মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ফিরিশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট এক অদৃশ্য জগত। তাঁরা সর্বদা আল্লাহর ইবাদাতে মাশগুল থাকেন; তাঁদের মধ্যে উলুহিয়্যাত বা রুবুবিয়্যাতের কোনো বৈশিষ্ট্য নেই।
আল্লাহ তাঁদেরকে নূরের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাঁদেরকে তাঁর পূর্ণ আনুগত্যের গুণ প্রদান করেছেন এবং তাঁর আদেশ বাস্তবায়ন করার তাঁদেরকে ক্ষমতা দান করেছেন।
“আর যারা তাঁর সান্নিধ্যে আছে, তাঁরা অহংকারবশে তাঁর ইবাদাত করা হতে বিমুখ হয় না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না। তাঁরা দিবা-রাত্রি তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করে এবং কোনো সময় শৈথিল্য করে না।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১৯-২০]
তাঁদের সংখ্যা এতবেশী যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ তা গণনা করে শেষ করতে পারবে না। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মি‘রাজের ঘটনায় বর্ণিত আছে যে, ‘নবী সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসমানে অবস্থিত ‘বায়তুল মা‘মুর’ দেখেন। এই বায়তুল মা‘মুরে দৈনিক সত্তর হাজার ফিরিশতা প্রবেশ করে। কিয়ামত পর্যন্ত তাদের পুনরায় প্রবেশ করার পালা আর আসবে না।’
ফিরিশতাদের প্রতি ঈমানের মধ্যে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
১। ফিরিশতাদের অস্তিত্বের ওপর ঈমান আনা।
২। কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা যাদের নাম আমাদের জেনেছি যেমন, জিবরীল আলাইহিস সালাম, তাঁদের ওপর নির্দিষ্ট করে ঈমান আনা। আর যাদের নাম আমাদের জানা নেই তাঁদের প্রতি সার্বিকভাবে ঈমান আনা।
৩। কুরআনুল করীম ও সহীহ হাদীসে বর্ণিত তাঁদের গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনা। যেমন, জিবরীলের ব্যাপারে রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁকে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছেন। তাঁর ছয়শত ডানা আছে যা গোটা দিগন্তকে ঘিরে রেখেছে।
আর ফিরিশতারা আল্লাহর আদেশে মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা যখন জিবরীল আলাইহিস সালামকে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর জননী মারইয়ামের নিকট প্রেরণ করেন। তখন তিনি তাঁর নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করলেন।
অনুরূপভাবে জিবরীল আলাইহিস সালাম একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক অজ্ঞাত ব্যক্তির আকৃতিতে উপস্থিত হন তখন তিনি সাহাবায়ে কেরামের মাঝে বসা ছিলেন, তাঁর (জিবরীলের) পরিহিত পোষাক ছিল সাদা ধবধবে, মাথার চুল ছিল ঘনকালো। ভ্রমণের কোনো লক্ষণ তাঁর ওপর দেখা যাচ্ছিল না। সাহাবীগণের কেউ তাঁকে চিনতেও পারে নি। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে তাঁর হাটুর সাথে আপন হাঁটু মিলিয়ে বসলেন এবং আপন হস্তদ্বয় তাঁর উরুর উপর রাখলেন এবং তাঁকে ইসলাম, ঈমান, ইহসান এবং কিয়ামত ও তার লক্ষণাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলোর জবাব দেন। এরপর তিনি চলে যান। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন,
“ইনি জিবরীল, তোমাদেরকে তোমাদের দীন শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন।” (সহীহ মুসলিম)
এভাবে আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম ও লুত আলাইহিমাস সালাম-এর নিকট যে সব ফিরিশতাকে প্রেরণ করেছিলেন তারাও পুরুষলোকের অকৃতিতে উপস্থিত হয়েছিলেন।
৪। ফিরিশতাগণের ‘আমল বা কর্মসমূহের ওপর ঈমান আনা, যা তাঁরা আল্লাহর নির্দেশে পালন করে থাকে। যেমন, ফিরিশতাদের দিন-রাত তাসবীহ পাঠ ও আল্লাহর ইবাদাত করা বিনা ক্লান্তি ও বিনা অলসতায়।
তাদের মধ্যে কোনো কোনো ফিরিশতা বিশেষ বিশেষ দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। যেমন, জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি নবী রাসূলগণের প্রতি আল্লাহর কালাম ও ওহী বহন করেন।
আরও যেমন, মিকায়ীল আলাইহিস সালাম, তিনি আল্লাহর অদেশক্রমে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
আরও যেমন, ইসরাফীল আলাইহিস সালাম, তিনি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময়ে এবং সৃষ্টিকুলের পুনরুত্থানের সময়ে শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন।
আরও যেমন, মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম, সমস্ত প্রাণী জগতের মৃত্যুর সময় তার রূহ অধিগ্রহণের দায়িত্বে ন্যস্ত।
আরও যেমন, মালিক (আলাইহিস্ সালাম) তিনি দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক।
আরও যেমন, একদল ফিরিশতা, যারা মায়ের গর্ভে সন্তানদের ভ্রূণের দায়িত্বে নিয়োজিত। মাতৃগর্ভে যখন সন্তানের চার মাস পূর্ণ হয়, তখন সেই সন্তানের কাছে আল্লাহ তা‘আলা একজন ফিরিশতা প্রেরণ করেন এবং তাকে সেই মানবসন্তানের রিজিক্ব, মৃত্যুক্ষণ, ‘আমল এবং সে সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্যবান তা লিখার নির্দেশ প্রদান করেন।
আরও অনুরূপ আরেক দল ফিরিশতা, যারা প্রত্যেক মানুষের আমলনামা সংরক্ষণ ও লেখার দায়িত্বে নিয়োজিত। বস্তুত তারা দু’জন। একজন ডানদিকে অপরজন বামদিকে।
আরও যেমন, একদল ফিরিশতা মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর কবরে তাকে প্রশ্ন করার দায়িত্বে নিয়োজিত। মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার পর দু’জন ফিরিশতা এসে তাকে তিনটি বিষয়ে প্রশ্ন করেন,
এক: তার রব বা প্রভু সম্পর্কে।
দুই: তার দীন সম্পর্কে।
তিন: তার নবী সম্পর্কে।
ফিরিশতাদের প্রতি ঈমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকার রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো:
প্রথমত: মহান আল্লাহর মাহত্ম্য, অসীম শক্তি ও তাঁর কর্তৃত্ব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ। কেননা, সৃষ্টির মাহত্ম্য স্রষ্টার মাহত্ম্য থেকেই প্রাপ্ত।
দ্বিতীয়ত: আদমসন্তানের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ অনুগ্রহের জন্য তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন; যেহেতু তিনি ফিরিশতাদেরকে মানুষের হিফাযত, তাদের ‘আমলনামা সংরক্ষণসহ তাদের বহুবিধ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত রেখেছেন।
তৃতীয়ত: ফিরিশতাদের প্রতি মহব্বত সৃষ্টি; যেহেতু তাঁরা যথাযথভাবে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত সম্পাদন করে চলছেন।
একদল বিভ্রান্ত লোক ফিরিশতাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে। তারা বলে, ফিরিশতারা হলো সৃষ্টিকুলের মধ্যে নিহিত কল্যাণশক্তি বিশেষ। তাদের এই বক্তব্য আল্লাহর কিতাব, তাঁর রাসূলের হাদীস ও মুসলিম ঐক্যমতে মিথ্যারোপ করার নামান্তর।
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। যিনি আকাশমণ্ডল ও জমিনের স্রষ্টা এবং ফিরিশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক। তারা দুই-দুই, তিন-তিন, চার-চার ডানা বিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টির মধ্যে যা ইচ্ছা বৃদ্ধি করে দেন।” [সূরা ফাতির, আয়াত: ১]
“আর যদি তুমি দেখ! যখন ফিরিশতারা কাফেরদের প্রাণ হরণ করে এবং প্রহার করে তাদের মুখে ও তাদের পশ্চাদদেশে; আর বলে, তোমরা দহনযন্ত্রনা ভোগ কর।” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৫০]
“অবশেষে যখন তাদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যায়। তখন তারা পরস্পর বলে, তোমাদের পালনকর্তা কি বললেন? তারা বলে, তিনি সত্যই বলেছেন এবং তিনিই সবার ওপরে মহান।’’ [সূরা সাবা, আয়াত: ২৩]
“তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরাও। ফিরিশতা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে। বলবে, তোমাদের ধৈর্যের কারণে, তোমাদের ওপর শাস্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এই শেষ গন্তব্যস্থল কতই না চমৎকার।’’ [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৩-২৪]
সহীহ বুখারীতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি জিবরীলকে ডেকে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, তুমিও তাকে ভালোবাস। তখন জিবরীল তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর জিবরীল আকাশবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন, আল্লাহ তা‘আলা অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস। তখন আকাশবাসীগণ সেই বান্দাকে ভালোবাসেন। এর ফলশ্রুতিতে পৃথিবীতেও সেই বান্দার গ্রহণযোগ্যতা অর্জিত হয়ে যায়।”
সহীহ বুখারীতে আরেকটি হাদীস প্রসিদ্ধ সাহাবী আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহ আনহু) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
‘‘যখন জুমু‘আর দিন হয় তখন মসজিদের প্রত্যেক দরজায় ফিরিশতাগণ অবস্থান গ্রহণ করেন। তাঁরা সালাতে আগমনকারীদের নাম যথাক্রমে লিখতে থাকে। তারপর ইমাম যখন খুৎবার জন্য মিম্বরে বসে পড়েন তখন তারা তাদের ফাইল গুটিয়ে নেয় এবং খুৎবা শুনার জন্য তারা হাজির হয়ে যায়।’’
এসব আয়াত ও হাদীস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, ফিরিশতাদের অস্তিত্ব রয়েছে, তাঁরা অশরীরী কোনো অর্থে নন; যেমনটি বিভ্রান্ত লোকেরা বলে থাকে। উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলোর মর্মার্থ অনুযায়ী এই ব্যাপারে সমগ্র মুসলিমের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/19/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।