hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আশুরা করনীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

১০
আবেগ ও মহববত যেন সীমা ছাড়িয়ে না যায়
আল্লাহ ও তার রসূলকে মহববত করা ইসলামেরই নির্দেশ। আল্লাহ তায়ালার রসূলকে সব কিছুর চেয়ে এমনকি নিজের জীবনের চেয়ে বেশী ভালবাসতে হবে। এমনিভাবে আল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আহলে বাইত (পরিবারবর্গ) কে মুহাববত ঈমানের দাবী।

কিন্তু মহববত যেন সীমা ছাড়িয়ে না যায়। যাকে মহববত করা হবে তার আদেশ যেন লংঘিত না হয়। যেমন কেহ মহববতের সাথে আল্লাহকে বলল ‘‘তুমি আমার সৃষ্টিকর্তা, তুমি আমার পালনকর্তা, তুমি আমার রিযিক দাতা, তুমি আমার রক্ষাকর্তা।’’ তাহলে এতে কোন অসুবিধা নেই। বরং সে নেক আমল করল বলে গণ্য হবে। এ ধরনের কথার জন্য সে আল্লাহ তাআ‘লার তরফ থেকে প্রতিদান পাবে। কিন্তু কেহ যদি প্রচন্ড মহববতে বলে ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার মহান পিতা। আমি তোমার এক অসহায় সন্তান।’ তাহলে ব্যাপারটা কত মারাত্নক আকার ধারণ করে। আল্লাহকে মহববত করে তারই নির্দেশ লংঘন করা হল। যত গভীর মহববতের সাথে এ কথা বলা হোক না কেন আল্লাহ তা কবুল করবেন না। বরং তার নির্দেশ ও সীমা লংঘনের জন্য তিনি শাস্তি দিবেন।

এমনি ভাবে কেহ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মহববত করে বলল ‘‘ আপনার প্রতি সালাত ও সালাম। আপনি সকল রসূলদের শ্রেষ্ঠ। আপনি আল্লাহ তায়ালার প্রিয়। আপনি শাফায়াতকারী ’’। এ সকল কথা যে বলল সে লাভবান হলো। ভাল কাজ করলো। কিন্তু সে যদি প্রচন্ড মহববতে বলেঃ ‘‘ হে রাসূল! আপনি আমাদের ত্রাণকর্তা, আপনি সর্বত্র হাজির নাজির, আপনি আমাদের দেখতেছেন, আপনার জন্যই এ আসমান-যমীন সৃষ্টি করা হয়েছে , আপনি না হলে আসমান-যমীন কিছু সৃষ্টি করা হতোনা’’ তাহলে ব্যাপারটা কত মারাত্নক হয়ে যায়! সে তখন শিরক করার অন্যায়ে লিপ্ত হয়ে পড়ল ও আল্লাহর রাসুলের আদেশ অমান্য করল।

তিনি তো বলেছেনঃ

لا تطروني كما أطرت النصارى ابن مريم، إنما أنا عبد فقولوا عبد الله ورسوله . رواه البخاري ومسلم

‘‘ তোমরা আমার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করবে না যেমন খৃষ্টানেরা মারিয়ামের ছেলে ( ইছা আঃ) র ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছে। আমি একজন বান্দা। তোমরা আমার ব্যাপারে বলবে ‘তিনি আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল।’

বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম

দেখুন রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মহববতের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ খৃষ্টানেরা ইছা আ. এর সম্মান ও মহববতের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে তাকে প্রভূর আসনে বসিয়ে তারা তাকে প্রভূ বলে সম্বোধন করতে শুরু করেছে। ফলে তারা ধর্মচ্যুত হয়ে গেছে। তাই তোমরা আমার সম্মান ও মহববতের ক্ষেত্রে তাদের মত সীমা লংঘন করবে না।

এ বিষয়ে রসূলল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একটি হাদীস উল্লেখ করার মতঃ

عن عبد الله بن عباس رضى الله عنهما أن رجلا قال للنبي صلى الله عليه وسلم : ما شاء الله وشئت، فقال له النبي صلى الله عليه وسلم : جعلتني لله عدلا ؟ بل قل ما شاء الله وحده . رواه أحمد

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললঃ ‘‘আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন এবং আপনি যা ইচ্ছা করেন (তাই হয়)।’’

তার এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘‘তুমি আমাকে আল্লাহর সমকক্ষ করলে? বরং বল, একমাত্র আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন (তা-ই হবে)।’’ বর্ণনায়ঃ আহমদ

তিনি যেমন নিজের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন তেমনি তার সন্তানদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি অপছন্দ করতেন। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে একটি হাদীস পেশ করা যেতে পারে। হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম সহ প্রায় সকল হাদীসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে

عن المغيرة بن شعبة رضى الله عنه قال : كسفت الشمس على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم مات إبراهيم، فقال الناس : كسفت الشمس لموت إبراهيم، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إن الشمس والقمر آياتان من أيات الله، لا ينكسفان لموت أحد ولا لحياته . رواه البخاري

সাহাবী মুগীরা ইবনে শু‘বা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ছেলে ইব্রাহীম ইন্তেকাল করলেন। সেদিন সূর্যগ্রহণ হল। মানুষেরা বলতে লাগল ‘‘ইব্রাহীমের ইন্তেকালের কারণে সূর্যগ্রহণ হয়েছে।’’

এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘‘ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য নিদর্শনের মধ্য থেকে মাত্র দুটো নিদর্শন। কারো জন্ম বা মৃত্যুতে এর গ্রহণ হয় না।’’

বর্ণনায়ঃ বুখারী

দেখুন আল্লাহর রসূলের প্রিয় সন্তান ইব্রাহীমের ইন্তেকালের দিন সূর্যগ্রহণ হল। লোকজন আবেগ বা মহববতে মন্তব্য করল ‘রসুলের সন্তানের ইন্তেকালের কারণে এ সূর্যগ্রহণ হয়েছে।’ কিন্তু আল্লাহ তাআ’লার রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতিবাদ করে বললেন এটা ঠিক নয় যে, কারো মৃত্যুর কারণে সূর্য গ্রহণ হবে।

এ হাদীসের দিকে তাকালে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেঃ

প্রথমতঃ রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার প্রিয় সন্তানের মহববতে কেহ একটু বাড়াবাড়ি করুক তা তিনি পছন্দ করেননি। তাহলে তার নাতী সাইয়েদুনা হোসাইন রা. এর মহববতে কোন বাড়াবাড়ি তিনি কি পছন্দ করতে পারেন?

দ্বিতীয়তঃ সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে মানুষের বিশ্বাসে যত কুসংস্কার ছিল ও আছে। তার মূলে আঘাত করেছেন। বলেছেন এগুলো সরাসরি আল্লাহর নির্দেশে হয়ে থাকে।

তৃতীয়তঃ আমাদের সমাজে অনেক এমন পীর সাহেব দেখতে পাবেন তারা নিজেদের কারামাত বয়ান করা খূব পছন্দ করে থাকেন। আপনি কোন পীর সাহেব বা তার মুরীদদের উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে গেলেন। দেখবেন বক্তাগন প্রথমে হামদ ও সালাতের পর পীর সাহেবের কারামাত বয়ান করতে শুরু করলেন। তারপর পীর সাহেবের বাবার কেরামত, তারপর দাদা পীরের কারামাত, তারপর পীর সাহেবের মাতার কারামত, তারপর তার খলীফার কারামাত, তারপর তার খাদেমের কারামাত, তারপর তার মাদ্রাসার বাবুর্চির কারামত বয়ান করলেন। বরাদ্দকৃত এক ঘন্টা সময়ের পঞ্চান্ন মিনিট তিনি পীর সাহেবের পরিবারের কারামাত বয়ান করলেন। এ ধরনের কারামাত-পছন্দ কোন এক পীর সাহেবের ছেলের ইন্তেকালের দিন যদি হঠাৎ সূর্য গ্রহণ হতো তাহলে পীর সাহেব তার মুরীদদের বলার অপেক্ষা করতেন না। নিজেই বলা শুরু করতেন এটা তার প্রিয় সন্তানের ইন্তেকালের কারণে হয়েছে। তার কারামাতই বটে।

কিন্তু আলোচ্য হাদীসের দিকে তাকান! আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চূপ করে থাকতে পারতেন। মনে মনে বলতে পারতেন আমার ছেলের মহববত ও সম্মানে তারা একটা কথা বলছে বলুক! এটা তাদের ব্যক্তিগত অভিমত। তাদের এ মন্তব্যে আমার কি আসে যায়? না, তিনি চূপ থাকতে পারেননি। দেখুন! তিনি রেছালাত ও আল্লাহর দ্বীনের প্রসারে কতখানি আমানতদার ছিলেন। তিনি মানুষকে এমন ইসলামের দিকে আহবান করেছেন যে ইসলাম ছিল একশ ভাগ আল্লাহ কেন্দ্রিক। ব্যক্তি কেন্দিক মোটেই ছিল না। ছিল একশ ভাগ আল্লাহর তাওহীদ কেন্দ্রিক।

আর আমরা অনেকে আজ যে ইসলামের দিকে মানুষকে আহবান করছি তা হয় দল কেন্দিক, না হয় গোষ্ঠী কেন্দ্রিক, না হয় ছেলছেলা কেন্দ্রিক না হয় অঞ্চল কেন্দ্রিক, না হয় প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক।

কুরআন বা হাদীসের কোন একটি বিষয় সামনে আসলে তা যত গুরুত্বপূর্ণই হোকনা কেন প্রথমে আমরা দেখি তা আমাদের মাজহাব এর বিরোধী কিনা? বা আমাদের দলের নীতি আদর্শের পরিপন্থী কিনা? অথবা আমাদের দাওয়াতের উসূল বা আমাদের ছেলছেলার বিপরীত কোন বিষয় নির্দেশ করে কিনা? যদি এমন হয় তাহলে তার একটি যথার্থ ব্যাখ্যা অবশ্যই দাঁড় করাতে হবে। এ ধরণের সংকীর্ণ মনোভাবের কারণেই আমাদের ইসলাম পন্থীদের জন্য আজ আল্লাহর এ দুনিয়াটা দিনে দিনে সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে আমরা ততই কোণঠাসা হয়ে পড়ছি।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং তার পরিবারবর্গকে মহববতের অর্থ এটা নয় যে, আপনি তাদের মহববতের নামে যা ইচ্ছা তা করবেন। মহববতের দাবী ও পরিচয় হল যাকে মহববত করবেন তার আনুগত্য করবেন। তাঁর কোন আদেশ-নিষেধের বাহিরে যাবেন না।

যে আশুরা রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেখে গেছেন, যেভাবে রেখে গেছেন আমাদের সেভাবেই রাখতে হবে। ঘটনা যত গুরুত্বপূর্ণ হোক, তা দিয়ে মূল আশুরাকে ঢেকে দেয়া যাবে না। এ রকম বলা যাবে না যে, ‘আজ পবিত্র আশুরা, এ দিনে কারবালার ময়দানে ইমাম হোসাইন শাহাদাত বরণ করেছেন।’ কথা সত্য, কিন্তু উদ্দেশ্য সঠিক নয়। বিষয়টা খোলাসা করতে একটা সামান্য উদাহরণ দেয়া যেতে পারে।

আপনি এক কুয়েতী নাগরিককে জিজ্ঞস করলেন যে, ভাই বলুনতো আশুরার তাৎপর্য কি?

তিনি উত্তরে বললেনঃ ‘‘১৪১১ হিজরী সনের এ দিনে সাদ্দাম হোসাইনের নেতৃত্বাধীন ইরাকী বাহিনী আমাদের দেশ আক্রমন করে দখল করে নেয়। তারা আমাদের অনেককে হত্যা করে। আমাদের ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হ্রদয় বিদারক ঘটনা। এ ঘটনায় সাড়া বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায় . . .’’

এখন আপনি বলুনতো এ ব্যক্তির বক্তব্য তো সত্য কিন্তু এটা কি সত্যিকার আশুরার তাৎপর্য?

তেমনি কারবালার ঘটনা চরম সত্য কিন্তু আশুরা মানে কারবালার ঘটনা নয়। তবে এভাবে বলতে দোষ নেই, আজ ১০ই মুহাররম। এদিনে কারবালায় সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে হোসাইন রা. শাহাদত বরণ করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন