HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের মূলনীতিসমূহের ব্যাখ্যা

লেখকঃ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উছাইমীন

ঈমানের প্রথম ভিত্তি হলো আল্লাহ তা‘আলার ওপর ঈমান
আল্লাহর ওপর ঈমানের মধ্যে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

এক: আল্লাহ তা‘আলার অস্তিত্বের ওপর ঈমান: ফিত্বরাত, (স্বাভাবিক প্রকৃতি) যুক্তি ও শরী‘আত এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য দলীল সবই আল্লাহ তা‘আলার অস্তিত্বের প্রমাণ করে,

(১) ফিত্বরাতের আলোকে আল্লাহর অস্তিত্ব:

আল্লাহর অস্তিত্বের ওপর ফিত্বরাত তথা স্বাভাবিক প্রকৃতিগত প্রমাণ হলো, আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিগতভাবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে চিন্তা ও শিক্ষা ছাড়াই স্রষ্টার ওপর ঈমান গ্রহণের যোগ্যতা নিহিত রেখেছেন। ফিত্বরাতের এ দাবী থেকে কেউ বিমুখ হয় না, যদি না সেখানে তা থেকে নিরোধকারী কোনো বিষয়ের প্রতিক্রিয়া পড়ে। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلاَ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ»

“প্রতিটি শিশুই ইসলামী ফিত্বরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে; কিন্তু তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহূদী, খ্রিস্টান অথবা অগ্নিউপাসকে পরিণত করে।’’ [সহীহ বুখারী]

(২) বিবেক-বুদ্ধি ও যুক্তির আলোকে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ:

পূর্বাপর সৃষ্টি-জগতের সকল কিছু প্রমাণ করে যে, এসবকিছুর এমন একজন স্রষ্টা আছেন যিনি এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন। কেননা জগতের কোনো বস্তু নিজেই নিজকে অস্তিত্ব দান করেনি অথবা এসব কিছু হঠাৎ করেই আপনা-আপনি অস্তিত্ব লাভ করে নি। আর কোনো কিছুর নিজেই নিজেকে অস্তিত্ব দান করা কখনো সম্ভব নয়। কারণ, বস্তু কখনো নিজেই নিজকে সৃষ্টি করতে পারে না। কেননা, তা অস্তিত্ব লাভের পূর্বে ছিল অস্তিত্বহীন এবং যা ছিল অস্তিত্বহীন তা কীভাবে নিজের স্রষ্টা হতে পারে? আবার হঠাৎ করেই আপনা-আপনি অস্তিত্ব লাভ করাও সম্ভব নয়; কেননা প্রতিটি ঘটনার কোনো না কোনো ঘটক থাকে। আর সমগ্র বিশ্ব-জগৎ এবং এর মধ্যকার সকল ঘটনা- প্রবাহ এমন এক অভূতপূর্ব নিয়মে এবং একে অপরের সাথে সুন্দর ও সুচারুরূপে পরিচালিত হচ্ছে যে, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ বিশ্বজগতের হঠাৎ করে আপনা-আপনি অভ্যুদয় ঘটে নি। হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া কোনো কিছু নিয়ম বহির্ভূতভাবে হয়ে থাকে, এর মূল কোনো নিয়ম থাকে না, তা হলে এ সৃষ্টি এত সুশৃঙ্খলভাবে দীর্ঘ পরিক্রমায় কীভাবে টিকে আছে? তাহলে সৃষ্টিজগত যখন নিজকে নিজে অস্তিত্ব দান করতে পারে নি এবং হঠাৎ করেও তা সৃষ্টি হয় নি, তাই এ থেকে প্রমাণিত হলো যে এর একজন স্রষ্টা আছেন, যিনি হলেন সমস্ত জগতের রব আল্লাহ।

আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমের সূরা আত্ব-তুরে এই যুক্তিসঙ্গত দলীল উল্লেখ করে বলেন,

﴿أَمۡ خُلِقُواْ مِنۡ غَيۡرِ شَيۡءٍ أَمۡ هُمُ ٱلۡخَٰلِقُونَ ٣٥ أَمۡ خَلَقُواْ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ ٣٦ أَمۡ عِندَهُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمۡ هُمُ ٱلۡمُصَۜيۡطِرُونَ ٣٧﴾ [ الطور : ٣٥، ٣٧ ]

‘‘তারা কি নিজেরাই আপনা-আপনি সৃষ্ট হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই নিজেদের স্রষ্টা? না তারা নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে কি আপনার পালনকর্তার ভাণ্ডার রয়েছে, নাকি তারাই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক? [সূরা আত্ব-তূর, আয়াত: ৩৫-৩৭]

তাই জুবাইর ইবনুল মুত‘য়িম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘‘ইসলাম গ্রহণের পূর্বে আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবের সালাতে সূরা আত্ব-তূর পড়তে শুনি। তিনি যখন উল্লিখিত আয়াতে পৌঁছলেন তখন জুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মনে হলো যেন আমার অন্তর উড়ে যাচ্ছে। তাঁর কুরআন শ্রবণের এটাই ছিল আমার প্রথম ঘটনা।” তিনি বলেন, “সে দিনই আমার অন্তরে ঈমান স্থান করে নিয়েছিল।’’ (বুখারী ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তা বর্ণনা করেন)

আরেকটি উদাহরণ দিয়ে এ যুক্তিটাকে আরো স্পষ্ট ভাবে অনুধাবন করা যায়। যেমন, কোনো লোক যদি আপনাকে এমন একটি বিরাট প্রাসাদের কথা বলে যার চর্তুপাশ্বে বাগান, ফাঁকে-ফাঁকে রয়েছে প্রবাহমান নদ-নদী ও ঝর্ণাধারা, প্রাসাদে রয়েছে এর পূর্ণতা দানকারী সব সরঞ্জামাদি। অতঃপর যদি সে বলে যে, এ প্রাসাদ ও এর মধ্যে যে পরিপূর্ণতা রয়েছে সব কিছু নিজেই নিজকে সৃষ্টি করেছে বা আপনা-আপনি আকস্মিকভাবে অস্তিত্ব লাভ করেছে। তখন আপনি বিনা দ্বিধায় তা অস্বীকার করবেন, তাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করবেন বরং তার কথাকে বড় ধরনের বোকামী বলে আখ্যায়িত করবেন। তাহলে এ বিশাল আসমান, জমিন ও এতদুভয়ের মাঝে লক্ষ-লক্ষ অনুপম সৃষ্টি কি নিজেই নিজের স্রষ্টা বা স্রষ্টা ছাড়াই কি তা আপনা-আপনিই অস্তিত্ব লাভ করেছে?

(৩) শরী‘আতের আলোকে আল্লাহ তা‘আলার অস্তিত্বের প্রমাণ:

সকল আসমানীগ্রন্থে আল্লাহর অস্তিত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং ঐ সব গ্রন্থে বিদ্যমান সৃষ্টিজগতের কল্যাণ সংবলিত হুকুম আহকাম প্রমাণ করে যে, এ সব কিছু এমন প্রজ্ঞাময় প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে যিনি অবহিত আছেন সৃষ্টি জগতের সার্বিক কল্যাণ সম্পর্কে। আর সেসব গ্রন্থে সৃষ্টিজগত সম্পর্কে যে সব সংবাদ এসেছে আর বাস্তব যা সত্য বলে সাক্ষ্য দিচ্ছে তা প্রমাণ করছে যে, এ সৃষ্টিজগত এমন মহান রবের পক্ষ থেকে এসেছে যিনি তাঁর দেওয়া সংবাদ অনুযায়ী অস্তিত্বদানে সক্ষম।

(৪) ইন্দ্রিয় অনুভুতির আলোকে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ:

এ ধরণের প্রমাণ আমরা দু’দিক থেকে পেশ করতে পারি:

প্রথমত: আমরা শুনি ও দেখি যে, প্রার্থনাকারীদের অনেক প্রার্থনা কবুল হচ্ছে, অসহায় ব্যক্তিগণ বিপদ থেকে উদ্ধার পাচ্ছেন। এর দ্বারা আল্লাহর অস্তিত্ব অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَنُوحًا إِذۡ نَادَىٰ مِن قَبۡلُ فَٱسۡتَجَبۡنَا لَهُۥ فَنَجَّيۡنَٰهُ وَأَهۡلَهُۥ مِنَ ٱلۡكَرۡبِ ٱلۡعَظِيمِ ٧٦﴾ [ الانبياء : ٧٦ ]

“স্মরণ করো নূহকে, সে যখন আহ্বান করেছিল তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম।’’[সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৭৬]

অপর একটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

{ إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ }

“স্মরণ করো, তোমরা যখন তোমাদের রবের কাছে উদ্ধার প্রার্থনা করছিলে তখন তিনি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করেছিলেন।” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৯]

সহীহ বুখারীতে আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খুৎবা প্রদানের সময় এক বেদুঈন মসজিদে প্রবেশ করে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর পরিবার-পরিজন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছে। আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য দো‘আ করুন। আল্লাহর নবী দু’হাত তুলে দো‘আ করলেন। ফলে আকাশে পর্বত সদৃশ মেঘ জমলো এবং আল্লাহর নবী মিম্বার হতে অবতরণ করার পূর্বেই বৃষ্টিপাত শুরু হলো। এমনকি বৃষ্টির কারণে রাসূলের দাড়ী হতে পানির ফোটা পড়তে লাগলো।

দ্বিতীয় জুমু‘আয় সে বেদুঈন বা অন্য কেউ এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছে এবং ধন-সম্পদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের জন্য দো‘আ করুন।

অতঃপর তিনি দু’হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ! আমাদের চতুর্পার্শ্বে, (বৃষ্টি বর্ষণ করুন) আমাদের ওপর নয়। এমনকি তিনি যেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন সে দিক থেকেই মেঘ কেটে গিয়েছিল।’ [বুখারী ও মুসলিম]

দো‘আ কবুল হওয়ার শর্ত পূরণ করে সত্যিকারার্থে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে দো‘আ করলে এখনও যে দো‘আ কবুল হয় তা এখনো দৃশ্যমান প্রমাণিত বিষয়।

দ্বিতীয়ত: আল্লাহ তা‘আলা নবী-রাসূলগণের হাতে তাঁদের রিসালাত ও নবুওয়াত প্রমাণ করার জন্য যেসব নিদর্শন, যাকে মু‘জিযা বলা হয়, (সাধারণের সাধ্যাতীত অলৌকিক ঘটনাসমূহ) যা মানুষ প্রত্যক্ষ করে থাকে অথবা শুনে থাকে, সেগুলো ঐ মু’জিযা প্রকাশক নবী-রাসূলদের প্রেরণকারী আল্লাহর অস্তিত্বের ওপর অকাট্য প্রমাণ। কারণ এগুলো মানুষের ক্ষমতার বাইরের বিষয়, যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য সংঘটিত করেন। তার কয়েকটি উদাহরণ নিম্নরূপ:

প্রথম উদাহরণ: মুসা আলাইহিস সালামের নিদর্শন, যখন আল্লাহ তা‘আলা মুসা আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিলেন যে, স্বীয় লাঠি দ্বারা সমুদ্রের মধ্যে আঘাত কর। মুসা আলাইহিস সালাম আঘাত করলেন। ফলে, সমুদ্রের মধ্যে বারটি শুষ্ক রাস্তা হয়ে যায় এবং দু-পার্শ্বের পানি বিশাল পবর্তসদৃশ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَأَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنِ ٱضۡرِب بِّعَصَاكَ ٱلۡبَحۡرَۖ فَٱنفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرۡقٖ كَٱلطَّوۡدِ ٱلۡعَظِيمِ ٦٣﴾ [ الشعراء : ٦٣ ]

“অতঃপর আমরা মুসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রকে আঘাত কর, ফলে তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।’’ [সূরা আশ-শু‘আরা, আয়াত: ৬৩]

দ্বিতীয় উদাহরণ: ঈসা আলাইহিস সালামের নিদর্শন: তিনি আল্লাহর ইচ্ছায় মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করতেন এবং তাদেরকে কবর থেকে বের করে আনতেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

﴿وَأُحۡيِ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۖ﴾ [ ال عمران : ٤٩ ]

‘‘আর আমি জীবিত করে দেই মৃতকে আল্লাহর হুকুমে।’’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৪৯]

﴿وَإِذۡ تُخۡرِجُ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِيۖ﴾ [ المائ‍دة : ١١٠ ]

“এবং যখন তুমি আমার আদেশে মৃতদেরকে বের করে দিতে।’’ [সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ১১০]

তৃতীয় উদাহরণ: নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিদর্শন: কুরাইশগণ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তাঁর রিসালাতের স্বপক্ষে কোনো নিদর্শন চাইলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদের দিকে ইশারা করেন অতঃপর চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় এবং উপস্থিত সবাই এ ঘটনা অবলোকন করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱقۡتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلۡقَمَرُ ١ وَإِن يَرَوۡاْ ءَايَةٗ يُعۡرِضُواْ وَيَقُولُواْ سِحۡرٞ مُّسۡتَمِرّٞ ٢﴾ [ القمر : ١، ٢ ]

“কিয়ামত আসন্ন এবং চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। তারা যদি কোনো নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাচরিত এক প্রকার যাদু।’’ [সূরা আল-ক্বামার, আয়াত: ১-২]

ইন্দ্রিয় শক্তি দ্বারা অনুধাবন যোগ্য উক্ত নিদর্শন ও অলৌকিক ঘটনাসমূহ যেগুলো আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য ঘটিয়েছিলেন, সেসব আল্লাহর অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ।

দুই: আল্লাহ তা‘আলার রবুবিয়্যাতের ওপর ঈমান:

এর অর্থ হলো, তিনিই একমাত্র রব, তাঁর কোনো শরীক নেই, নেই কোনো সাহায্যকারী।

আর রব তো তিনিই যিনি সৃষ্টিকর্তা, মালিক এবং সার্বিক (শরী‘আতগত ও পরিচালনাগত) নির্দেশ প্রদানকারী। সুতরাং আল্লাহ ব্যতীত কোনো স্রষ্টা নেই, তিনি ব্যতীত কোনো মালিকও নেই আর তিনি ব্যতীত অন্য কারও নির্দেশও সর্বত্র চলে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ﴾ [ الاعراف : ٥٤ ]

“জেনে রেখো, সৃষ্টি আর হুকুম প্রদানের কাজ একমাত্র তাঁরই।” [সূরা আল আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ لَهُ ٱلۡمُلۡكُۚ وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا يَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِيرٍ﴾ [ فاطر : ١٣ ]

“তিনি আল্লাহ, তোমাদের রব, সাম্রাজ্য একমাত্র তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খর্জুর আঁটির আবরণেরও অধিকারী নয়। [সূরা ফাতির, আয়াত: ১৩]

কতিপয় অহংকারী, মিথ্যা বাগড়ম্বরকারী, অন্তরের বিশ্বাস থেকে নয় শুধু মুখে দাবীকারী ব্যক্তি ব্যতীত সৃষ্টি জগতের কেউই আল্লাহর রবুবিয়্যাতকে অস্বীকার করে নি। যেমন, ফির‘আউনের বেলায় তা ঘটেছিল। সে তার জাতিকে বললো,

﴿فَقَالَ أَنَا۠ رَبُّكُمُ ٱلۡأَعۡلَىٰ ٢٤﴾ [ النازعات : ٢٤ ]

“সে (ফির‘আউন) বলল, আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব।” [সূরা আন-নাযি‘আত, আয়াত: ২৪-২৫]

ফির‘আউন আরো বলল,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمَلَأُ مَا عَلِمۡتُ لَكُم مِّنۡ إِلَٰهٍ غَيۡرِي﴾ [ القصص : ٣٨ ]

“হে পরিষদবর্গ, আমি জানি না যে, আমি ব্যতীত তোমাদের আর কোনো উপাস্য আছে।” [সূরা আল-কাসাস, আয়াত: ৩৮]

ফির‘আউন একথা অহংকার করে বলেছিল; কিন্তু তার অন্তরের বিশ্বাস এমনটি ছিল না। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَجَحَدُواْ بِهَا وَٱسۡتَيۡقَنَتۡهَآ أَنفُسُهُمۡ ظُلۡمٗا وَعُلُوّٗاۚ ﴾ [ النمل : ١٤ ]

“তারা অন্যায় ও অহংকার করে নিদর্শনাবলীকে প্রত্যাখ্যান করল। অথচ তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল।” [সূরা আন-নামল, আয়াত, ১৪]

অনুরূপভাবে মুসা আলাইহিস সালাম ফির‘আউনকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন,

﴿لَقَدۡ عَلِمۡتَ مَآ أَنزَلَ هَٰٓؤُلَآءِ إِلَّا رَبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ بَصَآئِرَ وَإِنِّي لَأَظُنُّكَ يَٰفِرۡعَوۡنُ مَثۡبُورٗا ﴾ [ الاسراء : ١٠٢ ]

“তুমি জান যে আসমান ও জমিনের পালনকর্তাই এসব নিদর্শনাবলী প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ নাযিল করেছেন। হে ফির‘আউন, আমার ধারণায় তুমি ধ্বংস হতে চলেছ।” [সূরা বনী-ইসরাঈল, আয়াত: ১০২]

আর তাই দেখা যায় আরবের মুশরিকরা ও আল্লাহর উলূহিয়্যাত বা ইবাদাতে শির্ক করা সত্বেও তাঁর রবুবিয়্যাতকে স্বীকার করত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُل لِّمَنِ ٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِيهَآ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٨٤ سَيَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ٨٥ قُلۡ مَن رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ ٱلسَّبۡعِ وَرَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِيمِ ٨٦ سَيَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ٨٧ قُلۡ مَنۢ بِيَدِهِۦ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيۡءٖ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيۡهِ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٨٨ سَيَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ فَأَنَّىٰ تُسۡحَرُونَ ٨٩﴾ [ المؤمنون : ٨٤، ٨٩ ]

“বল, পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে তারা কার? যদি তোমরা জান, তবে বল। তখন তারা বলবে, সবই আল্লাহর। বল, তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?। বল, সপ্তাকাশ ও মহা-‘আরশের মালিকানা কার? অচিরেই তারা বলবে, আল্লাহর। বল, তবুও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না? বলুন, তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কর্তৃত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না? তখন তারা বলবে, আল্লাহর। বল, তাহলে কেমন করে তোমাদেরকে যাদু করা হচ্ছে? [সূরা আল-মু’মিনূন, আয়াত: ৮৪-৮৯]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡعَلِيمُ ٩﴾ [ الزخرف : ٩ ]

‘‘(হে রাসূল) আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, সৃষ্টি করেছেন পরাক্রান্ত সর্বজ্ঞ আল্লাহ।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৯]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ فَأَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ ٨٧﴾ [ الزخرف : ٨٧ ]

“আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ। সুতরাং তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৭]

আর ‘আল্লাহর আদেশ’ কথাটি তাঁর সৃষ্টিগত ও শরী‘আত সংশ্লিষ্ট উভয় প্রকার বিষয়াদি শামিল করে। তিনি যেমন তাঁর হিকমতানুসারে সৃষ্টিজগতে যা ইচ্ছা তার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ও ব্যবস্থাপক, তেমনি তিনি তাঁর হিকমতানুযায়ী যাবতীয় আইন, বিধি-বিধান ও ইবাদাত ও পারষ্পারিক লেনদেনের হুকুম রচনার একচ্ছত্র অধিকারী। অতএব, যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ইবাদতের বিধান প্রদানকারী অথবা লেন-দেনের হুকুমদাতা হিসাবে গ্রহণ করে তা হলে সে আল্লাহর সাথে শরীক করলো এবং ঈমান বাস্তবায়ণ করলো না।

তিন: আল্লাহর উলূহিয়্যাতের ওপর ঈমান:

এর অর্থ হলো, এই কথা স্বীকার করা যে, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই সত্যিকার মা‘বুদ বা উপাস্য, এতে অন্য কেউ তাঁর শরীক নেই।

আর ‘‘ইলাহ’’ শব্দটি মালূহ শব্দের অর্থে। যার অর্থ মা‘বুদ। অর্থাৎ সে উপাস্য যাকে পূর্ণ ভালোবাসা ও পূর্ণ সম্মানের সাথে ইবাদাত বা দাসত্ব করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلرَّحۡمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ١٦٣﴾ [ البقرة : ١٦٣ ]

“আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র একই উপাস্য। তিনি ব্যতীত আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, তিনি মহা করুণাময় দয়ালু।” [সূরা আল-বাক্বারা, আয়াত: ১৬৩] আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَأُوْلُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَآئِمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ١٨﴾ [ ال عمران : ١٨ ]

“আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি ছাড়া সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই এবং ফিরিশতাগণ, ন্যায়নিষ্ট জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]

তাই আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে তার ইবাদাত করা হলে তার সে উপাস্যরূপে গ্রহণ বাতিল বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে বলেন,

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ هُوَ ٱلۡبَٰطِلُ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡكَبِيرُ ٦٢﴾ [ الحج : ٦٢ ]

“তা এই জন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তিনিই সত্য এবং তাঁর পরিবর্তে তারা যাদের ডাকে তারা অসত্য এবং আল্লাহ, তিনিই হলেন সুমহান সর্বশ্রেষ্ঠ।” [সূরা আল-হজ, আয়াত: ৬২]

(আল্লাহ ব্যতীত যাদের উপাসনা করা হয়) সেগুলোকে মা‘বুদ বলে নাম রাখলেই তা সত্যিকার উপাস্যের মর্যাদায় আসীন হয় না; বরং শুধু নাম সর্বস্বই থেকে যায়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে লাত, মানাত, ওযযা ইত্যাদি সম্পর্কে বলেন,

﴿إِنۡ هِيَ إِلَّآ أَسۡمَآءٞ سَمَّيۡتُمُوهَآ أَنتُمۡ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلۡطَٰنٍۚ﴾ [ النجم : ٢٣ ]

“এগুলো কতেক নাম বৈ কিছু নয়, যে সমস্ত নাম তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোনো দলীল নাযিল করেন নি।” [অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা হূদ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে জানিয়েছেন যে, তিনি তার জাতিকে বলেছেন, ﴿قَالَ قَدۡ وَقَعَ عَلَيۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡ رِجۡسٞ وَغَضَبٌۖ أَتُجَٰدِلُونَنِي فِيٓ أَسۡمَآءٖ سَمَّيۡتُمُوهَآ أَنتُمۡ وَءَابَآؤُكُم مَّا نَزَّلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلۡطَٰنٖۚ﴾ [ الاعراف : ٧١ ] “তোমরা কি আমার সাথে এমন কিছু নাম নিয়ে ঝগড়া করছ যাদের তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা নামকরণ করেছো, যার উপর আল্লাহ কোনো দলীল নাযিল করেন নি।” [সূরা আল-‘আরাফ: ৭১]] [সূরা আন-নাজম, আয়াত: ২৩]

অনুরূপভাবে ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর কারাগারের সঙ্গীদেরকে বলেন,

﴿يَٰصَٰحِبَيِ ٱلسِّجۡنِ ءَأَرۡبَابٞ مُّتَفَرِّقُونَ خَيۡرٌ أَمِ ٱللَّهُ ٱلۡوَٰحِدُ ٱلۡقَهَّارُ ٣٩ مَا تَعۡبُدُونَ مِن دُونِهِۦٓ إِلَّآ أَسۡمَآءٗ سَمَّيۡتُمُوهَآ أَنتُمۡ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلۡطَٰنٍۚ﴾ [ يوسف : ٣٩، ٤٠ ]

“হে কারাগারের সাথীদ্বয়! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভালো, নাকি পরাক্রমশালী এক আল্লাহ ভালো? তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের ইবাদাত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারাই সাব্যস্ত করে নিয়েছ। আল্লাহ এদের পক্ষে কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি।” [সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৩৯-৪০]

তাই সকল নবী রাসূলগণ তাঁদের স্ব স্ব জাতিকে বলতেন,

﴿ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَٰهٍ غَيۡرُهُ﴾ [ الاعراف : ٥٩ ]

“তোমরা আল্লাহরই ইবাদাত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের জন্য সত্যিকার কোনো মা‘বুদ বা উপাস্য নেই। [সূরা আল-আ‘রাফ: ৫৯]

কিন্তু যুগে যুগে মুশরিকগণ এই দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বিভিন্ন ধরণের বাতিল উপাস্যকে আল্লাহর সাথে শরীক করে ওদের উপাসনা করেছে। তাদের নিকট সাহায্য কামনা করেছে এবং তাদের কাছে ফরিয়াদ করেছে।

 আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের এ প্রকার উপাস্য গ্রহণের বিষয়কে দু’টি যুক্তি দ্বারা খণ্ডন করেছেন:

প্রথম: যাদেরকে তারা মা‘বুদ সাব্যস্ত করে নিয়েছে ওদের মধ্যে উপাস্যগত কোনো গুণ নেই। তারা সামান্যতম শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী নয়। যেমন, তারা কোনো একটি বস্তুও সৃষ্টি করে নি; বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট। আর ঐ সব মা‘বুদ তাদের পুজারীদের না কোনো উপকার সাধন করতে পারে, না তাদের কোনো মুসিবত দূর করতে পারে এবং তাদের জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনেরও তারা মালিক নয়। আসমান, জমিনেরও কোনো কিছুর মালিক নয় এবং এতে তাদের অংশও নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةٗ لَّا يَخۡلُقُونَ شَيۡ‍ٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ وَلَا يَمۡلِكُونَ لِأَنفُسِهِمۡ ضَرّٗا وَلَا نَفۡعٗا وَلَا يَمۡلِكُونَ مَوۡتٗا وَلَا حَيَوٰةٗ وَلَا نُشُورٗا ٣﴾ [ الفرقان : ٣ ]

‘‘তারা আল্লাহর পরিবর্তে অনেক উপাস্য গ্রহণ করেছে যারা কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের ভালোও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনেরও তারা মালিক নয়।’’ [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلِ ٱدۡعُواْ ٱلَّذِينَ زَعَمۡتُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَمۡلِكُونَ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا لَهُمۡ فِيهِمَا مِن شِرۡكٖ وَمَا لَهُۥ مِنۡهُم مِّن ظَهِيرٖ ٢٢ وَلَا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ عِندَهُۥٓ إِلَّا لِمَنۡ أَذِنَ لَهُ﴾ [ سبا : ٢٢، ٢٣ ]

“বল, তোমরা আহ্বান কর, যাদেরকে তোমরা উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। তারা তো নভোমণ্ডল ও ভু-মণ্ডলের অণু পরিমাণ কোনো কিছুর মালিক নয়। এতে তাদের কোনো অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়। আল্লাহর নিকট কারো জন্য সুপরিশ ফলপ্রসু হবে না; কিন্তু যার জন্য অনুমতি দেওয়া হয় সে ব্যতীত।’’ [সূরা সাবা, আয়াত: ২২-২৩]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَيُشۡرِكُونَ مَا لَا يَخۡلُقُ شَيۡ‍ٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ ١٩١ وَلَا يَسۡتَطِيعُونَ لَهُمۡ نَصۡرٗا وَلَآ أَنفُسَهُمۡ يَنصُرُونَ ١٩٢﴾ [ الاعراف : ١٩١، ١٩٢ ]

“তারা কি এমন কাউকে শরীক সাব্যস্ত করে, যে একটি বস্তুও সৃষ্টি করতে পারে না? বরং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা না তাদের সাহায্য করতে পারে, না নিজেদের সাহায্য করতে পারে।’’ [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৯১-১৯২]

আর যখন এই বাতেল উপাস্যদের এরূপ অসহায় অবস্থা, তখন তাদেরকে উপাস্য নির্ধারণ করা চরম বোকামী ও বাতিল কর্ম বৈ কিছু নয়।

দ্বিতীয়: যখন মুশরিকরা স্বীকার করে যে এ নিখিল বিশ্বের রব ও স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, যাঁর হাতে সবকিছুর ক্ষমতা, যিনি আশ্রয় দান করেন, তাঁর ওপর কোনো আশ্রয়দানকারী নেই; তখন তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে উঠে এ বিষয় স্বীকার করা যে, একমাত্র মহান আল্লাহ তা‘আলাই সর্বপ্রকার ইবাদাত বা উপাসনা পাওয়ার অধিকারী, যেমনিভাবে তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ তা‘আলা রবুবিয়্যাতে একক ও অদ্বিতীয়, এতে তাঁর কোনো শরীক নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعۡبُدُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُمۡ وَٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ٢١ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ فِرَٰشٗا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءٗ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ فَأَخۡرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزۡقٗا لَّكُمۡۖ فَلَا تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ أَندَادٗا وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٢٢﴾ [ البقرة : ٢١، ٢٢ ]

“হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর, যিনি তোমাদের এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার। যে মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদস্বরূপ স্থাপন করেছেন। আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসেবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে সমকক্ষ করো না। বস্তুত তোমরা এসব অবগত আছ।” [সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ২১-২২]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ فَأَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ ٨٧﴾ [ الزخرف : ٨٧ ]

“যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ। অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلۡ مَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ أَمَّن يَمۡلِكُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَمَن يُخۡرِجُ ٱلۡحَيَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۚ فَسَيَقُولُونَ ٱللَّهُۚ فَقُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ٣١ فَذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمُ ٱلۡحَقُّۖ فَمَاذَا بَعۡدَ ٱلۡحَقِّ إِلَّا ٱلضَّلَٰلُۖ فَأَنَّىٰ تُصۡرَفُونَ ٣٢ ﴾ [ يونس : ٣١، ٣٢ ]

“বলুন, কে রুযী দান করেন তোমাদেরকে আসমান ও জমিন থেকে? কিংবা কে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কে-ই-বা মৃত্যুকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন এই বিশ্বের ব্যবস্থাপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ। তখন আপনি বলুন, তারপরেও কেন তোমরা তাঁকে ভয় করো না? অতএব, এ আল্লাহই তোমাদের সত্যিকার রব। আর সত্য ত্যাগ করার পর বিভ্রান্তি ব্যতীত আর কী থাকে? সুতরাং তোমরা কোথায় পরিচালিত হচ্ছ?” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৩১-৩২]

চার: আল্লাহর নাম ও তাঁর গুণাবলীর ওপর ঈমান:

আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমানের চতুর্থ দিক হলো, তিনি তাঁর জন্য তাঁর কিতাবে যে সব নাম উল্লেখ করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত সহীহ হাদীস দ্বারা তাঁর সর্ব সুন্দর নামসমূহ ও তাঁর মহৎ গুণরাজি যে ভাবে সাব্যস্ত করা হয়েছে ঠিক সে ভাবে কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন অস্বীকৃতি ও উপমা-সাদৃশ্য আরোপ ব্যতীত এবং কোনো ধরণ-গঠন নির্ণয় না করে যে ভাবে আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য সে ভাবে তা সাব্যস্ত করা। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَاۖ وَذَرُواْ ٱلَّذِينَ يُلۡحِدُونَ فِيٓ أَسۡمَٰٓئِهِۦۚ سَيُجۡزَوۡنَ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٨٠﴾ [ الاعراف : ١٨٠ ]

“আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সর্বোত্তম নামসমূহ। কাজেই তোমরা সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর ওদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বিকৃতি সাধন করে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮০]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَلَهُ ٱلۡمَثَلُ ٱلۡأَعۡلَىٰ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ﴾ [ الروم : ٢٧ ]

“আকাশ ও পৃথিবীতে সবের্বাচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনিই পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’’ [সূরা আর-রূম: ২৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ﴾ [ الشورا : ١١ ]

“তাঁর অনুরূপ কোনো কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।’’ [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

 আল্লাহ তা‘আলা নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে দু’টি দল পথভ্রষ্ট হয়েছে:

প্রথম দল: আল-মু‘আত্তিলাহ: যারা আল্লাহ তা‘আলার সমস্ত নাম বা কোনো কোনো নাম ও গুণাবলীকে অস্বীকার করে, তাদের ধারণা যে আল্লাহর জন্য গুণাবলী প্রতিষ্ঠা করলে আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য বা সমতুল্য করা অনিবার্য হয়ে পড়ে। বস্তুত তাদের এ ধারণা কয়েক কারণে বাতিল:

১। যদি আল্লাহর নাম ও গুণাবলী নেই বলা হয় তাহলে একারণে কয়েকটি বাতিল কথা মানা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। যেমন মহান আল্লাহর কথার মধ্যে স্ববিরোধিতা এসে যাওয়া। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা নিজেই তাঁর নাম ও গুণাবলী আছে বলে আমাদের জানিয়েছেন এবং তাতে তাঁর কোনো সদৃশ বা সমতুল্য নেই বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। এখন যদি আল্লাহর জন্য গুণাবলী প্রতিষ্ঠা করলে আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য বা সমতুল্য করা হয়ে যাবে মনে করা হয় তবে তো আল্লাহর কথাকেই সাংঘর্ষিক বলতে হয়; আর তাঁর বাণীর একাংশ অপর অংশে মিথ্যারোপ করে বলতে হবে।

২। দুটি বস্তু নাম বা গুণে অভিন্ন হলেও উভয় বস্তু সার্বিক দিক দিয়ে সদৃশ হওয়া আবশ্যক নয়। আপনি দেখতে পান, দু’ব্যক্তি মানুষ হওয়া, শ্রবণ, দৃষ্টি ও বাকশক্তির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও মানবিক গুণ, শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও বাকশক্তির দিক থেকে তারা সমান নয়।

অনুরূপভাবে আপনি দেখবেন, সব জন্তুদের হাত, পা ও চক্ষু রয়েছে, কিন্তু নাম এক হওয়ার কারণে তাদের হাত, পা ও চক্ষু এক রকম নয়।

সুতরাং যদি সৃষ্টির মধ্যে নাম ও গুণাবলীর অভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও এভাবে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, তাহলে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে অধিকতর স্পষ্ট ও বড় পার্থক্য ও ভিন্নতা থাকাই অধিকতর স্বাভাবিক।

দ্বিতীয় দল: আল মুশাব্বিহা: এ দলটি আল্লাহর নাম ও তাঁর গুণাবলী আছে বলে বিশ্বাস করে, তবে সাথে সাথে তারা আল্লাহর গুণাবলীকে সৃষ্টির গুণাবলীর অনুরূপ মনে করে। তাদের যুক্তি হলো যে, কুরআন ও সুন্নাহর উদ্ধৃতি থেকে এটাই বুঝা যায়। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর গুণাবলীর বিষয়ে তাদের বোধগম্য ভাষাতেই সম্বোধন করেছেন। বস্তুত তাদের এ ধরনের বিশ্বাস ভিত্তিহীন এবং কয়েক কারণে বাতিল:

১। যুক্তি ও শরী‘আতের আলোকে যাচাই করলে উপলব্দি করা যায় যে, মহান রাব্বুল আলামীন কখনও সৃষ্টির সদৃশ হতে পারেন না। আর কুরআন ও সুন্নাহর দাবী কোনো বাতিল বিষয় হওয়াও সম্ভব নয়।

২। আল্লাহ তা‘আলা যদিও এমন ভাষা ও শব্দ দিয়ে তাঁর বান্দাদেরকে সম্বোধন করেছেন, যেগুলো মৌলিক অর্থগত দিক দিয়ে তাদের বোধগম্য’ কিন্তু তাঁর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে সেগুলোর প্রকৃত অবস্থা ও আসল তত্ত্বের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা কাউকে অবহিত করেন নি; বরং আল্লাহ তা‘আলা নিজ সত্ত্বা ও গুণাবলী সম্পর্কিত বিষয়ের প্রকৃত জ্ঞানকে নিজের জন্যে নির্দিষ্ট করে রেখেছেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজেকে ‘‘আস-সামী‘’’ বা ‘সর্বশ্রোতা’ নামে বিশেষিত করেছেন। শ্রবণের অর্থটা আমাদের বোধগম্য (শব্দ পাওয়া) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার শ্রবণ গুণের মূল তত্ত্ব আমাদের জানা নেই। কেননা, শ্রবণশক্তির দিক থেকে সৃষ্টিকুলও সমান নয়, তাই স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে এই ক্ষেত্রে অধিকতর তফাৎ থাকাই স্বাভাবিক।

অনুরূপভাবে যখন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন যে, তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন, তখন ‘উপরে উঠা’র বিষয়টি অর্থের দিক থেকে আমাদের বোধগম্য; কিন্তু মহান রাব্বুল ‘আলামীনের ‘উপরে উঠা’র প্রকৃত রূপ, ধরণ আমাদের জানা নেই। কারণ, সৃষ্টির মধ্যেও ‘উপরে উঠা’র ক্ষেত্রে ভিন্নতা আমাদের চোখে ধরা পড়ে। কেননা একটি স্থিতিশীল চেয়ারের উপরে উঠা আর একটি চঞ্চল পলায়নপর উটের পিঠের উপর উঠা সমান নয়। আর যখন সৃষ্টিকুলের ‘উপরে উঠা’র মধ্যে এতটুকু ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়, তখন ‘উপরে উঠা’র ক্ষেত্রে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে ঢের ব্যবধান থাকা অধিকতর স্পষ্ট ও নিশ্চিত।

উপরোক্ত বর্ণনানুযায়ী আল্লাহ তা‘আলার ওপর ঈমান আনলে মু’মিনদের জন্য যেসব ফলাফল সাধিত হয় তন্মধ্যে অন্যতম হলো:

প্রথমত: আল্লাহর তাওহীদ বা একত্ববাদ যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়; ফলে বান্দার মধ্যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রতি কোনো প্রকার ভয়-ভীতি বা আশা-ভরসার লেশমাত্র থাকে না এবং তিনি ছাড়া আর কারো ইবাদাত সে করে না।

দ্বিতীয়ত: আল্লাহ তা‘আলার পরিপূর্ণ ভালোবাসা ও সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন সম্ভব হয়; আর তা হবে আল্লাহর সর্বসুন্দর নামসমূহ ও তার সুউচ্চ গুণাবলীর দাবী অনুযায়ী।

তৃতীয়ত: আল্লাহর ইবাদাত যথাযথরূপে বাস্তবায়ণ; আর তা সম্ভব আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী ইবাদাত পালন এবং তাঁর নিষেধাবলী বর্জন করার মাধ্যমে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন