HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
রাসূলের শানে সমসাময়িক ধৃষ্টতা আকার-প্রকৃতি ও নেপথ্য কাহিনী
লেখকঃ নাসের বিন সুলাইমান আল-উমর
ভালোর সাথে মন্দের দ্বন্দ্ব, মুসলমানদের সাথে কাফেরদের সংঘাত পার্থিব জগতের নীতি, আল্লাহর শাশ্বত বিধান। ‘‘আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে, আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করার স্থানসমূহ : খ্রিস্টানদের নির্জন গির্জা, এবাদতখানা, ইহুদিদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত। আল্লাহ নিশ্চয় তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা তাকে সাহায্য করে। আল্লাহ নিশ্চিত পরাক্রমশালী, শক্তির আধার।’’ [আল-হজ : ৪০]
সত্য এবং সত্যবাদীদের দ্বারাই আল্লাহ কাফের ও দুষ্কৃতকারীদের দুষ্কৃতি প্রতিহত করেন। যাতে প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ উভয় উপকরণই সমান ব্যবহার হয়। যেমন, দক্ষ জনবলের বৃহৎ শক্তি গঠন, সামরিক প্রস্ত্ততি, আল্লাহর সমীপে বিনীত দোয়া এবং সৎকর্ম। এবং আরো যে সব জিনিসের মাধ্যমে বালা-মুসিবত দূর হয় তার বাস্তব প্রয়োগ ও অনুশীলন করা ইত্যাদি।
হক ও বাতিলের এ সংঘাত পার্থিব স্বার্থ সিদ্ধির সাথে ওতপ্রোত জড়িত। এর মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা পরখ করেন, অদৃশ্য জগতে-না দেখে, কে তাকে এবং তার রাসূলকে সাহায্য করে। এর দ্বারাই চিহ্নিত করেন বিশ্বাসীদের, মনোনীত করেন শাহিদদের। এবং যার ইচ্ছে দেখে শুনেই ধ্বংস হবে।
বলা বাহুল্য, রাসূলগণ মানবতার মুক্তির দূত, সত্য ও কল্যাণের প্রতি প্রথম তারাই আহবানকারী; তাই অসত্য, অন্যায়ের মোকাবিলা এবং অনিষ্টচারীদের কষ্ট-পীড়ন সহ্য ভিন্ন কোন পথও ছিল না তাদের সামনে। এ জন্য-ই বলা হয়, মানুষের মাঝে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা, উৎপীড়নের শিকার হন নবিগণ। অতঃপর যারা যে পরিমাণ তাদের আদর্শ অনুসরণ করবে তারা সে পরিমাণ তাদের মত পরীক্ষা ও উৎপীড়নের শিকার হবে।
সাদ ইবনে আবী অক্কাস রা. বর্ণনা করেন, আমি রাসূল সা. কে জিজ্ঞাসা করে ছিলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের ভেতর কারা সব চেয়ে বেশি কষ্ট ও নিপীড়নের শিকার হন? তিনি বললেন, ‘নবিগণ। অতঃপর যারা যে পরিমাণ তাদের আদর্শ অনুসরণ করবে তারা সে পরিমাণ পরীক্ষার মুখোমুখি হবে। বান্দাকে তার দ্বীনদারী অনুপাতে পরীক্ষা করা হয়।’ [সহিহ ইবনে হিববান : ২৯০০, ২৯২১ আল-হাকেম : ১২১, ৫৪৯৩]
পার্থিব জগতে মানুষ নানাবিধ বালা-মুসিবত ও দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয়। ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের পক্ষ থেকে শিষ্ট ও পরহিতে উৎসর্গিত মহা পুরুষগণ যে বিরুদ্ধাচার ও নিপীড়নের শিকার হন, তাও এর অন্তর্ভুক্ত। নবিগণ যার একটি বিরাট অংশ বরদাশত করে গেছেন। পাপাচারী অশিষ্টরা, বিশেষ করে আল্লাহর দুশমন বনি ইসরাইল সম্প্রদায় নবিদের হত্যা পর্যন্ত করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘শাস্তির কারণ, তাদের অঙ্গিকার ভঙ্গ করা, আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে অস্বীকার করা, অন্যায় ভাবে নবিদের হত্যা করা এবং তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছন্ন।’ বরং মূল কথা হলো, অবিশ্বাস, অবাধ্যতা ও অকৃতজ্ঞতার কারণে আল্লাহ তাদের অন্তর সমূহের উপর মোহর করে দিয়েছেন। হাতে গোনা কতক লোক ব্যতীত, তাদের কেউ ঈমান গ্রহণ করবে না।’’ [আন-নিসা : ১৫৫] মানুষ যখন অহংকার, অবাধ্যতায় সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন সে আল্লাহ সম্পর্কে কটূক্তি করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। তাদের পক্ষে নবি-রাসূল কিংবা আউলিয়াদের কষ্ট দেয়া আশ্চর্যের কোন বিষয় নয়। একজন অক্ষম মানুষ, যাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, যার ভাগ্য তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন, যাকে তিনি সুন্দর সুন্দর রিজিক প্রদান করেন, যার জন্য তিনি আসমান হতে কল্যাণের বারি ধারা বর্ষণ করেন, তার দুঃসাহস ও অহমিকা আল্লাহ স্বয়ং ব্যক্ত করে বলেছেন: ‘‘যারা বলে, আল্লাহ গরিব, আমরা ধনি, আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন। আমরা তাদের কথোপকথন লিপি বদ্ধ করে রাখছি। এবং অন্যায় ভাবে নবিদের হত্যা করার অপরাধও। আমরা তাদেরকে বলব, তোমরা জাহান্নামের শাস্তি আস্বাদন কর।’’ [আলে-ইমরান : ১৮১] আল্লাহর উপর এমন মন্তব্য করার পর তাদের পক্ষ থেকে নবিদের কষ্ট দেয়ার মত ধৃষ্টতা প্রকাশ পেলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু আছে কি? আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘‘আমরা তাদের কথোপকথন এবং নবিদের হত্যা করার অপরাধ লিপিবদ্ধ করে রাখছি। আমরা অতি সত্বর তাদের বলব, তোমরা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ কর।’’ [আলে-ইমরান : ১৮১] না, আল্লাহর কসম করে বলছি, তাদের পক্ষে কোনও অপরাধ অসম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন: ‘‘তদ্রুপ, মানব ও জীন প্রকৃতির কিছু শয়তানকে আমরা নবি-রাসূলদের শত্রু বানিয়ে দিয়েছি। তারা ধোঁকার আশ্রয় নিয়ে একে অপরের নিকট সুন্দর সুন্দর পরিকল্পনা কানা ঘুষা করে। আল্লাহ বাধা দিলে, তারা এগুলো করতে সক্ষম হত না। আপনি তাদের এবং তাদের আবিষ্কৃত সব কিছু এড়িয়ে চলুন। যারা আখেরাতের উপর ঈমান রাখে না, একমাত্র তারাই এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এবং তাদের কথা কান পেঁতে শোনে। (তাদের এড়িয়ে চলুন) যাতে তারা ইচ্ছে মত যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।’’ [আল-আনআম : ১১২-১১৩]
হ্যাঁ, আশ্চর্যের বিষয় হলো, সত্যবাদী ও সৎ পথের যাত্রীদের আল্লাহ এবং তার রাসূলের পক্ষাবলম্বন কিংবা তার সাহায্য না করা। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আমরা আমাদের রাসূলদের দলিলসহ প্রেরণ করেছি, এবং তাদের উপর অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও সত্য-ন্যায়ের দন্ড। যাতে মানুষ ন্যায়-নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা বজায় রাখে। আরো নাজিল করেছি লৌহ, যাতে প্রচুর রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার রয়েছে। এর দ্বারা আল্লাহ প্রত্যক্ষ করবেন, কে না-দেখে আল্লাহ এবং তার রাসূলকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।’’ [আল-হাদিদ : ২৫]
হে আল্লাহর বান্দা! তোমার ভেতর সুপ্ত ঈমানের দীপ্তি কোথায়? তোমার রাসূলের শানে বেয়াদবি করা হচ্ছে, অথচ তোমার হৃদয়ে কোন স্পন্দন নেই? তোমার চেহারায় কোন প্রতিক্রিয়া নেই? আল্লাহর শপথ! এতো অন্তরের মৃতপ্রায় অবস্থা, আত্মার ধিক্কৃত নিশ্চলতা। ঈমানের বিন্দু বিদ্যমান আছে কোন অন্তকরণের এমন অবস্থা হতে পারে না! আল্লাহর শপথ! এটা চরম পর্যায়ের লাঞ্ছনা আর অপমান। এরশাদ হচ্ছে : ‘‘আল্লাহ শক্তিশালী ও পরাক্রমশীল, যে আল্লাহকে সাহায্য করবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন।’’ [আল-হজ : ৪০] ‘‘যারা ঈমান গ্রহণ করেনি, তাদের জন্য দুঃখ ও ধ্বংস। তারা নিজেদের কর্ম ও শ্রম বিনষ্ট করেছে।’’ [মুহাম্মদ : ৮] ‘‘হে ঈমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন, তোমাদের দৃঢ়পদ রাখবেন। আর যারা ঈমান গ্রহণ করেনি, তারা হতভাগা। তারা স্বীয় শ্রম বিনষ্ট করেছে।’’ [মুহাম্মদ : ৭-৮] হে আল্লাহ, তুমি আমাদের দৃঢ়পদ রাখ, তোমার রাসূলকে সাহায্য করার তওফিক দান কর।
সত্য এবং সত্যবাদীদের দ্বারাই আল্লাহ কাফের ও দুষ্কৃতকারীদের দুষ্কৃতি প্রতিহত করেন। যাতে প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ উভয় উপকরণই সমান ব্যবহার হয়। যেমন, দক্ষ জনবলের বৃহৎ শক্তি গঠন, সামরিক প্রস্ত্ততি, আল্লাহর সমীপে বিনীত দোয়া এবং সৎকর্ম। এবং আরো যে সব জিনিসের মাধ্যমে বালা-মুসিবত দূর হয় তার বাস্তব প্রয়োগ ও অনুশীলন করা ইত্যাদি।
হক ও বাতিলের এ সংঘাত পার্থিব স্বার্থ সিদ্ধির সাথে ওতপ্রোত জড়িত। এর মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা পরখ করেন, অদৃশ্য জগতে-না দেখে, কে তাকে এবং তার রাসূলকে সাহায্য করে। এর দ্বারাই চিহ্নিত করেন বিশ্বাসীদের, মনোনীত করেন শাহিদদের। এবং যার ইচ্ছে দেখে শুনেই ধ্বংস হবে।
বলা বাহুল্য, রাসূলগণ মানবতার মুক্তির দূত, সত্য ও কল্যাণের প্রতি প্রথম তারাই আহবানকারী; তাই অসত্য, অন্যায়ের মোকাবিলা এবং অনিষ্টচারীদের কষ্ট-পীড়ন সহ্য ভিন্ন কোন পথও ছিল না তাদের সামনে। এ জন্য-ই বলা হয়, মানুষের মাঝে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা, উৎপীড়নের শিকার হন নবিগণ। অতঃপর যারা যে পরিমাণ তাদের আদর্শ অনুসরণ করবে তারা সে পরিমাণ তাদের মত পরীক্ষা ও উৎপীড়নের শিকার হবে।
সাদ ইবনে আবী অক্কাস রা. বর্ণনা করেন, আমি রাসূল সা. কে জিজ্ঞাসা করে ছিলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের ভেতর কারা সব চেয়ে বেশি কষ্ট ও নিপীড়নের শিকার হন? তিনি বললেন, ‘নবিগণ। অতঃপর যারা যে পরিমাণ তাদের আদর্শ অনুসরণ করবে তারা সে পরিমাণ পরীক্ষার মুখোমুখি হবে। বান্দাকে তার দ্বীনদারী অনুপাতে পরীক্ষা করা হয়।’ [সহিহ ইবনে হিববান : ২৯০০, ২৯২১ আল-হাকেম : ১২১, ৫৪৯৩]
পার্থিব জগতে মানুষ নানাবিধ বালা-মুসিবত ও দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয়। ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের পক্ষ থেকে শিষ্ট ও পরহিতে উৎসর্গিত মহা পুরুষগণ যে বিরুদ্ধাচার ও নিপীড়নের শিকার হন, তাও এর অন্তর্ভুক্ত। নবিগণ যার একটি বিরাট অংশ বরদাশত করে গেছেন। পাপাচারী অশিষ্টরা, বিশেষ করে আল্লাহর দুশমন বনি ইসরাইল সম্প্রদায় নবিদের হত্যা পর্যন্ত করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘শাস্তির কারণ, তাদের অঙ্গিকার ভঙ্গ করা, আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে অস্বীকার করা, অন্যায় ভাবে নবিদের হত্যা করা এবং তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছন্ন।’ বরং মূল কথা হলো, অবিশ্বাস, অবাধ্যতা ও অকৃতজ্ঞতার কারণে আল্লাহ তাদের অন্তর সমূহের উপর মোহর করে দিয়েছেন। হাতে গোনা কতক লোক ব্যতীত, তাদের কেউ ঈমান গ্রহণ করবে না।’’ [আন-নিসা : ১৫৫] মানুষ যখন অহংকার, অবাধ্যতায় সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন সে আল্লাহ সম্পর্কে কটূক্তি করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। তাদের পক্ষে নবি-রাসূল কিংবা আউলিয়াদের কষ্ট দেয়া আশ্চর্যের কোন বিষয় নয়। একজন অক্ষম মানুষ, যাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, যার ভাগ্য তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন, যাকে তিনি সুন্দর সুন্দর রিজিক প্রদান করেন, যার জন্য তিনি আসমান হতে কল্যাণের বারি ধারা বর্ষণ করেন, তার দুঃসাহস ও অহমিকা আল্লাহ স্বয়ং ব্যক্ত করে বলেছেন: ‘‘যারা বলে, আল্লাহ গরিব, আমরা ধনি, আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন। আমরা তাদের কথোপকথন লিপি বদ্ধ করে রাখছি। এবং অন্যায় ভাবে নবিদের হত্যা করার অপরাধও। আমরা তাদেরকে বলব, তোমরা জাহান্নামের শাস্তি আস্বাদন কর।’’ [আলে-ইমরান : ১৮১] আল্লাহর উপর এমন মন্তব্য করার পর তাদের পক্ষ থেকে নবিদের কষ্ট দেয়ার মত ধৃষ্টতা প্রকাশ পেলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু আছে কি? আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘‘আমরা তাদের কথোপকথন এবং নবিদের হত্যা করার অপরাধ লিপিবদ্ধ করে রাখছি। আমরা অতি সত্বর তাদের বলব, তোমরা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ কর।’’ [আলে-ইমরান : ১৮১] না, আল্লাহর কসম করে বলছি, তাদের পক্ষে কোনও অপরাধ অসম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন: ‘‘তদ্রুপ, মানব ও জীন প্রকৃতির কিছু শয়তানকে আমরা নবি-রাসূলদের শত্রু বানিয়ে দিয়েছি। তারা ধোঁকার আশ্রয় নিয়ে একে অপরের নিকট সুন্দর সুন্দর পরিকল্পনা কানা ঘুষা করে। আল্লাহ বাধা দিলে, তারা এগুলো করতে সক্ষম হত না। আপনি তাদের এবং তাদের আবিষ্কৃত সব কিছু এড়িয়ে চলুন। যারা আখেরাতের উপর ঈমান রাখে না, একমাত্র তারাই এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এবং তাদের কথা কান পেঁতে শোনে। (তাদের এড়িয়ে চলুন) যাতে তারা ইচ্ছে মত যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।’’ [আল-আনআম : ১১২-১১৩]
হ্যাঁ, আশ্চর্যের বিষয় হলো, সত্যবাদী ও সৎ পথের যাত্রীদের আল্লাহ এবং তার রাসূলের পক্ষাবলম্বন কিংবা তার সাহায্য না করা। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আমরা আমাদের রাসূলদের দলিলসহ প্রেরণ করেছি, এবং তাদের উপর অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও সত্য-ন্যায়ের দন্ড। যাতে মানুষ ন্যায়-নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা বজায় রাখে। আরো নাজিল করেছি লৌহ, যাতে প্রচুর রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার রয়েছে। এর দ্বারা আল্লাহ প্রত্যক্ষ করবেন, কে না-দেখে আল্লাহ এবং তার রাসূলকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।’’ [আল-হাদিদ : ২৫]
হে আল্লাহর বান্দা! তোমার ভেতর সুপ্ত ঈমানের দীপ্তি কোথায়? তোমার রাসূলের শানে বেয়াদবি করা হচ্ছে, অথচ তোমার হৃদয়ে কোন স্পন্দন নেই? তোমার চেহারায় কোন প্রতিক্রিয়া নেই? আল্লাহর শপথ! এতো অন্তরের মৃতপ্রায় অবস্থা, আত্মার ধিক্কৃত নিশ্চলতা। ঈমানের বিন্দু বিদ্যমান আছে কোন অন্তকরণের এমন অবস্থা হতে পারে না! আল্লাহর শপথ! এটা চরম পর্যায়ের লাঞ্ছনা আর অপমান। এরশাদ হচ্ছে : ‘‘আল্লাহ শক্তিশালী ও পরাক্রমশীল, যে আল্লাহকে সাহায্য করবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন।’’ [আল-হজ : ৪০] ‘‘যারা ঈমান গ্রহণ করেনি, তাদের জন্য দুঃখ ও ধ্বংস। তারা নিজেদের কর্ম ও শ্রম বিনষ্ট করেছে।’’ [মুহাম্মদ : ৮] ‘‘হে ঈমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন, তোমাদের দৃঢ়পদ রাখবেন। আর যারা ঈমান গ্রহণ করেনি, তারা হতভাগা। তারা স্বীয় শ্রম বিনষ্ট করেছে।’’ [মুহাম্মদ : ৭-৮] হে আল্লাহ, তুমি আমাদের দৃঢ়পদ রাখ, তোমার রাসূলকে সাহায্য করার তওফিক দান কর।
‘মাদখাল’ নামক গ্রন্থে আছে, আদি যুগে নবিদের সাথে শত্রুতা ও তার গোড়া পত্তন করে মূলত: ইবলিস। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘আমি বললাম, হে আদম, এ ইবলিস তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। খবরদার! তোমাদের যেন সে জান্নাত হতে বহিষ্কার না করে। তবে কিন্তু তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত ও হতভাগা হয়ে যাবে।’’ [তহা : ১১৭] তার পর থেকেই ইবলিস প্রথমে আদম এবং পরবর্তীতে তার সন্তান-প্রজন্মের সাথে হিংসা, বিরোধী তা ও শত্রুতার ধারাবাহিকতার সূচনা করে। চলতে থাকে পরস্পরের মাঝে অসিয়ত ও প্রতিশ্রুতির আদান-প্রদান। শুরু হয় আল্লাহর নেককার বান্দাদের সাথে ধৃষ্টতা; নির্যাতনের বিভিন্ন আকার-প্রকৃতি ও স্টীমরোলার। যার শুরু, চোখ ও মুখের কটাক্ষ, বিদ্রূপাত্মক বাক্য, সবশেষে হত্যা। নবিগণ এর প্রত্যেকটির শিকার হয়েছেন। শত্রুদের সব ধরনের কষ্ট-মুসিবতের সম্মুখ হয়েছেন। তাদের হুমকি-ধমকি বরদাস্ত করেছেন। ক্লান্ত ও বিষণ্যতায় অবসন্ন হয়েছেন। আমাদের প্রিয় সর্বশেষ নবি পর্যন্ত এর থেকে রেহাই পাননি। তারা তাকে যাদুকর, গণক, পাগল, স্বধর্ম-ত্যাগী ইত্যাদি অপবাদ দিয়েছে। উটের পচা ভুঁড়ি তার উপর নিক্ষেপ করেছে। তাকে রক্তাক্ত করেছে, তার দান্দান মোবারক শহীদ করেছে। তাকে বিষ প্রয়োগ করেছে। তার উপর যাদু করা হয়েছে। এর মধ্যেই তিনি স্বীয় কর্তব্য পালন করেছেন। অবশেষে মৃত্যুর মাধ্যমে অন্তরঙ্গ বন্ধু আল্লাহর সাথে মিলিত হন। শাহাদাতের শুধা পান করে কষ্ট-মুসিবত ও পরীক্ষাগার স্থান এ-পার্থিব জগৎ থেকে চির মুক্তি লাভ করেন। আয়েশা রা. বলেন : রাসূল সা. তার মৃত্যু শয্যায় বলতেন, ‘‘হে আয়েশা! বিষ মিশ্রিত যে খানা আমি খায়বরে খেয়েছি, তার প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত অনুভব করছি। মনে হচ্ছে, তার কারণে আমার রক্তের প্রধান রগ চিরে যাচ্ছে।’’ [বোখারি : ৪১৬৫]
কাজি ইয়াজ রহ. বলেন : ‘‘অন্যান্য নবীগণ এর চেয়ে আরো কঠিন কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। কাউকে হত্যা করা হয়েছে, কাউকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে আবার কাউকে করাত দিয়ে দ্বিখন্ডিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কাউকে আল্লাহ নিরাপত্তা দিয়েছেন, হেফাজত করেছেন। যেমন তিনি হেফাজত করেছেন, সর্ব শেষ প্রেরিত আমাদের নবী মুহাম্মদ সা.-কে। যদি তিনি উঁহুদের ময়দানে ইবনে কামিআ লাইসির হাত প্রতিহত না করতেন; যদি তিনি তায়েফের দাওয়াতি মিশনে কাফেরদের দৃষ্টি থেকে আড়াল না করতেন; যদি তিনি হিজরতের সফরে কাফেরদের দৃষ্টিভ্রম না ঘটাতেন; গাউরিসের তলোয়ার, আবু জাহেলের পাথর এবং সুরাকা ইবনে মালেকের গোড়ার গতি রুদ্ধ না করতেন; তবে, কেমন করে লেখা হত মোহাম্মদ ও ইসলামের ইতিহাস!? এমনি ভাবে সকল রাসূল সা.-কে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কখন নাজাত পেয়েছেন, কখন মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছেন। এখানেই আল্লাহর কুদরতের কারিশমা, প্রজ্ঞা ও হেকমতের পরিপূর্ণ অনুশীলন। এ সকল পরীক্ষার কঠিন মুহূর্তে তিনি তাদের মর্যাদার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ণয় ও চিহ্নিত করার প্রয়াস চান। এর মাধ্যমে তিনি তাদের লক্ষ্য ও আদর্শের বিকাশ ঘটান। নিজ ওয়াদা পরিপূর্ণ করেন। তাদের মানুষত্বের অনন্য নিদর্শন সমূহের উন্মেষ ঘটান। দুর্বল চিত্ত মানুষের হৃদয় থেকে সন্দেহ দূরীভূত করেন। যাতে তারা ঈসা ইবনে মারইয়ামের উপর কটূক্তিকারী পথভ্রষ্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শক্তি সামর্থ্য দেখে গুমরাহ না হয়; এবং যাতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নবিগণ নিজ উম্মতের জন্য সান্ত্বনার মূর্ত প্রতীক, প্রভুর নিকট অধিক সওয়াব লাভের বেশি হকদার বিবেচ্য হন। এটাই তাদের অনুগত অনুসারীদের উপর করুণার সর্ব শেষ রেখা।’’ [শিফা : ২/১৫৮]
মূল্যায়নের এ চিত্রটি আমাদের নিকট পুরোনো শত্রুতা এবং তার নিগূঢ় তত্ত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা প্রদান করে। স্পষ্ট করে দেয় ক্ষণজন্মা মহামানবদের উপর কতিপয় নরপিচাশের ধৃষ্টতার নগ্ন চিত্র ও তার কারণ। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘তাদের থেকে এ প্রতিশোধ নেয়ার কারণ, তারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে। যিনি পরাক্রমশালী, প্রশংসিত।’’ [আল-বুরুজ : ৮] মূলত আমাদের এ বক্তব্য সুরায়ে মায়েদায় উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর। ইরশাদ হচ্ছে : ‘‘আপনি বলে দিন, হে আহলে কিতাব সম্প্রদায়, তোমরা কি জন্য আমাদের সাথে শত্রুতা পোষণ কর? আমাদের থেকে প্রতিশোধ নাও? আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি, আমাদের উপর নাজিলকৃত কিতাবের উপর ঈমান এনেছে এবং ইতিপূর্বে যে সকল কিতাব নাজিল হয়েছে তার উপরও ঈমান এনেছি- এ ছাড়া আর কি অপরাধ আমাদের? তবে জেনে রাখ, তোমাদের ভেতর অধিকাংশ লোক-ই অবাধ্য ও ফাসেক।’’ [আল-মায়েদা : ৫৯] এরও ভূতপূর্বে ফেরআউনের গণকরা ফেরআউনকে বলেছিল, ‘‘তুমি আমাদেরকে কেন শাস্তি দাও? আমাদের আর কি অপরাধ?- আমাদের নিকট প্রভুর নিদর্শন-বার্তা এসেছে, আমরা তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের উপর ধৈর্যের বারি বর্ষণ কর। পরিপূর্ণ মুসলমান করে মৃত্যু দাও।’’ [আল-আরাফ : ১২৬] অতএব সমকালীন ধৃষ্ট ও অশিষ্টদের অনুসৃত পথ নতুন কিছু নয়, খুব পুরাতন।
কাজি ইয়াজ রহ. বলেন : ‘‘অন্যান্য নবীগণ এর চেয়ে আরো কঠিন কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। কাউকে হত্যা করা হয়েছে, কাউকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে আবার কাউকে করাত দিয়ে দ্বিখন্ডিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কাউকে আল্লাহ নিরাপত্তা দিয়েছেন, হেফাজত করেছেন। যেমন তিনি হেফাজত করেছেন, সর্ব শেষ প্রেরিত আমাদের নবী মুহাম্মদ সা.-কে। যদি তিনি উঁহুদের ময়দানে ইবনে কামিআ লাইসির হাত প্রতিহত না করতেন; যদি তিনি তায়েফের দাওয়াতি মিশনে কাফেরদের দৃষ্টি থেকে আড়াল না করতেন; যদি তিনি হিজরতের সফরে কাফেরদের দৃষ্টিভ্রম না ঘটাতেন; গাউরিসের তলোয়ার, আবু জাহেলের পাথর এবং সুরাকা ইবনে মালেকের গোড়ার গতি রুদ্ধ না করতেন; তবে, কেমন করে লেখা হত মোহাম্মদ ও ইসলামের ইতিহাস!? এমনি ভাবে সকল রাসূল সা.-কে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কখন নাজাত পেয়েছেন, কখন মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছেন। এখানেই আল্লাহর কুদরতের কারিশমা, প্রজ্ঞা ও হেকমতের পরিপূর্ণ অনুশীলন। এ সকল পরীক্ষার কঠিন মুহূর্তে তিনি তাদের মর্যাদার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ণয় ও চিহ্নিত করার প্রয়াস চান। এর মাধ্যমে তিনি তাদের লক্ষ্য ও আদর্শের বিকাশ ঘটান। নিজ ওয়াদা পরিপূর্ণ করেন। তাদের মানুষত্বের অনন্য নিদর্শন সমূহের উন্মেষ ঘটান। দুর্বল চিত্ত মানুষের হৃদয় থেকে সন্দেহ দূরীভূত করেন। যাতে তারা ঈসা ইবনে মারইয়ামের উপর কটূক্তিকারী পথভ্রষ্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শক্তি সামর্থ্য দেখে গুমরাহ না হয়; এবং যাতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নবিগণ নিজ উম্মতের জন্য সান্ত্বনার মূর্ত প্রতীক, প্রভুর নিকট অধিক সওয়াব লাভের বেশি হকদার বিবেচ্য হন। এটাই তাদের অনুগত অনুসারীদের উপর করুণার সর্ব শেষ রেখা।’’ [শিফা : ২/১৫৮]
মূল্যায়নের এ চিত্রটি আমাদের নিকট পুরোনো শত্রুতা এবং তার নিগূঢ় তত্ত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা প্রদান করে। স্পষ্ট করে দেয় ক্ষণজন্মা মহামানবদের উপর কতিপয় নরপিচাশের ধৃষ্টতার নগ্ন চিত্র ও তার কারণ। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘তাদের থেকে এ প্রতিশোধ নেয়ার কারণ, তারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে। যিনি পরাক্রমশালী, প্রশংসিত।’’ [আল-বুরুজ : ৮] মূলত আমাদের এ বক্তব্য সুরায়ে মায়েদায় উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর। ইরশাদ হচ্ছে : ‘‘আপনি বলে দিন, হে আহলে কিতাব সম্প্রদায়, তোমরা কি জন্য আমাদের সাথে শত্রুতা পোষণ কর? আমাদের থেকে প্রতিশোধ নাও? আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি, আমাদের উপর নাজিলকৃত কিতাবের উপর ঈমান এনেছে এবং ইতিপূর্বে যে সকল কিতাব নাজিল হয়েছে তার উপরও ঈমান এনেছি- এ ছাড়া আর কি অপরাধ আমাদের? তবে জেনে রাখ, তোমাদের ভেতর অধিকাংশ লোক-ই অবাধ্য ও ফাসেক।’’ [আল-মায়েদা : ৫৯] এরও ভূতপূর্বে ফেরআউনের গণকরা ফেরআউনকে বলেছিল, ‘‘তুমি আমাদেরকে কেন শাস্তি দাও? আমাদের আর কি অপরাধ?- আমাদের নিকট প্রভুর নিদর্শন-বার্তা এসেছে, আমরা তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের উপর ধৈর্যের বারি বর্ষণ কর। পরিপূর্ণ মুসলমান করে মৃত্যু দাও।’’ [আল-আরাফ : ১২৬] অতএব সমকালীন ধৃষ্ট ও অশিষ্টদের অনুসৃত পথ নতুন কিছু নয়, খুব পুরাতন।
সমসাময়িক যুগেও অভিশপ্ত কাফেরদের দোসররা তাদের নিন্দিত পূর্ব পুরুষদের অনুসরণ করে চলছে। ‘‘এর জন্য একে অপরের সাথে প্রতিজ্ঞা, প্রতিশ্রুতির আদান-প্রদান করছে। তারা সীমালঙ্গনকারী জাতি।’’ [আজ-জারিয়াত : ৫৩]
পার্থক্য এখানে, তাদের সামনে ব্যক্তি রাসূল সা. ও তার সত্তা বিদ্যমান নেই। তাতে কি? তাদের কুপ্রবৃত্তি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিকস মিডিয়া সব কিছুই রাসূলের শানে ধৃষ্টতায় ব্যাপৃত রয়েছে। তারা রাসূলের গায়ে কলঙ্ক লেপনের জন্য এমন কিছু পদ্ধতি ও পন্থার আবিষ্কার করেছে, এর আগে ইবলিস শয়তানেরও যে সম্পর্কে কোন জ্ঞান ছিল না। তাদের পূর্বপুরুষ থেকেও যার প্রমাণ পাওয়া যায় না। কথা-কাজ ও ধৃষ্টতার সকল আকার-আকৃতি ও প্রকৃতি নিয়ে তারা আজ জমায়েত হয়েছে। যেমন জমায়েত হয়েছিল তাদের পথিকৃৎ লিডাররা।
কথার দ্বারা ধৃষ্টতার ধরন মূলত এক-ই। তবে, যুগে যুগে বাক্যের ব্যঞ্জনা ও ভাষার পরিবর্তন ঘটেছে বিষয় যদিও অভিন্ন।
কাজ ও কর্মের দ্বারা ধৃষ্টতার নমুনা অনেক। তাদের পূর্ব পুরুষরা কখনো রাসূল সা.-কে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছে, উটের ভূরি তার শরীরে নিক্ষেপ করেছে। তার পথে কাঁটা, আবর্জনা রেখে দিয়েছে। আরো কষ্ট দিয়েছে যুদ্ধের ময়দানে, আহত করে, দান্দান শহীদ করে, বিষ প্রয়োগ... ইত্যাদির মাধ্যমে। যা সরাসরি রাসূল সা. ভোগ করেছেন।
তবে মৃত্যু বরণ ও আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যাওয়ার কারণে রাসূল সা. আজ তাদের হাত ছাড়া। শয়তানের দোসরদের নাগালের বাইরে তার পবিত্র শরীর ও সত্তা। তাই, তাদের বিষাক্ত তীর নিক্ষিপ্ত হচ্ছে তার শ্রীযুক্ত কাজে, কর্মে ও আদর্শে। তাদের লিখলি অপবাদ রটনায় মুক্ত হস্ত। ধৃষ্টতার জন্য কার্টুন ইত্যাদি চিত্র অঙ্কনের ন্যায় সদা অসৎ ব্রতে লিপ্ত। যার অভিজ্ঞতা ছিল না তাদের গুরুদেরও।
পার্থক্য এখানে, তাদের সামনে ব্যক্তি রাসূল সা. ও তার সত্তা বিদ্যমান নেই। তাতে কি? তাদের কুপ্রবৃত্তি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিকস মিডিয়া সব কিছুই রাসূলের শানে ধৃষ্টতায় ব্যাপৃত রয়েছে। তারা রাসূলের গায়ে কলঙ্ক লেপনের জন্য এমন কিছু পদ্ধতি ও পন্থার আবিষ্কার করেছে, এর আগে ইবলিস শয়তানেরও যে সম্পর্কে কোন জ্ঞান ছিল না। তাদের পূর্বপুরুষ থেকেও যার প্রমাণ পাওয়া যায় না। কথা-কাজ ও ধৃষ্টতার সকল আকার-আকৃতি ও প্রকৃতি নিয়ে তারা আজ জমায়েত হয়েছে। যেমন জমায়েত হয়েছিল তাদের পথিকৃৎ লিডাররা।
কথার দ্বারা ধৃষ্টতার ধরন মূলত এক-ই। তবে, যুগে যুগে বাক্যের ব্যঞ্জনা ও ভাষার পরিবর্তন ঘটেছে বিষয় যদিও অভিন্ন।
কাজ ও কর্মের দ্বারা ধৃষ্টতার নমুনা অনেক। তাদের পূর্ব পুরুষরা কখনো রাসূল সা.-কে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছে, উটের ভূরি তার শরীরে নিক্ষেপ করেছে। তার পথে কাঁটা, আবর্জনা রেখে দিয়েছে। আরো কষ্ট দিয়েছে যুদ্ধের ময়দানে, আহত করে, দান্দান শহীদ করে, বিষ প্রয়োগ... ইত্যাদির মাধ্যমে। যা সরাসরি রাসূল সা. ভোগ করেছেন।
তবে মৃত্যু বরণ ও আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যাওয়ার কারণে রাসূল সা. আজ তাদের হাত ছাড়া। শয়তানের দোসরদের নাগালের বাইরে তার পবিত্র শরীর ও সত্তা। তাই, তাদের বিষাক্ত তীর নিক্ষিপ্ত হচ্ছে তার শ্রীযুক্ত কাজে, কর্মে ও আদর্শে। তাদের লিখলি অপবাদ রটনায় মুক্ত হস্ত। ধৃষ্টতার জন্য কার্টুন ইত্যাদি চিত্র অঙ্কনের ন্যায় সদা অসৎ ব্রতে লিপ্ত। যার অভিজ্ঞতা ছিল না তাদের গুরুদেরও।
আদি যুগে পর শ্রীতে কাতর, বিদ্বেষাপন্ন ও হিংসুক জাতি ইহুদি, নাসারাদের পক্ষ থেকে রাসূলের শানে ধৃষ্টতার নগ্ন চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। যেমন ইহুদি ইবনে আশরাফ থেকে; আরো প্রকাশ পেয়েছে মক্কার মুশরিক জাতি থেকে। আজও প্রকাশ পাচ্ছে, সে হিংসুটে ইহুদি, নাসারা এবং মুশরেকদের তরফ থেকে: অথচ তারা কেউ পুরোহিত, কেউ দ্বীনদার রাষ্ট্র পরিচালক, কেই ধর্ম নিরপেক্ষবাদী।
ইসলাম ধর্ম ত্যাগী, নাস্তিক-মুরতাদদের দ্বারাও এ কলঙ্কিত অধ্যায় কম চর্বিত হয়নি। আদি যুগে যেমন ছিল ইবনে খাতাল ও ইবনে আবু সারাহ অবশ্য পরের জন তওবা করে পুনরায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সমকালীন যুগে প্রকাশ পাচ্ছে সোমালিয়ার মুরদাত নারী ‘আয়ান হারসি’-দের পক্ষ থেকে। আরো প্রকাশ পাচ্ছে ‘ধর্ম ত্যাগী ইরানী মুরতাদদের সংস্থা’-র প্রতিষ্ঠাতা ইহসান জামের পক্ষ থেকে। রাসূল সা. সম্পর্কে যার বক্তব্য: ‘‘তিনি ছিলেন একজন ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি।’’ তাদের ন্যায় আরো অনেক ধর্ম নিরপেক্ষ গোষ্ঠী ও কমিউনিজমের সদস্য এ হীন কাজে লিপ্ত। যাদের কাজ ইশারা ইঙ্গিত অথবা প্রকাশ্যে-দম্ভে রাসূলের কুৎসা রটনা করা। যখন-ই তারা নিজেদেরকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে মনে করে, নিরাপদ মনে করে যে কোনো প্রতিশোধ ও প্রতিবাদ থেকে- তখন-ই তারা ধৃষ্টতা ও স্বেচ্ছাচারিতায় সীমা লঙ্ঘন করে।
ইসলাম ধর্ম ত্যাগী, নাস্তিক-মুরতাদদের দ্বারাও এ কলঙ্কিত অধ্যায় কম চর্বিত হয়নি। আদি যুগে যেমন ছিল ইবনে খাতাল ও ইবনে আবু সারাহ অবশ্য পরের জন তওবা করে পুনরায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সমকালীন যুগে প্রকাশ পাচ্ছে সোমালিয়ার মুরদাত নারী ‘আয়ান হারসি’-দের পক্ষ থেকে। আরো প্রকাশ পাচ্ছে ‘ধর্ম ত্যাগী ইরানী মুরতাদদের সংস্থা’-র প্রতিষ্ঠাতা ইহসান জামের পক্ষ থেকে। রাসূল সা. সম্পর্কে যার বক্তব্য: ‘‘তিনি ছিলেন একজন ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি।’’ তাদের ন্যায় আরো অনেক ধর্ম নিরপেক্ষ গোষ্ঠী ও কমিউনিজমের সদস্য এ হীন কাজে লিপ্ত। যাদের কাজ ইশারা ইঙ্গিত অথবা প্রকাশ্যে-দম্ভে রাসূলের কুৎসা রটনা করা। যখন-ই তারা নিজেদেরকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে মনে করে, নিরাপদ মনে করে যে কোনো প্রতিশোধ ও প্রতিবাদ থেকে- তখন-ই তারা ধৃষ্টতা ও স্বেচ্ছাচারিতায় সীমা লঙ্ঘন করে।
এ ধরনের দৃষ্টান্ত অনেক। তবে, আমার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য কয়েকটি সুস্পষ্ট উদাহরণ উল্লেখ করব। অর্থাৎ প্রথম পর্যায়ে মিডিয়া যন্ত্রের কয়েকটি প্রোপাগান্ডা আর দ্বিতীয় পর্যায়ে ধর্মীয় জগতের কয়েকজন প্রসিদ্ধ ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের কথা। যারা পাশ্চাত্যের অনেক রাষ্ট্র প্রধানেরও প্রিয় পাত্র, আদর্শ নমুনা :
কতিপয় ওয়েব সাইট এবং আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্য থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘হিউস্টন বোর্স’-এর প্রচারকৃত সংবাদে বলা হয়েছে, আমেরিকার একটি সিনেমা হলে ‘নবি মুহাম্মদের যৌন জীবন’ নামে একটি উন্মুক্ত ছবি মুক্তি পাচ্ছে।
টেক্সাস অঙ্গ রাজ্যের মুসলমানদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ সত্ত্বেও সে দিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ। অধিকন্তু তারা মুসলমানদের দাবি যে কোনো মূল্যে হলেও প্রত্যাখ্যান করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা পুলিশ প্রশাসনের নিকট প্রতিবাদকারীদের দমন করার জন্য সাহায্য চেয়েছে। তা সত্ত্বে ক্ষমতাধর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ করার জন্য।
সাম্প্রতিক কালেরও কিছু আগের আরেকটি ঘটনা এখানে উল্লেখযোগ্য। ইহুদিবাদীদের সংস্থা ‘বনী বুরাইসে’ [একটি ইহুদিবাদী সংস্থা, যার সম্পর্কে গুপ্তচর বৃদ্ধির অপবাদ রয়েছে।]-র প্রধান কার্যালয় এবং আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত বড় দু’টি প্রাসাদের উপর ১৯৭৭ ইংরেজি সনে আক্রমণের ঘটনা। যার প্রেক্ষিতে একটি ইসলামি সংস্থার দাবি ছিল, জরিমানা বাবদ ৭৫০ ডলার আক্কেল সেলামি দেয়া, ‘মুহাম্মদ রাসূল্লাহ’ নামক সিনেমা বন্ধ করা, এবং যারা মালকুম এক্সকে [একজন আমেরিকান মুসলমান। প্রথমত সে একটি ইসলামি বাতেল ফেরকার সাথে সম্পৃক্ত ছিল, যে ফেরকাটি মূলত ইসলাম ও তার মৌলিকত্ব নষ্ট করার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরিবর্তিতে আল্লাহ তাকে সুযোগ করে দেন আরব, মিসর ও সুদানের ওলামাদের সাথে ঘনিষ্ট হওয়ার, যার সুবাদে সঠিক পথে ফিরে আসে সে এবং ‘আহলে সুন্নত অল-জামাত’ নাম দিয়ে একটি দলের গোড়া পত্তন করে। আরাম্ভ করে দেন নব উদ্দোমে, সঠিক পদ্ধতিতে সত্য দ্বীনের দাওয়াত। তার হাতে অনেক মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে। আগের মতাদর্শে বিশ্বাসী অনেক লোকও ফিরে আসে তার এ নতুন দলে। ১৮ শাওয়াল ১৩৮১ হিজরিতে নিইউওয়ার্ক ইউনিভার্সিটির একটি কনফারেন্সে তাকে আমন্ত্রন জানানো হয়। যখন সে মঞ্চে উপবিষ্ট হয়ে বক্তৃতা আরম্ভ করল, হটাৎ হলের মাঝখানে একটি পরিকল্পিত ঝগড়ার সুত্রপাত করা হয়। উপস্থিত সকল মানুষের দৃষ্টি যখন সে দিকে, সুযোগ বুঝে প্রথম সারিতে উপস্থিত তিনজন লোক আঠারটি গুলি বর্ষন করে তাকে সই করে। আর সেখানেই তিনি শহীদ হন।] হত্যা করেছে তাদের সোপর্দ করা। যার প্রসিদ্ধ নাম আলহাজ মালেক সাবাজ। তিনি একজন সুপ্রসিদ্ধ ইসলাম প্রচারক ও দায়ী ছিলেন।
মুদ্দা কথা : রাসূলের শানে ধৃষ্টতার উদাহরণ নতুন কিছু নয়, বহু পুরোনো। বিশ্ববাসী এর ফলাফলও স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছে। তবে, কখনো উদ্যমী হয় কখনো নিস্পৃহ থাকে।
এর অন্তর্ভুক্ত আরো হচ্ছে অধুনা ও প্রাচীন পশ্চিমাদের হলুদ সাংবাদিকতা। তাদের অভ্যাস ইসলাম ও মুসলমানদের বাস্তব চিত্র ও সঠিক ইতিহাস বিক্রীত করে এবং মোক্ষম সময়টি বাচাই করে কৌশলগত যুদ্ধের নামে বার বার প্রচার করা।
এটাও নতুন কোনো বিষয় নয়। ১৯৮৫ ইংরেজি সনে ফ্রান্সের শিল্প বিপ্লবে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক ‘বারনার বেফু’ বহুল প্রসিদ্ধ একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি পর্বের শিরোনাম দিয়ে ছিল, ‘আবুস্ত্তরুফ’ আরবিতে যার নাম ‘ফাসেলা’ বাংলায় যাকে ‘পার্থক্য সৃষ্টিকারী’ বলা যায়। যার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল, ‘কুরআন এবং সন্ত্রাস’। সেখানে সে মুহাম্মদ আরকুন, আলাল সি নাসের এবং জেল কিবল ও অন্যান্যদের আহবান করেছে। অথচ ‘কুরআন এবং সন্ত্রাস’ এ শিরোনাম নির্ধারণকারী ব্যক্তি উপস্থাপনার শুরুতেই দ্ব্যর্থহীনভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, ‘আমি কুরআন পড়েনি’ তবে, কুরআন যে সন্ত্রাসবাদের ইন্ধন দেয়, সে প্রমাণ আমি কুরআন না পড়েও বের করতে সক্ষম!
অধুনা কতক লেখক, সাংবাদিকদের দেখা যায়, তারা চর্বিত চর্বণে অভ্যস্ত। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ডেনমার্ক সাংবাদিক ও সুদান সাংবাদিকদের নগ্ন ধৃষ্টতা।
সাম্প্রতিককালের মুরতাদদের ভেতর সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ‘আয়ান হারসি’ এ ব্যাপারে আরো নগ্ন ভূমিকা গ্রহণ করেছে। সে বলেছে, ‘পশ্চাত্ব মানদন্ডে নবি মুহাম্মদ বিক্রীত মানসিকতা সম্পন্ন ও স্বেচ্ছাচারী একজন লোক।’ এর স্বপক্ষে সে প্রমাণ পেশ করেছে, যে নবি মুহাম্মদ মাত্র নয় বৎসরের একটি মেয়ে বিয়ে করেছেন। আয়ান হারসির বিপরীতে বহু ইসলামি সংঘটন, অনেক মুসলমান নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচার করেছে যে, এটা আয়ান হারসির বৈষম্যমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। তবে, এ নিয়ে তারা কোর্ট পর্যন্ত যায়নি। কারণ, তারা জানতো ‘এটা হলেন্ডের মুসলিম সমাজে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তার এ প্রোপাগান্ডা হলেন্ডের মুসলমানদের স্বার্থে কোনো আঘাত হানবে না। অন্যদের ন্যায় তাদের অধিকার গুলোও সংখ্যালঘু হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে।’ কাফস আল-আজারা নামক প্রকাশনা তার বইটি প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে সে তার নিজের ইচ্ছে ব্যক্ত করে বলেছে : ব্রাউনের জীবনের নির্মিত ছবির আদলে নবি মুহাম্মদের জীবনের উপরও একটি ছবি নির্মাণ করবে। যেখানে নিজের মতো করে মুহাম্মদের বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তুলবে এবং তার ব্যাখ্যা দেবে। সে এও বলেছে, সেখানে একজন লোক মুহাম্মদের আকৃতি ধারণ করে তার সং-গ্রামী জীবনের উপর অভিনয় করবে। সেখানে সে আরো এমন এমন অনেক জিনিস তুলে ধরবে, মুসলমান কিংবা ইসলামি সমাজ যা জনসমক্ষে তুলে ধরাকে কিংবা প্রকাশ পাওয়াকে পছন্দ করে না। উদাহরণ স্বরূপ সে নিজ পুত্রের স্ত্রীর সাথে রাসূল সা. এর প্রেমের কথা উল্লেখ করেছে। এটা কীভাবে সম্ভব! তিনি কয়েক দিন হেরা গুহায় গোপন ছিলেন, আর সেখান থেকে এমন যাদুকাটি নিয়ে ফিরে এলেন, যার দ্বারা নিজের পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা বৈধ হয়ে গেল। ডেনমার্কে কার্টুন একে রাসূলকে নিয়ে ব্যঙ্গ্য চিত্র প্রকাশ করার পর-মুহূর্তে ২০০৫ সালের ২৩ নভেম্বরে ‘সাবফো’ পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সে বলেছে, মুসলমানগণ ধর্মীয় ব্যাপারে গোড়াবাদী হওয়ার সাথে সাথে তাদের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে কুরাআনকে পবিত্র জ্ঞান করা। সেখানে সে বলেছে, ‘‘ইদানীংকালে আমি কতক আরব সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হয়েছি, তখন আমি আমার ব্যাগ থেকে একটি কুরান বের করে মাটিতে ছুঁড়ে মারি। বেপর্দা এক তুর্কি মহিলা উঠে দাঁড়ায় - যার আদর্শ হচ্ছে ধর্ম নিরপেক্ষবাদ- এবং আমাকে বলে, আমি অনুরোধ করছি, আপনি কুরানটি উঠিয়ে ব্যাগের ভেতর রাখেন। আমি তাকে এ বলে উত্তর দিলাম, এটা আমার কুরান, আমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি এর সাথে। তবে, এখন কুরআনকে পবিত্র বলার মুখ তোমার নেই। কারণ, তোমাদের নিকট কুরআনের সবকিছু (গেলাফ, লেখা ও কালি) পবিত্র।’’ তোমার সামনে এক্ষুনি তা আমি কদর্য করে দিয়েছি।
এ মহিলা হলেন্ডের সে লোকের সাথেও অংশ গ্রহণ করেছে যে, ইসলাম সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও বানোয়াট ছবি তৈরি করেছে। যে ছবির নাম দিয়েছে ‘বিনয়ী’। যার ফলে ‘ছবি প্রকাশকারী গুপ্তহত্যার শিকার হয়। অর্থাৎ মরোক্কের একজন মুসলিম যুবক তাকে হত্যার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে এবং হত্যা করে কৃতকার্য হয়।
টেক্সাস অঙ্গ রাজ্যের মুসলমানদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ সত্ত্বেও সে দিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ। অধিকন্তু তারা মুসলমানদের দাবি যে কোনো মূল্যে হলেও প্রত্যাখ্যান করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা পুলিশ প্রশাসনের নিকট প্রতিবাদকারীদের দমন করার জন্য সাহায্য চেয়েছে। তা সত্ত্বে ক্ষমতাধর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ করার জন্য।
সাম্প্রতিক কালেরও কিছু আগের আরেকটি ঘটনা এখানে উল্লেখযোগ্য। ইহুদিবাদীদের সংস্থা ‘বনী বুরাইসে’ [একটি ইহুদিবাদী সংস্থা, যার সম্পর্কে গুপ্তচর বৃদ্ধির অপবাদ রয়েছে।]-র প্রধান কার্যালয় এবং আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত বড় দু’টি প্রাসাদের উপর ১৯৭৭ ইংরেজি সনে আক্রমণের ঘটনা। যার প্রেক্ষিতে একটি ইসলামি সংস্থার দাবি ছিল, জরিমানা বাবদ ৭৫০ ডলার আক্কেল সেলামি দেয়া, ‘মুহাম্মদ রাসূল্লাহ’ নামক সিনেমা বন্ধ করা, এবং যারা মালকুম এক্সকে [একজন আমেরিকান মুসলমান। প্রথমত সে একটি ইসলামি বাতেল ফেরকার সাথে সম্পৃক্ত ছিল, যে ফেরকাটি মূলত ইসলাম ও তার মৌলিকত্ব নষ্ট করার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরিবর্তিতে আল্লাহ তাকে সুযোগ করে দেন আরব, মিসর ও সুদানের ওলামাদের সাথে ঘনিষ্ট হওয়ার, যার সুবাদে সঠিক পথে ফিরে আসে সে এবং ‘আহলে সুন্নত অল-জামাত’ নাম দিয়ে একটি দলের গোড়া পত্তন করে। আরাম্ভ করে দেন নব উদ্দোমে, সঠিক পদ্ধতিতে সত্য দ্বীনের দাওয়াত। তার হাতে অনেক মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে। আগের মতাদর্শে বিশ্বাসী অনেক লোকও ফিরে আসে তার এ নতুন দলে। ১৮ শাওয়াল ১৩৮১ হিজরিতে নিইউওয়ার্ক ইউনিভার্সিটির একটি কনফারেন্সে তাকে আমন্ত্রন জানানো হয়। যখন সে মঞ্চে উপবিষ্ট হয়ে বক্তৃতা আরম্ভ করল, হটাৎ হলের মাঝখানে একটি পরিকল্পিত ঝগড়ার সুত্রপাত করা হয়। উপস্থিত সকল মানুষের দৃষ্টি যখন সে দিকে, সুযোগ বুঝে প্রথম সারিতে উপস্থিত তিনজন লোক আঠারটি গুলি বর্ষন করে তাকে সই করে। আর সেখানেই তিনি শহীদ হন।] হত্যা করেছে তাদের সোপর্দ করা। যার প্রসিদ্ধ নাম আলহাজ মালেক সাবাজ। তিনি একজন সুপ্রসিদ্ধ ইসলাম প্রচারক ও দায়ী ছিলেন।
মুদ্দা কথা : রাসূলের শানে ধৃষ্টতার উদাহরণ নতুন কিছু নয়, বহু পুরোনো। বিশ্ববাসী এর ফলাফলও স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছে। তবে, কখনো উদ্যমী হয় কখনো নিস্পৃহ থাকে।
এর অন্তর্ভুক্ত আরো হচ্ছে অধুনা ও প্রাচীন পশ্চিমাদের হলুদ সাংবাদিকতা। তাদের অভ্যাস ইসলাম ও মুসলমানদের বাস্তব চিত্র ও সঠিক ইতিহাস বিক্রীত করে এবং মোক্ষম সময়টি বাচাই করে কৌশলগত যুদ্ধের নামে বার বার প্রচার করা।
এটাও নতুন কোনো বিষয় নয়। ১৯৮৫ ইংরেজি সনে ফ্রান্সের শিল্প বিপ্লবে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক ‘বারনার বেফু’ বহুল প্রসিদ্ধ একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি পর্বের শিরোনাম দিয়ে ছিল, ‘আবুস্ত্তরুফ’ আরবিতে যার নাম ‘ফাসেলা’ বাংলায় যাকে ‘পার্থক্য সৃষ্টিকারী’ বলা যায়। যার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল, ‘কুরআন এবং সন্ত্রাস’। সেখানে সে মুহাম্মদ আরকুন, আলাল সি নাসের এবং জেল কিবল ও অন্যান্যদের আহবান করেছে। অথচ ‘কুরআন এবং সন্ত্রাস’ এ শিরোনাম নির্ধারণকারী ব্যক্তি উপস্থাপনার শুরুতেই দ্ব্যর্থহীনভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, ‘আমি কুরআন পড়েনি’ তবে, কুরআন যে সন্ত্রাসবাদের ইন্ধন দেয়, সে প্রমাণ আমি কুরআন না পড়েও বের করতে সক্ষম!
অধুনা কতক লেখক, সাংবাদিকদের দেখা যায়, তারা চর্বিত চর্বণে অভ্যস্ত। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ডেনমার্ক সাংবাদিক ও সুদান সাংবাদিকদের নগ্ন ধৃষ্টতা।
সাম্প্রতিককালের মুরতাদদের ভেতর সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ‘আয়ান হারসি’ এ ব্যাপারে আরো নগ্ন ভূমিকা গ্রহণ করেছে। সে বলেছে, ‘পশ্চাত্ব মানদন্ডে নবি মুহাম্মদ বিক্রীত মানসিকতা সম্পন্ন ও স্বেচ্ছাচারী একজন লোক।’ এর স্বপক্ষে সে প্রমাণ পেশ করেছে, যে নবি মুহাম্মদ মাত্র নয় বৎসরের একটি মেয়ে বিয়ে করেছেন। আয়ান হারসির বিপরীতে বহু ইসলামি সংঘটন, অনেক মুসলমান নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচার করেছে যে, এটা আয়ান হারসির বৈষম্যমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। তবে, এ নিয়ে তারা কোর্ট পর্যন্ত যায়নি। কারণ, তারা জানতো ‘এটা হলেন্ডের মুসলিম সমাজে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তার এ প্রোপাগান্ডা হলেন্ডের মুসলমানদের স্বার্থে কোনো আঘাত হানবে না। অন্যদের ন্যায় তাদের অধিকার গুলোও সংখ্যালঘু হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে।’ কাফস আল-আজারা নামক প্রকাশনা তার বইটি প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে সে তার নিজের ইচ্ছে ব্যক্ত করে বলেছে : ব্রাউনের জীবনের নির্মিত ছবির আদলে নবি মুহাম্মদের জীবনের উপরও একটি ছবি নির্মাণ করবে। যেখানে নিজের মতো করে মুহাম্মদের বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তুলবে এবং তার ব্যাখ্যা দেবে। সে এও বলেছে, সেখানে একজন লোক মুহাম্মদের আকৃতি ধারণ করে তার সং-গ্রামী জীবনের উপর অভিনয় করবে। সেখানে সে আরো এমন এমন অনেক জিনিস তুলে ধরবে, মুসলমান কিংবা ইসলামি সমাজ যা জনসমক্ষে তুলে ধরাকে কিংবা প্রকাশ পাওয়াকে পছন্দ করে না। উদাহরণ স্বরূপ সে নিজ পুত্রের স্ত্রীর সাথে রাসূল সা. এর প্রেমের কথা উল্লেখ করেছে। এটা কীভাবে সম্ভব! তিনি কয়েক দিন হেরা গুহায় গোপন ছিলেন, আর সেখান থেকে এমন যাদুকাটি নিয়ে ফিরে এলেন, যার দ্বারা নিজের পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা বৈধ হয়ে গেল। ডেনমার্কে কার্টুন একে রাসূলকে নিয়ে ব্যঙ্গ্য চিত্র প্রকাশ করার পর-মুহূর্তে ২০০৫ সালের ২৩ নভেম্বরে ‘সাবফো’ পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সে বলেছে, মুসলমানগণ ধর্মীয় ব্যাপারে গোড়াবাদী হওয়ার সাথে সাথে তাদের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে কুরাআনকে পবিত্র জ্ঞান করা। সেখানে সে বলেছে, ‘‘ইদানীংকালে আমি কতক আরব সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হয়েছি, তখন আমি আমার ব্যাগ থেকে একটি কুরান বের করে মাটিতে ছুঁড়ে মারি। বেপর্দা এক তুর্কি মহিলা উঠে দাঁড়ায় - যার আদর্শ হচ্ছে ধর্ম নিরপেক্ষবাদ- এবং আমাকে বলে, আমি অনুরোধ করছি, আপনি কুরানটি উঠিয়ে ব্যাগের ভেতর রাখেন। আমি তাকে এ বলে উত্তর দিলাম, এটা আমার কুরান, আমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি এর সাথে। তবে, এখন কুরআনকে পবিত্র বলার মুখ তোমার নেই। কারণ, তোমাদের নিকট কুরআনের সবকিছু (গেলাফ, লেখা ও কালি) পবিত্র।’’ তোমার সামনে এক্ষুনি তা আমি কদর্য করে দিয়েছি।
এ মহিলা হলেন্ডের সে লোকের সাথেও অংশ গ্রহণ করেছে যে, ইসলাম সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও বানোয়াট ছবি তৈরি করেছে। যে ছবির নাম দিয়েছে ‘বিনয়ী’। যার ফলে ‘ছবি প্রকাশকারী গুপ্তহত্যার শিকার হয়। অর্থাৎ মরোক্কের একজন মুসলিম যুবক তাকে হত্যার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে এবং হত্যা করে কৃতকার্য হয়।
অনেক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের পক্ষ থেকেও ইসলামের উপর আঘাত এসেছে। যেকোনো চিন্তাশীল ব্যক্তিই বুঝতে সক্ষম যে, এটা কোনো মূর্খ কিংবা ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিদের তরফ থেকে হয়নি। বরং এমন ব্যক্তিদের তরফ থেকে হয়েছে, যাদের ধর্ম সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। আরো বলতে হয়, ইসলামের উপর এ আঘাত নাসারাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের নিকট থেকেই এসেছে। যারা ক্যাথলিক কিংবা প্রোটেস্টান্ট উভয় জাতির-ই লিডার অথবা ধর্মীয় গুরু।
ক্যাথলিক গুরুর নিকট অতীতের কথাই ধরা যাক। যে কথা বলে সে, ক্ষমা প্রার্থনা করতেও অস্বীকার করেছে। অধিকন্তু সে মুসলমানদের ভুল বুঝা-বুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। কারণ, এর দ্বারা অনেক খ্রিস্টান সম্প্রদায় মুসলমানদের পক্ষ থেকে তিরস্কারের পাত্র হয়েছে।
একজন খ্রিস্টান অগ্র পথিক ও ধর্মীয় লিডার যখন এমন সব বাক্য ভর মজলিসে বলতে পারে, তখন তার চেয়ে ছোট যারা আছে, তাদের আর কি বলা? যাদের কথার এ তোটা গুরুত্ব কিংবা এ তোটা মূল্য নেই।
এ ছাড়াও তার আরো এমন কিছু বাক্য আছে, যার মাধ্যমে সে ইসলামের উপর কটাক্ষ করেছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, অনেকে বলে বেড়ায় এ লোক শুধু বর্ণনাকারী। মনে হয় এর দ্বারা তার উপর থেকে সে অপরাধ হটিয়ে দিতে চায়। কাজি আয়াজ রহ. বলেছেন, ‘‘যদি এই বর্ণনাকারীর ব্যাপারে এ অভিযোগ উঠে যে, সে নিজে বানিয়ে অন্যদের ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছে, অথবা এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, অথবা সে এটাকে খুব ভালো মনে করছে, অথবা এতে সে চরমভাবে আত্মনিয়োগ করেছে, অথবা একে সে সাধারণ জ্ঞান করছে, অথবা সে এমন জিনিস গুলো সংরক্ষণ করে ও এমন সব জিনিস সে অনুসন্ধান করে এবং রসুলের কুৎসা ও গাল-মন্দ সমৃদ্ধ কবিতা আবৃতি করে বর্ণনা করে; এ ধরনের ব্যক্তির হুকুম স্বয়ং গাল-মন্দ করার ব্যক্তির ন্যায়। তার কথাই গ্রহণ করা হবে, অন্যের দিকে নিসবত করার কোনো ওজুহাত শোনা হবে না। তাকে দ্রুত হত্যা করা হবে এবং তাকে জাহান্নামে পাঠানোর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ [আশশিফা : ২/২০৯] এ জন্যই রাসূল সা. ইবনে খাতালের দু’জন বাদিকে হত্যা করেছেন। তারা রসুলের শানে ধৃষ্টতা মূলক কবিতা আবৃতি করত। অথচ তারা তা বানায়নি, বানিয়েছে অন্যরা। কিন্তু তারা এমনভাবে আবৃতি করত, যাতে তাদের সম্মতি ও সাড়া ছিল।
প্রোটেস্টান্ট খ্রিস্টানদের নমুনা হচ্ছে; আজ থেকে চার বছর আগে প্রায় ১৪২৩ হিজরিতে আমেরিকায় পুরোহিতরা সমবেতভাবে আমাদের রাসূল ও তার পবিত্র সত্তায় কলঙ্ক লেপনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে ছিল।
তাদের অন্যতম জেরি ফালওয়েল- এ বৎসর রবিউল আখেরে সে মারা গেছে- যে ‘হারমাজদুন যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া এখনই জরুরি’ নামে একটি বই লিখেছে। সে এ কিতাবের শুরুতে আমাদের রসুলের বিক্রীত চরিত্র উল্লেখ করেছে।
তার কথা উল্লেখ করার আগে আরেকটি কথা বলে নেই যে, বুশ প্রশাসন গত ১৬ অক্টোবর ২০০২ সনে পুরোহিত বাত রুবাস্ত্তন ও জেরি ফালওয়েলকে পুরস্কৃত করেছে। যেহেতু তারা উভয় রক্ষণশীল ডান পন্থী ও রিপাবলিকান গ্রুপকে সহায়তা করেছে।
এ অপোগন্ড বলেছে, ‘‘আমার গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, ঈসা ভালোবাসা ও মহববতের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তদ্রুপ একাজটি মুসাও সম্পাদন করেছে, কিন্তু মুহাম্মদ করেছে এদের বিপরীত কাজটি।’’ সে ৬ অক্টোবর ২০০২ সনে প্রকাশিত ৬০ মিনিটের একটি প্রোগ্রামে বলেছে, ‘‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মুহাম্মদ একজন সন্ত্রাসী ছিল। আমি মুসলমান-অমুসলমানদের লিখিত অনেক কিছুই পড়েছি, যার দ্বারা প্রতীয়মান মুহাম্মদ সহিংসতা প্রিয় ছিল।’’ যুদ্ধবাজ এ লোকটি সন্ত্রাসের সংজ্ঞা দিচ্ছে! আমাদের বোধ হচ্ছে না সে মুসলমানদের লিখিত কি পড়েছে? সে কি মুহাম্মদের ব্যাপারে এ আয়াতটি পড়েছে?- ‘‘আমি আপনাকে জগৎবাসীর জন্য শুধু রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’’ [আম্বিয়া : ১০৭]
আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, রহমতের নবী মুহাম্মদ সা. এর উপর অপবাদ আরোপকারী এ পাদরীকে আমেরিকার ডানপন্থী অঙ্গরাজ্যে ইহুদীবাদী রাষ্ট্রের হিতাকাঙ্ক্ষী ও সাহায্যকারী জ্ঞান করা হয়। এ পাদরী এমনও বলেছে যে, ‘‘আমাদের সাথে সত্তুর মিলিয়ন জনশক্তি বিদ্যমান আছে। যদি এ সরকার ইসরালের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে অথবা তার অর্থনৈতিক স্বার্থ কিংবা তার অস্তিত্বের উপর আঘাত হানে, তবে পুরো খ্রিস্ট জগতে এ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সৃষ্টি হবে।’’ ১৪ এপ্রিল ‘‘ইউ, এস, এ টুডে অফ আমেরিকা’’ ফালওয়েলের একটি প্রবন্ধ ছাপিয়েছে। যাতে ফালওয়েল ডেমোক্রেডিড প্রশাসনের প্রধান বিল ক্লিন্টনের কঠোর সমালোচনা করেছে। কারণ, তার ধারণা ক্লিন্টন প্রশাসন আমেরিকার শান্তি যুক্তি মানতে ইসরাইলের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। সে তার প্রবন্ধে বলেছে : ‘‘যারা সুনিশ্চিতভাবে জ্ঞান করে যে, ইবরাহিমের ওয়াদা ইসরাইলের ভূ-খন্ডের ব্যাপারেই, তাদেরকে আমেরিকার এ চাপ সৃষ্টি গভীরভাবে মর্মাহত করে।’’ এখানে আমরা ইংরেজদের ঈমানেরও ইঙ্গিত পাই। তাদের বিশ্বাস আল্লাহ তাআলা ইবরাহিমের সাথে ওয়াদা করেছেন যে, তিনি ইসরাইল ভূ-খন্ড ইহুদিদের ফিরিয়ে দেবেন।
লক্ষ্য করুন : যে ইহুদিরা বৃদ্ধ লোকদের হত্যা করছে, অন্যের জমি জবর দখল করছে, গাছ-পালা ও পশু-জানোয়ার ধ্বংস করছে- তাদের সে প্রশংসা করে আর যে নবী রহমত, বিশ্ব জাহানের নেয়ামত ও গৌরব, সে নবীর উপর কলঙ্কের তীর নিক্ষেপ করছে?
এ কাফেরের উক্তি তার পূর্বের কাফেরের উক্তিকেও হারমানায়। ইরশাদ হচ্ছে : ‘‘অতঃপর মুসা যখন উভয়ে শত্রুকে শায়েস্তা করতে চাইলেন, তখন সে বলল, গত-কাল্য তুমি যেমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ছিলে, সেরকম আমাকেও হত্যা করতে চাও? তুমি দুনিয়াতে স্বৈরাচারী হতে চাচ্ছ, সন্ধি স্থাপন কারী হতে চাও না।’’ [সুরায়ে কাসাস : ১৯] এটা নবী মুসার জীবনে ঘটে যাওয়া নবুওয়ত প্রাপ্তির আগের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যেখানে সামান্য ভুলও রয়েছে। কিন্তু ফালওয়েলের এ উক্তি তো অনেকটা ফেরাউনের ঔদ্ধত্যের মত! সে বলেছে : ‘‘আমাকে সময় দাও, আমি মুসাকে হত্যা করে নেই, পারলে সে তার প্রভুকে ডাকুক। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে তোমাদের ধর্ম বিক্রীত করে দেবে অথবা পৃথিবীর বুকে অশান্তির ঝড় বইয়ে দেবে।’’ [গাফের / মোমেন : ২৬] ফেরআউনের অবাধ্য জাতি বলেছে : ‘‘তুমি কি মুসা ও তার সম্প্রদায়কে এমনিই ছেড়ে দেবে?- যে তারা ভূ-পৃষ্টে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে, পরিত্যাগ করবে তোমাকে ও তোমার প্রভুকে।’’ [আরাফ : ১২৭] ইহুদিদের কিতাব তালমুদের ভেতর ইয়াসু (নবী মুসা) সম্পর্কে তারা বলা হয়েছে: ‘‘ইয়াসু বনি ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে, ধ্বংস করে দিয়েছে তাদের।’’ কোথায় পার্থক্য ফেরআউন, তার সম্প্রদায় এবং ইহুদি জাতির মাঝে?
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের আরেকটি উদাহরণ : পাদরী ‘পাট রুবাটসুন’ বুশকে সমর্থ দান কারীর একজন। ২০০০ মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বুশের বিজয়ী হওয়ার ভেতর তার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বুশকে সমর্থনকারী খ্রিস্টান ডানপন্থী জোটের নেতৃত্ব তার হাতেই ছিল। তার সম্পর্কে বুশের প্রতিদ্বন্দ্বী ‘জোনমাকি’ অভিযোগ করে বলেছে, ‘‘বুশ তাকে বড় ধরনের অর্থ উপঢৌকন দিয়েছে।’’ সে জেরি ফালওয়েলের সাথে তাকে সম্মানিত করার কথাও উল্লেখ করেছে। ২০০০ মার্চে বুশকে মনোনয়ন দেয়ার রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনটি উদ্বোধন করা হয় ‘‘নবী ঈসার উপর লিখিত তারানার’’ মাধ্যমে। সেখানে বুশ ঘোষণা করেছে, আমি খ্রিস্টান ডানপন্থীদের একজন।
‘পাট রুবাটসুন’ ‘হ্যানিটি কলামস’ নামক সভায় বলেছে যা ‘ফক্স নিউজ’ ওয়েব সাইটে প্রচার করা হয়েছে ‘‘আমি বলছি, এ কুরআন ইহুদিদের আকীদা-বিশ্বাস থেকে চুরি করা কতগুলো জিনিসের সমন্বয়। মুহাম্মদ এর ভেতর বিভিন্ন পরিবর্তন করেছে এবং এর মাধ্যমে সে মদিনাতে ইহুদি খ্রিস্টানদের মাঝে নিধন-যজ্ঞ চালিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি : ‘‘এ ব্যক্তি (মুহাম্মদ) যুদ্ধবাজ ও রক্তপিপাসু ছিল।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘সন্ত্রাসবাদ প্রায় তার নেশায় পরিণত হয়ে ছিল। শুধু কয়েকজন কট্টরপন্থীদের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তুমি একটি কুরআন ক্রয় করে নিজে পড়ে দেখ, কুরআন তোমাকে বিবাদ-সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার শিক্ষা দিবে।’’
তাকে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু, পুনরায় সে তার ইদানীংকালের প্রকাশনা ‘দি নেম’ নামক গ্রন্থের ৭১ নং পৃষ্ঠায় বলেছে, ‘‘একজন যুদ্ধবাজ ব্যক্তি ইসলামের ভিত্তি রেখেছে, যার নাম মুহাম্মদ। তার শিক্ষার ভেতর ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন কৌশল বিদ্যমান রয়েছে। যেমন প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সামরিক অভিযান পরিচালনা কিংবা সহিংসতা ইত্যাদির সৃষ্টি করা।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘ইসলাম খৃষ্টবাদের বিপরীত, তার মূল শিক্ষার ভেতর রয়েছে অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে বিদ্বেষ খেদ ও চরমপন্থা।’’ রাসূল সা. সম্পর্কে তার বাক্য লক্ষ্য করুন, ‘‘সে তার অনুসারীগণকে মুশরিকদের হত্যা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করত। সে চরমপন্থার সর্বশেষ উদাহরণ ছিল। সে লুলোপ, ডাকাত। তার দাওয়াতে রয়েছে ধোঁকা ও প্রতারণা। কুরানের ৮০%ভাগ নকল করা হয়েছে ইহুদি-নাসারাদের ধর্ম গ্রন্থ থেকে। অতঃপর ইহুদি খ্রিস্টানদের হত্যার জন্য এগুলোতে মন মত পরিবর্তন এনেছে।’’
তাদের এ বক্তব্যের সাথে ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র বক্তব্যের সাথেও মিলিয়ে নেই। যেমন ‘তালমুদে’ আছে, ‘‘খ্রিস্টান হলো সে ব্যক্তি যে মিথ্যা শিক্ষার অনুসরণ করে। তাদের যে ধর্মীয় ব্যক্তি রবিবার দিন গির্জায় বসে এবাদতের আহবান করে, সেই এ মিথ্যার ফুল-ঝুড়ি তৈরি করে।’’ ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর আরো আছে, ‘‘ঈসা মসিহ ছিল, যাদুকর ও মূর্তিপূজক।’’ তারা আরো বলেছে, ‘‘খ্রিস্টান ‘ঈয়াসু’ জাহান্নামের গভীর প্রকোষ্ঠে বিদ্যমান।’’ ‘‘ঈয়াসু’ বনী ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে ও ধ্বংস করেছে।’’ আল্লাহ সত্যিই বলেছেন : ‘‘এরকমই আপনার পূর্বে যত নবি-রাসূল এসেছেন, তাদের সকলকেই তারা যাদুকর অথবা পাগল বলে আখ্যায়িত করেছে। অধিকন্তু তারা এ জন্য একে অপরকে উদ্বুদ্ধ করত। তারা সীমালঙ্ঘণকারী সম্প্রদায়।’’ [জারিয়াত : ৫২-৫৩] ‘‘তাদের পরস্পর অন্তরসমূহ একই ধরনের।’’ [আল-বাকারা : ১১৮]
পাটরুবাটসুন সে মজলিসে তার পূর্বসুরীদের মন্থনকৃত আরো অনেক মিথ্যাচার, প্রলাপের পুনরুক্তি করেছে। যার কতক মিথ্যাচারের উত্তর পবিত্র কুরআনেও বিধৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় ডান হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লেখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।’’ [আল-আনকাবুত : ৪৮] ‘‘আমি নিশ্চিতভাবে জানি, তারা বলে, তাকে তো শিক্ষা দেয় জনৈক ব্যক্তি। তারা যার প্রতি ইঙ্গিত করছে, তার ভাষা হচ্ছে অনারব, আর এটা হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবি ভাষা।’’ [নাহাল : ১০৩]
আরো একবার তাদের মিথ্যাচার লক্ষ্য করুন। যে সকল কাফের সম্প্রদায় অনাচার সৃষ্টি করেছে, যারা মক্কা-মদিনায় মুসলমানদের সাথে নির্মম ব্যবহার করেছে, চুক্তি ভঙ্গ করেছে, ওয়াদার খেলাপ করেছে, বার বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তার অনেক অনুসারীদের হত্যা করেছে, সে কাফেরদের বানাচ্ছে মজলুম, উৎসর্গিত। আর নির্দোষ মুসলমানদের বানাচ্ছে অনাচার সৃষ্টিকারী!
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিদের তৃতীয় আরেকটি উদাহরণ। জেরী ফায়েঞ্জ : দক্ষিণ মামাদানি গির্জার বাৎসরিক জলসার সাবেক চেয়ারম্যান। বুশ যার ভূয়েশী প্রশংসায় বলেছে : সে আমাদের ধর্ম সম্পর্কে স্পষ্টভাষী। বুশ তাকে প্রথম সারির ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনোনীত করেছে। এ ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলে : ‘‘...তিনি ছিলেন অরুচির মানুষ। বাচ্চাদের প্রতি ছিলেন আসক্ত। বারজন নারী বিবাহ করেছেন। সর্ব শেষ ছোট এক মেয়েকে বিবাহ করেছেন, যার বয়স মাত্র নয়...’’
এটি অনভিজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় মুর্খোচিত উক্তি। নিরেট মিথ্যা অপবাদ, যার পেছনে কোন দলিল নেই। এর প্রতিবাদে আমাদের এতটুকু জানিয়ে দেয়াই যথেষ্ট যে, রাসূল সা. প্রথম যে নারীকে বিবাহ করেছেন, সে রাসূলের চেয়ে পনেরো বছরের বড় ছিল। এটাই ঐতিহাসিকদের বিশুদ্ধ মত। রাসূল সা. যখন আয়েশা রা. কে ঘরে তুলে আনেন, তখন তার বয়স ছিল নয়। সে যুগে রাসূলের এ বিবাহকে কেউ নিন্দার চোখে দেখেনি। এমনকি সে যুগের মুনাফেক, যারা জেরী ফায়েঞ্জের ন্যায় সমানভাবে রাসূল সা. এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তার চরিত্রের উপর কলঙ্ক লেপনে সিদ্ধ হস্ত ছিল, তারাও এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। কারণ, তারা সে যুগের বাস্তবতা এবং পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিল। সে সমাজে মেয়েরা যখন নয় বছরে পদার্পণ করত কিংবা পূর্ণরূপে নারীত্ব বিকশিত হত, তখনই মেয়েদের বিয়ে দেয়া হত। এ জন্যই রাসূল সা. আয়েশাকে নয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ঘরে তুলে নেননি, অথচ তাকে হিজরতের তিন বছর আগেই বিয়ে করে ছিলেন। অধিকন্তু রাসূল সা. তাকে ভিন্ন অন্য কোনো কুমারী নারী বিয়ে করেননি। অথচ তিনি নিজ গোত্রের অধিপতি বরং সমগ্র মানবজাতির সরদার ছিলেন।
এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য, আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, নবীদের হত্যাকারী ও পাপাচারদের ইতিপূর্বের ধৃষ্টতাকে। যা তারা নবী ঈসা ও তার মাতার ব্যাপার করেছে। ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর মরিয়মকে অসামাজিক কাজে কলঙ্কিত নারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সেখানে তারা বলেছে, ‘‘ঈসা হচ্ছে অবৈধ সন্তান, তার মা এক ঋতু পরিমাণ সময় সৈনিক বান্দিরার সঙ্গ গ্রহণ করে গর্ভবর্তী হয়েছে।’’ দ্বিতীয় সামুঈল গ্রন্থের একটি পূর্ণ অধ্যায় জুড়ে লিপিবদ্ধ আছে যে, নবী দাউদ আ. স্বীয় সৈনিক উরিয়্যা আল-হিসসির স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন। যে অধ্যায়ের নামকরণ করেছে তারা, ‘‘দাউদের ধোঁকা ও বিচ্যুতি।’’ তাদের ধারণায় দাউদ আ. সৈনিক উরিয়্যাকে মারা যাওয়ার উদ্দেশ্যেই যুদ্ধে প্রেরণ করেছেন। যাতে তার স্ত্রীর পাণি গ্রহণের পথ সুগম হয়। দাউদ আ. উরিয়্যার স্ত্রীর সাথে আগেও যৌনকর্ম করেছে, যার ফলে উরিয়্যার স্ত্রী দাউদের দ্বারা গর্ভবতী পর্যন্ত হয়েছে। এখানে একটি মজার ব্যাপার হল, তাদের কথিত মজলুম উরিয়্যার ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, উরিয়্যা খুব কম বয়সের একটি মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছে। সে ছোট বাচ্চার মত উরিয়ার কোলে ঘুমাত। এত সত্ত্বেও তারা উরিয়্যার ব্যাপারে কোন বিরূপ বা অশোভন মন্তব্য করেনি। যার দ্বারা আমাদের নিকট স্পষ্ট, রাসূলের উপর তাদের ঘৃণ্য মন্তব্য সাপেক্ষ-পুষ্ট।
রাসূল সা. নয়জন স্ত্রী গ্রহণ করেছেন এজন্য তারা রাসূল সা. এর কুৎসা রটনা করেছে। এর বিপরীতে নবী দাউদ আ. এর উপর এরকম জঘন্য অপবাদ সত্ত্বেও তাদের মূল গ্রন্থসমূহে খুব সম্মানের সহিত-ই তার উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এর একদশমাংশও আমাদের নবীর মাঝে নেই। অধিকন্তু তারা নবী সুলাইমান আ. এর ব্যাপারে বলেছে যে, তার সাত শত স্ত্রী ছিল, আর তিন শত জন ছিল রক্ষিতা। সে নারীরা-ই নবী সুলাইমানকে আল্লাহ বিমুখ করে দিয়েছিল। তারা আলো বলেছে : ‘‘সুলাইমান অনেক অনেক অপরিচিত নারীর স্বাদ গ্রহণ করেছে; কাম-স্বার্থ চরিতার্থ করেছে তাদের থেকে; অথচ তাদের বিয়ে করেনি।’’ তাদের আরো ধারণা যে, ‘‘নবী লূত আ. মদ পান করে নিজের দুই কুমারী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।’’
আশ্চর্য! এটাই যাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রকৃতি, তারা কীভাবে আল্লাহ কর্তৃক হালাকৃত আমাদের নবীর স্ত্রীদের ব্যাপারে খারাপ মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখায়!? যার যুক্তি সংগত কারণও সবার নিকট স্পষ্ট। হাজারও প্রমাণ রয়েছে, যার দ্বারা আমরা বলতে পারি রাসূল সা. ভোগ বিলাস কিংবা যৌন ভোগের জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করেননি।
সর্ব শেষ একটি বিষয়ে অবগত করা খুব সংগত মনে হচ্ছে যে, এ সকল পুরোহীতগণ পরিকল্পিত ও বিশাল জন সমাবেশে সাজিয়ে গুছিয়ে ও রং চড়িয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। এটা কোন অনিচ্ছাকৃত কিংবা মুখ ফসকে যাওয়া বিচ্যুতি নয়। বরং এ সকল বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তারা শত্রুতা ও বৈরিতা ছড়িয়ে দিতে চান। লক্ষ্য করুন : আমাদের নবীর শানে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ও মিথ্যাচার করার জন্য ‘জেরী ফায়েঞ্জ’ আমেরিকার মায়সুরী রাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের বাৎসরিক জলসাকে-ই যথাযথ বিবেচনা করেছে। এখানেই সে ক্ষান্ত হয়নি, সে আরো বলেছে : ‘‘যে আল্লাহর প্রতি মুসলমানরা বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ আর খ্রিস্টানরা যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ এক নয়।’’ সে আরো বলেছে : ‘‘আল্লাহ কখনো মানুষ হত্যা আর ত্রাস সৃষ্টির জন্য মুহাম্মদকে পাঠায়নি?’’ তার মনোবৃত্তিই প্রমাণ করে যে, এসব হচ্ছে আমাদের নবী সা. এর উপর মিথ্যা অপবাদ। এত সত্ত্বেও সে গণতান্ত্রিক দল ও তার নেতৃবৃন্দের প্রশংসার পাত্র।
ক্যাথলিক গুরুর নিকট অতীতের কথাই ধরা যাক। যে কথা বলে সে, ক্ষমা প্রার্থনা করতেও অস্বীকার করেছে। অধিকন্তু সে মুসলমানদের ভুল বুঝা-বুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। কারণ, এর দ্বারা অনেক খ্রিস্টান সম্প্রদায় মুসলমানদের পক্ষ থেকে তিরস্কারের পাত্র হয়েছে।
একজন খ্রিস্টান অগ্র পথিক ও ধর্মীয় লিডার যখন এমন সব বাক্য ভর মজলিসে বলতে পারে, তখন তার চেয়ে ছোট যারা আছে, তাদের আর কি বলা? যাদের কথার এ তোটা গুরুত্ব কিংবা এ তোটা মূল্য নেই।
এ ছাড়াও তার আরো এমন কিছু বাক্য আছে, যার মাধ্যমে সে ইসলামের উপর কটাক্ষ করেছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, অনেকে বলে বেড়ায় এ লোক শুধু বর্ণনাকারী। মনে হয় এর দ্বারা তার উপর থেকে সে অপরাধ হটিয়ে দিতে চায়। কাজি আয়াজ রহ. বলেছেন, ‘‘যদি এই বর্ণনাকারীর ব্যাপারে এ অভিযোগ উঠে যে, সে নিজে বানিয়ে অন্যদের ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছে, অথবা এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, অথবা সে এটাকে খুব ভালো মনে করছে, অথবা এতে সে চরমভাবে আত্মনিয়োগ করেছে, অথবা একে সে সাধারণ জ্ঞান করছে, অথবা সে এমন জিনিস গুলো সংরক্ষণ করে ও এমন সব জিনিস সে অনুসন্ধান করে এবং রসুলের কুৎসা ও গাল-মন্দ সমৃদ্ধ কবিতা আবৃতি করে বর্ণনা করে; এ ধরনের ব্যক্তির হুকুম স্বয়ং গাল-মন্দ করার ব্যক্তির ন্যায়। তার কথাই গ্রহণ করা হবে, অন্যের দিকে নিসবত করার কোনো ওজুহাত শোনা হবে না। তাকে দ্রুত হত্যা করা হবে এবং তাকে জাহান্নামে পাঠানোর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ [আশশিফা : ২/২০৯] এ জন্যই রাসূল সা. ইবনে খাতালের দু’জন বাদিকে হত্যা করেছেন। তারা রসুলের শানে ধৃষ্টতা মূলক কবিতা আবৃতি করত। অথচ তারা তা বানায়নি, বানিয়েছে অন্যরা। কিন্তু তারা এমনভাবে আবৃতি করত, যাতে তাদের সম্মতি ও সাড়া ছিল।
প্রোটেস্টান্ট খ্রিস্টানদের নমুনা হচ্ছে; আজ থেকে চার বছর আগে প্রায় ১৪২৩ হিজরিতে আমেরিকায় পুরোহিতরা সমবেতভাবে আমাদের রাসূল ও তার পবিত্র সত্তায় কলঙ্ক লেপনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে ছিল।
তাদের অন্যতম জেরি ফালওয়েল- এ বৎসর রবিউল আখেরে সে মারা গেছে- যে ‘হারমাজদুন যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া এখনই জরুরি’ নামে একটি বই লিখেছে। সে এ কিতাবের শুরুতে আমাদের রসুলের বিক্রীত চরিত্র উল্লেখ করেছে।
তার কথা উল্লেখ করার আগে আরেকটি কথা বলে নেই যে, বুশ প্রশাসন গত ১৬ অক্টোবর ২০০২ সনে পুরোহিত বাত রুবাস্ত্তন ও জেরি ফালওয়েলকে পুরস্কৃত করেছে। যেহেতু তারা উভয় রক্ষণশীল ডান পন্থী ও রিপাবলিকান গ্রুপকে সহায়তা করেছে।
এ অপোগন্ড বলেছে, ‘‘আমার গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, ঈসা ভালোবাসা ও মহববতের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তদ্রুপ একাজটি মুসাও সম্পাদন করেছে, কিন্তু মুহাম্মদ করেছে এদের বিপরীত কাজটি।’’ সে ৬ অক্টোবর ২০০২ সনে প্রকাশিত ৬০ মিনিটের একটি প্রোগ্রামে বলেছে, ‘‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মুহাম্মদ একজন সন্ত্রাসী ছিল। আমি মুসলমান-অমুসলমানদের লিখিত অনেক কিছুই পড়েছি, যার দ্বারা প্রতীয়মান মুহাম্মদ সহিংসতা প্রিয় ছিল।’’ যুদ্ধবাজ এ লোকটি সন্ত্রাসের সংজ্ঞা দিচ্ছে! আমাদের বোধ হচ্ছে না সে মুসলমানদের লিখিত কি পড়েছে? সে কি মুহাম্মদের ব্যাপারে এ আয়াতটি পড়েছে?- ‘‘আমি আপনাকে জগৎবাসীর জন্য শুধু রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’’ [আম্বিয়া : ১০৭]
আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, রহমতের নবী মুহাম্মদ সা. এর উপর অপবাদ আরোপকারী এ পাদরীকে আমেরিকার ডানপন্থী অঙ্গরাজ্যে ইহুদীবাদী রাষ্ট্রের হিতাকাঙ্ক্ষী ও সাহায্যকারী জ্ঞান করা হয়। এ পাদরী এমনও বলেছে যে, ‘‘আমাদের সাথে সত্তুর মিলিয়ন জনশক্তি বিদ্যমান আছে। যদি এ সরকার ইসরালের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে অথবা তার অর্থনৈতিক স্বার্থ কিংবা তার অস্তিত্বের উপর আঘাত হানে, তবে পুরো খ্রিস্ট জগতে এ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সৃষ্টি হবে।’’ ১৪ এপ্রিল ‘‘ইউ, এস, এ টুডে অফ আমেরিকা’’ ফালওয়েলের একটি প্রবন্ধ ছাপিয়েছে। যাতে ফালওয়েল ডেমোক্রেডিড প্রশাসনের প্রধান বিল ক্লিন্টনের কঠোর সমালোচনা করেছে। কারণ, তার ধারণা ক্লিন্টন প্রশাসন আমেরিকার শান্তি যুক্তি মানতে ইসরাইলের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। সে তার প্রবন্ধে বলেছে : ‘‘যারা সুনিশ্চিতভাবে জ্ঞান করে যে, ইবরাহিমের ওয়াদা ইসরাইলের ভূ-খন্ডের ব্যাপারেই, তাদেরকে আমেরিকার এ চাপ সৃষ্টি গভীরভাবে মর্মাহত করে।’’ এখানে আমরা ইংরেজদের ঈমানেরও ইঙ্গিত পাই। তাদের বিশ্বাস আল্লাহ তাআলা ইবরাহিমের সাথে ওয়াদা করেছেন যে, তিনি ইসরাইল ভূ-খন্ড ইহুদিদের ফিরিয়ে দেবেন।
লক্ষ্য করুন : যে ইহুদিরা বৃদ্ধ লোকদের হত্যা করছে, অন্যের জমি জবর দখল করছে, গাছ-পালা ও পশু-জানোয়ার ধ্বংস করছে- তাদের সে প্রশংসা করে আর যে নবী রহমত, বিশ্ব জাহানের নেয়ামত ও গৌরব, সে নবীর উপর কলঙ্কের তীর নিক্ষেপ করছে?
এ কাফেরের উক্তি তার পূর্বের কাফেরের উক্তিকেও হারমানায়। ইরশাদ হচ্ছে : ‘‘অতঃপর মুসা যখন উভয়ে শত্রুকে শায়েস্তা করতে চাইলেন, তখন সে বলল, গত-কাল্য তুমি যেমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ছিলে, সেরকম আমাকেও হত্যা করতে চাও? তুমি দুনিয়াতে স্বৈরাচারী হতে চাচ্ছ, সন্ধি স্থাপন কারী হতে চাও না।’’ [সুরায়ে কাসাস : ১৯] এটা নবী মুসার জীবনে ঘটে যাওয়া নবুওয়ত প্রাপ্তির আগের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যেখানে সামান্য ভুলও রয়েছে। কিন্তু ফালওয়েলের এ উক্তি তো অনেকটা ফেরাউনের ঔদ্ধত্যের মত! সে বলেছে : ‘‘আমাকে সময় দাও, আমি মুসাকে হত্যা করে নেই, পারলে সে তার প্রভুকে ডাকুক। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে তোমাদের ধর্ম বিক্রীত করে দেবে অথবা পৃথিবীর বুকে অশান্তির ঝড় বইয়ে দেবে।’’ [গাফের / মোমেন : ২৬] ফেরআউনের অবাধ্য জাতি বলেছে : ‘‘তুমি কি মুসা ও তার সম্প্রদায়কে এমনিই ছেড়ে দেবে?- যে তারা ভূ-পৃষ্টে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে, পরিত্যাগ করবে তোমাকে ও তোমার প্রভুকে।’’ [আরাফ : ১২৭] ইহুদিদের কিতাব তালমুদের ভেতর ইয়াসু (নবী মুসা) সম্পর্কে তারা বলা হয়েছে: ‘‘ইয়াসু বনি ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে, ধ্বংস করে দিয়েছে তাদের।’’ কোথায় পার্থক্য ফেরআউন, তার সম্প্রদায় এবং ইহুদি জাতির মাঝে?
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের আরেকটি উদাহরণ : পাদরী ‘পাট রুবাটসুন’ বুশকে সমর্থ দান কারীর একজন। ২০০০ মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বুশের বিজয়ী হওয়ার ভেতর তার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বুশকে সমর্থনকারী খ্রিস্টান ডানপন্থী জোটের নেতৃত্ব তার হাতেই ছিল। তার সম্পর্কে বুশের প্রতিদ্বন্দ্বী ‘জোনমাকি’ অভিযোগ করে বলেছে, ‘‘বুশ তাকে বড় ধরনের অর্থ উপঢৌকন দিয়েছে।’’ সে জেরি ফালওয়েলের সাথে তাকে সম্মানিত করার কথাও উল্লেখ করেছে। ২০০০ মার্চে বুশকে মনোনয়ন দেয়ার রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনটি উদ্বোধন করা হয় ‘‘নবী ঈসার উপর লিখিত তারানার’’ মাধ্যমে। সেখানে বুশ ঘোষণা করেছে, আমি খ্রিস্টান ডানপন্থীদের একজন।
‘পাট রুবাটসুন’ ‘হ্যানিটি কলামস’ নামক সভায় বলেছে যা ‘ফক্স নিউজ’ ওয়েব সাইটে প্রচার করা হয়েছে ‘‘আমি বলছি, এ কুরআন ইহুদিদের আকীদা-বিশ্বাস থেকে চুরি করা কতগুলো জিনিসের সমন্বয়। মুহাম্মদ এর ভেতর বিভিন্ন পরিবর্তন করেছে এবং এর মাধ্যমে সে মদিনাতে ইহুদি খ্রিস্টানদের মাঝে নিধন-যজ্ঞ চালিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি : ‘‘এ ব্যক্তি (মুহাম্মদ) যুদ্ধবাজ ও রক্তপিপাসু ছিল।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘সন্ত্রাসবাদ প্রায় তার নেশায় পরিণত হয়ে ছিল। শুধু কয়েকজন কট্টরপন্থীদের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তুমি একটি কুরআন ক্রয় করে নিজে পড়ে দেখ, কুরআন তোমাকে বিবাদ-সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার শিক্ষা দিবে।’’
তাকে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু, পুনরায় সে তার ইদানীংকালের প্রকাশনা ‘দি নেম’ নামক গ্রন্থের ৭১ নং পৃষ্ঠায় বলেছে, ‘‘একজন যুদ্ধবাজ ব্যক্তি ইসলামের ভিত্তি রেখেছে, যার নাম মুহাম্মদ। তার শিক্ষার ভেতর ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন কৌশল বিদ্যমান রয়েছে। যেমন প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সামরিক অভিযান পরিচালনা কিংবা সহিংসতা ইত্যাদির সৃষ্টি করা।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘ইসলাম খৃষ্টবাদের বিপরীত, তার মূল শিক্ষার ভেতর রয়েছে অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে বিদ্বেষ খেদ ও চরমপন্থা।’’ রাসূল সা. সম্পর্কে তার বাক্য লক্ষ্য করুন, ‘‘সে তার অনুসারীগণকে মুশরিকদের হত্যা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করত। সে চরমপন্থার সর্বশেষ উদাহরণ ছিল। সে লুলোপ, ডাকাত। তার দাওয়াতে রয়েছে ধোঁকা ও প্রতারণা। কুরানের ৮০%ভাগ নকল করা হয়েছে ইহুদি-নাসারাদের ধর্ম গ্রন্থ থেকে। অতঃপর ইহুদি খ্রিস্টানদের হত্যার জন্য এগুলোতে মন মত পরিবর্তন এনেছে।’’
তাদের এ বক্তব্যের সাথে ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র বক্তব্যের সাথেও মিলিয়ে নেই। যেমন ‘তালমুদে’ আছে, ‘‘খ্রিস্টান হলো সে ব্যক্তি যে মিথ্যা শিক্ষার অনুসরণ করে। তাদের যে ধর্মীয় ব্যক্তি রবিবার দিন গির্জায় বসে এবাদতের আহবান করে, সেই এ মিথ্যার ফুল-ঝুড়ি তৈরি করে।’’ ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর আরো আছে, ‘‘ঈসা মসিহ ছিল, যাদুকর ও মূর্তিপূজক।’’ তারা আরো বলেছে, ‘‘খ্রিস্টান ‘ঈয়াসু’ জাহান্নামের গভীর প্রকোষ্ঠে বিদ্যমান।’’ ‘‘ঈয়াসু’ বনী ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে ও ধ্বংস করেছে।’’ আল্লাহ সত্যিই বলেছেন : ‘‘এরকমই আপনার পূর্বে যত নবি-রাসূল এসেছেন, তাদের সকলকেই তারা যাদুকর অথবা পাগল বলে আখ্যায়িত করেছে। অধিকন্তু তারা এ জন্য একে অপরকে উদ্বুদ্ধ করত। তারা সীমালঙ্ঘণকারী সম্প্রদায়।’’ [জারিয়াত : ৫২-৫৩] ‘‘তাদের পরস্পর অন্তরসমূহ একই ধরনের।’’ [আল-বাকারা : ১১৮]
পাটরুবাটসুন সে মজলিসে তার পূর্বসুরীদের মন্থনকৃত আরো অনেক মিথ্যাচার, প্রলাপের পুনরুক্তি করেছে। যার কতক মিথ্যাচারের উত্তর পবিত্র কুরআনেও বিধৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় ডান হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লেখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।’’ [আল-আনকাবুত : ৪৮] ‘‘আমি নিশ্চিতভাবে জানি, তারা বলে, তাকে তো শিক্ষা দেয় জনৈক ব্যক্তি। তারা যার প্রতি ইঙ্গিত করছে, তার ভাষা হচ্ছে অনারব, আর এটা হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবি ভাষা।’’ [নাহাল : ১০৩]
আরো একবার তাদের মিথ্যাচার লক্ষ্য করুন। যে সকল কাফের সম্প্রদায় অনাচার সৃষ্টি করেছে, যারা মক্কা-মদিনায় মুসলমানদের সাথে নির্মম ব্যবহার করেছে, চুক্তি ভঙ্গ করেছে, ওয়াদার খেলাপ করেছে, বার বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তার অনেক অনুসারীদের হত্যা করেছে, সে কাফেরদের বানাচ্ছে মজলুম, উৎসর্গিত। আর নির্দোষ মুসলমানদের বানাচ্ছে অনাচার সৃষ্টিকারী!
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিদের তৃতীয় আরেকটি উদাহরণ। জেরী ফায়েঞ্জ : দক্ষিণ মামাদানি গির্জার বাৎসরিক জলসার সাবেক চেয়ারম্যান। বুশ যার ভূয়েশী প্রশংসায় বলেছে : সে আমাদের ধর্ম সম্পর্কে স্পষ্টভাষী। বুশ তাকে প্রথম সারির ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনোনীত করেছে। এ ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলে : ‘‘...তিনি ছিলেন অরুচির মানুষ। বাচ্চাদের প্রতি ছিলেন আসক্ত। বারজন নারী বিবাহ করেছেন। সর্ব শেষ ছোট এক মেয়েকে বিবাহ করেছেন, যার বয়স মাত্র নয়...’’
এটি অনভিজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় মুর্খোচিত উক্তি। নিরেট মিথ্যা অপবাদ, যার পেছনে কোন দলিল নেই। এর প্রতিবাদে আমাদের এতটুকু জানিয়ে দেয়াই যথেষ্ট যে, রাসূল সা. প্রথম যে নারীকে বিবাহ করেছেন, সে রাসূলের চেয়ে পনেরো বছরের বড় ছিল। এটাই ঐতিহাসিকদের বিশুদ্ধ মত। রাসূল সা. যখন আয়েশা রা. কে ঘরে তুলে আনেন, তখন তার বয়স ছিল নয়। সে যুগে রাসূলের এ বিবাহকে কেউ নিন্দার চোখে দেখেনি। এমনকি সে যুগের মুনাফেক, যারা জেরী ফায়েঞ্জের ন্যায় সমানভাবে রাসূল সা. এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তার চরিত্রের উপর কলঙ্ক লেপনে সিদ্ধ হস্ত ছিল, তারাও এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। কারণ, তারা সে যুগের বাস্তবতা এবং পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিল। সে সমাজে মেয়েরা যখন নয় বছরে পদার্পণ করত কিংবা পূর্ণরূপে নারীত্ব বিকশিত হত, তখনই মেয়েদের বিয়ে দেয়া হত। এ জন্যই রাসূল সা. আয়েশাকে নয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ঘরে তুলে নেননি, অথচ তাকে হিজরতের তিন বছর আগেই বিয়ে করে ছিলেন। অধিকন্তু রাসূল সা. তাকে ভিন্ন অন্য কোনো কুমারী নারী বিয়ে করেননি। অথচ তিনি নিজ গোত্রের অধিপতি বরং সমগ্র মানবজাতির সরদার ছিলেন।
এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য, আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, নবীদের হত্যাকারী ও পাপাচারদের ইতিপূর্বের ধৃষ্টতাকে। যা তারা নবী ঈসা ও তার মাতার ব্যাপার করেছে। ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর মরিয়মকে অসামাজিক কাজে কলঙ্কিত নারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সেখানে তারা বলেছে, ‘‘ঈসা হচ্ছে অবৈধ সন্তান, তার মা এক ঋতু পরিমাণ সময় সৈনিক বান্দিরার সঙ্গ গ্রহণ করে গর্ভবর্তী হয়েছে।’’ দ্বিতীয় সামুঈল গ্রন্থের একটি পূর্ণ অধ্যায় জুড়ে লিপিবদ্ধ আছে যে, নবী দাউদ আ. স্বীয় সৈনিক উরিয়্যা আল-হিসসির স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন। যে অধ্যায়ের নামকরণ করেছে তারা, ‘‘দাউদের ধোঁকা ও বিচ্যুতি।’’ তাদের ধারণায় দাউদ আ. সৈনিক উরিয়্যাকে মারা যাওয়ার উদ্দেশ্যেই যুদ্ধে প্রেরণ করেছেন। যাতে তার স্ত্রীর পাণি গ্রহণের পথ সুগম হয়। দাউদ আ. উরিয়্যার স্ত্রীর সাথে আগেও যৌনকর্ম করেছে, যার ফলে উরিয়্যার স্ত্রী দাউদের দ্বারা গর্ভবতী পর্যন্ত হয়েছে। এখানে একটি মজার ব্যাপার হল, তাদের কথিত মজলুম উরিয়্যার ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, উরিয়্যা খুব কম বয়সের একটি মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছে। সে ছোট বাচ্চার মত উরিয়ার কোলে ঘুমাত। এত সত্ত্বেও তারা উরিয়্যার ব্যাপারে কোন বিরূপ বা অশোভন মন্তব্য করেনি। যার দ্বারা আমাদের নিকট স্পষ্ট, রাসূলের উপর তাদের ঘৃণ্য মন্তব্য সাপেক্ষ-পুষ্ট।
রাসূল সা. নয়জন স্ত্রী গ্রহণ করেছেন এজন্য তারা রাসূল সা. এর কুৎসা রটনা করেছে। এর বিপরীতে নবী দাউদ আ. এর উপর এরকম জঘন্য অপবাদ সত্ত্বেও তাদের মূল গ্রন্থসমূহে খুব সম্মানের সহিত-ই তার উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এর একদশমাংশও আমাদের নবীর মাঝে নেই। অধিকন্তু তারা নবী সুলাইমান আ. এর ব্যাপারে বলেছে যে, তার সাত শত স্ত্রী ছিল, আর তিন শত জন ছিল রক্ষিতা। সে নারীরা-ই নবী সুলাইমানকে আল্লাহ বিমুখ করে দিয়েছিল। তারা আলো বলেছে : ‘‘সুলাইমান অনেক অনেক অপরিচিত নারীর স্বাদ গ্রহণ করেছে; কাম-স্বার্থ চরিতার্থ করেছে তাদের থেকে; অথচ তাদের বিয়ে করেনি।’’ তাদের আরো ধারণা যে, ‘‘নবী লূত আ. মদ পান করে নিজের দুই কুমারী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।’’
আশ্চর্য! এটাই যাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রকৃতি, তারা কীভাবে আল্লাহ কর্তৃক হালাকৃত আমাদের নবীর স্ত্রীদের ব্যাপারে খারাপ মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখায়!? যার যুক্তি সংগত কারণও সবার নিকট স্পষ্ট। হাজারও প্রমাণ রয়েছে, যার দ্বারা আমরা বলতে পারি রাসূল সা. ভোগ বিলাস কিংবা যৌন ভোগের জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করেননি।
সর্ব শেষ একটি বিষয়ে অবগত করা খুব সংগত মনে হচ্ছে যে, এ সকল পুরোহীতগণ পরিকল্পিত ও বিশাল জন সমাবেশে সাজিয়ে গুছিয়ে ও রং চড়িয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। এটা কোন অনিচ্ছাকৃত কিংবা মুখ ফসকে যাওয়া বিচ্যুতি নয়। বরং এ সকল বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তারা শত্রুতা ও বৈরিতা ছড়িয়ে দিতে চান। লক্ষ্য করুন : আমাদের নবীর শানে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ও মিথ্যাচার করার জন্য ‘জেরী ফায়েঞ্জ’ আমেরিকার মায়সুরী রাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের বাৎসরিক জলসাকে-ই যথাযথ বিবেচনা করেছে। এখানেই সে ক্ষান্ত হয়নি, সে আরো বলেছে : ‘‘যে আল্লাহর প্রতি মুসলমানরা বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ আর খ্রিস্টানরা যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ এক নয়।’’ সে আরো বলেছে : ‘‘আল্লাহ কখনো মানুষ হত্যা আর ত্রাস সৃষ্টির জন্য মুহাম্মদকে পাঠায়নি?’’ তার মনোবৃত্তিই প্রমাণ করে যে, এসব হচ্ছে আমাদের নবী সা. এর উপর মিথ্যা অপবাদ। এত সত্ত্বেও সে গণতান্ত্রিক দল ও তার নেতৃবৃন্দের প্রশংসার পাত্র।
কর্মের মাধ্যমে রাসূল সা.-এর সাথে ধৃষ্টতা প্রদর্শনের রীতি অনেক পুরোনো। যার ধারাবাহিকতা অদ্যাবধি বিদ্যমান। নির্ভরযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থ সমূহ থেকে জানা যায়, বহিঃরাষ্ট্রের কতিপয় পাপিষ্ঠ রাসূল সা.-এর রওজা থেকে তার দেহ মোবারক তুলে নেয়ার জন্য বার বার মদীনায় গুপ্ত অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের পরিকল্পনা, এ অভিযানে সফলতার মাধ্যমে মুসলমানদের একটি তীর্থস্থানের মালিক হওয়ার স্বপ্নপুরণ করা। ইমাম জাহাবী রহ. তারিখুল ইসলাম নামক গ্রন্থে বলেছেন : সালাউদ্দিন এমন একটি ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য প্রাণপণ শপথ নিলেন। কোনভাবেই এ অবস্থান থেকে তিনি ফিরে এলেন না। তিনি মিশরের গভর্নর সাইফুদ্দৌলা বিন মুনকিজকে লিখে পাঠালেন, তুমি লুলু আল-হাজেবকে প্রস্ত্তত কর। সে তার সাথে পরামর্শ করল। লুলু আল-হাজেব বলল, ঠিক আছে, তাদের সংখ্যা কত? তিনি বললেন, তিন-শর উপরে। তবে তারা সকলেই বীর যোদ্ধা।
সে তাদের সংখ্যা অনুপাতে রশি নিল। ষড়যন্ত্র কারীদের সাথে আরবের কতক মুরতাদও সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। যেখানে মাদীনা আর তাদের মাঝে মাত্র দিনের দূরত্ব সেখানেই লুলু তাদের পেয়ে গেল। আত্মসমর্পণের জন্য সম্পদের অফার দিলেন, এতেই কাজ হল। স্বর্ণের লোভে আরবের মুরতাদরা তার প্রস্তাবে সাড়া দিল। বিদেশীরা একটি পাহাড়ের চূড়ায় আশ্রয় নিল। লুলু নয়জন লোকসহ পায়ে হেঁটে তাদের পর্যন্ত পৌঁছে গেল। ফলশ্রুতিতে অভিশপ্তদের বাহুবল ভেঙে যায় আর লুলুর মনোবল বৃদ্ধি পায়। অতঃপর সকলে লুলুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। লুলু তাদেরকে পাকড়াও করে রশিতে বেধে কায়রোতে নিয়ে আসেন। অবশেষে ইসলামি আইনবিদ ফকিহ, নেককার ও সুফিগণ তাদের মৃত্যু দন্ড কার্যকর করেন।
এ ছাড়াও ঐতিহাসিকগণ আরো কয়েকবার রাসূলের দেহ মোবারক তুলে নেয়ার চক্রান্তের ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন। রাফেজী সম্প্রদায় ভুক্ত বাতেনী ফিরকাও কয়েকবার এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
সমকালীন যুগে ডেনমার্কের কার্টুন অঙ্কনও তার একটি অংশ। তবে এটা প্রথম কোনো ঘটনা নয়। এর আগে আরব দেশের এক লেখক একটি কার্টুন ছেপে ছিল। যাতে সে রাসূল সা.-কে একটি মোরগের আকৃতি দিয়ে তার চার পাশে নয় টি মুরগির ছবি এঁকেছে ছিল। তার উপর সে লিখে ছিল : ‘‘মুহাম্মদ নয় জন স্ত্রীর কেন্দ্র বিন্দু।’’
তবে এটা ঠিক যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ডেনমার্কের সীমা লঙ্ঘন কারী কট্টর পন্থীরা যে দৃষ্টান্ত পেশ করেছে ইতিপূর্বে এমনটি কেউ পেশ করেনি। তারা নির্লজ্জভাবে রাসূলের উপর বিভিন্ন অপবাদ ও মিথ্যা-রোপ করেছে। শুধু এখানেই তারা ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা সে চিত্র ইন্টারনেটে পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে। মুসলমানদের প্রতিবাদের মুখে তারা আরো নির্লজ্জতর পন্থা গ্রহণ করেছে। তারা এর ভিডিও সিডি তৈরি করেছে। আরো জঘন্য হচ্ছে তাদের প্রচারকৃত ইন্টারনেটের দৃশ্যগুলো।
সে তাদের সংখ্যা অনুপাতে রশি নিল। ষড়যন্ত্র কারীদের সাথে আরবের কতক মুরতাদও সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। যেখানে মাদীনা আর তাদের মাঝে মাত্র দিনের দূরত্ব সেখানেই লুলু তাদের পেয়ে গেল। আত্মসমর্পণের জন্য সম্পদের অফার দিলেন, এতেই কাজ হল। স্বর্ণের লোভে আরবের মুরতাদরা তার প্রস্তাবে সাড়া দিল। বিদেশীরা একটি পাহাড়ের চূড়ায় আশ্রয় নিল। লুলু নয়জন লোকসহ পায়ে হেঁটে তাদের পর্যন্ত পৌঁছে গেল। ফলশ্রুতিতে অভিশপ্তদের বাহুবল ভেঙে যায় আর লুলুর মনোবল বৃদ্ধি পায়। অতঃপর সকলে লুলুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। লুলু তাদেরকে পাকড়াও করে রশিতে বেধে কায়রোতে নিয়ে আসেন। অবশেষে ইসলামি আইনবিদ ফকিহ, নেককার ও সুফিগণ তাদের মৃত্যু দন্ড কার্যকর করেন।
এ ছাড়াও ঐতিহাসিকগণ আরো কয়েকবার রাসূলের দেহ মোবারক তুলে নেয়ার চক্রান্তের ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন। রাফেজী সম্প্রদায় ভুক্ত বাতেনী ফিরকাও কয়েকবার এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
সমকালীন যুগে ডেনমার্কের কার্টুন অঙ্কনও তার একটি অংশ। তবে এটা প্রথম কোনো ঘটনা নয়। এর আগে আরব দেশের এক লেখক একটি কার্টুন ছেপে ছিল। যাতে সে রাসূল সা.-কে একটি মোরগের আকৃতি দিয়ে তার চার পাশে নয় টি মুরগির ছবি এঁকেছে ছিল। তার উপর সে লিখে ছিল : ‘‘মুহাম্মদ নয় জন স্ত্রীর কেন্দ্র বিন্দু।’’
তবে এটা ঠিক যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ডেনমার্কের সীমা লঙ্ঘন কারী কট্টর পন্থীরা যে দৃষ্টান্ত পেশ করেছে ইতিপূর্বে এমনটি কেউ পেশ করেনি। তারা নির্লজ্জভাবে রাসূলের উপর বিভিন্ন অপবাদ ও মিথ্যা-রোপ করেছে। শুধু এখানেই তারা ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা সে চিত্র ইন্টারনেটে পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে। মুসলমানদের প্রতিবাদের মুখে তারা আরো নির্লজ্জতর পন্থা গ্রহণ করেছে। তারা এর ভিডিও সিডি তৈরি করেছে। আরো জঘন্য হচ্ছে তাদের প্রচারকৃত ইন্টারনেটের দৃশ্যগুলো।
এটা শুধু একটা ভূমিকা এবং তার নিয়মনীতির উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা। এখানে আমরা সে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব না যে, কি জন্য তারা রাসূল সা.-কে গালমন্দ করে, কি জন্য তারা রাসূলের সাথে ধৃষ্টতা দেখায়। তবে হ্যাঁ, এখানে আমরা তার উৎস ও প্রতিকার এবং এগুলো যে ভ্রান্ত তার অবতারণা করব।
এ প্রবন্ধের শুরুতে রাসূলের উপর ধৃষ্টতার উৎস নিয়ে সামান্য ইঙ্গিত প্রদান করেছি। যার সারাংশ হচ্ছে হক ও বাতিল তথা সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব আদি যুগ থেকেই। তবে যারা বলে পাশ্চাত্যের এ ধৃষ্টতা এবং ইসলাম বিদ্বেষের কারণ হচ্ছে ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা ও মূর্খতা, তারা ভুল করেন। অধুনা আলোচিত ডেনমার্কের ধৃষ্টতার প্রাক্কালে সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছিল যে, ‘‘যদি তারা রাসূল সা.-কে চীনতো তবে তারা রাসূলকে মহববত করত।’’ মন্তব্যটি যথার্থ কিংবা বাস্তবসম্মত হয়নি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলছেন : ‘‘হে আহলে কিতাব সম্প্রদায়! তোমরা কেন সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণ করছ? আর জেনে শুনে কেন সত্যকে গোপন করছ।’’ [আলে ইমরান : ৭১] অন্যত্র বলেছেন : ‘‘আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা রাসূলকে এমনভাবে চিনে, যেমন তারা নিজেদের সন্তানদের চিনে। যারা নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা ঈমান গ্রহণ করবে না।’’ [আল-আনআম : ২০] তাদের অনেকে কুরআনকে চিনে, তবুও হিংসা ও সীমা-লঙ্ঘন-বশত তা গোপন করে। তাদের অনেকেই জানে যে, মুহাম্মদ সত্যিই আল্লাহর রাসূল, তবুও তারা তাকে অস্বীকার করে, তার সাথে শত্রুতা পোষণ করে। এমনটি ইতিপূর্বে তাদের পূর্ব পুরুষরাও করেছে, এখন তারা করছে। অথচ তারা সকলেই এ বিষয়ে জানে ও জ্ঞান রাখে। পক্ষান্তরে তাদের ভেতর যারা ইনসাফের সাথে ফয়সালা করে এবং সত্যের কাছে মাথা নত করে, তাদের ব্যাপারে এরশাদ হচ্ছে : ‘‘যারা নিরক্ষর নবী ও রাসূলের অনুসরণ করে, যাকে তারা নিজেদের নিকট রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলের ভেতর লিখিত দেখতে পায়। তিনি তাদেরকে ভালো জিনিসের আদেশ দেন এবং মন্দ জিনিস হতে নিষেধ করেন। তাদের জন্য পবিত্র বস্ত্তগুলো হালাল করেন এবং অপবিত্র বস্ত্তগুলো হারাম করেন। এবং তাদের উপর চাপানো বুঝা ও বন্ধন থেকে তাদের মুক্ত করেন। সুতরাং যারা তার উপর ঈমান রাখে, তাকে সম্মান করে ও সাহায্য করে, আর সে আলোকের অনুসরণ করে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, তারাই কৃতকার্য-কামিয়াব।’’ [আল-আরাফ : ১৫৭]
সহিহ বোখারিতে বর্ণিত আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের ইসলাম গ্রহণের ঘটনায় তাদের এ হীন মানসিকতা আরো ঘৃণ্যভাবে ফুটে উঠেছে। [বোখারী : ৩৬৯৯]
ইসলাম ও তার নবীর ধৃষ্টতার ব্যাপারে এসব মৌলিক কারণগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। যেমন উচিত নয় তাদের সকলকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করা কিংবা তাদের সবার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা। কারণ, এ ধরনের মানসিকতা বিরোধিতা-বিদ্বেষকে উসকে দেয়, কোনো সমাধান দিতে পারে না। হ্যাঁ, মধ্যম পন্থা অবলম্বন করাই ইনসাফ ও ন্যায়সংগত। এটাই আমাদের ধর্ম তথা ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘‘তারা সকলে বরাবর নয়। আহলে কিতাবের একটি দল আছে, যারা রাতের ক্ষণে ক্ষণে দন্ডায়মান হালতে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে এবং তারা সেজদা করে।’’ [আলে ইমরান : ১১৩]
এ প্রবন্ধের শুরুতে রাসূলের উপর ধৃষ্টতার উৎস নিয়ে সামান্য ইঙ্গিত প্রদান করেছি। যার সারাংশ হচ্ছে হক ও বাতিল তথা সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব আদি যুগ থেকেই। তবে যারা বলে পাশ্চাত্যের এ ধৃষ্টতা এবং ইসলাম বিদ্বেষের কারণ হচ্ছে ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা ও মূর্খতা, তারা ভুল করেন। অধুনা আলোচিত ডেনমার্কের ধৃষ্টতার প্রাক্কালে সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছিল যে, ‘‘যদি তারা রাসূল সা.-কে চীনতো তবে তারা রাসূলকে মহববত করত।’’ মন্তব্যটি যথার্থ কিংবা বাস্তবসম্মত হয়নি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলছেন : ‘‘হে আহলে কিতাব সম্প্রদায়! তোমরা কেন সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণ করছ? আর জেনে শুনে কেন সত্যকে গোপন করছ।’’ [আলে ইমরান : ৭১] অন্যত্র বলেছেন : ‘‘আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা রাসূলকে এমনভাবে চিনে, যেমন তারা নিজেদের সন্তানদের চিনে। যারা নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা ঈমান গ্রহণ করবে না।’’ [আল-আনআম : ২০] তাদের অনেকে কুরআনকে চিনে, তবুও হিংসা ও সীমা-লঙ্ঘন-বশত তা গোপন করে। তাদের অনেকেই জানে যে, মুহাম্মদ সত্যিই আল্লাহর রাসূল, তবুও তারা তাকে অস্বীকার করে, তার সাথে শত্রুতা পোষণ করে। এমনটি ইতিপূর্বে তাদের পূর্ব পুরুষরাও করেছে, এখন তারা করছে। অথচ তারা সকলেই এ বিষয়ে জানে ও জ্ঞান রাখে। পক্ষান্তরে তাদের ভেতর যারা ইনসাফের সাথে ফয়সালা করে এবং সত্যের কাছে মাথা নত করে, তাদের ব্যাপারে এরশাদ হচ্ছে : ‘‘যারা নিরক্ষর নবী ও রাসূলের অনুসরণ করে, যাকে তারা নিজেদের নিকট রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলের ভেতর লিখিত দেখতে পায়। তিনি তাদেরকে ভালো জিনিসের আদেশ দেন এবং মন্দ জিনিস হতে নিষেধ করেন। তাদের জন্য পবিত্র বস্ত্তগুলো হালাল করেন এবং অপবিত্র বস্ত্তগুলো হারাম করেন। এবং তাদের উপর চাপানো বুঝা ও বন্ধন থেকে তাদের মুক্ত করেন। সুতরাং যারা তার উপর ঈমান রাখে, তাকে সম্মান করে ও সাহায্য করে, আর সে আলোকের অনুসরণ করে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, তারাই কৃতকার্য-কামিয়াব।’’ [আল-আরাফ : ১৫৭]
সহিহ বোখারিতে বর্ণিত আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের ইসলাম গ্রহণের ঘটনায় তাদের এ হীন মানসিকতা আরো ঘৃণ্যভাবে ফুটে উঠেছে। [বোখারী : ৩৬৯৯]
ইসলাম ও তার নবীর ধৃষ্টতার ব্যাপারে এসব মৌলিক কারণগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। যেমন উচিত নয় তাদের সকলকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করা কিংবা তাদের সবার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা। কারণ, এ ধরনের মানসিকতা বিরোধিতা-বিদ্বেষকে উসকে দেয়, কোনো সমাধান দিতে পারে না। হ্যাঁ, মধ্যম পন্থা অবলম্বন করাই ইনসাফ ও ন্যায়সংগত। এটাই আমাদের ধর্ম তথা ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘‘তারা সকলে বরাবর নয়। আহলে কিতাবের একটি দল আছে, যারা রাতের ক্ষণে ক্ষণে দন্ডায়মান হালতে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে এবং তারা সেজদা করে।’’ [আলে ইমরান : ১১৩]
প্রথম বিষয়, পাশ্চাত্যের দেশসমূহে বিদ্যমান আহলে কিতাব তথা ইহুদ-নাসারাদের পাঁচটি গ্রুপ সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা।
প্রথম গ্রুপ : যারা অহংকারবশত সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে-ইসলামকে অস্বীকার করে। এ গ্রুপে আরো আছে, মূর্খ ও ধোঁকায় পতিত একদল অনুসারী, একমত পোষণকারী আরেক শ্রেণি।
দ্বিতীয় গ্রুপ : যারা ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানে না। তবে প্রথম গ্রুপে উল্লেখিত লোকদের প্রচার মোতাবেক ইসলাম সম্পর্কে ধারণা রাখে। তারা জ্ঞানের দিক দিয়ে অসহায়। মুসলমানদের উচিত তাদেরকে এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করা। তাদের সামনে দু’জাহানের নবী ও সত্য ধর্মের সঠিক পরিচয়-বিস্তারিত সংজ্ঞা তুলে ধরা। মার্জিতভাবে ইসলামের সৌন্দর্য তাদের সামনে তুলে ধরা। এ ব্যাপারে মুসলমানদের যে কোন ত্রুটি তাদের উপর জুলুম হিসেবে বিবেচিত হবে।
তৃতীয় গ্রুপ : এরা প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রুপের মাঝামাঝি অবস্থানকারী। এরা সত্যের জন্য আগ্রহ দেখায় না এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্যও করতে চায় না। এরা চোখ-কান বন্ধ করে এড়িয়ে চলতে চায়, গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকতে পছন্দ করে, যার অন্তরালে প্রবৃত্ত, কান্ডজ্ঞান হীনতা আর মূর্খতা। তাদের ব্যাপারে কর্তব্য হচ্ছে, তাদেরকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা, ইসলাম নিয়ে চিন্তা করার আহবান জানানো। তবুও তাদের সাড়া না মিললে প্রথম গ্রুপেই তাদের জ্ঞান করতে হবে।
চতুর্থ গ্রুপ : এরা হচ্ছে ইনসাফ ও ন্যায় নীতি বান পাশ্চাত্য সমাজ। এরা ইসলাম সম্পর্কে জানে, ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ এদের নিকট অনেকটা স্পষ্ট। আমাদের নবী সম্পর্কে তারা জ্ঞাত এবং তাকে সম্মানের চোখেই দেখে। তারা নবী মুহাম্মদের ব্যাপারে আবু তালেবের ভূমিকা পালনকারী এবং সেসব লোকের অবস্থান গ্রহণকারী যারা রাসূল সা.-কে নিরাপত্তা দিয়েছে এবং তার উপর থেকে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে।
উদাহরণ স্বরূপ : ফ্রান্সের গবেষিকা জুসলিন সিজারি, ব্রিটেনের সাংবাদিক রুপাট ফাঁসাক, আমেরিকার উরীগুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মারকুস ভূর্জ, ফ্রান্সের প্রখ্যাত গবেষক ফ্রান্সু বুর্জা তদ্রুপ সাবেক ক্যাথলিক ধর্মযাজক, ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদীবাদের উপর অনেক গ্রন্থ-প্রণেতা, লেখক, ব্রিটেনের কারিণী আর্মাষ্টরঞ্জ।
তদ্রুপ ইংরেজদের লিডার তিশারলার্জ। তিনি ইসলামের ব্যাপারে ইনসাফপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে কট্টর নীতির অপবাদ খন্ডন করেছেন। যে অপবাদ পাশ্চাত্য-জগৎ জোরপূর্বক ইসলামের উপর চাপাতে চায়। বিশেষ করে তিনি ইউরোপ মহাদেশের ভেতর ইসলামী সভ্যতা ও আদর্শের সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন এবং সাধারণভাবে সমগ্র পাশ্চাত্য জগতের উপর ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরেছেন।
এ ধরনের লোকদের সম্মান করা এবং তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা। তাদের ইসলামের প্রতি আহবান জানানো এবং আমাদের সে ব্যাপারে আগ্রহ রাখা। তারা তাদের অন্যান্য স্বজাতিদের মত নয়।
পঞ্চম গ্রুপ : পাশ্চাত্যের মুসলিম সম্প্রদায়। আমাদের উচিত তাদের ছায়া প্রদান করা, তাদের দুশমনদের সমুচিত জওয়াব দেয়া এবং তাদেরকে সঠিক ও সুন্দর দিক নির্দেশনা প্রদান করা।
দ্বিতীয় বিষয়, যা আমাদের অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন :
সে সকল বিষয়গুলো চিহ্নিত করা, যে কারণে পাশ্চাত্যের ইতর শ্রেণি ও মূর্খ গোষ্ঠী আমাদের নবীর উপর ধৃষ্টতার সাহস করেছে। অথচ বর্তমান যুগের যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিকস ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা একেবারেই সহজ।
প্রথম গ্রুপ : যারা অহংকারবশত সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে-ইসলামকে অস্বীকার করে। এ গ্রুপে আরো আছে, মূর্খ ও ধোঁকায় পতিত একদল অনুসারী, একমত পোষণকারী আরেক শ্রেণি।
দ্বিতীয় গ্রুপ : যারা ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানে না। তবে প্রথম গ্রুপে উল্লেখিত লোকদের প্রচার মোতাবেক ইসলাম সম্পর্কে ধারণা রাখে। তারা জ্ঞানের দিক দিয়ে অসহায়। মুসলমানদের উচিত তাদেরকে এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করা। তাদের সামনে দু’জাহানের নবী ও সত্য ধর্মের সঠিক পরিচয়-বিস্তারিত সংজ্ঞা তুলে ধরা। মার্জিতভাবে ইসলামের সৌন্দর্য তাদের সামনে তুলে ধরা। এ ব্যাপারে মুসলমানদের যে কোন ত্রুটি তাদের উপর জুলুম হিসেবে বিবেচিত হবে।
তৃতীয় গ্রুপ : এরা প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রুপের মাঝামাঝি অবস্থানকারী। এরা সত্যের জন্য আগ্রহ দেখায় না এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্যও করতে চায় না। এরা চোখ-কান বন্ধ করে এড়িয়ে চলতে চায়, গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকতে পছন্দ করে, যার অন্তরালে প্রবৃত্ত, কান্ডজ্ঞান হীনতা আর মূর্খতা। তাদের ব্যাপারে কর্তব্য হচ্ছে, তাদেরকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা, ইসলাম নিয়ে চিন্তা করার আহবান জানানো। তবুও তাদের সাড়া না মিললে প্রথম গ্রুপেই তাদের জ্ঞান করতে হবে।
চতুর্থ গ্রুপ : এরা হচ্ছে ইনসাফ ও ন্যায় নীতি বান পাশ্চাত্য সমাজ। এরা ইসলাম সম্পর্কে জানে, ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ এদের নিকট অনেকটা স্পষ্ট। আমাদের নবী সম্পর্কে তারা জ্ঞাত এবং তাকে সম্মানের চোখেই দেখে। তারা নবী মুহাম্মদের ব্যাপারে আবু তালেবের ভূমিকা পালনকারী এবং সেসব লোকের অবস্থান গ্রহণকারী যারা রাসূল সা.-কে নিরাপত্তা দিয়েছে এবং তার উপর থেকে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে।
উদাহরণ স্বরূপ : ফ্রান্সের গবেষিকা জুসলিন সিজারি, ব্রিটেনের সাংবাদিক রুপাট ফাঁসাক, আমেরিকার উরীগুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মারকুস ভূর্জ, ফ্রান্সের প্রখ্যাত গবেষক ফ্রান্সু বুর্জা তদ্রুপ সাবেক ক্যাথলিক ধর্মযাজক, ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদীবাদের উপর অনেক গ্রন্থ-প্রণেতা, লেখক, ব্রিটেনের কারিণী আর্মাষ্টরঞ্জ।
তদ্রুপ ইংরেজদের লিডার তিশারলার্জ। তিনি ইসলামের ব্যাপারে ইনসাফপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে কট্টর নীতির অপবাদ খন্ডন করেছেন। যে অপবাদ পাশ্চাত্য-জগৎ জোরপূর্বক ইসলামের উপর চাপাতে চায়। বিশেষ করে তিনি ইউরোপ মহাদেশের ভেতর ইসলামী সভ্যতা ও আদর্শের সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন এবং সাধারণভাবে সমগ্র পাশ্চাত্য জগতের উপর ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরেছেন।
এ ধরনের লোকদের সম্মান করা এবং তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা। তাদের ইসলামের প্রতি আহবান জানানো এবং আমাদের সে ব্যাপারে আগ্রহ রাখা। তারা তাদের অন্যান্য স্বজাতিদের মত নয়।
পঞ্চম গ্রুপ : পাশ্চাত্যের মুসলিম সম্প্রদায়। আমাদের উচিত তাদের ছায়া প্রদান করা, তাদের দুশমনদের সমুচিত জওয়াব দেয়া এবং তাদেরকে সঠিক ও সুন্দর দিক নির্দেশনা প্রদান করা।
দ্বিতীয় বিষয়, যা আমাদের অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন :
সে সকল বিষয়গুলো চিহ্নিত করা, যে কারণে পাশ্চাত্যের ইতর শ্রেণি ও মূর্খ গোষ্ঠী আমাদের নবীর উপর ধৃষ্টতার সাহস করেছে। অথচ বর্তমান যুগের যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিকস ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা একেবারেই সহজ।
প্রথম কারণ : ইসলাম এবং ইসলামের নবী সম্পর্কে মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে মারাত্মক গাফিলতি। তারা স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামকে ও তার নবীকে তাদের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি।
দ্বিতীয় কারণ : ইসলামের বিকৃত চেহারা তাদের সামনে তুলে ধরা। আর প্রচার করা যে এটাই হচ্ছে প্রকৃত ইসলাম, এ ধর্ম নিয়েই মুহাম্মদ দুনিয়ায় আগমন করেছেন। অথবা ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় এ ধরনের ঘোলাটে অবস্থার সৃষ্টি করা।
এতে সন্দেহ নেই যে, এ দু’টি কারণও পূর্বে উল্লেখিত ধৃষ্টতার জন্য সমান দায়ী। বিশেষ করে দ্বিতীয় কারণটি। এতে পাশ্চাত্যের মদদ সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করছি। এ ব্যাপারে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও, পরিপূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে আর এদের সহযোগী দালাল চক্র তা মাঠে-ময়দানে সক্রিয়ভাবে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে, তবে তারাও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। অর্থাৎ মদদদাতা-গোষ্ঠী ও দালাল-চক্র একে অপরের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়িত করছে।
দ্বিতীয় কারণ : ইসলামের বিকৃত চেহারা তাদের সামনে তুলে ধরা। আর প্রচার করা যে এটাই হচ্ছে প্রকৃত ইসলাম, এ ধর্ম নিয়েই মুহাম্মদ দুনিয়ায় আগমন করেছেন। অথবা ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় এ ধরনের ঘোলাটে অবস্থার সৃষ্টি করা।
এতে সন্দেহ নেই যে, এ দু’টি কারণও পূর্বে উল্লেখিত ধৃষ্টতার জন্য সমান দায়ী। বিশেষ করে দ্বিতীয় কারণটি। এতে পাশ্চাত্যের মদদ সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করছি। এ ব্যাপারে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও, পরিপূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে আর এদের সহযোগী দালাল চক্র তা মাঠে-ময়দানে সক্রিয়ভাবে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে, তবে তারাও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। অর্থাৎ মদদদাতা-গোষ্ঠী ও দালাল-চক্র একে অপরের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়িত করছে।
প্রাথমিক অবস্থাতেই ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভুল তথ্য প্রচার ও সম্প্রসারণে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়া।
পাশ্চাত্য কিংবা প্রাচ্যবিদদের সন্দেহগুলো নিরসনে গাফিলতি অথবা অযোগ্যতার পরিচয় দেয়া।
ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে দেশি-বিদেশি অপপ্রচারগুলো সংশোধনে ত্রুটি করা। কারণ যখন এর সাথে ইসলামকে সংশ্লিষ্ট করা হয় এবং মানব সমাজকে এ ধারণা দেয়া হয় যে, মুহাম্মদ এ ধর্ম নিয়েই এসেছেন, তখন এর অপনোদন করা না হলে এবং ইসলাম ও তার নবীর সাথে এর কোনও সম্পর্ক নেই সমানভাবে প্রচার না করলে, প্রকারান্তরে তাদের বক্তব্য ও মন্তব্যের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। আর মানুষের মগজে বদ্যমূল হয়ে যায় যে, এসব কিছুই সঠিক। বলাবাহুল্য এর সঠিক বিহিত গ্রহণ করা না হলে মুসলিম সমাজেও এর বিস্তার ঘটতে বাধ্য।
আমাদের মতে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের এসব কারণেই পাশ্চাত্য জগৎ ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট ধারণা থেকে বঞ্চিত।
এর সাথে আরেকটি শক্তিশালী ও কার্যকরী কারণ যুক্ত করা যায়, আর তা হচ্ছে মুসলমানদের দুর্বলতা। তাদের আধুনিক আবিষ্কার থেকে পশ্চাৎ বিমুখতা। অন্যথায় পাশ্চাত্যজগতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে সমীহ করার রেওয়াজ বিদ্যমান। আর এ জন্যই বর্তমান ক্যাথলিক সম্প্রদায় প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়কে গাল মন্দ করে না। এর বিপরীতও হয় না। আবার তারা কেউ ইহুদিদের গাল মন্দ করে না। অথচ ঐতিহাসিক ঘটনাবলী অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, তাদের ভেতর অনেক মত বিরোধ ও মত পার্থক্য রয়েছে। কারণ, কথা একটাই শক্তিশালী সম্প্রদায়কে সম্মান দিতে হবে। কোনো এক কবি বলেছেন : ‘‘তুমি দেখবে, তারা যাকে দুর্বল মনে করে, তার উপর জুলুম করছে; আর যাকে শক্তিশালী কিংবা বীর মনে করে, তার থেকে বিরত থাকে।’’ মানুষ শক্তের ভক্ত, নরমের যম।
পাশ্চাত্য কিংবা প্রাচ্যবিদদের সন্দেহগুলো নিরসনে গাফিলতি অথবা অযোগ্যতার পরিচয় দেয়া।
ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে দেশি-বিদেশি অপপ্রচারগুলো সংশোধনে ত্রুটি করা। কারণ যখন এর সাথে ইসলামকে সংশ্লিষ্ট করা হয় এবং মানব সমাজকে এ ধারণা দেয়া হয় যে, মুহাম্মদ এ ধর্ম নিয়েই এসেছেন, তখন এর অপনোদন করা না হলে এবং ইসলাম ও তার নবীর সাথে এর কোনও সম্পর্ক নেই সমানভাবে প্রচার না করলে, প্রকারান্তরে তাদের বক্তব্য ও মন্তব্যের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। আর মানুষের মগজে বদ্যমূল হয়ে যায় যে, এসব কিছুই সঠিক। বলাবাহুল্য এর সঠিক বিহিত গ্রহণ করা না হলে মুসলিম সমাজেও এর বিস্তার ঘটতে বাধ্য।
আমাদের মতে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের এসব কারণেই পাশ্চাত্য জগৎ ইসলাম ও তার নবী সম্পর্কে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট ধারণা থেকে বঞ্চিত।
এর সাথে আরেকটি শক্তিশালী ও কার্যকরী কারণ যুক্ত করা যায়, আর তা হচ্ছে মুসলমানদের দুর্বলতা। তাদের আধুনিক আবিষ্কার থেকে পশ্চাৎ বিমুখতা। অন্যথায় পাশ্চাত্যজগতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে সমীহ করার রেওয়াজ বিদ্যমান। আর এ জন্যই বর্তমান ক্যাথলিক সম্প্রদায় প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়কে গাল মন্দ করে না। এর বিপরীতও হয় না। আবার তারা কেউ ইহুদিদের গাল মন্দ করে না। অথচ ঐতিহাসিক ঘটনাবলী অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, তাদের ভেতর অনেক মত বিরোধ ও মত পার্থক্য রয়েছে। কারণ, কথা একটাই শক্তিশালী সম্প্রদায়কে সম্মান দিতে হবে। কোনো এক কবি বলেছেন : ‘‘তুমি দেখবে, তারা যাকে দুর্বল মনে করে, তার উপর জুলুম করছে; আর যাকে শক্তিশালী কিংবা বীর মনে করে, তার থেকে বিরত থাকে।’’ মানুষ শক্তের ভক্ত, নরমের যম।
এক : মুসলমানদের প্রভাব বলয় থেকে এ সব অপবাদ ও মিথ্যাচার দূর করা। মুসলমানদের সমাজ পরিশুদ্ধ করা এবং যে সব জিনিস ইসলামের অন্তর্ভুক্ত নয় সেগুলোকে কঠোরভাবে রহিত-উচ্ছেদ করা। রাসূলের আনীত সঠিক ধর্মকে সকলের সামনে উপস্থাপন করা। সাথে সাথে হিকমত, যুক্তি ও উপদেশের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত অব্যাহত রাখা।
দুই : বাতেলপন্থী এবং যারা ইসলামের প্রতি ঈর্ষান্বিত তাদেরকে দমন করা। তাদের মিথ্যাচার দূর করা। যাতে মানুষের সামনে স্বচ্ছ-স্পষ্ট ইসলাম পৌঁছে যায়, যে ইসলাম নিয়ে রাসূল সা. আগমন করেছেন।
তিন : আমরা যাতে একটি শক্তিশালী জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতে পারি সে জন্য পরিকল্পনা-পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কারণ, শক্তিশালী সম্প্রদায় ভীতির কারণ। তাদের সবাই সম্মান করে। তাদের সামনে ঔদ্ধত্যশীল সম্প্রদায় অন্যায় উক্তি করতে ও ধৃষ্টতা দেখাতে সাহস করে না। জ্বালাও পোড়াও নীতিতে বিশ্বাসী কট্টরপন্থী ইহুদিরা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী শ্রেণি ক্ষমতার জোরে সব নিয়ম-কানুন নিজের করে নিয়েছে। উল্টো তাদের অন্যায় আচরণের জন্য যে সমালোচনা করে তাকেই অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘তাদের জন্য তোমরা যথাসাধ্য শক্তি সঞ্চয় কর এবং ঘোড়ার বহর। এর মাধ্যমে তোমরা আল্লাহ ও তোমাদের দুশমনদের ভীতি প্রদর্শন করবে। এবং এদের ছাড়াও অনেককে, যাদের তোমরা জান না, আল্লাহ তাদের জানেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর রাস্তায় খরচ কর, তার প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে, তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না।’’ [আনফাল : ৬০]
সাথে সাথে আমাদের প্রয়োজন আল্লাহর শরাণাপন্ন হওয়া এবং তার উপর ভরসা করা, বিপদগামী-পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য দোয়া করা এবং হক জানা ও তার অনুসরণ করা। সহিহ বোখারীতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন : রাসূল সা. এর সে অবস্থাটি আমার এখনো মনে পরছে : তিনি একজন নবীর ঘটনা বর্ণনা করতে ছিলেন, যার কওম তাকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল আর সে মুখ থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলছিল : ‘‘আল্লাহ! তুমি আমার কওমকে হেদায়েত দাও, কারণ তারা জানে না।’’
আমাদের আরো প্রয়োজন, কাফেরদের ভেতর যারা যালেম, অহংকারী, সত্য বিমুখ ও দ্বীনের সাথে উপহাস করে, তাদের ধ্বংসের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা। এবং, তাদের ভেতর যারা গুমরাহ, নিরহংকার, দিক ভ্রান্ত, আমাদের সাথে যুদ্ধ কিংবা প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয় না তাদের জন্য দোয়া করা। বিশেষ করে তাদের জন্য যারা ইসলাম ও তার নবীর উপর থেকে সকল অন্যায় প্রতিহত করে।
সমাপ্ত
দুই : বাতেলপন্থী এবং যারা ইসলামের প্রতি ঈর্ষান্বিত তাদেরকে দমন করা। তাদের মিথ্যাচার দূর করা। যাতে মানুষের সামনে স্বচ্ছ-স্পষ্ট ইসলাম পৌঁছে যায়, যে ইসলাম নিয়ে রাসূল সা. আগমন করেছেন।
তিন : আমরা যাতে একটি শক্তিশালী জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতে পারি সে জন্য পরিকল্পনা-পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কারণ, শক্তিশালী সম্প্রদায় ভীতির কারণ। তাদের সবাই সম্মান করে। তাদের সামনে ঔদ্ধত্যশীল সম্প্রদায় অন্যায় উক্তি করতে ও ধৃষ্টতা দেখাতে সাহস করে না। জ্বালাও পোড়াও নীতিতে বিশ্বাসী কট্টরপন্থী ইহুদিরা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী শ্রেণি ক্ষমতার জোরে সব নিয়ম-কানুন নিজের করে নিয়েছে। উল্টো তাদের অন্যায় আচরণের জন্য যে সমালোচনা করে তাকেই অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘তাদের জন্য তোমরা যথাসাধ্য শক্তি সঞ্চয় কর এবং ঘোড়ার বহর। এর মাধ্যমে তোমরা আল্লাহ ও তোমাদের দুশমনদের ভীতি প্রদর্শন করবে। এবং এদের ছাড়াও অনেককে, যাদের তোমরা জান না, আল্লাহ তাদের জানেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর রাস্তায় খরচ কর, তার প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে, তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না।’’ [আনফাল : ৬০]
সাথে সাথে আমাদের প্রয়োজন আল্লাহর শরাণাপন্ন হওয়া এবং তার উপর ভরসা করা, বিপদগামী-পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য দোয়া করা এবং হক জানা ও তার অনুসরণ করা। সহিহ বোখারীতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন : রাসূল সা. এর সে অবস্থাটি আমার এখনো মনে পরছে : তিনি একজন নবীর ঘটনা বর্ণনা করতে ছিলেন, যার কওম তাকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল আর সে মুখ থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলছিল : ‘‘আল্লাহ! তুমি আমার কওমকে হেদায়েত দাও, কারণ তারা জানে না।’’
আমাদের আরো প্রয়োজন, কাফেরদের ভেতর যারা যালেম, অহংকারী, সত্য বিমুখ ও দ্বীনের সাথে উপহাস করে, তাদের ধ্বংসের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা। এবং, তাদের ভেতর যারা গুমরাহ, নিরহংকার, দিক ভ্রান্ত, আমাদের সাথে যুদ্ধ কিংবা প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয় না তাদের জন্য দোয়া করা। বিশেষ করে তাদের জন্য যারা ইসলাম ও তার নবীর উপর থেকে সকল অন্যায় প্রতিহত করে।
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন