মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রাসূলের শানে সমসাময়িক ধৃষ্টতা আকার-প্রকৃতি ও নেপথ্য কাহিনী
লেখকঃ নাসের বিন সুলাইমান আল-উমর
৮
দ্বিতীয়ত :
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/428/8
অনেক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের পক্ষ থেকেও ইসলামের উপর আঘাত এসেছে। যেকোনো চিন্তাশীল ব্যক্তিই বুঝতে সক্ষম যে, এটা কোনো মূর্খ কিংবা ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিদের তরফ থেকে হয়নি। বরং এমন ব্যক্তিদের তরফ থেকে হয়েছে, যাদের ধর্ম সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। আরো বলতে হয়, ইসলামের উপর এ আঘাত নাসারাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের নিকট থেকেই এসেছে। যারা ক্যাথলিক কিংবা প্রোটেস্টান্ট উভয় জাতির-ই লিডার অথবা ধর্মীয় গুরু।
ক্যাথলিক গুরুর নিকট অতীতের কথাই ধরা যাক। যে কথা বলে সে, ক্ষমা প্রার্থনা করতেও অস্বীকার করেছে। অধিকন্তু সে মুসলমানদের ভুল বুঝা-বুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। কারণ, এর দ্বারা অনেক খ্রিস্টান সম্প্রদায় মুসলমানদের পক্ষ থেকে তিরস্কারের পাত্র হয়েছে।
একজন খ্রিস্টান অগ্র পথিক ও ধর্মীয় লিডার যখন এমন সব বাক্য ভর মজলিসে বলতে পারে, তখন তার চেয়ে ছোট যারা আছে, তাদের আর কি বলা? যাদের কথার এ তোটা গুরুত্ব কিংবা এ তোটা মূল্য নেই।
এ ছাড়াও তার আরো এমন কিছু বাক্য আছে, যার মাধ্যমে সে ইসলামের উপর কটাক্ষ করেছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, অনেকে বলে বেড়ায় এ লোক শুধু বর্ণনাকারী। মনে হয় এর দ্বারা তার উপর থেকে সে অপরাধ হটিয়ে দিতে চায়। কাজি আয়াজ রহ. বলেছেন, ‘‘যদি এই বর্ণনাকারীর ব্যাপারে এ অভিযোগ উঠে যে, সে নিজে বানিয়ে অন্যদের ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছে, অথবা এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, অথবা সে এটাকে খুব ভালো মনে করছে, অথবা এতে সে চরমভাবে আত্মনিয়োগ করেছে, অথবা একে সে সাধারণ জ্ঞান করছে, অথবা সে এমন জিনিস গুলো সংরক্ষণ করে ও এমন সব জিনিস সে অনুসন্ধান করে এবং রসুলের কুৎসা ও গাল-মন্দ সমৃদ্ধ কবিতা আবৃতি করে বর্ণনা করে; এ ধরনের ব্যক্তির হুকুম স্বয়ং গাল-মন্দ করার ব্যক্তির ন্যায়। তার কথাই গ্রহণ করা হবে, অন্যের দিকে নিসবত করার কোনো ওজুহাত শোনা হবে না। তাকে দ্রুত হত্যা করা হবে এবং তাকে জাহান্নামে পাঠানোর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ [আশশিফা : ২/২০৯] এ জন্যই রাসূল সা. ইবনে খাতালের দু’জন বাদিকে হত্যা করেছেন। তারা রসুলের শানে ধৃষ্টতা মূলক কবিতা আবৃতি করত। অথচ তারা তা বানায়নি, বানিয়েছে অন্যরা। কিন্তু তারা এমনভাবে আবৃতি করত, যাতে তাদের সম্মতি ও সাড়া ছিল।
প্রোটেস্টান্ট খ্রিস্টানদের নমুনা হচ্ছে; আজ থেকে চার বছর আগে প্রায় ১৪২৩ হিজরিতে আমেরিকায় পুরোহিতরা সমবেতভাবে আমাদের রাসূল ও তার পবিত্র সত্তায় কলঙ্ক লেপনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে ছিল।
তাদের অন্যতম জেরি ফালওয়েল- এ বৎসর রবিউল আখেরে সে মারা গেছে- যে ‘হারমাজদুন যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া এখনই জরুরি’ নামে একটি বই লিখেছে। সে এ কিতাবের শুরুতে আমাদের রসুলের বিক্রীত চরিত্র উল্লেখ করেছে।
তার কথা উল্লেখ করার আগে আরেকটি কথা বলে নেই যে, বুশ প্রশাসন গত ১৬ অক্টোবর ২০০২ সনে পুরোহিত বাত রুবাস্ত্তন ও জেরি ফালওয়েলকে পুরস্কৃত করেছে। যেহেতু তারা উভয় রক্ষণশীল ডান পন্থী ও রিপাবলিকান গ্রুপকে সহায়তা করেছে।
এ অপোগন্ড বলেছে, ‘‘আমার গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, ঈসা ভালোবাসা ও মহববতের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তদ্রুপ একাজটি মুসাও সম্পাদন করেছে, কিন্তু মুহাম্মদ করেছে এদের বিপরীত কাজটি।’’ সে ৬ অক্টোবর ২০০২ সনে প্রকাশিত ৬০ মিনিটের একটি প্রোগ্রামে বলেছে, ‘‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মুহাম্মদ একজন সন্ত্রাসী ছিল। আমি মুসলমান-অমুসলমানদের লিখিত অনেক কিছুই পড়েছি, যার দ্বারা প্রতীয়মান মুহাম্মদ সহিংসতা প্রিয় ছিল।’’ যুদ্ধবাজ এ লোকটি সন্ত্রাসের সংজ্ঞা দিচ্ছে! আমাদের বোধ হচ্ছে না সে মুসলমানদের লিখিত কি পড়েছে? সে কি মুহাম্মদের ব্যাপারে এ আয়াতটি পড়েছে?- ‘‘আমি আপনাকে জগৎবাসীর জন্য শুধু রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’’ [আম্বিয়া : ১০৭]
আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, রহমতের নবী মুহাম্মদ সা. এর উপর অপবাদ আরোপকারী এ পাদরীকে আমেরিকার ডানপন্থী অঙ্গরাজ্যে ইহুদীবাদী রাষ্ট্রের হিতাকাঙ্ক্ষী ও সাহায্যকারী জ্ঞান করা হয়। এ পাদরী এমনও বলেছে যে, ‘‘আমাদের সাথে সত্তুর মিলিয়ন জনশক্তি বিদ্যমান আছে। যদি এ সরকার ইসরালের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে অথবা তার অর্থনৈতিক স্বার্থ কিংবা তার অস্তিত্বের উপর আঘাত হানে, তবে পুরো খ্রিস্ট জগতে এ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সৃষ্টি হবে।’’ ১৪ এপ্রিল ‘‘ইউ, এস, এ টুডে অফ আমেরিকা’’ ফালওয়েলের একটি প্রবন্ধ ছাপিয়েছে। যাতে ফালওয়েল ডেমোক্রেডিড প্রশাসনের প্রধান বিল ক্লিন্টনের কঠোর সমালোচনা করেছে। কারণ, তার ধারণা ক্লিন্টন প্রশাসন আমেরিকার শান্তি যুক্তি মানতে ইসরাইলের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। সে তার প্রবন্ধে বলেছে : ‘‘যারা সুনিশ্চিতভাবে জ্ঞান করে যে, ইবরাহিমের ওয়াদা ইসরাইলের ভূ-খন্ডের ব্যাপারেই, তাদেরকে আমেরিকার এ চাপ সৃষ্টি গভীরভাবে মর্মাহত করে।’’ এখানে আমরা ইংরেজদের ঈমানেরও ইঙ্গিত পাই। তাদের বিশ্বাস আল্লাহ তাআলা ইবরাহিমের সাথে ওয়াদা করেছেন যে, তিনি ইসরাইল ভূ-খন্ড ইহুদিদের ফিরিয়ে দেবেন।
লক্ষ্য করুন : যে ইহুদিরা বৃদ্ধ লোকদের হত্যা করছে, অন্যের জমি জবর দখল করছে, গাছ-পালা ও পশু-জানোয়ার ধ্বংস করছে- তাদের সে প্রশংসা করে আর যে নবী রহমত, বিশ্ব জাহানের নেয়ামত ও গৌরব, সে নবীর উপর কলঙ্কের তীর নিক্ষেপ করছে?
এ কাফেরের উক্তি তার পূর্বের কাফেরের উক্তিকেও হারমানায়। ইরশাদ হচ্ছে : ‘‘অতঃপর মুসা যখন উভয়ে শত্রুকে শায়েস্তা করতে চাইলেন, তখন সে বলল, গত-কাল্য তুমি যেমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ছিলে, সেরকম আমাকেও হত্যা করতে চাও? তুমি দুনিয়াতে স্বৈরাচারী হতে চাচ্ছ, সন্ধি স্থাপন কারী হতে চাও না।’’ [সুরায়ে কাসাস : ১৯] এটা নবী মুসার জীবনে ঘটে যাওয়া নবুওয়ত প্রাপ্তির আগের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যেখানে সামান্য ভুলও রয়েছে। কিন্তু ফালওয়েলের এ উক্তি তো অনেকটা ফেরাউনের ঔদ্ধত্যের মত! সে বলেছে : ‘‘আমাকে সময় দাও, আমি মুসাকে হত্যা করে নেই, পারলে সে তার প্রভুকে ডাকুক। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে তোমাদের ধর্ম বিক্রীত করে দেবে অথবা পৃথিবীর বুকে অশান্তির ঝড় বইয়ে দেবে।’’ [গাফের / মোমেন : ২৬] ফেরআউনের অবাধ্য জাতি বলেছে : ‘‘তুমি কি মুসা ও তার সম্প্রদায়কে এমনিই ছেড়ে দেবে?- যে তারা ভূ-পৃষ্টে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে, পরিত্যাগ করবে তোমাকে ও তোমার প্রভুকে।’’ [আরাফ : ১২৭] ইহুদিদের কিতাব তালমুদের ভেতর ইয়াসু (নবী মুসা) সম্পর্কে তারা বলা হয়েছে: ‘‘ইয়াসু বনি ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে, ধ্বংস করে দিয়েছে তাদের।’’ কোথায় পার্থক্য ফেরআউন, তার সম্প্রদায় এবং ইহুদি জাতির মাঝে?
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের আরেকটি উদাহরণ : পাদরী ‘পাট রুবাটসুন’ বুশকে সমর্থ দান কারীর একজন। ২০০০ মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বুশের বিজয়ী হওয়ার ভেতর তার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বুশকে সমর্থনকারী খ্রিস্টান ডানপন্থী জোটের নেতৃত্ব তার হাতেই ছিল। তার সম্পর্কে বুশের প্রতিদ্বন্দ্বী ‘জোনমাকি’ অভিযোগ করে বলেছে, ‘‘বুশ তাকে বড় ধরনের অর্থ উপঢৌকন দিয়েছে।’’ সে জেরি ফালওয়েলের সাথে তাকে সম্মানিত করার কথাও উল্লেখ করেছে। ২০০০ মার্চে বুশকে মনোনয়ন দেয়ার রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনটি উদ্বোধন করা হয় ‘‘নবী ঈসার উপর লিখিত তারানার’’ মাধ্যমে। সেখানে বুশ ঘোষণা করেছে, আমি খ্রিস্টান ডানপন্থীদের একজন।
‘পাট রুবাটসুন’ ‘হ্যানিটি কলামস’ নামক সভায় বলেছে যা ‘ফক্স নিউজ’ ওয়েব সাইটে প্রচার করা হয়েছে ‘‘আমি বলছি, এ কুরআন ইহুদিদের আকীদা-বিশ্বাস থেকে চুরি করা কতগুলো জিনিসের সমন্বয়। মুহাম্মদ এর ভেতর বিভিন্ন পরিবর্তন করেছে এবং এর মাধ্যমে সে মদিনাতে ইহুদি খ্রিস্টানদের মাঝে নিধন-যজ্ঞ চালিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি : ‘‘এ ব্যক্তি (মুহাম্মদ) যুদ্ধবাজ ও রক্তপিপাসু ছিল।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘সন্ত্রাসবাদ প্রায় তার নেশায় পরিণত হয়ে ছিল। শুধু কয়েকজন কট্টরপন্থীদের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তুমি একটি কুরআন ক্রয় করে নিজে পড়ে দেখ, কুরআন তোমাকে বিবাদ-সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার শিক্ষা দিবে।’’
তাকে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু, পুনরায় সে তার ইদানীংকালের প্রকাশনা ‘দি নেম’ নামক গ্রন্থের ৭১ নং পৃষ্ঠায় বলেছে, ‘‘একজন যুদ্ধবাজ ব্যক্তি ইসলামের ভিত্তি রেখেছে, যার নাম মুহাম্মদ। তার শিক্ষার ভেতর ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন কৌশল বিদ্যমান রয়েছে। যেমন প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সামরিক অভিযান পরিচালনা কিংবা সহিংসতা ইত্যাদির সৃষ্টি করা।’’ সে আরো বলেছে, ‘‘ইসলাম খৃষ্টবাদের বিপরীত, তার মূল শিক্ষার ভেতর রয়েছে অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে বিদ্বেষ খেদ ও চরমপন্থা।’’ রাসূল সা. সম্পর্কে তার বাক্য লক্ষ্য করুন, ‘‘সে তার অনুসারীগণকে মুশরিকদের হত্যা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করত। সে চরমপন্থার সর্বশেষ উদাহরণ ছিল। সে লুলোপ, ডাকাত। তার দাওয়াতে রয়েছে ধোঁকা ও প্রতারণা। কুরানের ৮০%ভাগ নকল করা হয়েছে ইহুদি-নাসারাদের ধর্ম গ্রন্থ থেকে। অতঃপর ইহুদি খ্রিস্টানদের হত্যার জন্য এগুলোতে মন মত পরিবর্তন এনেছে।’’
তাদের এ বক্তব্যের সাথে ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র বক্তব্যের সাথেও মিলিয়ে নেই। যেমন ‘তালমুদে’ আছে, ‘‘খ্রিস্টান হলো সে ব্যক্তি যে মিথ্যা শিক্ষার অনুসরণ করে। তাদের যে ধর্মীয় ব্যক্তি রবিবার দিন গির্জায় বসে এবাদতের আহবান করে, সেই এ মিথ্যার ফুল-ঝুড়ি তৈরি করে।’’ ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর আরো আছে, ‘‘ঈসা মসিহ ছিল, যাদুকর ও মূর্তিপূজক।’’ তারা আরো বলেছে, ‘‘খ্রিস্টান ‘ঈয়াসু’ জাহান্নামের গভীর প্রকোষ্ঠে বিদ্যমান।’’ ‘‘ঈয়াসু’ বনী ইসরাইলকে বিপদগামী করেছে, বিনষ্ট করেছে ও ধ্বংস করেছে।’’ আল্লাহ সত্যিই বলেছেন : ‘‘এরকমই আপনার পূর্বে যত নবি-রাসূল এসেছেন, তাদের সকলকেই তারা যাদুকর অথবা পাগল বলে আখ্যায়িত করেছে। অধিকন্তু তারা এ জন্য একে অপরকে উদ্বুদ্ধ করত। তারা সীমালঙ্ঘণকারী সম্প্রদায়।’’ [জারিয়াত : ৫২-৫৩] ‘‘তাদের পরস্পর অন্তরসমূহ একই ধরনের।’’ [আল-বাকারা : ১১৮]
পাটরুবাটসুন সে মজলিসে তার পূর্বসুরীদের মন্থনকৃত আরো অনেক মিথ্যাচার, প্রলাপের পুনরুক্তি করেছে। যার কতক মিথ্যাচারের উত্তর পবিত্র কুরআনেও বিধৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘‘আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় ডান হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লেখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।’’ [আল-আনকাবুত : ৪৮] ‘‘আমি নিশ্চিতভাবে জানি, তারা বলে, তাকে তো শিক্ষা দেয় জনৈক ব্যক্তি। তারা যার প্রতি ইঙ্গিত করছে, তার ভাষা হচ্ছে অনারব, আর এটা হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবি ভাষা।’’ [নাহাল : ১০৩]
আরো একবার তাদের মিথ্যাচার লক্ষ্য করুন। যে সকল কাফের সম্প্রদায় অনাচার সৃষ্টি করেছে, যারা মক্কা-মদিনায় মুসলমানদের সাথে নির্মম ব্যবহার করেছে, চুক্তি ভঙ্গ করেছে, ওয়াদার খেলাপ করেছে, বার বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তার অনেক অনুসারীদের হত্যা করেছে, সে কাফেরদের বানাচ্ছে মজলুম, উৎসর্গিত। আর নির্দোষ মুসলমানদের বানাচ্ছে অনাচার সৃষ্টিকারী!
তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিদের তৃতীয় আরেকটি উদাহরণ। জেরী ফায়েঞ্জ : দক্ষিণ মামাদানি গির্জার বাৎসরিক জলসার সাবেক চেয়ারম্যান। বুশ যার ভূয়েশী প্রশংসায় বলেছে : সে আমাদের ধর্ম সম্পর্কে স্পষ্টভাষী। বুশ তাকে প্রথম সারির ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনোনীত করেছে। এ ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলে : ‘‘...তিনি ছিলেন অরুচির মানুষ। বাচ্চাদের প্রতি ছিলেন আসক্ত। বারজন নারী বিবাহ করেছেন। সর্ব শেষ ছোট এক মেয়েকে বিবাহ করেছেন, যার বয়স মাত্র নয়...’’
এটি অনভিজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় মুর্খোচিত উক্তি। নিরেট মিথ্যা অপবাদ, যার পেছনে কোন দলিল নেই। এর প্রতিবাদে আমাদের এতটুকু জানিয়ে দেয়াই যথেষ্ট যে, রাসূল সা. প্রথম যে নারীকে বিবাহ করেছেন, সে রাসূলের চেয়ে পনেরো বছরের বড় ছিল। এটাই ঐতিহাসিকদের বিশুদ্ধ মত। রাসূল সা. যখন আয়েশা রা. কে ঘরে তুলে আনেন, তখন তার বয়স ছিল নয়। সে যুগে রাসূলের এ বিবাহকে কেউ নিন্দার চোখে দেখেনি। এমনকি সে যুগের মুনাফেক, যারা জেরী ফায়েঞ্জের ন্যায় সমানভাবে রাসূল সা. এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তার চরিত্রের উপর কলঙ্ক লেপনে সিদ্ধ হস্ত ছিল, তারাও এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। কারণ, তারা সে যুগের বাস্তবতা এবং পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিল। সে সমাজে মেয়েরা যখন নয় বছরে পদার্পণ করত কিংবা পূর্ণরূপে নারীত্ব বিকশিত হত, তখনই মেয়েদের বিয়ে দেয়া হত। এ জন্যই রাসূল সা. আয়েশাকে নয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ঘরে তুলে নেননি, অথচ তাকে হিজরতের তিন বছর আগেই বিয়ে করে ছিলেন। অধিকন্তু রাসূল সা. তাকে ভিন্ন অন্য কোনো কুমারী নারী বিয়ে করেননি। অথচ তিনি নিজ গোত্রের অধিপতি বরং সমগ্র মানবজাতির সরদার ছিলেন।
এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য, আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, নবীদের হত্যাকারী ও পাপাচারদের ইতিপূর্বের ধৃষ্টতাকে। যা তারা নবী ঈসা ও তার মাতার ব্যাপার করেছে। ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ‘তালমুদে’র ভেতর মরিয়মকে অসামাজিক কাজে কলঙ্কিত নারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সেখানে তারা বলেছে, ‘‘ঈসা হচ্ছে অবৈধ সন্তান, তার মা এক ঋতু পরিমাণ সময় সৈনিক বান্দিরার সঙ্গ গ্রহণ করে গর্ভবর্তী হয়েছে।’’ দ্বিতীয় সামুঈল গ্রন্থের একটি পূর্ণ অধ্যায় জুড়ে লিপিবদ্ধ আছে যে, নবী দাউদ আ. স্বীয় সৈনিক উরিয়্যা আল-হিসসির স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন। যে অধ্যায়ের নামকরণ করেছে তারা, ‘‘দাউদের ধোঁকা ও বিচ্যুতি।’’ তাদের ধারণায় দাউদ আ. সৈনিক উরিয়্যাকে মারা যাওয়ার উদ্দেশ্যেই যুদ্ধে প্রেরণ করেছেন। যাতে তার স্ত্রীর পাণি গ্রহণের পথ সুগম হয়। দাউদ আ. উরিয়্যার স্ত্রীর সাথে আগেও যৌনকর্ম করেছে, যার ফলে উরিয়্যার স্ত্রী দাউদের দ্বারা গর্ভবতী পর্যন্ত হয়েছে। এখানে একটি মজার ব্যাপার হল, তাদের কথিত মজলুম উরিয়্যার ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, উরিয়্যা খুব কম বয়সের একটি মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছে। সে ছোট বাচ্চার মত উরিয়ার কোলে ঘুমাত। এত সত্ত্বেও তারা উরিয়্যার ব্যাপারে কোন বিরূপ বা অশোভন মন্তব্য করেনি। যার দ্বারা আমাদের নিকট স্পষ্ট, রাসূলের উপর তাদের ঘৃণ্য মন্তব্য সাপেক্ষ-পুষ্ট।
রাসূল সা. নয়জন স্ত্রী গ্রহণ করেছেন এজন্য তারা রাসূল সা. এর কুৎসা রটনা করেছে। এর বিপরীতে নবী দাউদ আ. এর উপর এরকম জঘন্য অপবাদ সত্ত্বেও তাদের মূল গ্রন্থসমূহে খুব সম্মানের সহিত-ই তার উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এর একদশমাংশও আমাদের নবীর মাঝে নেই। অধিকন্তু তারা নবী সুলাইমান আ. এর ব্যাপারে বলেছে যে, তার সাত শত স্ত্রী ছিল, আর তিন শত জন ছিল রক্ষিতা। সে নারীরা-ই নবী সুলাইমানকে আল্লাহ বিমুখ করে দিয়েছিল। তারা আলো বলেছে : ‘‘সুলাইমান অনেক অনেক অপরিচিত নারীর স্বাদ গ্রহণ করেছে; কাম-স্বার্থ চরিতার্থ করেছে তাদের থেকে; অথচ তাদের বিয়ে করেনি।’’ তাদের আরো ধারণা যে, ‘‘নবী লূত আ. মদ পান করে নিজের দুই কুমারী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।’’
আশ্চর্য! এটাই যাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রকৃতি, তারা কীভাবে আল্লাহ কর্তৃক হালাকৃত আমাদের নবীর স্ত্রীদের ব্যাপারে খারাপ মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখায়!? যার যুক্তি সংগত কারণও সবার নিকট স্পষ্ট। হাজারও প্রমাণ রয়েছে, যার দ্বারা আমরা বলতে পারি রাসূল সা. ভোগ বিলাস কিংবা যৌন ভোগের জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করেননি।
সর্ব শেষ একটি বিষয়ে অবগত করা খুব সংগত মনে হচ্ছে যে, এ সকল পুরোহীতগণ পরিকল্পিত ও বিশাল জন সমাবেশে সাজিয়ে গুছিয়ে ও রং চড়িয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। এটা কোন অনিচ্ছাকৃত কিংবা মুখ ফসকে যাওয়া বিচ্যুতি নয়। বরং এ সকল বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তারা শত্রুতা ও বৈরিতা ছড়িয়ে দিতে চান। লক্ষ্য করুন : আমাদের নবীর শানে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ও মিথ্যাচার করার জন্য ‘জেরী ফায়েঞ্জ’ আমেরিকার মায়সুরী রাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের বাৎসরিক জলসাকে-ই যথাযথ বিবেচনা করেছে। এখানেই সে ক্ষান্ত হয়নি, সে আরো বলেছে : ‘‘যে আল্লাহর প্রতি মুসলমানরা বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ আর খ্রিস্টানরা যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সে আল্লাহ এক নয়।’’ সে আরো বলেছে : ‘‘আল্লাহ কখনো মানুষ হত্যা আর ত্রাস সৃষ্টির জন্য মুহাম্মদকে পাঠায়নি?’’ তার মনোবৃত্তিই প্রমাণ করে যে, এসব হচ্ছে আমাদের নবী সা. এর উপর মিথ্যা অপবাদ। এত সত্ত্বেও সে গণতান্ত্রিক দল ও তার নেতৃবৃন্দের প্রশংসার পাত্র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/428/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।