ে তারা সকল প্রকার অন্যায় ও অপকর্ম পরিত্যাগ করবে।

আর আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিকুলকে যে হেকমত বা রহস্যের কারণে সৃষ্টি করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন; তা হলো তাদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাছাই-বাছাই করা। যেমন, তিনি বলেছেন:

﴿إِنَّا جَعَلۡنَا مَا عَلَى ٱلۡأَرۡضِ زِينَةٗ لَّهَا لِنَبۡلُوَهُمۡ أَيُّهُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗا ٧﴾ [ سُورَةُ الكهف : 7]

“পৃথিবীর উপর যা কিছু আছে আমরা সেগুলোকে তার শোভা করেছি মানুষকে এই পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ।” [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৭] তিনি সূরা হুদের প্রথম দিকে বলেন,

﴿وَهُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ وَكَانَ عَرۡشُهُۥ عَلَى ٱلۡمَآءِ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗا﴾ [ سُورَةُ هود : 7]

“আর তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, তখন তাঁর আরশ ছিল পানির উপর, তোমাদের মধ্যে কাজে-কর্মে কে শ্রেষ্ঠ তা পরীক্ষা করার জন্য।” [সূরা হুদ, আয়াত: ৭] তিনি বলেন নি: তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে বেশি আমলকারী!

তিনি সূরা আল-মুলকের মধ্যে বলেন,

﴿ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلۡمَوۡتَ وَٱلۡحَيَوٰةَ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡغَفُورُ ٢ ﴾ [ سُورَةُ الملك : 2]

“যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য- কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম। আর তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।” [সূরা আল-মুলক, আয়াত: ২]

এই আয়াত দু‘টি তাঁর নিম্নোক্ত বাণীর উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য বর্ণনা করে। যেমন তিনি বলেন,

﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [ سُورَةُ الذاريات : 56]

“আমি সৃষ্টি করেছি জিন্ন এবং মানুষকে এজন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]

যেহেতু সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করার হেকমত তথা রহস্য হলো উল্লেখিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাছাই-বাছাই করা, সেহেতু জিবরীল আলাইহিস সালাম মানুষের জন্য এই পরীক্ষায় সফলকাম হওয়ার পদ্ধতি বর্ণনা করে দিতে চাইলেন, তাই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন: আপনি আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলে দিন? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্পষ্ট করেন যে, এখানে আলোচিত এই শ্রেষ্ঠ ধমকদাতা ও মহা উপদেষ্টাই হচ্ছে ইহসানের পথ। তিনি বলেন,

«هو أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ» .

“ইহসান হচ্ছে, তুমি আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করবে যেন তুমি তাঁকে দেখছ; আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তাহলে মনে করবে, তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন।” [ইমাম বুখারী ও মুসলিম আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন: সহীহ বুখারী, ঈমান অধ্যায় ( كتاب الإيمان ), পরিচ্ছেদ: জিবরীল আলাইহিস সালাম কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঈমান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা ( باب سؤال جبريل النبي صلى الله عليه عن الإيمان ) (১/১৮); সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায় ( كتاب الإيمان ), (১/৩৯), হাদীস নং ৯; আর ইমাম মুসলিম এই হাদীসখানা উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেও বর্ণনা করেছেন, ঈমান অধ্যায় ( كتاب الإيمان ), (১/৩৬), হাদীস নং ৮।] এ জন্যই আপনি পবিত্র কুরআনুল কারীমের প্রতি পৃষ্ঠায় এই মহান উপদেষ্টাকে দেখতে পাবেন। যেমন,

﴿وَلَقَدۡ خَلَقۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ وَنَعۡلَمُ مَا تُوَسۡوِسُ بِهِۦ نَفۡسُهُۥۖ وَنَحۡنُ أَقۡرَبُ إِلَيۡهِ مِنۡ حَبۡلِ ٱلۡوَرِيدِ ١٦ .... مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨﴾ [ سُورَةُ ق : 16 و 18]

“আমরাই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তা আমরা জানি। আর আমরা তার গ্রীবাস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটতর।...মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।” [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৬-১৮]

﴿فَلَنَقُصَّنَّ عَلَيۡهِم بِعِلۡمٖۖ وَمَا كُنَّا غَآئِبِينَ ٧﴾ [ سُورَةُ الأعراف : 7]

“অতঃপর তাদের নিকট পূর্ণ জ্ঞানের সাথে তাদের কার্যাবলী বর্ণনা করবই, আর আমরা তো অনুপস্থিত ছিলাম না”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৭]

﴿وَمَا تَكُونُ فِي شَأۡنٖ وَمَا تَتۡلُواْ مِنۡهُ مِن قُرۡءَانٖ وَلَا تَعۡمَلُونَ مِنۡ عَمَلٍ إِلَّا كُنَّا عَلَيۡكُمۡ شُهُودًا إِذۡ تُفِيضُونَ فِيهِۚ وَمَا يَعۡزُبُ عَن رَّبِّكَ مِن مِّثۡقَالِ ذَرَّةٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَلَا فِي ٱلسَّمَآءِ وَلَآ أَصۡغَرَ مِن ذَٰلِكَ وَلَآ أَكۡبَرَ إِلَّا فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٍ ٦١﴾ [ سُورَةُ يونس : 61]

“তুমি যে কোনো অবস্থায় থাক এবং তুমি তৎসম্পর্কে কুরআন থেকে যা তিলাওয়াত কর এবং তোমরা যে কোনো কাজ কর, আমি তার পরিদর্শক- যখন তোমরা তাতে প্রবৃত্ত হও। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অণু পরিমাণও তোমার রবের অগোচর নয় এবং তা অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর অথবা বৃহত্তর কিছুই নেই, যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬১]

﴿أَلَآ إِنَّهُمۡ يَثۡنُونَ صُدُورَهُمۡ لِيَسۡتَخۡفُواْ مِنۡهُۚ أَلَا حِينَ يَسۡتَغۡشُونَ ثِيَابَهُمۡ يَعۡلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعۡلِنُونَۚ إِنَّهُۥ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ٥﴾ [ سُورَةُ هود : 5]

“সাবধান! নিশ্চয় তারা তাঁর নিকট গোপন রাখার জন্য তাদের বক্ষ দ্বিভাঁজ করে। সাবধান! তারা যখন নিজেদেরকে বস্ত্রে আচ্ছদিত করে, তখন তারা যা গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি তা জানেন। অন্তরে যা আছে, নিশ্চয় তিনি তা সবিশেষ অবহিত।” [সূরা হুদ, আয়াত: ৫] আর অনুরূপভাবে আল-কুরআনের প্রায় প্রত্যেক স্থানে এই প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন