hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আশুরা করনীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

আশুরার সওমের ইতিবৃত্ত ও তার বিধান
ইসলামের সূচনা থেকে তার পরিপূর্ণতা লাভ পর্যন্ত আশুরার সওমের বিধান এক ধরনের ছিলনা।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এর যে পরিবর্তন হয়েছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

১. ইসলামের সূচনাতে মক্কায় থাকাকালীন অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন করতেন, কিন্তু অন্যকে এ সওম পালন করতে হুকুম করেননি।

২. রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনাতে আগমন করলেন তিনি ইহুদীদের সওম পালন করতে দেখলেন তখন তিনি সওম পালন করলেন অন্যদের সওম পালন করতে নির্দেশ দিলেন। এমনকি যারা আশুরার দিনে আহার করেছিলেন তাদের দিনের বাকী সময়টা পানাহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিলেন। আর এটা ছিল হিজরতের দ্বিতীয় বছরে। কেননা তিনি হিজরতের প্রথম বছর মুহাররম মাস শেষ হওয়ার একমাস পর অর্থাৎ রবিউল আউয়াল মাসে মদীনাতে আগমন করেছিলেন।

৩. হিজরতের দ্বিতীয় বছর যখন রমজান মাসের সিয়াম ফরজ করা হল তখন আশুরার সওমের ফরজিয়্যত (অপরিহার্যতা) রহিত হয়ে গেল এবং তা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য হতে লাগল। অতএব বলা যায় এক বছরের জন্য এ সওম পালনের ফরজ নির্দেশ জারী হয়ে ছিল।

(ফতহুল বারী)

৪. আশুরার সওম পালন সুন্নাত। আর তার সংখ্যা হবে দুটি। মুহাররম মাসের নবম ও দশম তারিখে অথবা দশম ও একাদশ তারিখে।

উপরে যে আশুরার সওমের চারটি ইতিবৃত্ত আলোচনা করা হল তা বহু সংখ্যক সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

এর মধ্য থেকে কয়েকটি হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

عن عائشة رضى الله عنها قالت : كانت قريش تصوم عاشوراء في الجاهلية وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصومه، فلما هاجر إلى المدينة صامه وأمر بصومه، فلما فرض شهر رمضان قال : ( من شاء صامه ومن شاء تركه ) رواه البخاري ومسلم

‘আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন জাহেলী যুগে কুরাইশরা আশুরার সওম পালন করত এবং রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সওম পালন করতেন। যখন তিনি মদীনায় হিজরত করলেন তখন তিনি এ সওম পালন করলেন ও অন্যদের পালন করতে আদেশ দিলেন। যখন রমজান মাসের সওম ফরজ হল তখন তিনি আশুরার সওম সম্পর্কে বললেনঃ ‘‘যার ইচ্ছা আশুরার সওম পালন করবে, আর যার ইচ্ছা ছেড়ে দিবে।’’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম

عن الربيع بنت معوذ بن عفراء قالت : أرسل رسول الله صلى الله عليه وسلم غداة عاشوراء إلى قرى الأنصار، التي حول المدينة (( من كان أصبح صائما فليتم صومه، ومن كان أصبح مفطرا فليتم بقية يومه ))

فكنا بعد ذلك نصومه ونصوم صبياننا الصغار منهم، إن شاء الله ونذهب إلى المسجد فنجعل لهم اللعبة من العهن، فإذا بكى أحدهم على الطعام أعطيناها إياه عند الإفطار . رواه مسلم

‘মহিলা সাহাবী রবী বিনতে মুয়াওয়াজ রা. থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিনে ভোরে মদীনার নিকটবর্তী আনসারদের মহল্লায় খবর পাঠালেন যে, তোমাদের মধ্যে যে সওম শুরু করেছে সে যেন তা পূর্ণ করে। আর যে সওম শুরু না করে খাওয়া-দাওয়া করেছে সে যেন দিনের বাকী সময়টা পানাহার থেকে বিরত থাকে।

বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শোনার পর আমরা সওম পালন করলাম এবং আল্লাহর ইচ্ছায় ছোট ছেলে-মেয়েদের দিয়ে সওম পালন করালাম। আমরা তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতাম। বাজার থেকে খেলনা কিনে নিতাম। যখন খাবার চাইত তখন হাতে খেলনা তুলে দিতাম, যেন তারা খাবারের কথা ভুলে গিয়ে সওম পূর্ণ করতে পারে। বর্ণনায়ঃ মুসলিম

উপরোক্ত হাদীস দুটি দ্বারা বুঝে আসে আশুরার সওম তখন ওয়াজিব ছিল।

কতিপয় আলেমের মত হল আশুরার সওম কখনো ওয়াজিব ছিলনা। এ কথার সমর্থনে তারা দলীল হিসেবে মুয়াবিয়া রা. এর একটি হাদীস উল্লেখ করেনঃ

قال معاوية رضى الله عنه : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول (( هذا يوم عاشوراء ولم يكتب الله عليكم صيامه وأنا صائم، فمن أحب منكم أن يصوم فليصم، ومن أحب أن يفطر فليفطر ) رواه البخاري ومسلم

‘‘ মুয়াবিয়া রা. বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেনঃ ‘‘এটা হল আশুরার দিন। এর সওম আল্লাহ তোমাদের উপর ফরজ করেননি। কিন্তু আমি সওম পালন করছি। তোমাদের যার কাছে ভাল লাগে সে যেন সওম পালন করে। আর যার খেতে মনে চায় সে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে।’’ বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম

হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন মুয়াবিয়া রা. এর এ হাদীস দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে, আশুরার সওম কখনো ওয়াজিব ছিল না। বরং তার কথার অর্থ এটাও হতে পারে যে, আল্লাহ তায়ালা রমজানের সওমের মত আশুরার সওম স্থায়ীভাবে ফরজ করেননি। আর আশুরার সওম যখন ফরজ ছিল তখন মুয়াবিয়া রা. ইসলাম গ্রহণ করেননি। তিনি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গ লাভ করেছেন হিজরতের অষ্টম বছর থেকে। তাই তিনি আশুরার সওম ফরজ হওয়ার বিষয়টি অবগত ছিলেন না। যারা হিজরতের দ্বিতীয় বছরের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করেছেন তারা আশুরার সওম ফরজ হওয়ার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। আর আশুরার সওম যে রমজানের সওম ফরজ হওয়ার পূর্বে ওয়াজিব ছিল এ বিষয়ে অসংখ্য সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন-

عن جابر بن سمرة رضى الله عنه قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يأمرنا بصيام يوم عاشوراء، ويحثنا عليه، ويتعاهدنا عنده، فلما فرض رمضان لم يأمرنا ولم ينهنا عنه . رواه مسلم

সাহাবী জাবের ইবনে সামুরা রা. বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিনে সওম পালনের জন্য আমাদের হুকুম দিতেন, উৎসাহিত করতেন, আমাদের ওয়াদা নিতেন। কিন্তু যখন রমজানের সওম ফরজ হল তখন তিনি আমাদের আদেশ দিতেন না আর আশুরার সওম পালন করতে নিষেধও করতেন না।

বর্ণনায়ঃ মুসলিম

আশুরার সওম সম্পকির্ত হাদীসসমূহ একত্র করলে যে ফলাফল আসে তা হলঃ

(ক) আশুরার সওম ফরজ ছিল, কারণ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা পালন করার জন্য হুকুম করেছিলেন।

(খ) এ সওম পালনের জন্য রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাধারণভাবে ফরমান জারী করেছিলেন।

(গ) যারা এ দিনে পানাহার করেছিলেন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের পানাহার থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন।

(ঘ) যখন রমজানের সওমের হকুম নাযিল হল তখন থেকে আশুরার সওমের ফরজিয়্যত বা অপরিহার্যতা রহিত হয়ে গেল।

যেমন ইবনে মাসউদ রা. বলেছেনঃ

لما فرض رمضان ترك عاشوراء . رواه مسلم

‘‘যখন রমজানের সওম ফরজ হল আশুরার সওম ত্যাগ করা হল।’’

বর্ণনায়ঃ মুসলিম

‘আশুরার সওম ত্যাগ করা হল’ একথার অর্থ হল ফরজ সওম হিসেবে আশুরার সওম ত্যাগ করা হয়েছে ; কিন্তু সুন্নাত হিসেবে এখনো বহাল আছে। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক আশুরাতে সওম পালন করতেন।

তাই সর্ব-সম্মত কথা হল আশুরার সওম প্রথমে ফরজ ছিল, এখন তা ফরজ নয়, সুন্নাত।

ইবনে আব্দুল বারর (রহঃ) বলেছেনঃ আশুরার সওম মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে উলামায়ে উম্মাতের ইজমা (ঐক্যমত) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তাই এটা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

যেমন হাদীসে এসেছে

قال ابن عباس رضى الله عنهما : ما رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يتحرى صيام يوم فضله على غيره إلا هذا اليوم يوم عاشوراء وهذا الشهر يعني شهر رمضان . رواه البخاري وسلم

ইবনে আববাস রা. বলেনঃ ‘‘আমি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ সওম ছাড়া অন্য কোন সওমকে এত গুরুত্ব দিতে দেখিনি। আর তা হল আশুরার সওম ও এই রমজান মাসের সওম।’’

বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম

ইবনে আববাস রা. আরো বলেনঃ যারা বলে যে, আশুরার সওম তেমন গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব নয়, সাধারণ মুস্তাহাব। তাদের এ কথা ঠিক নয়। আসল কথা হল এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব আমল। তাইতো আমরা দেখতে পাই আল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক আশুরাতে সওম পালন করতেন। এমনকি ইন্তেকালের বছরও তিনি বলেছিলেনঃ

لئن عشت إلى قابل لأصومن التاسع والعاشر . رواه مسلم

‘‘ যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে অবশ্যই আগামী বছর মুহাররম মাসের নবম ও দশম তারিখে সওম পালন করব।’’

বর্ণনায়ঃ মুসলিম

এবং এ সওম পালন দ্বারা এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।

এ সকল হাদীস দ্বারা আশুরার সওমের গুরুত্ব উপলদ্ধি করা যায়।

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. আশুরার সওম পালন পছন্দ করতেন না। তিনি এ সওম পালন করতেন না। এর দ্বারা আশুরার সওমের গুরুত্ব খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। তার সওম পালন না করার ব্যাপারটা তার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভংগি বা ইজতিহাদ। যা কখনো সহীহ হাদীসের সমতুল্য হতে পারেনা। তার নিজস্ব দৃষ্টিভংগি দ্বারা কোন সহীহ হাদীসের আমল রহিত হতে পারেনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন