hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম বিষয়ক নির্বাচিত ফাতাওয়া

লেখকঃ ইসলাম কিউ. এ

রমযান মাসের আগমন উপলক্ষে আমরা কীভাবে প্রস্তুতি নেব?
ফাতওয়া নং ৯২৭৪৮

প্রশ্ন: আমরা কীভাবে রমযানের জন্য প্রস্তুতি নিব? এই মহান মাসে কোন কাজটি সর্বোত্তম?

উত্তর: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

প্রথমত: সম্মানিত ভাই, আপনি প্রশ্নটি করে বেশ ভালো করেছেন। কারণ, আপনি রমযান মাসের প্রস্তুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছেন যখন সিয়ামের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে বহু মানুষের ধ্যান ধারণা বিকৃত হয়েছে। তারা এই মাসকে খাদ্য, পানীয়, মিষ্টি-মণ্ডা, রাত জাগা ও স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর মৌসুম বানিয়ে ফেলেছে। আর এ জন্য তারা রমযান মাসের বেশ আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এই আশংকায় যে কিছু খাদ্য দ্রব্য কেনা বাদ পড়তে পারে বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই তারা খাদ্য দ্রব্য কিনে, হরেক রকম পানীয় প্রস্তুত করে এবং কী অনুষ্ঠান দেখবে আর কী দেখবে না তা জানতে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর গাইড খোঁজ খবর করে প্রস্তুতি নেয়।

আর এভাবে তারা রমযান মাসের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সত্যিকার অর্থেই অজ্ঞ থেকে গেল। তারা এ মাস থেকে ইবাদাত ও তাকওয়া সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে নিল এবং একে তাদের উদরপূর্তি ও চক্ষুবিলাসের সামগ্রীতে পরিণত করল।

দ্বিতীয়ত: অপরদিকে অন্যরা রমযান মাসের সিয়ামের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হয়ে শা‘বান মাস থেকেই এর প্রস্তুতি নিতে শুরু করে, এমনকি তাদের কেউ কেউ এর আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

রমযান মাস উপলক্ষে প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু প্রশংসনীয় পদক্ষেপ হলো:

১. সত্যিকার তাওবা:

আর এটি সবসময়ের জন্যই ওয়াজিব, তবে যেহেতু এক মহান মুবারাক (বরকতময়) মাসের দিকে সে এগিয়ে যাচ্ছে তাই তার ও তার রবের মাঝে যে গুনাহগুলো আছে এবং তার ও মানুষের মাঝে যে অধিকারসমূহ রয়েছে সেগুলো থেকে দ্রুত তাওবা করার জন্য তার আরও বেশি তৎপর হওয়া উচিৎ; যাতে করে সে এই মুবারক (বরকতময়) মাসে পবিত্র মন ও প্রশান্ত হৃদয় নিয়ে প্রবেশ করে আনুগত্য ও ইবাদাতে মশগুল হতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١﴾ [ النور : ٣١ ]

“আর তোমরা সবাই, হে মুমিনেরা, আল্লাহর কাছে তাওবা কর যাতে করে সফলকাম হতে পার।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১]

আল-আগার ইবন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى اللَّهِ فَإِنِّي أَتُوبُ فِي الْيَوْمِ إِلَيْهِ مِائَةَ مَرَّةٍ»

“হে লোক সকল, আপনারা আল্লাহর কাছে তাওবা করুন। কারণ, আমি দিনে তাঁর কাছে ১০০ বার তাওবা করি।” [সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭০২।]

২. দো‘আ পাঠ:

কোনো কোনো পূর্বসূরী (সাহাবীগণ, তাবে‘ঈনগণ .....) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তারা ৬ মাস ধরে আল্লাহর কাছে দো‘আ করতেন যাতে তিনি তাদের রমযান মাস পাওয়ার তাওফীক দেন, এরপর (রমযান শেষে) ৫ মাস ধরে এই দো‘আ করতেন যেন (রমযানের আমলসমূহ) তাদের কাছ থেকে কবুল করা হয়।

তাই একজন মুসলিম তার রবের কাছে দো‘আ করবে যাতে তিনি তাকে রমযান মাস পাবার তাওফীক দেন সর্বোত্তম দীনি অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতার মাঝে এবং তাঁর কাছে এই দো‘আ করবে যাতে তিনি তাকে তাঁর আনুগত্যে সাহায্য করেন এবং তাঁর কাছে এই দো‘আ করবে যাতে তিনি তার আমল কবুল করেন।

৩. এই মহান মাসের আসন্ন আগমনে আনন্দিত হওয়া:

রমযান মাসের আগমন একজন মুসলিম বান্দার প্রতি আল্লাহর সুমহান নি‘আমাতগুলোর (অনুগ্রহসমূহের) একটি। কারণ, রমযান কল্যাণময় একটি মওসুম। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি হলো কুরআনের মাস, আমাদের দীনের গুরুত্বপূর্ণ, চূড়ান্ত সংগ্রামের মাস। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿قُلۡ بِفَضۡلِ ٱللَّهِ وَبِرَحۡمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلۡيَفۡرَحُواْ هُوَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٥٨﴾ [ يونس : ٥٨ ]

“বলুন, আল্লাহর অনুগ্রহে ও তাঁর দয়ায়, অতঃপর এর দ্বারা তারা আনন্দিত হোক; তা, তারা যা সঞ্চয় করে তা থেকে উত্তম।” [সূরা ইঊনুস, আয়াত: ৫৮]

৪. ওয়াজিব সিয়াম থেকে নিজেকে দায়িত্ব মুক্ত করা:

আবু সালামাহ থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন,

«سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا تَقُولُ : »كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَهُ إِلا فِي شَعْبَانَ «.

“আবু সালামাহ বলেন, আমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে বলতে শুনেছি, “আমার ওপর বিগত রমযানের সাওম বাকি থাকত, যার কাযা আমি শা‘বান ছাড়া আদায় করতে পারতাম না।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৪৯; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪৬।]

হাফেয ইবন হাজার রহ. বলেছেন, এ হাদীস দ্বারা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা কর্তৃক শা‘বান মাসে রমযানের সিয়াম পালনের চেষ্টা প্রমাণ করে যে, এক রমযান এর কাযা আরেক রমযান প্রবেশ করা পর্যন্ত দেরী করা জায়েয নয়। [ফাতহুল বারী (৪/১৯১)।]

৫. পর্যাপ্ত ইলম (জ্ঞান) অর্জন করা, যাতে সিয়ামের হুকুম-বিধি-বিধান এবং রমযান মাসের মর্যাদা সম্পর্কে জানা যায়।

৬. রমযান মাসের ইবাদাত থেকে একজন মুসলিমকে বিরত করতে পারে এমন কাজসমূহ দ্রুত সম্পন্ন করে ফেলা।

৭. পরিবারের সদস্যবর্গ যেমন, স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে বসে তাদেরকে সিয়ামের বিধি-বিধান শিক্ষা দেওয়া এবং ছোটদের সিয়াম পালনে উৎসাহিত করা।

৮. কিছু বই প্রস্তুত করা যা বাড়িতে বসে পড়া সম্ভব বা মসজিদের ইমামকে উপহার দেওয়া, যা তিনি রমযান মাসে লোকদের পড়ে শোনাবেন।

৯. রমযান মাসের প্রস্তুতি স্বরূপ শা‘বান মাস থেকেই সিয়াম পালন শুরু করা।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لا يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لا يَصُومُ، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে সিয়াম পালন করতেন যে, আমরা বলতাম তিনি আর সিয়াম ভঙ্গ করবেন না এবং এমনভাবে সিয়াম ভঙ্গ করতেন যে আমরা বলতাম, তিনি আর সিয়াম পালন করবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসের গোটা অংশ সাওম পালন করতে দেখি নি এবং শা‘বান ছাড়া অন্য কোনো মাসে অধিক সিয়াম পালন করতে দেখি নি।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬।]

উসামা ইবন যাইদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ لَمْ أَرَكَ تَصُومُ شَهْرًا مِنْ الشُّهُورِ مَا تَصُومُ مِنْ شَعْبَانَ ، قَالَ : ( ذَلِكَ شَهْرٌ يَغْفُلُ النَّاسُ عَنْهُ بَيْنَ رَجَبٍ وَرَمَضَانَ ، وَهُوَ شَهْرٌ تُرْفَعُ فِيهِ الأَعْمَالُ إِلَى رَبِّ الْعَالَمِينَ فَأُحِبُّ أَنْ يُرْفَعَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ» .

“আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনাকে শা‘বান মাসের মত অন্য কোনো মাসে এত সাওম পালন করতে দেখি নি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “এটি রজব ও রমযানের মধ্যবর্তী একটি মাস, যখন মানুষ গাফিল হয় এবং এমন মাস যখন আমলসমূহ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে উঠানো হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে আমার আমল আমি সাওম পালন রত অবস্থায় উঠানো হবে।” [নাসাঈ, হাদীস নং ২৩৫৭ এবং আলবানী একে সহীহ আন-নাসাঈতে হাসান বলেছেন।]

শা‘বান মাসের সাওম পালনের হিকমতের বর্ণনায় হাদীসে এসেছে যে এটি এমন মাস যখন আমলসমূহ উঠানো হয়। আলেমগণের মাঝে কেউ কেউ অন্যান্য হিকমাহসমূহ উল্লেখ করেছেন, আর তা হলো শা‘বানের সাওম ফরয সালাতের পূর্বের সুন্নাহ্‌র মত যা ফরয আদায়ে মনকে প্রস্তুত করে ও উৎসাহ যোগায়। ঠিক একই বক্তব্য প্রযোজ্য রমযানের পূর্বে শা‘বানের সিয়ামের ক্ষেত্রে।

১০. কুরআন তিলাওয়াত:

সালামাহ ইবন কুহাইল বলেছেন, “শা‘বান মাসকে ক্বারীগণের মাস বলা হত।”

আমর ইবন কাইস, শা‘বান মাস শুরু হলে, তার দোকান বন্ধ করে কুরআন তিলাওয়াতের জন্য অবসর নিতেন।

আবু বকর আল-বালাখী বলেছেন, “রজব মাস হলো বীজ বপনের মাস, শা‘বান মাস হলো ক্ষেতে সেচ প্রদানের মাস এবং রমযান মাস হলো ফসল তোলার মাস।”

তিনি আরও বলেছেন, “রজব মাসের উদাহরণ হলো বাতাসের ন্যায়, শা‘বান মাসের উদাহরণ মেঘের ন্যায়, রমযান মাসের উদাহরণ বৃষ্টির ন্যায়। তাই যে রজব মাসে বীজ বপন করল না, শা‘বান মাসে সেচ প্রদান করল না, সে কীভাবে রমযান মাসে ফসল তুলতে চাইতে পারে?”

এখন রজব মাস গত হয়েছে, আর আপনি শা‘বান মাসে কি করবেন যদি রমযান মাস পেতে চান? এ হলো এই বরকতময় মাসে আপনার নবী ও উম্মাতের পূর্বসূরীগণের অবস্থা। এ সমস্ত আমল ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কী হবে?

তৃতীয়ত: রমযান মাসে একজন মুসলিমের কী করা উচিৎ সে আমলসমূহ সম্পর্কে জানতে দেখুন (২৬৮৬৯) ও (১২৪৬৮) নং প্রশ্নের উত্তর।

আল্লাহই তাওফীকদাতা।

ইসলাম কিউ.এ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন