hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে জিযয়াহ্‌র বিধান

লেখকঃ ড. মুনকিয বিন মাহমুদ আস-সাক্কার

দুই. ইসলামি রাষ্ট্রে যিম্মি চুক্তির কিছু পরিভাষা :
ইসলাম যিম্মিদেরকে নিরাপত্তাসহ এমন কিছু অধিকার প্রদান করেছে, মানব ইতিহাসে অন্য কোন ধর্ম ও আদর্শে যার দ্বিতীয় উদাহরণ নেই, ভবিষ্যতেও ইসলাম ও মুসলিম ব্যতীত অন্য কোনো মতবাদ বা ব্যক্তি এরূপ নমুনা পেশ করতে সক্ষম হবে না। অথচ এ অধিকার ও নিরাপত্তা সামান্য অর্থের বিনিময়ে তারা ভোগ করে, যা শুধু যুদ্ধে সক্ষম যিম্মিরাই আদায় করে। তারা মুসলিমদের পক্ষ থেকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা লাভ করে, অধিকন্তু তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মের নিরাপত্তা তো আছেই।

মুসলিম খলিফাগণ গভর্নরদের প্রতি যে নির্দেশ জারি করেছেন, তাতে এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিদ্যমান, যার চাক্ষুষ সাক্ষী মুসলিম ও যিম্মিদের মাঝে সম্পাদিত চুক্তি। আমি এখানে সম্মানিত পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে, আপনারা একটু লক্ষ্য করুন, মুসলিমগণ কতটুকু নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়ভার কাঁধে নিয়েছে এবং তার মোকাবিলায় যিম্মিরা কি পরিমাণ জিযয়াহ্‌ প্রদান করেছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিম্মিদের সাথে যে চুক্তি করেছেন, ইতিহাস থেকে আমি সর্বপ্রথম তাই উল্লেখ করছি। ইবনে সা‘দ স্বীয় গ্রন্থ ‘তাবকাতে’ রাবি‘আ আল-হাদ্‌রামিকে লেখা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি চিঠির বর্ণনা দেন, সেখানে তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাবি‘আ ইবন্‌ যি-মারহাব আল-হাদ্‌রামি এবং তার ভাই ও চাচা-মামাদের প্রতি লেখেন যে, হাদ্‌রামাউতে বিদ্যমান তোমাদের সম্পদ, খেজুর-গাছ, গোলাম, কুঁপ, বৃক্ষরাজি, পুকুর, ঘাট, কৃষি-জমি ও সেচের নালা এবং যি-মারহাব বংশের সকল সম্পদ তোমাদেরই থাকবে। আর তোমাদের বন্ধক রাখা জমির ফল, গাছ ইত্যাদি বন্ধকের অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তোমাদের উত্তম সম্পদ সম্পর্কে কেউ জিজ্ঞাসা করবে না, তা থেকে আল্লাহ ও তার রাসূল সম্পূর্ণ মুক্ত। আর জি-মারহাব বংশকে সাহায্য করা সকল মুসলিমের কর্তব্য। তাদের জমি, সম্পদ ও জীবন নিরাপদ, তাদের উপর কোন যুলম করা হবে না। ...। [তাবাকাতে ইবনে সাদ : (১/২৬৬)]’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: ‘জি-মারহাব বংশের সুরক্ষার দায়িত্ব সকল মুসলিমের উপর।’ এখানে লক্ষণীয় বিষয় যে, মুসলিমগণ তাদের জীবন, রূহ ও রক্ত তাদের জন্য উৎসর্গ করবে, যারা তাদের অধীনতা মেনে নেবে ও তাদের যিম্মার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নিশ্চয় এটা হচ্ছে আল্লাহ ও তার রাসূলের যিম্মা এবং চুক্তি। কারাফি বলেন : ‘এটা এমন একটি চুক্তি যা বাস্তবায়ন করার জন্য জীবন ও সম্পদ পর্যন্ত উৎসর্গ করতে হয়, নিশ্চয় এটা একটি সম্মানিত চুক্তি। [আল-ফুরুক : (৩/১৪-১৫)]’

অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজরানের নাসারাদের সাথে যিম্মি চুক্তি সম্পাদন করেছেন। ইবনে সাদ স্বীয় গ্রন্থ ‘তাবকাতে’ বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসকাফ ইবন হারেস ইবন কাব, নাজরানের সর্দার, তাদের যাজক ও যাজকদের অনুসারী এবং তাদের সংসারবিমুখদের উদ্দেশ্যে চিঠিতে লিখেন, যার যে সম্পদ রয়েছে তার মালিক সেই, তোমাদের গীর্জা, উপাসনালয় এবং সংসারবিরাগী ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ ও তার রাসূলের যিম্মায়। কোন দায়িত্বশীলকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না, কোন সংসারবিরাগীকে তার অধ্যবসায় থেকে বিরত রাখা হবে না, কোন যাজককে তার পেশা থেকে বঞ্চিত করা হবে না, তাদের কোন অধিকার খর্ব করা হবে না, তাদের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হবে না, তাদের অবস্থাতেই তাদেরকে বিদ্যমান রাখা হবে, যে পর্যন্ত তারা মুসলিমদের শুভ কামনা করে, নিজেদের মাঝে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে এবং যুলুম ও অন্যায় পরিহার করে। [তাবকাতুল কুবরা লি ইবনে সাদ : (১/২৬৬)]’

পরবর্তীতে সাহাবাগণও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা ও আদর্শই বাস্তবায়ন করেছেন। তারা যিম্মিদের যে দায়ভার নিয়েছেন, তার বেশ কিছু নমুনা ঐতিহাসিকগণ বর্ণনা করেছেন। উদাহরণত এখানে পেশ করা যায় ওমর রা.-এর চুক্তি, যা তিনি কুদসবাসীদের জন্য লিখেছিলেন, তাতে রয়েছে :

" بسم الله الرحمن الرحيم ؛ هذا ما أعطى عبد الله عمر أمير المؤمنين أهل إيلياء من الأمان ، أعطاهم أماناً لأنفسهم وأموالهم ، ولكنائسهم وصلبانهم وسقيمها وبريئها وسائر ملتها، أن لا تُسكن كنائسهم ولا تُهدم ولا يُنتقص منها ولا من حيزها ، ولا من صليبهم ولا من شيء من أموالهم . ولا يكرهون على دينهم، ولا يُضار أحد منهم ، ولا يُسَكَّن بإيلياء معهم أحد من اليهود ، وعلى أهل إيلياء أن يعطوا الجزية كما يعطي أهل المدائن، وعليهم أن يُخرجوا منها الروم واللصوص ، فمن خرج منهم فإنه آمن على نفسه وماله حتى يبلغ مأمنه ، ومن أقام منهم فهو آمن، وعليه مثل ما على أهل إيلياء من الجزية ... ومن شاء سار مع الروم ، ومن شاء رجع إلى أهله فإنه لا يؤخذ منهم شيء حتى يحصد حصادهم . وعلى ما في هذا الكتاب عهد الله وذمة رسوله وذمة الخلفاء وذمة المؤمنين إذا أعطوا الذي عليهم من الجزية ، شهد على ذلك خالد بن الوليد ، وعمرو بن العاص ، وعبد الرحمن بن عوف، ومعاوية بن أبي سفيان ، وكتب وحضر سنة خمس عشرة ".

অর্থ : ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ইলিয়াবাসীদের প্রতি আমিরুল মুমিনিন ওমরের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা, ওমর তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছে তাদের জীবন ও সম্পদের, গীর্জা ও ক্রুসের এবং তাতে বসবাসকারী সুস্থ, অসুস্থ এবং সকল ধর্মের অনুসারীদের। তাদের গীর্জাগুলো বর্ধিত কিংবা ধ্বংস করা হবে না, তার কোন অংশ কিংবা তার সীমানা ছোট করা হবে না, তাদের উপাসনালয় কিংবা তাদের কোন সম্পদ দখল করা হবে না, তাদের কাউকে ধর্ম পালনে বাধ্য করা হবে না, তাদের কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না, ইলিয়াতে তাদের সাথে কোন ইহুদি থাকতে পারবে না, মাদায়েনবাসী যেরূপ জিযয়াহ্‌ প্রদান করে, তারাও অনুরূপ জিযয়াহ্‌ প্রদান করবে। তাদের দায়িত্ব চোর ও রোমকদের ইলিয়া থেকে বের করে দেয়া, তাদের থেকে যে চলে যাবে, গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত তার জান ও মাল নিরাপদ থাকবে, এখানে যে অবস্থান করবে সে নিরাপদ, তবে তার উপর জিযয়াহ্‌ প্রদান করা আবশ্যক, যেরূপ ইলিয়াবাসী জিযয়াহ্‌ প্রদান করে। যার ইচ্ছা রোমকদের সাথে চলে যাবে, যার ইচ্ছা এখানে চলে আসবে, তাদের কারো থেকে কিছু গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ না তারা ক্ষেতের ফসল তুলে। এ যিম্মা আল্লাহ ও তার রাসূল এবং খলিফা ও মুমিনদের পক্ষ থেকে, যে পর্যন্ত তারা জিযয়াহ্‌ প্রদান করে। এর সাক্ষী খালেদ বিন ওয়ালিদ, আমর ইবনুল আস, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ এবং মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান। [তারিখে তাবারি : (৪/৪৪৯)]’ লুদবাসীদের জন্যও ওমর রা. অনুরূপ চুক্তি লিখে দেন। [দেখুন : তারিখে তাবারি : (৪/৪৪৯)]

খালেদ বিন ওয়ালিদ যখন দিমাশক জয় করেন, তখন তিনিও তার অধিবাসীদের জন্য অনুরূপ চুক্তিনামা লিখেন, যেমন :

" بسم الله الرحمن الرحيم ، هذا ما أعطى خالد بن الوليد أهل دمشق إذا دخلها أماناً على أنفسهم وأموالهم وكنائسهم وسور مدينتهم لا يهدم، ولا يسكن شيء من دورهم ، لهم بذلك عهد الله وذمة رسول الله صلى الله عليه وسلم والخلفاء والمؤمنين، لا يُعرض لهم إلا بخير إذا أعطوا الجزية ".

অর্থ : ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, এটা খালেদ বিন ওয়ালিদের পক্ষ থেকে দিমাশকবাসীদের জন্য নিরাপত্তা প্রদান, তারা যখন এ চুক্তিতে প্রবেশ করবে, জান, মাল ও গীর্জার নিরাপত্তা ভোগ করবে, তাদের নগরের সীমানা পরিবর্তন করা হবে না, তাদের ঘর-বাড়িতে কাউকে বসতি স্থাপন করানো হবে না। এর মাধ্যমে তাদের জন্য থাকবে আল্লাহর অঙ্গীকার, আর তাঁর রাসূল এবং খলিফা ও মুমিনদের পক্ষ থেকে, তাদের সাথে সদাচারণ করা হবে, যে পর্যন্ত তারা জিযয়াহ্‌ প্রদান করে। [ফুতুহুল বুলদান লিল বালাযুরি : (১২৮)]’

উবাদা বিন সামেত যখন কিবতিদের সর্দার মুকাউকিসের নিকট ইসলামের বর্ণনা দেন, তখন তিনি জিযয়াহ্‌ সম্পর্কে ইসলামের এ আদর্শ উল্লেখ করেন, তিনি বলেন : ‘যদি তোমরা ইসলামের আহ্বানে সাড়া দাও, তুমি ও তোমার সাথীবৃন্দ তা কবুল কর, তাহলে তোমরা দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করবে, আর আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকব, তোমাদের কষ্ট দেয়া ও পিছু নেয়া আমাদের জন্য হারাম। আর যদি তোমরা ইসলাম গ্রহণ না করে জিযয়াহ্‌ প্রদানে সম্মত হও, তাহলে তোমরা আমাদেরকে জিযয়াহ্‌ প্রদান কর, আমাদের অধীনতা মেনে নাও। প্রতি বছর আমরা তোমাদের সাথে সে আচরণ করব, যার প্রতি থাকবে আমাদের ও তোমাদের সন্তুষ্টি, যতদিন আমরা উভয়ে জীবিত থাকি। যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, তোমাদের জমি, রক্ত ও সম্পদের পিছু নেবে, আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব এবং তোমাদের প্রতিনিধিত্ব করব, যতক্ষণ তোমরা আমাদের যিম্মায় থাকবে, এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য অঙ্গীকার রইল। [ফুতুহে মিসর ও আখবারুহা লি ইবন আব্দিল হাকাম : (৬৮)]’

এখানে একটি বিষয়ের প্রতি আমরা দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দেই, একজন মুসলিম কিভাবে যিম্মিদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে এবং তার জন্য সে নিজের জান ও মাল কুরবান করে দেয়। যেমন তিনি বলেছেন : ‘যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, তোমাদের জমি, রক্ত ও সম্পদের পিছু নেবে, আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব এবং তোমাদের পক্ষে আমরা তাদের মোকাবিলা করব।’

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন