hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতাওয়া

লেখকঃ ইসলাম কিউ. এ

২৬
ঈদে যে ভুলগুলো হয়
ফাতওয়া নং ৩৬৮৫৬

প্রশ্ন: দুই ঈদে যেসব ভুলসমূহ এবং খারাপ কাজগুলোর ব্যাপারে আমরা মুসলিমদের সতর্ক করবো সেগুলো কী কী? আমরা কিছু কাজ দেখি যেগুলো আমরা (দোষ হিসেবে অভিযুক্ত করে) এর বিরোধিতা করি, যেমন, ঈদের সালাতের পরে কবর যিরারত করা এবং ঈদের রাতে রাত জেগে ইবাদত করা ইত্যাদি।

উত্তর: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

ঈদ ও তার আনন্দ সমাগত হওয়ার সাথে সাথে আমরা কিছু জিনিসের ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে চাই যেগুলো মানুষ আল্লাহর শরী‘আতকে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহকে না জেনে করে থাকে। যেমন,

১- ঈদের আগের রাত পুরোটাই ইবাদতের মাধ্যমে উজ্জীবিত করা শরী‘আতসম্মত এরূপ বিশ্বাস পোষণ করা:

কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে, ঈদের রাত ইবাদতের মাধ্যমে উজ্জীবিত করা শরী‘আতসম্মত। এটি এক ধরণের নতুন প্রবর্তিত বিষয় (বিদ‘আত), যা কিনা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়; বরং এটি দুর্বল হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যাতে বলা আছে “যে ঈদের রাতে জেগে থাকবে, তার হৃদয় কখনো মারা যাবে না যেদিন সব হৃদয় মারা যাবে।” এটি সহীহ হিসাবে প্রমাণিত হাদীস নয়। এটি বর্ণিত হয়েছে দুইটি ইসনাদের মাধ্যমে, যার একটি হলো জাল বা বানোয়াট, আর অপরটি হলো খুবই দুর্বল। [দেখুন- আলবানীর ‘সিলসিলাত আল-আহাদীস আদ-দ‘ঈফাহ ওয়াল-মাউদূ‘আহ” (৫২০, ৫২১)।]

তাই অন্য রাতগুলোকে বাদ দিয়ে বিশেষভাবে ঈদের রাত্রিকে কিয়ামের জন্য বাছাই করা শরী‘আতসম্মত নয়। তবে যার ক্বিয়ামের (তাহাজ্জুদ পড়ার) অভ্যাস আছে, সেই ক্ষেত্রে ঈদের রাতে কিয়াম করায় কোনো দোষ নেই।

২- দুই ঈদের দিনে কবর যিয়ারত করা:

এটি ঈদ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সাথে সাংঘর্ষিক, যা কিনা আনন্দ, সুখ ও উল্লাসের প্রকাশ এবং তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং পূর্ববর্তী সাহাবী ও তাবে‘ঈগণের আমলের বিরোধী।

সাধারণভাবে বলা যায় যে, কোনো নির্দিষ্ট দিনে কবরস্থানে যাওয়া এবং তাকে একটি উৎসব (ঈদ) বানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে নবীর নিষেধাজ্ঞা আছে, যেমনটি আলেমগণ বলেছেন।

আর এটি কবরসমূহকে উৎসব (ঈদ) হিসেবে গ্রহণ না করা সংক্রান্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাধারণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে। কারণ, বিশেষ কিছু সময়ে ও পরিচিত কিছু মৌসুমে কবর যিয়ারত করা একে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করার অর্থে পড়ে, এমনটিই আলেমগণ উল্লেখ করেছেন। [দেখুন- আলবানীর ‘আহকাম আল-জানাইয ওয়া বিদা‘উহা।’ (পৃঃ ২১৯, ২৫৮)।]

৩- জামা‘আতে সালাত পরিত্যাগ করা এবং ঘুমিয়ে থাকার কারণে সালাত ছুটে যাওয়া:

এটি খুবই দুঃখজনক, আপনি দেখবেন যে কিছু মুসলিমের সালাত ছুটে যায় এবং তারা জামা‘আতের সাথে সালাত পরিত্যাগ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر»

“আমাদের এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হলো সালাত, যে তা পরিত্যাগ করবে সে কুফুরী করল।” [তিরমিযী, হাদীস নং ২৬২১; নাসাঈ, হাদীস নং ৪৬৩। আর আলবানী ‘সহীহ আত-তিরমিযী’-তে একে সহীহ বলে চিহ্নিত করেছেন।]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,

«إِنَّ أَثْقَلَ صَلاةٍ عَلَى الْمُنَافِقِينَ صَلاةُ الْعِشَاءِ وَصَلاةُ الْفَجْرِ وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا وَلَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصَّلاةِ فَتُقَامَ ثُمَّ آمُرَ رَجُلا فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِي بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَى قَوْمٍ لا يَشْهَدُونَ الصَّلاةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ بِالنَّار»

“মুনাফিকদের জন্য ইশা এবং ফাজরের সালাত সবচেয়ে বোঝাস্বরূপ। তারা যদি জানত তার মধ্যে (কী কল্যাণ) আছে, তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে (সেই দুই সালাতে) উপস্থিত হত। আর আমি চিন্তা করেছিলাম যে, সালাতের আদেশ করব আর তা কায়েম করা হবে এবং একজন লোককে আদেশ করব যে লোকদের নিয়ে (ইমাম হিসেবে) সালাত আদায় করবে, এরপর আমি আমার সাথে কিছু লোক নিয়ে যাবো যাদের সাথে কাঠের বাণ্ডিল থাকবে, সেই সমস্ত লোকদের কাছে যারা জামা‘আতের সালাতে উপস্থিত হয় নি, এরপর তাদের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিব।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৫১।]

৪- মুসাল্লাতে (সালাতের স্থানে) রাস্তাঘাট কিংবা অন্য কোনো স্থানে পুরুষদের সাথে নারীদের একত্রিত হওয়া আর ঐসব জায়গায় পুরুষদের সাথে তাদের ভিড় জমানো:

এতে আছে মহা ফিতনাহ ও বড় বিপদ। এ ব্যাপারে ওয়াজিব হলো নারী এবং পুরুষ উভয়কেই সতর্কবাণী দেওয়া এবং যতটুকু সম্ভব প্রতিরোধের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া। নারীদের পুরোপুরি চলে যাবার আগে পুরুষ ও তরুণদের কখনোই সালাতের স্থান ত্যাগ করা উচিৎ নয়।

৫- কিছু নারীদের সুগন্ধি ও সাজগোজ করে পর্দা ছেড়ে বের হওয়া:

এই সমস্যাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারটিকে খুব হালকা ভাবে নেয়। (এ ব্যাপারে আমরা আল্লাহর সাহায্য কামনা করি।) কিছু নারী যখন তারা তারাউয়ীহ (তারাবীহ), ঈদের সালাত আদায় অথবা অন্য জায়গায় বের হয় তখন তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করে এবং সবচেয়ে সুন্দর সুগন্ধি ব্যবহার করে (আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত করুন)। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ عَلَى قَوْمٍ لِيَجِدُوا مِنْ رِيحِهَا فَهِيَ زَانِيَةٌ»

“যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং লোকজনের পাশ দিয়ে এমনভাবে যায় যাতে তারা তার সৌরভ পেতে পারে সে একজন ব্যভিচারিণী”। [নাসাঈ, হাদীস নং ৫১২৬; তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৮৬। আলবানী ‘সহীহ আল-তারগীব ওয়া আত-তারহীব’ (২০১৯) এ একে হাসান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلاتٌ مَائِلاتٌ رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلا يَجِدْنَ رِيحَهَا وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا»

“জাহান্নামীরা দু’টি শ্রেণিতে আছে যাদেরকে আমি দেখি নি। (১) তারা এমন মানুষ যাদের কাছে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদের মারবে এবং (২) এমন নারী যারা কাপড় পরা সত্ত্বেও বিবস্ত্র থাকে, নিজেরাও পথভ্রষ্ট এবং অপরকেও বিপথে পরিচালনা করে, তাদের মাথা হেলে যাওয়া উটের কুঁজের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এমনকি এর সৌরভও পাবে না, যদিও এর সৌরভ এই এই দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১২৮।]

নারীদের অভিভাবকদেরকে যারা তাদের আশ্রয়ে আছে তাদের ব্যাপারে অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ এবং আল্লাহ তাদের ওপর যে কর্তৃত্ব করা (এবং ভরণ-পোষণ করার জন্য যে দায়িত্ব) ওয়াজিব করেছেন তা যথাযথভাবে সম্পাদন করার ব্যাপারে। কারণ,

﴿ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ﴾ [ النساء : ٣٤ ]

“পুরুষেরা নারীদের ওপর কর্তৃত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দান করেছেন এবং এজন্য যে তারা (পুরুষেরা) তাদের সম্পদ থেকে খরচ করে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৪]

সুতরাং তাদের (নারীদের অভিভাবকদের) উচিৎ তাদেরকে অবশ্যই সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং যাতে তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে পরিত্রাণ ও নিরাপত্তা থাকে সেদিকে পরিচালিত করা, তাদেরকে আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা থেকে দূরে রাখা এবং যাতে তারা আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে সেটার প্রতি উৎসাহ যোগানো।

৬- হারাম গান শোনা:

বর্তমানে মন্দ কাজগুলির মধ্যে যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তা হচ্ছে গান-বাজনা। এগুলো খুব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানুষ এই ব্যাপারটিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে। এটি এখন টিভি, রেডিও, গাড়ি, ঘরে এবং মার্কেটগুলোতে প্রকট রূপ ধারণ করেছে। লা হাওলা ওয়া লা কুওওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ (কোনো শক্তি ও ক্ষমতা নেই আল্লাহ ছাড়া এ সব থেকে ফিরানোর)। এমনকি মোবাইল ফোনও এই মন্দ ও খারাপ জিনিস থেকে মুক্ত নয়। অনেক কোম্পানি আছে যারা মোবাইল ফোনে সর্বাধুনিক মিউজিক টিউন দেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে এবং এর সাহায্যে সঙ্গীত এখন মসজিদসমূহে প্রবেশ করেছে, (আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন)… এটি মহাবিপদ এবং খুবই মন্দ ব্যাপারগুলোর একটি যে আল্লাহর ঘরসমূহে (মসজিদসমূহে) আপনি মিউজিক শুনতে পান। প্রশ্ন নং (৩৪২১৭) দেখুন। এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে, তিনি বলেছিলেন,

«ليكونن من أمتي أقوام يستحلون الحِر والحرير والخمر والمعازف»

“আমার উম্মাতের মধ্যে কিছু লোক এমন থাকবে যারা ব্যভিচার, রেশম, মদ এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল হিসাবে গণ্য করবে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৫৯০।]

প্রশ্ন নং (৫০০০, ৩৪৪৩২) দেখুন।

তাই একজন মুসলিমের আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ এবং তার জানা উচিৎ তার ওপর আল্লাহর যে নি‘আমাত আছে তার জন্য তার শোকর করা কর্তব্য। এটি কখনোই নি‘আমাতের শোকর করা নয় যে, একজন মুসলিম তার রাব্বের অবাধ্যতা করবে যিনি তার ওপর অসীম নি‘আমাত বর্ষণ করেছেন।

একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি কিছু লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা ঈদের আনন্দে মত্ত হয়ে গর্হিত কাজ করছিল, তখন তাদেরকে তিনি বললেন: “যদি তোমরা রমযানে ইহসান (ভালো করে) থাকো তাহলে এটি সেই ইহসানের শোকর করার কোনো পথ নয়। আর যদি তোমরা রমযানে খারাপ করে থাকো, তাহলে রহমানের সাথে যে খারাপ ব্যবহার করেছে, সে এমন করতে পারে না।”

আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

ইসলাম কিউ.এ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন