hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আশুরা করনীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

আশুরার সওমের ব্যাপারে ইহুদীদের বিরোধীতা করার নির্দেশ
যে সকল বিষয়ে কোন শরয়ী হুকুম অবতীর্ণ হয়নি মদীনায় আসার পর সে সকল বিষয়ে নবী কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদীদের অনুরূপ আমল করা পছন্দ করতেন। যেমন তিনি মসজিদুল আকসাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করলেন। উদ্দেশ্য ছিল ইহুদীরা যেন ইসলামকে নিজেদের ধর্মের মতই মনে করে, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। পরে যখন সত্য ধর্ম ইসলাম গ্রহণের পরিবর্তে ইহুদীদের অবাধ্যতা, হিংসা, কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা,বর্ণবাদী নীতি ও চরম সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ পেল তখন সকল ব্যাপারে তাদের বিরোধীতা করার নির্দেশ দেয়া হল এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ব্যাপারে তাদের সাথে সাদৃশ্যতাপূর্ণ সকল আমল ও আচরণ করতে নিষেধ করা হল।

তাই রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংকল্প করলেন আশুরার দিনে তিনি ইহুদীদের মত আর একটি করে সওম পালন করবেন না। বরং এ সওমের সাথে মুহাররম মাসের নবম তারিখে একটি সওম বাড়িয়ে রাখার মাধ্যমে ইহুদীদের ধর্ম ও সাংস্কৃতির বিরোধীতা করবেন। এর প্রমাণ হিসেবে বহু হাদীস এসেছে।

যেমন

عن ابن عباس رضى الله عنهما أنه قال : حين صام رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم عاشوراء وأمر بصيامه، قالوا إنه يوم تعظمه اليهود والنصارى، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ( فإذا كان العام المقبل إن شاء الله صمنا اليوم التاسع )

قال : فلم يأت العام المقبل حتى توفى رسول الله صلى الله عليه وسلم . رواه مسلم

ইবনে আববাস রা. বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন করলেন ও অন্যকে পালন করার নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবায়ে কেরাম রা. বললেনঃ ‘‘এটা তো এমন এক দিন যাকে ইহুদী ও খৃষ্টানরা সম্মান করে থাকে।’’ তখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ

‘‘আগামী বছর আসলে ইনশাআল্লাহ আমরা নবম তারিখে সওম পালন করব।’’ ইবনে আববাস রা. বলেনঃ ‘‘পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করলেন।’’

বর্ণনায়ঃ মুসলিম

এ হাদীস দেখে এ কথা বুঝে নেয়ার অবকাশ নেই যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওমটা মুহাররম মাসের দশ তারিখের পরিবর্তে নবম তারিখে পালনের সংকল্প করেছিলেন। বরং তিনি সংকল্প করেছিলেন নবম ও দশম দু দিন সওম পালন করার। কেননা আশুরা হল দশম তারিখ। সেদিন বাদ দিয়ে সওম পালন করলে তা আশুরার সওম বলে গণ্য হয় কিভাবে?

হাদীসে এসেছে

أمر رسول الله صلى الله عليه وسلم بصوم عاشوراء يوم العاشر . رواه الترمذي عن عبد الله ابن عباس

‘‘রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন করতে বলেছেন দশম তারিখে’’

হাদীসে আরো এসেছে

قالت عائشة رضى الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بصيام عاشوراء يوم العاشر . رواه الترمذي

আয়েশা রা. বলেনঃ নবী কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাররমের দশ তারিখে আশুরার সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।’’

বর্ণনায়ঃ তিরমিজী

হাকাম ইবনুল আ‘ওয়াজ নামে এক ব্যক্তি ইবনে আববাস রা. কে আশুরার সওম সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেনঃ

إذا رأيت هلال المحرم فاعدد وأصبح يوم التاسع صائما . رواه مسلم والترمذي

‘‘যখন মুহাররম মাসের চাঁদ দেখবে তখন থেকে হিসেব করবে এবং নবম তারিখের সকাল থেকে সওম পালন করবে।’’

বর্ণনায়ঃ মুসলিম ও তিরমিজী

ইবনে আববাস রা. এর এ উত্তর থেকে এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশংকা নেই যে, আশুরার সওম আসলে কোন দিন; নবম না দশম তারিখে?

ইবনুল কায়্যিম (রহঃ) বলেন ঃ ‘‘কেহ যদি আশুরা সম্পর্কিত ইবনে আববাস রা. এর বর্ণনা সমূহ একত্র করে পড়ে দেখে তা হলে তার সামনে কোন বিভ্রান্তি বা অস্পষ্টতা থাকবেনা এবং সে ইবনে আববাস রা. এর ইলম ও প্রজ্ঞার গভীরতা উপলদ্ধি করতে পারবে। বর্ণিত হাদীসে প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেননি যে আশুরা নবম তারিখে। তিনি শুধু নবম তারিখে সওম আরম্ভ করতে বলেছেন।

(যাদুল মাআ‘দ)

হাদীসে এসেছে

عن ابن عباس رضى الله عنهما قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، وصوموا قبله يوما أو بعده يوما . رواه أحمد

ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘তোমরা আশুরা দিবসে সওম পালন কর ও এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধীতা কর। তাই তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে সওম পালন করবে। বর্ণনায়ঃ আহমদ

এ হাদীসে কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ঃ

(১) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিনে সওম পালন করতে বলেছেন। তাই আশুরার দিনকে বাদ দিয়ে সওম পালন করলে তা আশুরার সওম হবে না।

(২) আশুরার সওম পালনের ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধীতা করতে হবে। তাই ইহুদীদের মত দশম তারিখে একটি মাত্র সওম পালন করা যাবে না।

(৩) আশুরার একদিন পূর্বে সওম পালন করতে হবে।

(৪) যদি আশুরার পূর্বের দিন সওম পালন করা কোন কারণে সম্ভব না হয় তাহলে আশুরা ও তার পরের দিন সওম পালন করতে হবে।

হাদীসের অন্য একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়

صوموا يوما قبله ويوما بعده .

‘‘তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে এবং একদিন পরে সওম পালন কর।’’

এ হাদীসটি সহীহ নয়।

(জয়ীফুল জামে’ : আলবানী)

অতএব আশুরার দিন বাদ দিয়ে আশুরার একদিন পূর্বে ও একদিন পরে সওম পালন করা ঠিক হবে না। তেমনি আশুরার দিন সহ একদিন পূর্বে ও একদিন পরে মোট তিনটি সওম পালন করাও ঠিক হবে না।

ইতিপূর্বে উল্লেখিত ইবনে আববাস রা. কর্তৃক বর্ণিত সহীহ হাদীসে ‘অথবা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আশুরার দিন সহ তার পূর্বের দিন অথবা তার পরের দিন সওম পালন করতে হবে।

ইহুদীদের ধর্মীয় আচারের বিরোধীতা করার জন্য এ পদ্ধতিতে সওম পালন করা হবে ।

যেমন হাদীসে এসেছে

عن أبي موسى رضى الله عنه قال : كان أهل خيبر يوصومونه يوم عاشوراء، يتخذونه عيدا، ويلبسون نسائهم فيه حليهم وشاراتهم، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ( فصوموه أنتم ) رواه البخاري ومسلم

আবু মুছা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ খায়বর অঞ্চলের ইহুদীরা আশুরার দিনে সওম পালন করত ও ঈদ উদযাপন করত। এ দিনে তাদের মেয়েরা অলংকারাদি পরিধান করত ও তারা উত্তম পোষাকে সজ্জিত হত। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘‘তাহলে তোমরা সেদিনে সওম পালন করবে।’’

বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম

এ হাদীস দ্বারা কয়েকটি বিষয় জানতে পারা যায়ঃ

(১) অঞ্চল ও গোত্র ভেদে ইহুদীদের ধর্মীয় আচরনের বিভিন্নতা। মদীনার ইহুদীরা শুধু সওম পালন করত আর খায়বারের ইহুদীরা সওম পালন ও উৎসব পালন করত।

(২) যেহেতু এ দিনে ইহুদীরা ঈদ পালন করত। আর সওম হল ঈদের বিরোধী। তাই সওম পালন করে তাদের ঈদের বিরোধীতা করার নির্দেশ দিলেন আল্লাহ রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

(৩) সওম ও ঈদ পরস্পরের বিরোধী। তাই তা একই দিনে একত্র হতে পারে না।

(৪) আল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এ বাণীটি ইসলামের শেষ দিকের। কারণ খায়বর বিজয় ও হাদীসের বর্ণনাকারী আবু মুছা আল-আশ‘আরীর রসূলের সঙ্গ লাভ তাঁর জীবনের শেষ দিকের ঘটনা। যদিও আবু মুছা রা. ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কী জীবনে।

ইবনে রজব (রহঃ) বলেনঃ ‘‘এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা গেল এ দিনকে উৎসবের দিন হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আর কাফির মুশরিকদের ঈদের সাথে সংহতি প্রকাশ না করে ঐদিনে সওম পালন করে তাদের উৎসবের বিরোধীতা করতে বলা হয়েছে।’’

(লাতায়েফুল মাআ’রিফ)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন