hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমকালীন আরবের অবস্থা ও তাঁর মক্কী জীবন

লেখকঃ মো. আব্দুল কাদের

১৩
হেরাগুহায় ধ্যান ও নবুয়ত লাভ:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পঁয়ত্রিশ বছর বয়স হতে নিভৃতে চিন্তা ধ্যানের জন্য মক্কা হতে তিন মাইল দূরে হেরা নামক পর্বত গুহায় যেতে আরম্ভ করলেন। কয়েকদিনের খাদ্য-পানীয় সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তা শেষ হলে বাড়িতে এসে আবার কয়েকদিনের জন্য খাদ্য পানীয় নিয়ে চলে যেতেন। খাদীজা পরম যত্ন সহকারে আহার্য প্রস্তুত করে দিতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্জনাসক্তি ও নির্জনতায় ছিল প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলার ব্যবস্থাপনার একটি অংশ। কিছুদিন যাবত তিনি একটি স্বর্গীয় আলোক দেখতে এবং একটি অশ্রুপূর্ণ শব্দ তরঙ্গ শুনতে পেলেন। তখন থেকে তিনি স্বপ্নযোগে যা দেখতেন তাই সত্যে পরিণত হতে লাগল। [সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ২য় খণ্ড, (ঢাকা: ই.ফা.বা ১৯৮২/ ১৪০২), পৃ. ২৯৫।] অবশেষে তাঁর বয়স যখন চল্লিশ বছর তখন একদিন প্রকাশ্যে মহান আল্লাহ তাঁকে প্রকাশ্যে ও বাহ্যিক নবুয়তের পরম মর্যাদায় ভূষিত করলেন। [সীরাতু খাতিমিল আম্বিয়া, পৃ. ২৩।]

তখন ছিল রমযান মাস। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা রেখে রাত্রিতে হেরা গুহায় সারারাত জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন ছিলেন। এমনিভাবে রমযানের ২১ হতে ২৯ তারিখের কোনো এক বিজোড় রজনীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন মহান আল্লাহর দূত জিবরাঈল ‘আলাইহিস সালাম তাঁর নিকট আগমন করেন। এ ঘটনাটি হাদীসের মাধ্যমে বর্ণনা করলেও অপ্রাসঙ্গিক হবে না। আয়িশা রাদিয়াল্লাহ ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রথমে যে ওহী রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসত তা হল ঘুমের মধ্যে সত্য স্বপ্ন। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর মতই স্পষ্ট হতো। এরপর তাঁর নিকট নির্জন জীবন যাপন ভাল লাগলো। তাই তিনি একাধারে কয়েকদিন পর্যন্ত নিজ পরিবারের নিকট না গিয়ে হেরা গুহায় নির্জন পরিবেশে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকতে লাগলেন। আর এ উদ্দেশ্যে তিনি কিছু খাবার সাথে নিয়ে যেতেন। পরে তিনি বিবি খাদীজার নিকট ফিরে এসে আবার ঐরূপ কয়েকদিনের জন্য খাবার নিয়ে যেতেন। এভাবে হেরা গুহায় থাকাকালে তাঁর নিকট সত্য ওহী এলো। জিবরাঈল ফেরেশতা সেখানে এসে তাঁকে বললেন, পড়ুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তো পড়তে জানি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফেরেশতা তখন আমাকে ধরে এত জোরে আলিঙ্গন করলেন যে, এতে আমি চরম কষ্ট অনুভব করলাম। এরপর ফেরেশতা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পড়তে জানি না। তখন তিনি আমাকে দ্বিতীয়বার আমাকে ধরে খুব জোরে আলিঙ্গন করলেন। তাতে আমার অত্যন্ত কষ্ট বোধ হলো। এরপর আমাকে তিনি ছেড়ে দিয়ে পড়তে বললেন। আমি বললাম, আমি পড়তে জানি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফেরেশতা তৃতীয়বার ধরে দৃঢ়ভাবে আলিঙ্গন করায় আমার ভীষণ কষ্ট হলো। এবার তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ

﴿ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ خَلَقَ ٱلۡإِنسَٰنَ مِنۡ عَلَقٍ ٢ ٱقۡرَأۡ وَرَبُّكَ ٱلۡأَكۡرَمُ ٣ ٱلَّذِي عَلَّمَ بِٱلۡقَلَمِ ٤ عَلَّمَ ٱلۡإِنسَٰنَ مَا لَمۡ يَعۡلَمۡ ٥﴾ [ العلق : ١، ٥ ]

“আপনার রবের নামে পড়ুন, যিনি সৃষ্টি করেছেন। জমাট রক্ত থেকে যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আর আপনার রব সবচেয়ে বেশি সম্মানিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে শিখিয়েছেন তা যা সে জানত না।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতগুলোকে আয়ত্ব করে বাড়ি ফিরলেন। তাঁর হৃদয় তখন ভয়ে কাঁপছিল। তিনি খাদীজার নিকট এসে বললেন, আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও। তিনি তাঁকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন। পরে তাঁর ভয় চলে গেলে তিনি খাদীজার নিকট সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম, আমি আমার জীবন সম্পর্কে আশংকা বোধ করছি। খাদীজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সান্ত্বনা দিয়ে বললেন- না, ভয় নেই। আল্লাহর কসম, তিনি কখনই আপনাকে অপমানিত করবেন না। কারণ আপনি নিজ আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করেন ও দুঃখীদের খেদমত করেন, বঞ্চিত ও অভাবীগণকে উপার্জনক্ষম করেন, মেহমানদারী করেন এবং সত্য পথের বিপদগ্রস্তদেরকে সাহায্য করেন। খাদীজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর চাচাতো ভাই ওরাকা ইবন নওফেল ইবন আসাদ ইবন আবদুল উযযার নিকট চলে গেলেন। ওরাকা জাহিলী যুগে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইবরানী ভাষায় কিতাব লিখতেন। তাই আল্লাহর ইচ্ছা ও তাওফীক অনুযায়ী তিনি ইঞ্জিলের অনেকাংশে ইবরানী ভাষায় রূপান্তরিত করেন। তিনি বৃদ্ধ ও অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁকে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সব কথা শুনতে বললেন। ওরাকা শুনতে চাইলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ঘটনা শোনালেন। ওরাকা তাঁকে বললেন, এ সেই রহস্যময় জিবরাঈল ফেরেশতা যাঁকে মুসা আলাইহসি সালামের নিকট আল্লাহ নাযিল করেন। হায়, আমি যদি তোমার নবুয়তের সময় বলবান যুবক থাকতাম ! হায় আমি যদি সে সময় জীবিত থাকতাম ! যখন তোমার জাতি তোমাকে দেশ থেকে বের করে দিবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তারা কি সত্যিই আমাকে বের করে দিবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছ, তদ্রুপ কোন ব্যক্তি কিছু নিয়ে আসলে তার সাথে অতীতেও শত্রুতাই করা হয়েছে। আমি তোমার যুগে বেঁচে থাকলে তোমাকে যথাসাধ্য সাহায্য করব। তারপর কিছুদিন পরেই ওরাকা মারা যান। [মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল আল-বুখারী; সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, (করাচী: নূর মহাম্মদ কারখাসাহ ১৯৩৮/১৪১০), পৃ. ১০৪-১০৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন