hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতাওয়া

লেখকঃ ইসলাম কিউ. এ

রমযান মাসের বৈশিষ্ট্যসমূহ
ফাতওয়া নং ১৩৪৮০

প্রশ্ন: রমযান কী?

উত্তর: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

রমযান...এটি ‘আরবী’ বার মাসগুলোর একটি। আর এটি দীন ইসলামে একটি সম্মানিত মাস। এটি অন্যান্য মাস থেকে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ও ফযিলতসমূহ-এর কারণে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যেমন:

১. আল্লাহ তা‘আলা সাওমকে (রোযাকে) ইসলামের আরকানের মধ্যে চতুর্থ রুকন হিসেবে স্থান দিয়েছেন, যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ﴾ [ البقرة : ١٨٥ ]

“রমযান মাস যে মাসে আল-ক্বুরআন নাযিল করা হয়েছে, মানুষের জন্য হিদায়াতের উৎস, হিদায়াত ও সত্য মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী সুস্পষ্ট নিদর্শন। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে এই মাস পায় সে যেন সাওম পালন করে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]

ইবন উমার এর হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«بني الإسلام على خمس شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا عبد الله ورسوله وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة، وصوم رمضان وحج البيت»

“ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত: (১) এই সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ (উপাস্য) নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল (২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) রমযান মাসে সাওম পালন করা এবং (৫) বাইতুল্লাহ’র (কা‘বা-এর) উদ্দেশ্যে হজ করা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬।]

২. আল্লাহ তা‘আলা এই মাসে আল-কুরআন নাযিল করেছেন, যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা পূর্বের আয়াতে উল্লেখ করেছেন:

﴿شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ﴾ [ البقرة : ١٨٥ ]

“রমযান মাস যে মাসে তিনি আল-কুরআন নাযিল করেছেন, তা মানবজাতির জন্য হিদায়াতের উৎস, হিদায়াত ও সত্য মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী সুস্পষ্ট নিদর্শন।” [আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]

তিনি - সুবহানাহূ ওয়া তা‘আলা- আরও বলেছেন,

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ ١ ﴾ [ القدر : ١ ]

“নিশ্চয় আমরা একে (আল-কুরআন) লাইলাতুল কদরে নাযিল করেছি।” [সূরা আল-কদর, আয়াত: ১]

৩. আল্লাহ এ মাসে লাইলাতুল কদর রেখেছেন, যে মাস হাজার মাস থেকে উত্তম, যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ ١ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ ٢ لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ ٣ تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ ٤ سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥ ﴾ [ القدر : ١، ٥ ]

“১. নিশ্চয় আমরা একে লাইলাতুল কদরে (আল-কুরআন) নাযিল করেছি ২. এবং আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী?

৩. লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম। ৪. এতে ফিরিশতাগণ এবং রূহ (জিবরীল আলাইহিস সালাম) তাদের রবের অনুমতিক্রমে অবতরণ করেন সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে। ৫. শান্তিময় (বা নিরাপত্তাপূর্ণ) সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।” [সূরা আল-কদর, আয়াত: ১-৫]

তিনি আরও বলেছেন,

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةٖ مُّبَٰرَكَةٍۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ ٣﴾ [ الدخان : ٣ ]

“নিশ্চয় আমরা একে (আল-কুরআন) এক মুবারাক (বরকতময়) রাতে নাযিল করেছি, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।” [সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৩]

আল্লাহ তা‘আলা রমযান মাসকে লাইলাতুল কদর দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আর এই মুবারাক (বরকতময়) রাতে মর্যাদার বর্ণনায় সূরাতুল কদর নাযিল করেছেন।

আর এ ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে অনেক হাদীস। তন্মধ্যে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ، تُفْتَحُ فِيهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ، وَتُغْلَقُ فِيهِ أَبْوَابُ الْجَحِيمِ، وَتُغَلُّ فِيهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِينِ، لِلَّهِ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ» .

“তোমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছে রমযান, এক মুবারাক (বরকতময়) মাস। এ মাসে সিয়াম পালন করা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের ওপর ফরয করেছেন। এ মাসে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, এ মাসে জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, এ মাসে অবাধ্য শয়তানদের শেকলবদ্ধ করা হয়, আর এ মাসে রয়েছে আল্লাহর এক রাত যা হাজার মাস থেকে উত্তম, যে এ রাত থেকে বঞ্চিত হলো, সে প্রকৃত পক্ষেই বঞ্চিত হলো।” [নাসাঈ, হাদীস নং ২১০৬; আহমাদ, হাদীস নং ৮৭৬৯ এবং আল-আলবানী একে ‘সাহীহুত তারগীব’ গ্রন্থে সহীহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন (৯৯৯)।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»

“যে ঈমান সহকারে এবং প্রতিদানের আশায় লাইলাতুল কদর (কদরের রাত্রিতে) কিয়াম করবে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১০; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬০।] 

৪. আল্লাহ তা‘আলা এই মাসে ঈমান সহকারে এবং প্রতিদানের আশায় সিয়াম পালন ও কিয়াম করাকে গুনাহ মাফের কারণ করেছেন, যেমনটি দুই সহীহ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস থেকে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه»

“যে রমযান মাসে ঈমান সহকারে ও সাওয়াবের আশায় সাওম পালন করবে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৪; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬০।]

অনুরূপভাবে তার (আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন,

«من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه»

“যে রমযান মাসে ঈমান সহকারে ও সাওয়াবের (প্রতিদানের) আশায় কিয়াম করবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৮; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৪)

মুসলিমদের মাঝে রমযানের রাতে কিয়াম করা সুন্নাহ হওয়ার ব্যাপারে ইজমা‘ (ঐকমত্য) রয়েছে। ইমাম আন-নাওয়াউয়ী উল্লেখ করেছেন:

“রমযানে কিয়াম করার অর্থ হলো তারাউয়ীহের (তারাবীহের) সালাত আদায় করা অর্থাৎ তারাউয়ীহের (তারাবীহের) সালাত আদায়ের মাধ্যমে কিয়াম করার উদ্দেশ্য সাধিত হয়।”

৫. আল্লাহতা‘আলা এই মাসে জান্নাতসমূহের দরজাসমূহ খুলে দেন, এ মাসে জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেন এবং শয়তানদের শেকলবদ্ধ করেন। যেমনটি প্রমাণিত হয়েছে দুই সহীহ গ্রন্থে আবু হুরায়রার হাদীস থেকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة , وغلقت أبواب النار , وصُفِّدت الشياطين»

“যখন রমযান আবির্ভূত হয় তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শেকলবদ্ধ করা হয়।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৭৯।]

৬. এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে (তাঁর বান্দাদের) মুক্ত করেন। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لله عند كل فطر عتقاء»

“আল্লাহর রয়েছে প্রতি ফিতরে (ইফতারের সময় জাহান্নাম থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দারা।” [আহমাদ (৫/২৫৬) আল-মুনযিরী বলেছেন, এর ইসনাদে কোনো সমস্যা নেই। আর আল-আলবানী এটিকে ‘সাহীহুত তারগীব’ (৯৮৭)-এ সহীহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।]

অনুরূপ আবু সাঈদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন,

«إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة يعني في رمضان وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة»

“নিশ্চয় আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলার রয়েছে (রমযান মাসে) প্রতি দিনে ও রাতে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দাগণ আর নিশ্চয় একজন মুসলিমের রয়েছে প্রতি দিনে ও রাতে কবুল যোগ্য দো‘আ।” [আল-বাযযার (কাশফ ৯৬২)।]

৭. রমযান মাসে সাওম পালন করা পূর্ববর্তী রমযান থেকে কৃত গুনাহসমূহের কাফফারা লাভের কারণ যদি বড় গুনাহসমূহ (কবীরা গুনাহসমূহ) থেকে বিরত থাকা হয়, যেমনটি প্রমাণিত হয়েছে সহীহ মুসলিমে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الصلوات الخمس، والجمعة إلى الجمعة، ورمضان إلى رمضان، مكفرات ما بينهن إذا اجتنبت الكبائر»

“পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমু‘আ থেকে অপর জুমু‘আ, এক রমযান থেকে অপর রমযান, এর মাঝে কৃত গুনাহসমূহের কাফফারা করে যদি বড় গুনাহসমূহ (কবীরা গুনাহসমূহ) থেকে বিরত থাকা হয়।”

৮. এই মাসে সাওম পালন করা দশ মাসে সিয়াম পালন করার সমতুল্য যা ‘সহীহ মুসলিম’-এ প্রমাণিত আবু আইয়ূব আল-আনসারীর হাদীস থেকে নির্দেশনা পাওয়া যায় যে, তিনি বলেছেন,

«من صام رمضان، ثم أتبعه ستا من شوال كان كصيام الدهر»

“যে রমযান মাসে সিয়াম পালন করল, এর পর শাউওয়ালের ছয়দিন সাওম পালন করল, তবে তা সারা জীবন সাওম রাখার সমতূল্য”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৪।]

আর ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«من صام رمضان فشهر بعشرة أشهر، وصيام ستة أيام بعد الفطر فذلك تمام السنة»

“যে রমযান মাসে সাওম পালন করল, তা দশ মাসের (সাওম পালনের) সমতূল্য আর ‘ঈদুল ফিত্বরের পর (শাউওয়ালের মাসের) ছয় দিন সাওম পালন করা গোটা বছরের (সাওম পালনের) সমতূল্য।” [বি.দ্র. সূরা আল-আন‘আমের ১৬০ নং আয়াত অনুসারে কোনো মুমিন কোনো ভালো কাজ করলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে দশগুণ সাওয়াব দেন। সুবহানাল্লাহ! তাই রমযান মাসে ৩০ দিন সাওম পালনের অর্থ এই দাঁড়ায় (৩০×১০)=৩০০ দিন অর্থাৎ দশ মাস সিয়াম পালন করা। আর (শাউওয়াল মাসের) ছয় দিন সাওম পালন করার অর্থ দাঁড়ায় (৬×১০)=৬০ দিন অর্থাৎ দুই মাস সিয়াম পালন করা। সুতরাং রমযান ও এর পরবর্তী শাউওয়ালের ছয় দিন সাওম পালন করা (১০ মাস+২ মাস)= ১২ মাস অর্থাৎ গোটা বছরের সমতুল্য! “আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিসাব বিহীন রিযিক দান করেন”। (সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩৮)] (অনুবাদকের পক্ষ থেকে সংযোজিত।)]” [আহমাদ, হাদীস নং ২১৯০৬]

৯. এই মাসে যে ইমামের সাথে, ইমাম সালাত শেষ করে চলে যাওয়া পর্যন্ত কিয়াম করে, সে সারা রাত কিয়াম করেছে বলে হিসাব করা হবে যা ইমাম ও অন্য সূত্রে আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إنه من قام مع الإمام حتى ينصرف كتب له قيام ليلة»

“যে ইমাম চলে যাওয়া পর্যন্ত তাঁর (ইমামের) সাথে কিয়াম করল, সে সারা রাত কিয়াম করেছে বলে ধরে নেওয়া হবে।” [আবু দাঊদ (১৩৭০) আল-আলবানী ‘সালাতুত-তারাউয়ীহ’ বইতে (পৃ. ১৫) একে সহীহ বলে চিহ্নিত করেছেন।]

১০. এই মাসে উমরা করা হজ করার সমতুল্য। ইমাম বুখারী ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক মহিলাকে প্রশ্ন করলেন:

«ما منعك أن تحجي معنا؟ قالت : لم يكن لنا إلا ناضحان، فحج أبو ولدها وابنها على ناضح ، وترك لنا ناضحا ننضح عليه، قال : فإذا جاء رمضان فاعتمري، فإن عمرة فيه تعدل حجة»

“কিসে আপনাকে আমাদের সাথে হজ করতে বাঁধা দিল?” তিনি (আনসারী মহিলা) বললেন: আমাদের শুধু পানি বহনকারী দু’টি উটই ছিল। তার স্বামী ও পুত্র একটি পানি বহনকারী উটে করে হজে গিয়েছেন। আর আমাদের পানি বহনের জন্য একটি পানি বহনকারী উট রেখে গেছেন।” তিনি (রাসূলুল্লাহ) বললেন, “তাহলে রমযান এলে আপনি উমরা করুন। কারণ, এ মাসে উমরা করা হজ করার সমতুল্য।”

মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে: “আমার সাথে হজ করার সমতুল্য।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৮২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৫৬।]

১১. এ মাসে ই‘তিকাফ করা সুন্নাহ। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিয়মিতভাবে করতেন, যেমনটি বর্ণিত হয়েছে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে,

«أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ تَعَالَى ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ»

“আল্লাহ তাঁকে (রাসূলুল্লাহকে) মৃত্যু না দেওয়া পর্যন্ত রমযানের শেষ দশ দিনে ই‘তিকাফ করতেন। তার পরে তাঁর স্ত্রীগণও ই‘তিকাফ করেছেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭২।]

১২. রমযান মাসে কুরআন অধ্যয়ন ও তা বেশি বেশি তিলাওয়াত করা খুবই তাকীদের (তাগিদের) সাথে করণীয় এক মুস্তাহাব (পছন্দনীয়) কাজ। আর কুরআন অধ্যয়ন হলো একজন অপরজনকে কুরআন পড়ে শোনাবে এবং অপরজনও তাকে তা পড়ে শোনাবে। আর তা মুস্তাহাব হওয়ার দালীল:

«أَنَّ جِبْرِيلَ كَانَ يَلْقَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ»

“জিবরীল রমযান মাসে প্রতি রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং কুরআন অধ্যয়ন করতেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩০৮।]

কুরআন কিরাত সাধারণভাবে মুস্তাহাব, তবে রমযানে বেশি তাকীদযোগ্য।

১৩. রমযানে সাওম পালনকারীকে ইফতার করানো মুস্তাহাব, যার দলীল যাইদ ইবন খালিদ আল-জুহানী থেকে বর্ণিত হাদীস, যাতে তিনি বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ، غَيْرَ أَنَّهُ لا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْئًا»

“যে কোনো সাওম পালনকারীকে ইফতার করায়, তার (যে ইফতার করালো) তাঁর (সাওম পালনকারীর) সমান সাওয়াব হবে, অথচ সেই সাওম পালনকারীর সাওয়াব কোনো অংশে কমে না”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৭৪৬ এবং আল-আলবানী ‘সহীহ তিরমিযী (৬৪৭) তে একে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।]

দেখুন প্রশ্ন নং (১২৫৯৮)

আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

ইসলাম কিউ.এ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন