HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের মূলনীতিসমূহের ব্যাখ্যা

লেখকঃ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উছাইমীন

দীন ইসলাম:
ইসলাম সেই মহান দীন বা সত্য ও সঠিক জীবন বিধান, যা সহকারে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাহমাতুল লিল ‘আলামীনরূপে প্রেরণ করেন এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদ্বারা সমস্ত ধর্ম রহিত করে দেন, তাঁর বান্দাদের জন্য তা পূর্ণ করে দেন এবং এরই মাধ্যমে বান্দাদের ওপর আল্লাহর নি‘আমতের চুড়ান্ত পরিপূর্ণতার ঘোষণা প্রদান করেন ও বিশ্বমানবতার জন্য ইসলামকে একমাত্র দীন হিসেবে মনোনিত করেন। তিনি কারো থেকে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন কবুল করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٖ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَۗ﴾ [ الاحزاب : ٤٠ ]

“মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নন; (১) বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ নবী’’। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ﴾ [ المائ‍دة : ٣ ]

“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সুসম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যএকমাত্র দীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” [সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ৩]

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

﴿إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ﴾ [ ال عمران : ١٩ ]

‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দীন হলো একমাত্র ইসলাম।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ১৯]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন অনুসন্ধান করে, কস্মিণকালেও তার নিকট হতে তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

আল্লাহ তা‘আলা মানবকূলের ওপর তাঁর মনোনীত এই দীন গ্রহণ করা ফরয করে দিয়েছন। তিনি স্বীয় নবীকে সম্বোধন করে বলেন,

﴿قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۖ فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [ الاعراف : ١٥٨ ]

“(হে নবী) বলে দিন, হে মানবমণ্ডলী, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যিনি সমগ্র আসমান ও যমিনের সার্বভৌমত্বের অধিকারী। তিনি ছাড়া আর কোনো সত্যিকার উপাস্য নেই। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহর ওপর, তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর ওপর, যিনি ঈমান রাখেন আল্লাহ ও তাঁর সমস্ত কালামের ওপর। তাঁর অনুসরণ কর, যাতে তোমরা সঠিক সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।’’ [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৮]

সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সেই মহান আল্লাহর কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, এই উম্মতের মধ্যকার লোক হোক সে ইয়াহূদী কিংবা খ্রিস্টান; যে লোক আমার আবির্ভাব সম্পর্কে অবহিত হবে, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ ব্যতিরেকে মারা যাবে সে জাহান্নামে যাবে।”

 রাসূলের প্রতি ঈমানের অর্থ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে হিদায়াত এবং শিক্ষা নিয়ে এসেছেন সে সব বিষয়কে বিশ্বাস সহকারে গ্রহণ করা ও তার প্রতি অনুগত হওয়া। শুধু বিশ্বাস করাই যথেষ্ট নয়। এজন্যই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাচা আবু তালেব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনয়নকারী বলে বিবেচিত হন নি অথচ তিনি রাসূল যা নিয়ে এসেছিলেন তা সত্য বলে বিশ্বাস করতেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনিত ইসলাম সর্বাপেক্ষা উত্তম ধর্ম।

 ইসলামের মৌলিক বৈশিষ্ট্যাবলী:

এক: পূর্ববর্তী সব ধর্মের কল্যাণসমূহ ইসলামে নিহিত আছে। অন্যান্য ধর্মের ওপর ইসলামের প্রাধান্যের অন্যতম কারণ এটাও যে, ইসলাম স্থান-কাল, জাতি নির্বিশেষে সবার জন্য উপযোগী। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন,

﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ﴾ [ المائ‍دة : ٤٨ ]

“আর আমরা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ যা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর ওপর বিচারকারী (তাতে যে হক রয়েছে এবং যে বাতিল প্রবিষ্ট হয়েছে তা নির্ধারণকারী) হিসেবে’’। [সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ৪৮]

‘ইসলাম নামক দীনটি স্থান-কাল, জাতি নির্বিশেষে সবার জন্য উপযুক্ত’ এর অর্থ এই যে, ইসলামের প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন কোনো যুগে বা কোনো দেশে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী নয়; বরং তা সকল জাতির জন্য কল্যাণকর ও উপযোগী। আবার এর অর্থ এই নয় যে, ইসলাম প্রত্যেক স্থান-কাল ও জাতির প্রবৃত্তির অনুগত হয়ে থাকবে; যেমন কোনো কোনো লোক উদ্দেশ্য নিয়ে থাকে।

দুই: ইসলাম সে মহা সত্য দীন, যদি কেউ তা সঠিকভাবে ধারণ করে তা হলে তার প্রতি আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন এবং অন্য সবকিছুর ওপর তাকে জয়যুক্ত করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هُوَ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِينِ ٱلۡحَقِّ لِيُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ٣٣﴾ [ التوبة : ٣٣ ]

‘‘তিনিই সে সত্ত্বা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন। যাতে একে অন্য সমস্ত দীনের ওপর জয়যুক্ত করেন। যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৩]

তিনি আরো বলেন,

﴿وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَيَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ كَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِينَهُمُ ٱلَّذِي ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡنٗاۚ يَعۡبُدُونَنِي لَا يُشۡرِكُونَ بِي شَيۡ‍ٔٗاۚ وَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡفَٰسِقُونَ ٥٥﴾ [ النور : ٥٥ ]

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসন কর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন, তিনি শাসনকর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সূদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে। যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদেরকে ভয় ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার ইবাদাত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হয়, তারা হলো ফাসেক।’’ [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৫]

তিন: ইসলাম আক্বীদা ও শরী‘আত উভয়ের সমন্বয়ে গঠিত বিষয়ের নাম। ইসলাম তার আক্বীদা ও শরী‘আতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যেমন,

১। ইসলাম আল্লাহর একত্বের আদেশ দেয় এবং শির্ক থেকে নিষেধ করে।

২। ইসলাম সত্যের আদেশ দেয় এবং মিথ্যা থেকে নিষেধ করে।

৩। ইসলাম ন্যায় ও ইনসাফের [আদল বা ইনসাফ হচ্ছে: সমপর্যায়সম্পন্নদের ব্যাপারে সমতা আর ভিন্নমুখীদের ব্যাপারে ভিন্নতা প্রতিষ্ঠা করা। আদল অর্থ কখনো নিঃশর্ত সাম্য প্রতিষ্ঠা নয় যেমনটি কোনো কোনো লোক বলে থাকে। তারা বলে, ইসলাম সাম্যের ধর্ম এবং শর্তহীনভাবে তা বলতে থাকে। কারণ ভিন্ন মুখীদের মধ্যে সমতা বিধান করা এক প্রকার যুলুম, যা ইসলাম কখনো করে নি আর যারা তা করবে ইসলাম তাদের প্রশংসাও করে নি।] নির্দেশ দেয় এবং যুলুম অত্যাচার থেকে নিষেধ করে।

৪। ইসলাম আমানত আদায়ের নির্দেশ দেয় এবং আমানতের খিয়ানত করতে নিষেধ করে।

৫। ইসলাম প্রতিশ্রুতি রক্ষার নির্দেশ দেয় এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ থেকে নিষেধ করে।

৬। ইসলাম মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও আনুগত্যের হুকুম দেয় এবং তাদের প্রতি অবাধ্য আচরণ করা থেকে নিষেধ করে।

৭। ইসলাম আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার হুকুম দেয় এবং সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা থেকে নিষেধ করে।

৮। ইসলাম প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেয় এবং অসদ্ব্যবহারে বাধা দেয়।

সারকথা, ইসলাম সর্বপ্রকার উত্তম চরিত্রের আদেশ দেয় এবং যাবতীয় কু-চরিত্র থেকে নিষেধ করে। প্রতিটি সৎকর্মের হুকুম দেয় ও প্রতিটি অপকর্ম থেকে নিষেধ করে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُ بِٱلۡعَدۡلِ وَٱلۡإِحۡسَٰنِ وَإِيتَآيِٕ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَيَنۡهَىٰ عَنِ ٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِ وَٱلۡبَغۡيِۚ يَعِظُكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ ٩٠﴾ [ النحل : ٩٠ ]

“আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ এবং আত্মীয় স্বজনকে দান করার আদেশ দেন এবং অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ ও সীমালংঘন নিষেধ করেন; তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। [সূরা আন-নাহল আয়াত: ৯০]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন