HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সূরা আন-নাবা-এর তাফসীর

লেখকঃ আবু আবদুল্লাহ কুরতুবী রহ.

মহাসংবাদ কী তার ব্যাখ্যা:
আবু সালিহ বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহুআনহুমা বলেন, মহা সংবাদ হচ্ছে কুরআন, তার প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ﴿قُلۡ هُوَ نَبَؤٌاْ عَظِيمٌ ٦٧ أَنتُمۡ عَنۡهُ مُعۡرِضُونَ ٦٨ ﴾ [ص : ٦٧، ٦٨ ] “বলুন, এটা এক ভয়ানক সংবাদ। যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ” [সূরা স-দ, আয়াত: ৬৭-৬৮] কুরআন হচ্ছে খবর, সংবাদ এবং ঘটনাবলী, কুরআন হচ্ছে এমন সংবাদ যার ব্যাপার অতি বিরাট ও মহান।

সা‘ঈদ বর্ণনা করেন, কাতাদা বলেন, তা হচ্ছে মুত্যুর পরে পুনরুত্থান, লোকেরা এ ব্যাপারে দুই দলে বিভক্ত, কেউ একে সত্য বলছে, কেউ একে বলছে মিথ্যা

কেউ কেউ বলেন, (এটা হচ্ছে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ

দাহহাক বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অনেক বিষয়ে জিজ্ঞেস করে, এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তাদের মতবিরোধের ব্যাপারে অবহিত করেন, এরপর তিনি তাদেরকে ধমক দিয়ে বলেন, كَلَّا سَيَعۡلَمُون “কখনো না, (তারা যা ধারণা করে তা একেবারে অলীক ও অবাস্তব), তারা শীঘ্রই জানতে পারবে” অর্থাৎ তারা অচিরেই কুরআনে বর্ণিত পরিণাম সম্পর্কে বুঝতে পারবে অর্থাৎ তারা অচিরেই পুনরুত্থান সম্পর্কে জানতে পারবে, সেটা কি সত্য নাকি মিথ্যা।

كلا তাদের পুনরুত্থান সম্পর্কে অস্বীকৃতি এবং কুরআনকে মিথ্যা সাব্যস্ত করার জবাবে বলা হয়েছে ফলে এখানে থামতে হবে এ অর্থ করাও বৈধ ‘যথাযথভাবে’ অথবা ‘জেনে রেখো’ তবে সবচেয়ে স্পষ্ট অর্থ হচ্ছে, তাদের জিজ্ঞাসা ছিল পুনরুত্থান সম্পর্কে। আমাদের কতিপয় আলেম বলেন,

﴿إِنَّ يَوۡمَ ٱلۡفَصۡلِ كَانَ مِيقَٰتٗا ١٧﴾ [ النبا : ١٧ ]

“নিশ্চয় নির্ধারিত আছে মীমাংসার দিন” [সূরা আন-নাবা, আয়াত: ১৭] এ আয়াত যা প্রমাণ করে তাতে প্রমাণিত হয় যে, তারা পরস্পর পুনরুত্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।

ثُمَّ كَلَّا سَيَعۡلَمُونَ “আবার বলছি, কখনো নয়, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে” মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন এবং মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান সম্পর্কে তাদেরকে যা বলেছেন, তার সত্যতা ও বাস্তবতা সম্পর্কে সত্যসত্যই তারা অবশ্যই জানতে পারবে

দাহহাক বলেন: كَلَّا سَيَعۡلَمُونَ “তারা অচিরেই জানতে পারবে” অর্থাৎ কাফিররা তাদের মিথ্যা সাব্যস্ত করার পরিণতি সম্পর্কে অচিরেই জানতে পারবে মুমিনগণ তাদের সত্য বলে মেনে নেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে অবশ্যই জানতে পারবে।

কেউ কেউ বলেন, এর বিপরীত অর্থও বলেছেন।

হাসান রহ. বলেন, এখানে ভীতিপ্রদর্শনের পর ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে

অধিকাংশ আলেম يا দ্বারা পাঠ করেছেন আর তা খবর, তা এ কারণে যে, আয়াতে বলা হয়েছে ﴿يَتَسَآءَلُونَ﴾ জিজ্ঞাসাবাদ করছে? এবং আল্লাহর বাণী: ٱلَّذِي هُمۡ فِيهِ مُخۡتَلِفُونَ “যে বিষয়ে তাদের মাঝে মতপার্থক্য আছে” (নাম পুরুষ ব্যবহার করা হয়েছে), হাসান, আবুল আলীয়্যাহ এবং মালিক ইবন দীনার উভয়ের মাঝে تا দ্বারা পড়েছেন। (অর্থাৎ, تعلمون )

﴿أَلَمۡ نَجۡعَلِ ٱلۡأَرۡضَ مِهَٰدٗا ٦ وَٱلۡجِبَالَ أَوۡتَادٗا ٧ وَخَلَقۡنَٰكُمۡ أَزۡوَٰجٗا ٨ وَجَعَلۡنَا نَوۡمَكُمۡ سُبَاتٗا ٩ وَجَعَلۡنَا ٱلَّيۡلَ لِبَاسٗا ١٠ وَجَعَلۡنَا ٱلنَّهَارَ مَعَاشٗا ١١ وَبَنَيۡنَا فَوۡقَكُمۡ سَبۡعٗا شِدَادٗا ١٢ وَجَعَلۡنَا سِرَاجٗا وَهَّاجٗا ١٣ وَأَنزَلۡنَا مِنَ ٱلۡمُعۡصِرَٰتِ مَآءٗ ثَجَّاجٗا ١٤ لِّنُخۡرِجَ بِهِۦ حَبّٗا وَنَبَاتٗا ١٥ وَجَنَّٰتٍ أَلۡفَافًا ١٦ ﴾ [ النبا : ٦، ١٦ ]

অর্থানুবাদ:

৬. আমরা যে সব কিছুকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে সক্ষম তা তোমরা অস্বীকার করছ কীভাবে) আমরা কি জমিনকে (তোমাদের জন্য) বিছানা বানাই নি? ৭. আর পর্বতগুলোকে কীলক (বানাই নি)? ৮. আর আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়। ৯. আর তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রামদায়ী। ১০. আর রাতকে করেছি আবরণ, ১১. আর দিনকে করেছি জীবিকা সংগ্রহের মাধ্যম। ১২. আর তোমাদের উর্ধ্বদেশে বানিয়েছি সাতটি সুদৃঢ় আকাশ। ১৩. এবং সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল প্রদীপ। ১৪. আর আমরা বর্ষণ করি বৃষ্টিবাহী মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি, ১৫. যাতে আমি তা দিয়ে উৎপন্ন করি শস্য ও উদ্ভিদ ১৬. আর ঘন উদ্যান। [সূরা আন-নাবা, আয়াত: ৬-১৫]

তাফসীর:

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, أَلَمۡ نَجۡعَلِ ٱلۡأَرۡضَ مِهَٰدٗا “আমরা কি জমিনকে (তোমাদের জন্য) বিছানা বানাই নি”? এখানে তাদেরকে অবহিত করেছেন যে, তিনি পুনরুত্থান ঘটাতে সক্ষম অর্থাৎ এ সব কিছুর অস্তিত্ব দানে আমার ক্ষমতা (এ গুলোকে) পুনরায় সৃষ্টি করার ক্ষমতার চেয়ে বড় مهاد হচ্ছে নিম্নভূমি ও বিছানা আল্লাহ তা‘আলা অপর একটি আয়াতে বলেন: ﴿ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ فِرَٰشٗا ٢٢﴾ [ البقرة : ٢٢ ] “যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে বিছানা বানিয়েছেন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২]

আয়াতে مهداً ও পড়া হয়েছে, অর্থাৎ এটা যেন তাদের জন্য বাচ্চার দোলনার মতো, এটা তার জন্য বিছিয়ে দেওয়া হয় ফলে সে তার উপরে শয়ন করে

وَٱلۡجِبَالَ أَوۡتَادٗا ً “আর পর্বতগুলোকে কীলক (বানাই নি)?”) যেন তা স্থির থাকে, কেঁপে না উঠে এবং এর অধিবাসীদের নিয়ে হেলে না পড়ে وَخَلَقۡنَٰكُمۡ أَزۡوَٰجٗا “আর আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়” কয়েক প্রকারে, পুরুষ এবং নারী।

কেউ কেউ বলেন, বিভিন্ন রঙে।

কেউ কেউ বলেন, এখানে সুশ্রী-কদাকার, লম্বা-খাটো সবই শামিল, যাতে করে অবস্থা ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয়, যাতে মর্যাদাবানরা শুকরিয়া আদায় করে আর অধম ধৈর্য ধারণ করে।

وَجَعَلۡنَا نَوۡمَكُمۡ سُبَاتٗا “আর তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রামদায়ী” এখানে جعلنا অর্থ হচ্ছে আমরা বানিয়েছি এ কারণে এটি দু’টি مفعول -এর দিকে মুতা‘আদ্দী (সকর্মক ক্রিয়া) হয়েছে سُبَاتٗا (বিশ্রামদায়ী) এটা হচ্ছে দ্বিতীয় مفعول অর্থাৎ তোমাদের শরীরের আরামের জন্য, যেমন বলা হয় يوم السبت অর্থাৎ আরামের দিন, অর্থাৎ বাণী ইসরাঈলকে বলা হয়েছিল তোমরা এ দিনে আরাম কর, এদিন কিছুই করো না। অবশ্য ইবনুল আনবারী এ মত অস্বীকার করেছেন, তিনি বলেন, আরামকে سبات বলা হয় না

কেউকেউ বলেন, এর মূল হচ্ছে সম্প্রসারিত ও বিস্তৃত করা বলা হয়: سبتت المرأة شعرها নারীর চুল খুলার সময় বলা হয় সে তার চুলকে ছড়িয়ে দিয়েছে سبات হচ্ছে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো। আরও বলা হয়ে থাকে ورجل مسبوت الخلق লোকটি প্রশস্ত চরিত্রের অধিকারী, যখন কেউ আরাম করার ইচ্ছা করে তখন সে প্রসারিত হয় বা ছড়িয়ে দেয় এ কারণে আরাম করাকে سبت বলা হয়েছে।

কেউ বলেন, এর মূল হচ্ছে বিচ্ছিন্ন করা, যেমন বলা হয় سبت شعره سبتا (সে তার চুলকে বিচ্ছিন্ন করেছে) যখন সে তা মুণ্ডন করে, যেন যখন সে ঘুমায় তখন সে লোকেদের এবং কর্মব্যস্ততা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়,

বস্তুত سبات শব্দটি মৃত্যুর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, তবে রূহ তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না বলা হয়: سير سبت নিদ্রিত অবস্থায় বেড়ানো (ঘুমের মাঝে স্বপ্নচারণ করা) অর্থাৎ: সহজ, কোমল।

وَجَعَلۡنَا ٱلَّيۡلَ لِبَاسٗا “রাতকে করেছি আবরণ” অর্থাৎ এর অন্ধকার তোমাদেরকে আচ্ছাদিত করে আর ঢেকে ফেলে তাবারী বর্ণনা করেন, ইবন জুবাইর এবং সুদ্দী বলেন, তোমাদের জন্য শান্তিদায়ক করেছি।

وَجَعَلۡنَا ٱلنَّهَارَ مَعَاشٗا “আর দিনকে করেছি জীবিকা সংগ্রহের মাধ্যম” এখানে ‘সময়’ কথাটি উহ্য রয়েছে অর্থাৎ জীবিকার সময়, অর্থাৎ জীবিকা অন্বেষণের জন্য কাজ-কর্ম, অর্থাৎ খাদ্য-পানীয় এবং অন্যান্য কিছুর মাধ্যমে জীবিকার সময়, এর ভিত্তিতে معاشا হচ্ছে সময়ের নাম, আবার معاشاً শব্দটি জীবন-যাপন অর্থে মাসদারও হতে পারে। এ অবস্থায় مضاف উহ্য থাকবে, (অর্থাৎ وقت عيش ) জীবিকার সময়।

وَبَنَيۡنَا فَوۡقَكُمۡ سَبۡعٗا شِدَادٗا “আর তোমাদের উর্ধ্বদেশে বানিয়েছি সাতটি সুদৃঢ় আকাশ” অর্থাৎ সপ্ত আসমান, যা অত্যন্ত মজবুতভাবে নির্মিত।

وَجَعَلۡنَا سِرَاجٗا وَهَّاجٗا “এবং সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল প্রদীপ” অর্থাৎ দীপ্তিমান, তা হচ্ছে সূর্য, এখানে جعل অর্থ হচ্ছে সৃষ্টি করেছেন কেননা এ শব্দটি ( جعل ) একটি مفعول এর দিকে متعدي হয়, وهاج যা জ্বলজ্বল করে, যেমন মণিমুক্তা যখন জ্বলজ্বল করে, তখন বলা হয় تَوَهَّجَ । আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, জ্বলজ্বল, দীপ্তিমান, চকচক করা।

وَأَنزَلۡنَا مِنَ ٱلۡمُعۡصِرَٰتِ مَآءٗ ثَجَّاجٗا “আর আমরা বর্ষণ করি বৃষ্টিবাহী মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি” মুজাহিদ ও কাতাদা বলেন, المعصرات হচ্ছে বাতাস, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাও এ মত পোষণ করেছেন; যেন তা মেঘমালাকে নিংড়ায় (নিংড়ে বৃষ্টি বের করে)।

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে: এটা হচ্ছে মেঘমালা, সুফিয়ান, রাবী‘, ‘আবুল ‘আলিয়া এবং দাহ্হাক বলেন, অর্থাৎ মেঘমালা যা পানির দ্বারা নিষ্পেষিত হয় কিন্তু তারপরও তা বৃষ্টি বর্ষণ করে না। যেমন বলা হয় المرأة المعصر অর্থাৎ ঐ নারী যার হায়েযের সময় নিকটবর্তী হয়েছে কিন্তু রক্তস্রাব হয় নি।

বাতাসকেও বলা হয় معصرات । বলা হয়: বাতাস নিংড়িয়েছে যখন সে ধূলিকে উসকে দেয়, অর্থাৎ ধূলিঝড়ের সৃষ্টি করে, মেঘকেও معصرات বলা হয়, কেননা তা বৃষ্টি বর্ষণ করে।

কাতাদা আরও বলেন, معصرات হচ্ছে আকাশ।

নাহ্হাস রহ. বলেন, এ সবগুলো উক্তিই সঠিক, বাতাস মেঘকে পরাগায়িত করে, এরপর বৃষ্টি হয়, এর ভিত্তিতে বাতাস থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হয়।

আবার উপরোক্ত সকল উক্তিকে এক উক্তি হিসেবে বলা যেতে পারে, আমরা বৃষ্টিবাহী বায়ু থেকে প্রচুর পানি বর্ষণ করি।

তবে এ সকল উক্তির মাঝে সবচেয়ে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে معصرات হচ্ছে মেঘমালা এটিই প্রসিদ্ধ যে, মেঘ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হয় বিশুদ্ধ বর্ণনায় রয়েছে, معصرات হচ্ছে মেঘমালা, (যা) বৃষ্টি বর্ষণ করে।

কেউ কেউ পাঠ করেছেন: ﴿وَفِيهِ يَعۡصِرُونَ ٤٩﴾ [ يوسف : ٤٨ ] “প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে” [সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৪৮] معصر বলা হয় ঐ মেয়েকে যে সম্প্রতি সাবালিকা হয়েছে এবং তার রক্তস্রাব হয়েছে বলা হয়: اعصرت ‘যখন সে যৌবনে পদার্পণ করেছে এবং সাবালিকা হয়েছে’ معصر এর বহুবচন হচ্ছে معاصر বলা হয়: সে হচ্ছে ঐ মেয়ে যে হায়েযের নিকটবর্তী হয়েছে, অর্থাৎ পরিণত বয়সে উপনিত হয়েছে। আমি এ ব্যাপারটি আবুল গাউস আল আ‘রাবীর নিকট শুনেছি, অন্যান্যরা বলেন, معصر হচ্ছে ঐ মেঘ যা বৃষ্টি বর্ষণ করার নিকটবর্তী হয়েছে যেমন বলা হয়: اجن الزرع فهو مجن অর্থাৎ ফসল তুলে আনার উপযোগী হয়েছে, অনুরূপভাবে মেঘমালা যখন বৃষ্টি বর্ষণের নিকটবর্তী হয়, তখন বলা হয় أعصر المطر (বৃষ্টি বর্ষণের উপযুক্ত হয়েছে)

মুবাররাদ বলেন, বলা হয় سحاب معصر অর্থাৎ পানি ধারণকারী (মেঘ), আর তা থেকে একের পর এক জিনিস বর্ষিত হয়। এ থেকে বলা হয় العصر অর্থাৎ আশ্রয়স্থল, عُصرة —এর অর্থও আশ্রয়স্থল, সূরা ইউসূফে এ অর্থ ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার।

পরিণত বয়সে উপনিত হওয়া মেয়েকে বলা হয় معصر কেননা সে তার গৃহে অবস্থান করে আর গৃহ তার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ও ইকরিমার কিরাআতে রয়েছে وأنزلنا بالمعصرات আর মুসহাফে (কুরআনে) রয়েছে من المعصرات উবাই ইবন কা‘আব, হাসান, ইবন জুবাইর, যায়েদ ইবন আসলাম এবং মুকাতিল ইবন হাইয়্যান বলেন, من المعصرات অর্থাৎ আসমানসমূহ থেকে, ماءً ثجّاجا ধারাবাহিক বর্ষণ আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা, মুজাহিদ এবং অন্যান্যরা বলেন, قد ثج الدم রক্ত প্রবাহিত হয়েছে, হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাকবুল হজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, العج والثج অতঃপর عج হচ্ছে উচ্চস্বরে তালবিয়াহ পড়া, আর ثج হচ্ছে রক্ত প্রবাহিত করা এবং হাদী (হাজীর ওপর ওমরা করার কারণেওয়াজিব পশু) যবেহ করা ইবন যায়েদ বলেন, ثجاجا অর্থাৎ প্রচুর। উপরোক্ত সবগুলোর অর্থ একই।

لِّنُخۡرِجَ بِهِۦ , “যাতে আমরা তা দিয়ে উৎপন্ন করি” অর্থাৎ সেই পানি দ্বারা, حَبّٗا (শস্য) যেমন, গম, যব এবং এ জাতিয় অন্যান্য কিছু وَنَبَاتٗا (ও উদ্ভিদ) গবাদির তৃণাদি খাদ্য, جَنَّٰتٍ “আর উদ্যান” অর্থাৎ বাগবাগিচা, أَلۡفَافًا “ঘন” যা পরস্পর জড়ানো, যা বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত, এ শব্দটির একবচন নেই, যেমন أوزاع এবং أخياف

কেউ কেউ বলেন, الألفاف এর একবচন হচ্ছে لِف (যের দ্বারা) এবং لُف (পেশ দ্বারা), কাসাঈ তা বর্ণনা করেছেন, তার থেকে এবং আবু আবু উবাইদাহ থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে, الألفاف এর একবচন হচ্ছে لفيف । যেমন, شريف এবং أشراف কেউ কেউ বলেন, এটা হচ্ছে বহুবচনের বহুবচন। কাসাঈ তা বর্ণনা করেছেন, বলা হয় نبت لف আচ্ছাদিত তৃণ-উদ্ভিদ, এর বহুবচন لُف যেমন حُمُر এরপর لُف এর আবার বহুবচন করা হয়েছে الفاف দ্বারা।

কেউ কেউ বলেন, এখানে উহ্য রয়েছে ونخرج به جنات ألفافاً অর্থাৎ আমরা তা দ্বারা উৎপন্ন করি ঘন বাগান। এখানে ( نخرج به -বের করি) এ কথাকে হযফ করে দেওয়া হয়েছে কেননা বর্ণনাভঙ্গিতে তাই বুঝা যাচ্ছে আর এ আচ্ছাদনের এবং পরস্পর মিলানোর অর্থ হচ্ছে বাগানে গাছ-গাছালি পরস্পর পরস্পরের নিকটবর্তী থাকে এবং শক্তির কারণে প্রতিটি বৃক্ষের শাখা-প্রশাখা থাকে নিকটবর্তী।

﴿إِنَّ يَوۡمَ ٱلۡفَصۡلِ كَانَ مِيقَٰتٗا ١٧ يَوۡمَ يُنفَخُ فِي ٱلصُّورِ فَتَأۡتُونَ أَفۡوَاجٗا ١٨ وَفُتِحَتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتۡ أَبۡوَٰبٗا ١٩ وَسُيِّرَتِ ٱلۡجِبَالُ فَكَانَتۡ سَرَابًا ٢٠﴾ [ النبا : ١٧، ٢٠ ]

অর্থানুবাদ:

১৭. নিশ্চয় নির্ধারিত আছে মীমাংসার দিন, ১৮. সেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, আর তোমরা দলে দলে আসবে, ১৯. আকাশ খুলে দেওয়া হবে আর তাতে হবে অনেক দরজা। ২০. আর পর্বতগুলোকে করা হবে চলমান, ফলে তা নিছক মরীচিকায় পরিণত হবে। [সূরা আন-নাবা, আয়াত: ১৫-২০]

তাফসীর:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন