HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মাবরুর হজ

লেখকঃ মুহাম্মদ ইবন জামীল যাইনু

১২
হজযাত্রীর নিমিত্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ
১- সাথী হিসাবে অভিজ্ঞ, নেককার ও আলেম শ্রেণির লোকদের বেছে নিন এবং হজ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করুন।

২- সহনশীল, সহমর্মী ও কষ্ট সহিষ্ণ মানসিকতা পোষন করুন। ধৈর্য্য ও সবরের প্রতিজ্ঞা করে নিন। সহযাত্রীদের কাউকে কষ্ট দেবেন না। তাদের পক্ষ থেকে আগত যাবতীয় পীড়ার জবাব উত্তম পদ্ধতিতে প্রদান করুন। মন্দের জবাব ভালোর মাধ্যমে দিন।

৩- মিথ্যা, ধোকাবাজি, চুরি, পরচর্চা-গীবত, পরনিন্দা-চোগলখোরি ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ-উপহাস করা হতে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।

৪- পরনারী দর্শন ও স্পর্শ থেকে সতর্ক থাকুন এবং নিজ নারীদের পর্দার ব্যাপারে সজাগ থাকুন।

৫- ক্রয়-বিক্রয়সহ যাবতীয় কাজে উদার ও সহমর্মীতার নীতি গ্রহণ করুন। এতে মহান আল্লাহ আপনার প্রতি সদয় হবেন, রহম করবেন।

৬- মিসওয়াক ব্যবহার করবেন। তার বহু উপকার রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«السِّوَاكُ يُطَيِّبُ الْفَمَ، وَيُرْضِي الرَّبَّ»

“মিসওয়াক মুখকে পরিষ্কার করে এবং রবের সন্তুষ্টি আনয়ন করে”। [মুজামুল কাবীর লিত্বতাবরানী, হাদীস নং ১২২১৫।]

হাদিয়া দেবার জন্য মেসওয়াক, খেজুর ও জমজমের পানি গ্রহণ করুন। জমজমের পানি সম্বন্ধে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّهَا مُبَارَكَةٌ إِنَّهَا طَعَامُ طُعْمٍ وَشِفَاءُ سُقْمٍ »

“জমজমের পানি বরকতময়, এটি আহারের জন্য খাদ্য এবং রোগের জন্য প্রতিষেধক বিশেষ”। [সুনানে কুবরা লিল বাইহাকী, হাদীস নং ৯৬৫৯।]

«مَاءُ زَمْزَمَ لِمَا شُرِبَ لَهُ»

“জমজমের পানি যে কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে সেটি সে কাজের জন্যই কার্যকর”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১৪৮৪৯, আল্লামা শুয়াইব আরনাউত বলেছেন, হাদীসটি হাসান হতে পারে।]

৭- ধুমপান হতে বিরত থাকুন। কেননা ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। সহযাত্রী ও প্রতিবেশীর জন্য কষ্টদায়ক। এবং এর মাধ্যমে সম্পদ নষ্ট হয়। সুতরাং এটি হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ١٥٧﴾ [ الاعراف : ١٥٦ ]

“আর তিনি তাদের জন্য পবিত্র জিনিষসমূহ হালাল করেছেন আর হারাম করেছেন নিকৃষ্ট জিনিষসমূহ”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৬]

৮- দাঁড়ি পুরুষের সৌন্দর্য। সুতরাং দাঁড়ি মুণ্ডন করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أمرني ربي عز وجل أن أعفي لحيتي وأن أحف شاربي» .

“আমার রব আমাকে দাড়ি লম্বা ও গোফ খাট করার নির্দেশ দিয়েছেন”। [আমালী ইবন বিশরান, পৃষ্ঠা নং ৭৩।]

৯- স্বর্ণের আংটি থাকলে তা খুলে ফেলুন। একান্ত ব্যবহার করতে চাইলে রূপার আংটি ব্যবহার করতে পারেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,

«يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ إِلَى جَمْرَةٍ مِنْ نَارٍ فَيَجْعَلُهَا فِي يَدِهِ»

“তোমাদের কেউ কি জ্বলন্ত কয়লার টুকরার কাছে গিয়ে তা উঠিয়ে নিজ হাতে স্থাপন করবে?” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৯০।]

১০- অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করুন। তাতে গভীরভাবে চিন্তা করুন। তার নির্দেশ অনুযায়ী আমল করুন। যিকির-আজকার, দো‘আ ও সালাতে সময় ব্যয় করুন। কোথাও দরস হলে তাতে অংশ গ্রহণ করুন।

১১- সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের মৌলিক দায়িত্ব থেকে বিঃস্মৃত হবেন না। হিকমত ও সুন্দর সুন্দর উপদেশ, নম্রতা ও বিনয়ের সাথে এ দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

১২- ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলবেন। বিতর্ক অনুপকারী হলে বাস্তবতা আপনার পক্ষে থাকলেও তা পরিহার করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا»

“আমি জান্নাতের পার্শ্বদেশে ওই ব্যক্তির জন্য একটি বিশেষ ঘরের জিম্মাদারি গ্রহণ করলাম, যে হকপন্থি হওয়া সত্ত্বেও বিতর্ক পরিহার করল”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৮০০, আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।]

১৩- প্রতিপক্ষের সাথে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলুন। ঋণ আদায় করে ভারমুক্ত হয়ে যান। এবং নিজ পরিজনকে নসিহত করুন, তারা যেন সাজ-সজ্জা, ভোগ-বিলাস ও বাড়ি-গাড়ি ইত্যাদির পেছনে অপব্যয় না করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ وَلَا تُسۡرِفُوٓاْۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ ٣١﴾ [ الاعراف : ٣١ ]

“আর তোমরা খাও, পান কর, অপব্যয় করো না। নিশ্চয় আল্লাহ অপব্যয়কারীদের পছন্দ করেন না”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩১]

১৪- পবিত্র মক্কায় যাওয়া-আসার খরচের ব্যবস্থা হয়ে গেলে কাল-বিলম্ব না করে হজ আদায়ের ব্যাপারে উদ্যোগী হোন। সেখান থেকে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজনদের জন্য কিছু নিয়ে আসার মত পয়সা নেই কিংবা এ জাতীয় কোনো ওযর শরী‘আতের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং অসুস্থ, দরিদ্র কিংবা হজ না করে পাপী হয়ে মারা যাওয়ার আগেই হজ কর্ম সম্পাদন করে ফেলুন। কারণ, হজ ইসলামের পাঁচ রোকনের অন্যতম । দুনিয়া ও আখিরাতে তার রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা।

১৫- সবচে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি যেসব কষ্ট ও অসুবিধার আশঙ্কা করছেন তার জন্য একমাত্র আল্লাহর নিকট ধর্না দিন। তাঁকে ডাকুন। তাঁর নিকট প্রার্থনা করুন। তাঁর সাহায্যই কামনা করুন। তিনি ব্যতীত অন্য সব প্রার্থনা পরিহার করুন। আল্লাহ বলেন,

﴿قُلۡ إِنَّمَآ أَدۡعُواْ رَبِّي وَلَآ أُشۡرِكُ بِهِۦٓ أَحَدٗا ٢٠﴾ [ الجن : ٢٠ ]

“বল, নিশ্চয় আমি কেবল আমার রবকে ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না”। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ২০]

১৬- মক্কায় অবস্থান কালে স্মরণ করুন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মক্কা নগরীতে দীর্ঘ ১৩টি বছর অবস্থান করে একত্ববাদের কালিমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’র প্রতি দাওয়াত দিয়েছেন। অর্থাৎ ‘আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো ইলাহ নেই’। এই তাওহীদ প্রতিষ্ঠার পেছনেই তিনি দীর্ঘ সময় মেহনত করেছেন। তাওহীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আল্লাহ সম্বন্ধে এ বিশ্বাস পোষণ করা যে তিনি ‘আরশের উপর আছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ٱلرَّحۡمَٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ٥﴾ [ طه : ٥ ]

“পরম দয়ালু রহমান ‘আরশে উঠেছেন”। [সূরা ত্বাহা, আয়াত: ৫]

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাবলেছেন,

«إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ كِتَابًا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ الخَلْقَ : إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ غَضَبِي، فَهُوَ مَكْتُوبٌ عِنْدَهُ فَوْقَ العَرْشِ»

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিকুল সৃষ্টির পূর্বে একটি লিখনি লিখেছেন, আমার রহমত (করুণা) আমার ক্রোধকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটি তাঁর নিকট আরশের উপর লিখিত আছে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৫৫৪।]

১৭- নারীর পক্ষে মাহরাম ব্যতীত হজ ও অন্যান্য সফর করা হারাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

«وَلَا تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ إِلَّا مَعَ ذِي مَحْرَمٍ»

“নারী যেন মাহরাম ব্যতীত সফর না করে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪১।]

১৮- নারীর মাহরামের অবিদ্যমানতায় কোনো পুরুষ তার সাথে চুক্তি করে মাহরামের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বৈধ নয়।

১৯- নারীর পক্ষে কোনো আজনবী পুরুষকে ভাই বানিয়ে মাহরাম বানানো, এবং তার সাথে মাহরামের ন্যায় মুআমালা (আচরণ) করা শরিয়ত অনুমোদন করে না।

২০- নারীর পক্ষে অপর নির্ভরযোগ্য (তাদের ধারণায়) নারী জামা‘আতের সাথে সফর করা না জায়েয। অনুরূপভাবে তাদের একজনের সাথে মাহরাম আছে সুতরাং তিনি সকলের জন্য মাহরাম এ ধারণায় অন্য নারীর পক্ষে তার সাথে সফর করাও না জায়েয।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন