hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আশুরা করনীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

১৪
নৈকট্য অর্জন ও মহবতের সত্যিকার পরিচয়
ইহুদীরা আশুরায় তাদের রোযা রাখার কারণ বর্ণনা করতে যেয়ে বলেছে যে, নবী মুছা আ. এ দিনে ফেরআউনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এ নাজাতের শুকরিয়া আদায় করতে যেয়ে তিনি সওম পালন করেছেন।

এখানে দুটো বিষয় বিবেচনার দাবী রাখে।

প্রথম বিষয় হলঃ আশুরাতে তাদের রোযা রাখাটা মুছা আ. এর আনুগত্য ও নৈকট্যের প্রমাণ বহন করে কিনা।

দ্বিতীয় বিষয় হলঃ সত্যিকারভাবে তাদের এ পর্ব দশই মুহাররম অনুষ্ঠিত হয় কিনা।

প্রথম বিষয়টি সম্পর্কে কথা হলঃ ইহুদীরা মুছা আ. এর ঘনিষ্ঠতর এটা প্রমাণের জন্য আশুরার রোযা যথেষ্ঠ নয়। তারা নিজেদের মুছা আ. এর অনুসারী বলে দাবী করে এবং তারা বংশের দিকে দিয়ে মুছা আ. এর বংশধর। যেমন তারা দাবী করে তারাই শুধু ইবরাহীম আ. এর সন্তান ও তার অনুসারী। এবং ইবরাহীম আ. ইহুদী ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন।

তাদের এ দাবী নাকচ করে দিয়ে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন

مَا كَانَ إِبْرَاهِيمُ يَهُودِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَكِنْ كَانَ حَنِيفًا مُسْلِمًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ﴿67﴾ آل عمران : 67

‘‘ইবরাহীম ইহুদীও ছিল না, খৃষ্টানও ছিল না; সে ছিল একনিষ্ঠ মুসলিম এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।’’

সূরা আলে ইমরান: ৬৭

ইহুদীরা দাবী করে তারা ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে। তেমনি খৃষ্টানরা দাবী করে তারাই মুলত ইবরাহীমের ধর্মের অনুসারী। মক্কার মুশরিকরাও এ দাবী থেকে পিছনে ছিল না। আল্লাহ তাআ’লা তাদের সকলের এ দাবী অসার বলে ঘোষণা দিলেন। ইবরাহীম তাওহীদের এক মহান আদর্শের নাম। ইবরাহীমের বংশে জন্ম নিলেই এ আদর্শের অনুসারী বলে দাবী করা যায় না। নবীদের উত্তরাধিকার বংশের ভিত্তিতে সাব্যস্ত হয় না। তাদের আনীত তাওহীদ ও রেসালাতের নির্ভেজাল আনুগত্যের মাধ্যমেই তাদের যথার্থ উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই এ ক্ষেত্রে মুসলিমরাই ইবরাহীম, মুছা, ও ইছা আ. এর নিকটতম ও খাটি অনুসারী ও তাদের মহববতের যথার্থ দাবীদার।

তাই আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ

إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِإِبْرَاهِيمَ لَلَّذِينَ اتَّبَعُوهُ وَهَذَا النَّبِيُّ وَالَّذِينَ آَمَنُوا وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِينَ ﴿68﴾ آل عمران : 68

‘‘নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে তারা ইবরাহীমের ঘনিষ্ঠতম যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নবী ও যারা ঈমান এনেছে ; আর আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক।’’

সূরা আলে ইমরান: ৬৮

তাই ইহুদী ও খৃষ্টানরা ইবরাহীমের বংশের হলেও তার ঘনিষ্ঠ হওয়া ও মহববতের দাবী তারা করতে পারে না। কারণ তারা ইবরাহীমের ধর্মের অনুসরণ করে না। বরং তারা বিভিন্ন রকম শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয়ে নবীদের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। তাদের নবীদের রেখে যাওয়া ধর্মকে বিকৃত করেছে।

তাই বলা যায় আখেরী নবী মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যথার্থ অনুসারীগণই মূছা আ. এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও সম্পর্কের দাবীদার। বংশ, স্থান ও কালের দূরত্ব থাকা সত্বেও আদর্শের ভিত্তিতে এক এবং হ্রদয়ের দিক দিয়ে আপন হওয়া যায়। তাই তো দেখা যায় বিশ্বের যে স্থানেই অবস্থান করুক না কেন, যে যুগেরই হোক না কেন, যে ভাষার হোক না কেন ও যে বংশের হোক না কেন, সকল মুসলিম একই দলভূক্ত,একই উম্মাহ ; একটাই জাতি। বংশ পরম্পরার দূরত্ব, স্থান ও কালের বিচ্ছিন্নতা, ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা এ ক্ষেত্রে কোন বাধা হতে পারে না। যার মধ্যে যত বেশী ঈমান থাকবে আল্লাহ ও তার নবীদের কাছে সে তত বেশী প্রিয় ও নিকটতম হবে।

নবী ও রসূলদের আনুগত্য ও অনুসরণ ব্যতীত শুধু মহববতের দাবী সত্যি হতে পারে না। আর এ ধরণের মহববত কোন কাজেই আসবে না।

আবু লাহাব মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ভালবাসত। এতই ভালবাসত যে তার জন্ম গ্রহণের সু সংবাদ যে কৃতদাসীর কাছে শুনল আনন্দের অতিশয্যে সে কৃতদাসী সুয়াইবাকে মুক্ত করে দিল এবং নবুওয়ত পূর্ব পুরো চল্লিশ বছর মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি আবু লাহাবের এ স্নেহ মমতা ছিল অক্ষত। কিন্তু এ ভালবাসা ও মুহববতে কোন লাভ হয়নি। মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসরণ অস্বীকার করার ফলে আবু লাহাবের চেহারা পাল্টে গিয়েছিল।

কেহ বলতে পারেন যে আবু লাহাব শেষ জীবনে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দুশমনে পরিণত হয়েছিল বলে তার মুহাববত বৃথা গেছে।

আমি বলব তাহলে আবু তালিবের দিকে তাকান। তার কথা কারো অজানা নয়। মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একেবারে শৈশব থেকে পঞ্চাশ বছর বয়স পর্যন্ত তাকে নিজ সন্তানের মত ভালবেসে লালন পালন করেছেন। আর এ ভালবাসতে গিয়ে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। দীর্ঘ তিন বছর খেয়ে না খেয়ে উপোষ থেকে এক গিরি উপত্যকায় মক্কাবাসী কর্তৃক আরোপিত বয়কট সহ্য করে মুহাম্মদের ভালবাসার মাশুল দিয়েছেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ছায়ার মত সাথে থেকেছেন। তার অনুসরণ করা দরকার এটা স্বীকারও করেছেন। তার উদ্দেশ্যে কবিতা ও রচনা করেছেন। কিন্তু অনুসরণ করলেন না তার আনীত পয়গামের। ফলে সবকিছু বৃথা হয়ে গেল। তার জন্য প্রার্থনা করতেও নিষেধ করা হল।

পশ্চিমা অনেক লেখক ও গবেষকরা মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব রূপে স্বীকার করেন। কিন্তু সকল মানবের জন্য তার অনুসরণ যে অপরিহার্য এ বিষয়টি তাদের বুঝে আসেনি।

গ্যেটে কারলাইল থেকে শুরূ করে এ যুগের ‘দি হানড্রেড ’লেখক মাইকেল হার্ট পর্যন্ত বহু লেখক ও গবেষক, চিন্তাবিদ ও দার্শনিক মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে অনেক প্রসংশাসূচক উক্তি ও গুণগান করেছেন। সীমাহীন ভক্তির নৈবদ্য পেশ করেছেন। অকুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করেছেন যে, আবহমান পৃথিবীর সর্বকালীন প্রেক্ষাপটে মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই এক নাম্বার ব্যক্তি। কিন্তু তাদের এ ভালবাসা ও প্রসংশা তাদের কোন উপকারে আসেনি। কারণ তারা তার আনীত জীবন ব্যবস্থা অনুসরণের কোন চেষ্টা করেনি।

আজ যারা মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর আহলে বাইতের মহববত ও ভালবাসার নামে কান্নাকাটি করেন,তাযিয়া করেন, মীলাদ পড়েন আরো অনেক কিছু করেন যা তিনি করতে বলেননি। তাঁর মহববতে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে তাঁর আদেশ পর্যন্ত লংঘন করেন। বিভিন্ন বিদ‘আতী কাজ-কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু তাঁর আদর্শ অনুসরণ ও বাস্তবায়নের কোন প্রয়োজন অনুভব করেন না। তারা এ সকল দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। সামনে রাখতে পারেন মহান আল্লাহ রাববুল আলামীনের সেই বানীঃ

وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللَّهِ . النساء : 64

‘‘রাসূল এ উদ্দেশ্যেই প্রেরণ করেছি যে, আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তার আনুগত্য করা হবে।’’

সূরা আন-নিসাঃ ৬৪

তার আনুগত্য না করে বিভিন্ন বিদআ‘তী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে তাঁর মহববতের দাবী করা একটা ধোকাবাজী ছাড়া আর কিছু নয়। মহববতের পরিচয় প্রকাশ পাবে শুধু আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমে। তাই আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ ﴿31﴾ آل عمران : 31

‘‘বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’’

সূরা আলে ইমরান: ৩১

তাই যে যত বেশী আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে সে ততবেশী মহববত ও ভালবাসার দাবী করতে পারে।

দ্বিতীয় বিষয়টি সম্পর্কে কথা হলঃ অনেক উলামায়ে কেরাম বলেছেনঃ বর্তমানের ইহুদীরা আশুরা ইত্যাদি পর্ব সৌর সন অনুযায়ী করে থাকে। আর মুহাররম মাস হল চন্দ্রমাস। এতে সন্দেহ দেখা দিয়েছে ইহুদীরা আশুরা নির্ধারণের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পেরেছে কিনা। আসলে পারেনি। এ ক্ষেত্রেও তারা পথ হারিয়েছে। আর মুসলিমগন চন্দ্রমাস অনুযায়ী ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করেন তাই তারা আশুরা নির্ধারণে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

যেমনি ভাবে ইহুদী ও খৃষ্টানরা সাপ্তাহিক দিন নির্ধারণে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে ব্যর্থ হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন