মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ক- মৃতব্যক্তিকে গোসল দেওয়া, কাফন পড়ানো, জানাযার সালাত পড়া ও তাকে কবরস্থ করা ফরযে কিফায়া।
খ- গোসল দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম সেই ব্যক্তি হকদার, যার ব্যাপারে মৃত ব্যক্তি অসীয়ত করে গিয়েছে। তারপর তার পিতা। তারপর অপরাপর নিকটাত্মীয়। আর মহিলার গোসলে প্রথম হকদার হলো তার অসীয়তকৃত মহিলা। তারপর তার মা। তারপর তার মেয়ে। তারপর অন্যান্য নিকটাত্মীয় মহিলাগণ।
গ- স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরকে গোসল দিতে পারবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকী‘ গোরস্থান থেকে ফিরে এসে আমাকে মাথা ব্যথায় যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় পেলেন। তখন আমি বললাম, হে আমার মাথা! তিনি বলেন: হে ‘আয়েশা! আমিও মাথা ব্যথায় ভুগছি। হে আমার মাথা! অতঃপর তিনি বলেন: তুমি যদি আমার পূর্বে মারা যেতে, তাহলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো না। কেননা আমি তোমাকে গোসল করাতাম, কাফন পরাতাম, তোমার জানাযার সালাত পড়তাম এবং তোমাকে দাফন করতাম”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪৬৫, আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।]
ঘ- মৃত ব্যক্তি নারী হোক বা পুরুষ তার বয়স যদি সাত বছরের কম হয়, তবে যে কোনো পুরুষ বা মহিলা তার গোসল দিতে পারবে। আর গোসলের জন্য পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ আর নারীর ক্ষেত্রে নারী যদি না পাওয়া যায় তবে তার গোসল দিবে না। বরং তাকে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে। এর পদ্ধতি হলো, উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন তার হাত দু’টি পাক মাটিতে মারবে। তারপর তা দ্বারা মৃতের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত কব্জী পর্যন্ত মাসেহ করে দিবে। আর কোনো কাফেরকে গোসল দেওয়া এবং দাফন করা মুসলিমের ওপর হারাম।
ঙ- গোসল দেওয়ার সুন্নাত পদ্ধতি হলো, প্রথমে তার লজ্জাস্থান ঢেকে দিবে, তারপর তার সমস্ত কাপড় খুলে নিবে। অতঃপর তার মাথাটা বসার মতো করে উপরের দিকে উঠাবে এবং আস্তে করে পেটে চাপ দিবে, যাতে করে পেটের ময়লা বেরিয়ে যায়।
চ- এরপর বেশি করে পানি ঢেলে তা পরিস্কার করে নিবে। তারপর হাতে কাপড় জড়িয়ে বা হাত মোজা পরে তা দিয়ে উভয় লজ্জাস্থানকে (দৃষ্টি না দিয়ে) ধৌত করবে। তারপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে এবং সালাতের ন্যায় অযু করাবে। তবে মুখে ও নাকে পানি প্রবেশ করাবে না। বরং ভিজা কাপড় আঙ্গুলে জড়িয়ে তা দিয়ে তার উভয় ঠোঁটের ভিতর অংশ ও দাঁত পরিস্কার করবে। একইভাবে নাকের ভিতরও পরিস্কার করবে।
ছ- পানিতে কুল পাতা মিশিয়ে তা ফুটিয়ে গোসল দেওয়া মুস্তাহাব। বরই পাতা দিয়ে ফোটানো পানি দ্বারা মৃতের মাথা ও দাঁড়ি ধৌত করতে হবে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“এক ব্যক্তি আরাফাতে ওয়াকুফ অবস্থায় হঠাৎ তার উটনী থেকে পড়ে যায়। এতে তার ঘাড় মটকে গেল অথবা বর্ণনাকারী বলেছেন, তার ঘাড় মটকিয়ে দিল। (এতে সে মারা যায়)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল করাও এবং দুই কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা কিয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উত্থিত হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৬৫।]
জ- প্রথমে শরীরের ডান পাশের সামনের দিক ধৌত করবে। তারপর পিছন দিক তারপর বাম দিক ধৌত করবে। উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যার গোসলের ব্যাপারে বলেছেন,
“তোমরা তার ডান দিক থেকে এবং অযুর স্থানসমূহ থেকে শুরু করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৬৫।]
এভাবে তিনবার গোসল দিবে। প্রতিবার হালকাভাবে পেটে হাত বুলাবে এবং ময়লা কিছু বের হলে পরিস্কার করে নিবে।
ঝ- গোসলের সময় সাবান ব্যবহার করতে পারে এবং প্রয়োজন মোতাবেক তিনবারের বেশি সাত বা ততোধিক গোসল দিতে পারে। শেষবার কর্পুর মিশ্রিত করে গোসল দেওয়া সুন্নাত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যা যায়নাব রাদিয়াল্লাহু আনহার শেষ গোসলে কর্পুর মিশ্রিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যাগণের মধ্যে একজন মারা গেলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন এবং বললেন, তোমরা তাকে তিনবার পাঁচবার অথবা যদি তোমরা প্রয়োজনীয় মনে কর, তবে তার চাইতে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। শেষবারে কর্পুর (অথবা তিনি বলেন) ‘কিছু কর্পুর’ ব্যবহার করবে। গোসল শেষ করে আমাকে জানাবে। উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমরা শেষ করে তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদর আমাদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, এটি তার ভিতরের কাপড় হিসেবে পরাও। আইয়ূব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সূত্রে উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং তাতে তিনি (উম্মে আতিয়্যাহ) বলেছেন, তিনি বলেছেন, তাকে তিন, পাঁচ, সাত বা প্রয়োজনবোধে তার চাইতে অধিকবার গোসল দাও। হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমরা তার মাথার চুলকে তিনটি বেণী বানিয়ে দিই”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৫৮, ১২৫৯।]
ঞ- মৃতের মোচ বা নখ যদি বেশি বড় থাকে তবে তা কেটে দেওয়া মুস্তাহাব। তবে বগল বা নাভীর নিচের চুল কাটা যাবে না। মৃতের চুল আঁচড়ানোর দরকার নেই। তবে নারীর ক্ষেত্রে তার চুলগুলোতে তিনটি বেণী বেঁধে তা পিছনে ছড়িয়ে দিবে।
উম্মে আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যার মাথা তিনটি বেণী করে দেন। তারা তা খুলেছেন, এরপর তা ধুয়ে তিনটি বেণী করে দেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৬০।]
ট- সাত বার গোসল দেওয়ার পরও যদি পেট থেকে ময়লা (পেশাব বা পায়খানা) বের হতেই থাকে তবে উক্ত স্থান ধুয়ে সেখানে তুলা বা কাপড় জড়িয়ে দিবে। তারপর তাকে অযু করাবে। কাফন পরানোর পরও যদি ময়লা বের হয়, তবে আর গোসল না দিয়ে সেভাবেই রেখে দিবে। কেননা তা অসুবিধার ব্যাপার।
ঠ- হজ বা ওমরায় গিয়ে ইহরাম অবস্থায় যদি কেউ মারা যায়, তবে তাকে কুল পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দিবে। কিন্তু কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করবে না এবং পুরুষ হলে কাফনের সময় তার মাথা ঢাকবে না। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“এক ব্যক্তি ‘আরাফাতে ওয়াকূফ অবস্থায় হঠাৎ তার বাহন থেকে পড়ে যায়। এতে তার ঘাড় মটকে গেল অথবা বর্ণনাকারী বলেছেন, তার ঘাড় মটকিয়ে দিল। (এতে সে মারা যায়)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল করাও এবং দু’কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা কিয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উত্থিত হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৬৫।]
ড- আল্লাহর রাস্তায় শহীদ ব্যক্তিকে গোসল দিবে না এবং তাকে তার সাথে সংশ্লিষ্ট কাপড়েই দাফন করবে। কেননা হাদীসে এসেছে,
» أن النبي صلى الله عليه وسلم " أمر بدفن شهداء أحد في دمائهم ولم يُغسلهم»
“নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদদেরকে তাদের রক্তমাখা কাপড় নিয়েই দাফন করতে নির্দেশনা দেন, তিনি তাদেরকে গোসল দেন নি।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৪৬।]
ঢ- গর্ভস্থ সন্তান যদি চার মাস অতিক্রম হওয়ার পর পড়ে যায়, তবে তার গোসল ও জানাযার সালাত আদায় করবে। আর তার বয়স যদি চার মাসের কম হয়, তবে তাতে প্রাণ না থাকার কারণে সাধারণ একটি গোশতের টুকরা গণ্য হবে। যা কোনো গোসল বা জানাযা ছাড়াই যে কোনো স্থানে মাটিতে গেড়ে দেওয়া হবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের প্রত্যেকের শুক্র তার মাতৃ উদরে চল্লিশ দিন জমাট থাকে। এরপর অনুরূপ চল্লিশ দিনে রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়। এরপর অনুরূপ চল্লিশ দিনে তা একটি গোশত পিণ্ডের রূপ নেয়। এরপর আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে একজন ফিরিশতা পাঠানো হয়। সে তাতে রূহ ফুকে দেয়। আর তাকে চারটি বিষয় লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর তা হলো, তার রিযিক, তার মৃত্যুক্ষণ, তার কর্ম এবং তার বদকার ও নেককার হওয়া। সেই সত্তার কসম যিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ জান্নাতবাসীদের মতো আমল করতে থাকে, অবশেষ তার মধ্যে ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকে। এরপর তাকদীরের লিখন তার ওপর জয়ী হয়ে যায়। ফলে সে জাহান্নামীদের কাজ-কর্ম শুরু করে। এরপর সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়। আর তোমাদের মধ্যে কোনো কোনো ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ-কর্ম করতে থাকে। অবশেষে তার ও জাহান্নামের মাঝখানে একহাত মাত্র ব্যবধান থাকে। এরপর ভাগ্যলিপি তার ওপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতীদের ন্যায় আমল করে। অবশেষে জান্নাতে দাখিল হয়”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৪৩।]
সাঈদ ইবন মুসাইয়্যিব রহ. মৃত গর্ভপাত সম্পর্কে বলেন,
“চার মাস হলে তাতে রূহ ফুক দেওয়া হয় তখন জানাযা পড়া হবে”। [মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবা, হাদীস নং ১১৫৯৪।]
ন- মৃত ব্যক্তি আগুনে পুড়ে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খণ্ড-বিখণ্ড হওয়ার কারণে বা পানি না পাওয়ার কারণে যদি তাকে গোসল দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে পূর্ব নিয়মে তাকে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/270/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।