HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের মূলনীতিসমূহের ব্যাখ্যা

লেখকঃ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উছাইমীন

ইসলামের ভিত্তিসমূহ
ইসলামের ভিত্তি হলো পাঁচটি। এগুলো আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা কর্তৃক বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীসে উল্লিখিত আছে। তিনি বলেছেন, ‘‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের ওপর। যথা, (১) এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য মা‘বুদ বা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসূল। (২) সালাত কায়েম করা, (৩) যাকাত প্রদান করা, (৪) রমযানের সাওম পালন করা এবং (৫) কাবাঘরের হজ পালন করা।’’ এক ব্যক্তি হাদীসে বর্ণিত রুকনসমূহের ধারাবাহিক বর্ণনায় হজ্জ্বকে রমযানের সাওমের আগে উল্লেখ করলে আব্দুল্লাহ্ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তা অস্বীকার করে বললেন, ‘রমযানের সাওম ও হজ’ এভাবেই আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। (বুখারী ও মুসলিম, শব্দ মুসলিমের)

প্রথম ভিত্তি: কালিমাতুশ শাহাদাহ:

شَهَادَةِ أَنْ لا إِلَهَ إِلاَ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

এর অর্থ হলো, ‘‘এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। এ কথা মনে প্রাণে দৃঢ় বিশ্বাস করা এবং মুখে উচ্চারণ করা। এমনভাবে সেটা মনে দৃঢ় হবে যেন তা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এই বাক্যে একাধিক বিষয় থাকা সত্বেও তাকে ইসলামের একটি ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; এর কয়েকটি কারণ হতে পারে:

সম্ভবত তা এ জন্য যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে তার দীনের প্রচারক হেতু তাঁর উবুদিয়্যাত ও রিসালাত তথা আল্লাহর বান্দা ও রাসূল হওয়ার সাক্ষ্য প্রদান -লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু -এর সাক্ষ্য প্রদানের সম্পূরক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

অথবা এ দুটি সাক্ষ্যই সমস্ত ইবাদাত ও সৎকর্ম সহীহ-শুদ্ধ হওয়া এবং আল্লাহ তা‘আলার নিকট তা গ্রহণযোগ্য হওয়ার পূর্বশর্ত। কারণ কোনো ইবাদাত শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হয় না যতক্ষণ না তার মধ্যে দুটি শর্ত পাওয়া যায়; (ক) ইখলাছ অর্থাৎ শির্ক থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে ইবাদাত করা, (খ) মুতাবা‘আত অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা ও পদ্ধতি অনুযায়ী ইবাদাতগুলো সম্পাদন করা। সুতরাং ইখলাছের দ্বারা ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’-এর সাক্ষ্য বাস্তবায়িত হয় আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিপূর্ণ আনুগত্যের দ্বারা ‘‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’ এর সাক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়।

কালিমায়ে শাহাদাত -এর সাক্ষ্য প্রদানের অন্যতম প্রধান ফল হলো:

অন্তর ও আত্মাকে সৃষ্টির গোলামী থেকে বের করা এবং নবী রাসূলগণ ছাড়া অন্যের আনুগত্য থেকে মুক্ত করা।

দ্বিতীয় ভিত্তি: সালাত কায়েম করা:

এর অর্থ হলো: সঠিক পদ্ধতি ও পরিপূর্ণভাবে, নির্দিষ্ট সময় ও সুষ্ঠুপন্থায় সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত সম্পাদন করা।

সালাতের অন্যতম ফলাফল হলো, এর মাধ্যমে মনের প্রশান্তি, চোখের শীতলতা লাভ এবং অশ্লীল ও ঘৃণ্য কর্ম-কাণ্ড হতে বিরত থাকা যায়।

তৃতীয় ভিত্তি: যাকাত প্রদান করা:

আর তা হলো যাকাতের উপযুক্ত ধন-সম্পদে নির্ধারিত পরিমাণ মাল ব্যয়ের মধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত করা।

যাকাত প্রদানের অন্যতম উপকারিতা হলো, যাকাত প্রদানের মধ্যমে কৃপণতার মতো হীন চরিত্র হতে আত্মাকে পবিত্র করা এবং ইসলাম ও মুসলমানদের অভাব পূরণ করা যায়।

চতুর্থ ভিত্তি: রমযান মাসের সাওম:

সাওম হচ্ছে রমযান মাসে দিনের বেলায় সাওম ভঙ্গকারী বিষয়াদি যেমন, পানাহার, যৌনাচার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত পালন করা।

সাওমের অন্যতম উপকারিতা: আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায় স্বীয় কামনা-বাসনার বস্তুসমূহ বিসর্জনের মাধ্যমে আত্মার উৎকর্ষ সাধন করা।

পঞ্চম ভিত্তি: হজ্জ পালন করা:

এর অর্থ হলো: হজের কাজসমূহ পালনের জন্য বায়তুল্লাহর উদ্দেশ্যে গমন করে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত করা।

হজের অন্যতম উপকারিতা:

আল্লাহর আনুগত্যে নিজের শারিরীক ও অর্থনৈতিক সম্পদ ব্যয় করার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির অনুশীলন করা। এই কারনে হজ পালন আল্লাহর পথে এক প্রকার জিহাদ হিসেবে পরিগণিত।

আমরা ইসলামের স্তম্ভসমূহ সম্পর্কে উপরে যে সব উপকারিতার কথা উল্লেখ করেছি এবং যা উল্লেখ করি নি, সবকিছুই জাতিকে এমন পবিত্র মুসলিম জাতিতে পরিণত করবে, যারা আল্লাহর জন্যই এ সত্য দীন পালন করবে, সৃষ্টিজগতের সাথে ন্যায়পরায়ণতা ও সততার আচরণ করবে। কেননা ইসলামী শরী‘আতের এ ভিত্তিসমূহ সংশোধন হলে শরী‘আতের অন্যান্য বিধানগুলোও সংশোধিত হয়ে যাবে আর মুসলিম উম্মতের সার্বিক অবস্থা সংশোধিত হয়ে যাবে তার দীনী উন্নতি যথাযথভাবে সম্পন্ন হলেই। পক্ষান্তরে তাদের দ্বীনী কর্মকাণ্ডে যতটুকু ভাটা পড়বে ততটুকুই তাদের অবস্থার অবনতি ঘটবে।

যে আমার উপরোক্ত বক্তব্যের যথার্থতা যাচাই করতে চায় সে যেন কুরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করে:

﴿وَلَوۡ أَنَّ أَهۡلَ ٱلۡقُرَىٰٓ ءَامَنُواْ وَٱتَّقَوۡاْ لَفَتَحۡنَا عَلَيۡهِم بَرَكَٰتٖ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ وَلَٰكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذۡنَٰهُم بِمَا كَانُواْ يَكۡسِبُونَ ٩٦ أَفَأَمِنَ أَهۡلُ ٱلۡقُرَىٰٓ أَن يَأۡتِيَهُم بَأۡسُنَا بَيَٰتٗا وَهُمۡ نَآئِمُونَ ٩٧ أَوَ أَمِنَ أَهۡلُ ٱلۡقُرَىٰٓ أَن يَأۡتِيَهُم بَأۡسُنَا ضُحٗى وَهُمۡ يَلۡعَبُونَ ٩٨ أَفَأَمِنُواْ مَكۡرَ ٱللَّهِۚ فَلَا يَأۡمَنُ مَكۡرَ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلۡقَوۡمُ ٱلۡخَٰسِرُونَ ٩٩ ﴾ [ الاعراف : ٩٦، ٩٩ ]

“জনপদের অধিবাসীরা যদি ঈমান আনত এবং তাক্ওয়া অবলম্বন করত, তাহলে আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের সমস্ত বরকতের দ্বার উন্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা যখন মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন আমরা তাদেরকে তাদেরই কৃতকর্মের দরুন পাকড়াও করেছি। জনপদের অধিবাসীরা এব্যাপারে কি নিশ্চিন্ত যে, আমাদের আযাব তাদের ওপর রাতের বেলায় এসে পড়বে না ! যখন তারা থাকবে ঘুমে অচেতন? জনপদের অধিবাসীরা কি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের ওপর আমাদের আযাব দিনের বেলায় এসে পড়বে না! যখন তারা থাকবে খেলা-ধুলায় মত্ত? তারা কি আল্লাহর পাকড়াও-এর ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে? বস্তুত আল্লাহর পাকড়াও থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে’’। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৯৬-৯৯]

সাথে সাথে অতীত লোকদের ইতিহাসের প্রতিও প্রত্যেকের লক্ষ্য করা উচিত। কেননা, ইতিহাসে রয়েছে বুদ্ধিমান এবং যাদের অন্তরে আবরণ পড়ে নি এমন লোকদের জন্য প্রচুর জ্ঞান ও শিক্ষনীয় বিষয়বস্তু। আর আল্লাহই আমাদের সহায়।

ইসলামী আক্বীদার ভিত্তিসমূহ

পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলাম হচ্ছে আক্বীদা ও শরী‘আতের সামষ্টিক নাম। ইতোপূর্বে ইসলামী শরী‘আতের ভিত্তিসমূহের বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী আক্বীদার ভিত্তিসমূহ যা পবিত্র কুরআনে কারীম ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, তা হলো:

আল্লাহর ওপর, তাঁর ফিরিশতাগণের ওপর, তাঁর কিতাবসমূহের ওপর, তাঁর রাসূলগণের ওপর, শেষ দিবসের ওপর ও ভাল মন্দসহ তক্বদীরের প্রতি ঈমান স্থাপন করা।

উক্ত ভিত্তিসমূহের প্রমাণ কুরআনে কারীম ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহীহ সুন্নাহতে এসেছে।

যেমন, আল্লাহ তা‘আলা কুরআন কারীমে বলেন,

﴿لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ﴾ [ البقرة : ١٧٧ ]

“সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাবে; বরং সৎকাজ হলো, ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামতদিবসের ওপর, ফিরিশতাদের ওপর, আসমানী কিতাবসমূহের ওপর এবং সমস্ত নবী-রাসূলগণের ওপর।’’ [সূরা আল-বাক্বারা, আয়াত: ১৭৭]

আর তাক্বদীর সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ وَمَآ أَمۡرُنَآ إِلَّا وَٰحِدَةٞ كَلَمۡحِۢ بِٱلۡبَصَرِ ٥٠﴾ [ القمر : ٤٩، ٥٠ ]

“নিশ্চয় আমরা প্রত্যেকটি বস্তু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাণে (তাকদীর অনুযায়ী)। আমার কাজ তো সম্পন্ন হয় এক মুহুর্তে, চোখের পলকের মতো।’’ [সূরা আল-ক্বামার, আয়াত: ৪৯-৫০]

অনুরূপভাবে প্রসিদ্ধ হাদীসে জিবরীলে বর্ণিত আছে যে, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) উপস্থিত হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামকে ঈমান সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, ‘‘ঈমান হলো, তুমি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি ও ভালো-মন্দসহ তাঁর তাক্বদীরের প্রতি ঈমান স্থাপন করবে।” [সহীহ মুসলিম]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন