hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম প্রচারে মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল-খাতির রহ.

১৩
ব্যক্তিত্বের নিরুপন
এখানে আমাদের আর একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় রয়ে গেছে, আর তা হচ্ছে- আমরা কিভাবে মানুষের ব্যক্তিত্বকে নির্ণয় করবো ও কিভাবে তা চিনবো? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বে আমাদের জানতে হবে ব্যক্তিত্বটা কি?

মানব ব্যক্তিত্ব সেটা রকমারি বৈশিষ্ট্য ও বিচিত্র শক্তির মুল, যার দ্বারা প্রত্যেকটি মানুষকে অন্যদের থেকে আলাদা করা যায়। অথবা নির্দিষ্ট গুনাবলী যার দ্বারা একজন গুনান্বিত, অন্য জন নয়। এই বৈশিষ্ট্য ও গুনাবলী মানুষের কর্মতৎপরতা ও তার উপর সংঘঠিত ঘটনা প্রবাহ থেকে চয়নকৃত হবে। আমরা লক্ষ করবো সে মানুষের সঙ্গে কিরূপ আচরণ করছে? বিভিন্ন ঘটনার সম্মুখীন হলে সে কি ভাবে কর্মতৎপরতা চালায়। তার দৃষ্টিভঙ্গি কি এবং ঝোক কোন দিকে? চাই সেটা উত্তরাধিকার সুত্রে জন্মগত হউক বা অর্জিত ; তাও আমাদেরকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বতন্ত্র আকর্ষণ থাকতেই পারে, থাকাটাও জরূরী। তবে প্রকাশ্য নিদর্শন তাকে অন্যদের থেকে পৃথক করে দেয়। এই ভদ্রলোক আবেগপ্রবন, দ্রুত রেগে যায় ; কিন্তু সে মানুষের সঙ্গে বিনম্র, স্বভাবত সে কাউকে কষ্ট দিতে চায় না। এটা তার একটা ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ট্য। তবে তার কতিপয় সাধারণ গুণও আছে, যা অন্য মানুষের মধ্যেও পাওয়া যায়। যথা-ক্রোধ, অনুমাননির্ভরতা, ত্বরাপ্রবনতা ও তাড়াহুড়ো। আর এগুলো মানুষের স্বভাবজাত সাধারন প্রবনতা । আল্লাহ তাআ’লা এরশাদ করেন:

وَكَانَ الْإِنْسَانُ عَجُولًا

‘‘মানুষ ত্বরাপ্রবন।’’ (সূরা আল-ইসরা - ১১)

কিন্তু এর সাথে সাথে স্বভাবের ভিন্নতা রয়েছে। যেমন-আমরা প্রত্যেকেই ক্রোধান্বিত হই, ক্রোধের স্তর, কারণসমুহ একজনের থেকে অন্যজনেরটা আলাদা। একজন খুব দ্রুত ক্রোধান্বিত হয়ে যায়, আর একজন একান্ত অনন্যোপায় না হলে ক্রোধান্বিত হয় না। অতএব তাকে কেউ ক্রোধান্বিত অথবা চাপ প্রয়োগ না করলে সে রাগ করে না। এমনিভাবে মানুষের মধ্যে অধৈর্য ও অনুভূতি প্রবণতার শ্রেণির মধ্যেও বিচিত্রতা রয়েছে, আরো রয়েছে অতিরঞ্জিত ভাবও যুক্তিযুক্ত পরিমাণের মধ্যে তারতম্য।

ব্যক্তিত্বের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন: ধৈর্য - নের্তৃত্ব প্রদানের যে সকল গুণাবলীর প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধৈর্য ; যাতে করে মানুষের সঙ্গে তার বুদ্ধির পরিমাণ অনুযায়ী সে ব্যবহার করতে পারে। এবং মানুষের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য একেবারে কঠিন থেকে কঠিনতর মুহুর্তেও ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্বভার বহন করতে পারে। একজন মানুষ অন্য মানুষের সঙ্গে যখন সমাজে একসাথে জীবন যাপন করবে, তখন সে তাদের ব্যক্তিত্বসমুহ সনাক্ত করতে পারবে ; তাদের সম্পর্কে জানতে পারবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে দীর্ঘ্যভ্রমন, একসঙ্গে নিকটে থেকে বসবাস ও অবস্থানের মাধ্যমেও ব্যক্তিত্ব সনাক্ত করা সম্ভব। বিশেষ করে -উদাহরণ স্বরূপ- ব্যবসা বানিজ্য ও সম্পদের বিনিময় দ্বারা। একসঙ্গে বসবাস ব্যক্তিত্ব নিরুপন করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ আপনি যখন নির্দিষ্ট সময় বসবাস করার পর কোন লোকের ব্যক্তিত্ব নির্ণয় ও ব্যক্তিত্ব সনাক্ত করতে পারেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার সিদ্ধান্ত ও নিরুপন নির্ভুল ও সঠিক হবে। পক্ষান্তরে আপনি যদি শুধু পথে সাক্ষাতের মাধ্যমে প্রথম আবেগের উপর নির্ভর করে ব্যক্তিত্ব সনাক্ত করে ফেলেন এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন তাহলে সেটা হবে ভুল।

ভদ্রলোকটির উপর আপনার আরোপিত প্রশ্ন দ্বারাও আপনি তার ব্যক্তিত্ব সনাক্ত করতে পারেন। কোন প্রশ্নকারী যখন আপনার নিকট যে কোন বিষয় বা নির্দিষ্ট একটি সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করতে আসে, প্রথমেই আপনি তার প্রশ্নগুলো পর্যবেক্ষণ করুন ! যেমন আপনি বলতে পারেন-‘আপনি কোন শ্রেণিভূক্ত মানুষ? যাদের চিন্তাভাবনার দায়িত্বভার আছে তাদের মধ্য হতে, নাকি যাদের কোন

চিন্তাভাবনার দায়িত্বভার নেই তাদের মধ্য হতে আপনি?’ যদি সে স্পষ্ট ও দৃঢ়তার সাথে উত্তর দেয় যে, যারা নিজের সহায়তা করতে পারে সে ঐ শ্রেণিভূক্ত, তাহাল আপনি তাকে একভাবে মুল্যায়ন করতে পারেন। অথবা তার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের থেকে -যারা তার সঙ্গে বসবাস করে- জিজ্ঞাসা করেও আপনি তার ব্যক্তিত্ব চি ‎‎ হ্নত করে নিতে পারেন। যেমন-সরাসরি নয় এমন একটি প্রশ্ন আপনি তাকে করতে পারেন ; ‘ভাই! আপনার এত অসংখ্য বন্ধু-বান্ধব কেন?’ উত্তরের মধ্য দিয়ে সে তার সকল গুণাবলীর বিবরণ দিয়ে দেবে । কখনো আপনি তার নিন্দুক অথবা শত্রু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কারণ নিঃসন্দেহে প্রতিটি মানুষ-বিশেষ করে সে যদি জীবনে সফল ব্যক্তি হয়-তার জন্য হিংসুক-নিন্দুক আর শত্রুর অভাব হয় না। অথবা নিন্দুক ও শত্রুরা তার সম্পর্কে কি বলে তা জেনে নিতে পারেন। এই সকল উত্তর ও কথামালার মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলীর পর্যাপ্ত সংগ্রহ আপনার হাতে এসে যাবে, যা দ্বারা আপনি ব্যক্তিত্বের একেবারে সুক্ষাতিসুক্ষ গুণটিও নির্নয় করতে পারবেন।

তবে এমন এক শ্রেণির মানুষ আছে যাদের সঙ্গে একটু ভিন্ন রকমের আচরণের প্রয়োজন হয় : যেমন-

স্বেচ্ছাচারী প্রকৃতির মানুষ : কোন দিন আপনি যদি তাকে উগ্র মেযাজে অথবা অস্বাভাবিক দেখতে পান, তখন স্বেচ্ছাচারের কারণ জানতে চেয়ে আপনি নিজেকে বিপদে ফেলবেন না। কারণ সে এরকম-ই।

ইতস্ততকারী ব্যক্তি : যে একা কখনই সাধারণ বা বিশেষ-কোন ব্যাপারেই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ; তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার ব্যাপারে আপনি তাকে সহযোগিতা করতে পারেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল সাহবীদের রা. পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন -যাদের সঙ্গে তিনি জীবন যাপন করেছেন। উপরন্তু তিনি যাদের সঙ্গে জীবন যাপন করেননি, তাদের পরিচয়ও শুধুমাত্র সংবাদ ও অবস্থা শ্রবনের মাধ্যমে জানতে সক্ষম হয়েছেন। রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন :

يا عبد الرحمن بن سمرة لا تسأل الإمارة، فإنك إن أعطيتها من غير مسألة أعنت عليها .

‘হে আব্দুর রহমান বিন সামুরাহ ! নেতৃত্ব চেয়ে নিয়ো না, কারণ চাওয়া ব্যতীত নেতৃত্ব প্রদান করা হলে তোমাকে সে ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হবে।’ [বুখারী ও মুসলিম]

আব্দুর রহমান বিন সামুরাহ নেতৃত্বের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে বা নেতৃত্ব চাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শিক্ষা দিচ্ছিলেন। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্বভাব সম্পর্কে জেনে শুনে নিয়েছেন। আবু যার রা. থেকে বর্নিত, রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:

يأ أبا ذر إني أراك ضعيفا، إني أحب لك ما أحب لنفسي . . . لا تأمرن على اثنين .

‘হে আবু জর! আমি তোমাকে দুর্বল মনে করি, তোমার জন্য তা-ই পছন্দ করি যা আমি নিজের জন্য পছন্দ করি। তুমি কখনো নেতৃত্ব করবে না তা দু’জনের উপরে হলেও।’ [মুসলিম] রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম জানতেন তার ব্যক্তিত্ব খুবই দুর্বল, কাজেই তিনি নের্তৃত্ব সামাল দিতে পারবেন না। শুধুমাত্র এই জন্যেই কথাটা তিনি বলেছিলেন।

ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ে রাসুলুল্লাহ’র অন্যতম পদ্ধতি সম্পর্কে আরো দৃষ্টন্ত আছে। যেমন, একজন সাহাবী এসে বললো, ‘হে আল্লাহ’র রাসুল! আমাকে উপদেশ দিন! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : ‘তুমি রাগ করবে না।’ সে আবার বললো, ‘আমাকে উপদেশ দিন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি রাগ করবে না।’ আবার সে বললো, আমাকে উপদেশ দিন! তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি রাগ করবে না।’ যাতে সে বুঝতে পারে যে, এই দোষটা তার মধ্যে প্রবল।

আর একজন সাহাবী এসে বললো, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে উপদেশ দিন!’ তিনি তাকে আল্লাহর জিকির করার উপদেশ দিলেন।

এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে : দুইজন প্রশ্নকারী একই প্রশ্ন করল অথচ তাদের উভয়ের উত্তর অথবা উপদেশের মধ্যে কেন পরিবর্তন আনা হল? কারণ, ‘উপদেশ নিছক কথা নয়, অনন্তর তা হচ্ছে বর্নমালায় নোক্বতা প্রদান অথবা উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত কথা বলার নাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা আমাদের নিকট স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের অসংখ্য গুণের বিবরণ দিয়েছেন, বিভিন্ন সময়। তিনি বলেন :

أفضل أمتي أبو بكر، وأشدهم في الله عمر، وأكثرهم حياء عثمان، وأقرؤهم لكتاب الله أبي بن كعب، وأقربهم إلىَّ زيد بن ثابت، وأعلمهم بالحلال والحرام معاذ بن جبل، ألا وإن لكل أمة أمينا، وأمين هذه الأمة : أبو عبيدة عامر بن الجراح . ( الترمذي وأحمد )

‘‘আমার উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট ব্যক্তি আবু বকর, আল্লাহর ব্যাপারে সবার চেয়ে কঠিন উমার, সর্বাপেক্ষা লজ্জাশীল উসমান, কুরআন সর্বাপেক্ষা ভাল তেলাওয়াতকারী হল উবাই বিন কা‘আব, আমার সবচেয়ে নিকটতম ব্যক্তি যায়েদ বিন সাবিত এবং হালাল হারামের ব্যাপারে সর্বাধিক বিজ্ঞ হল মুআজ বিন জাবাল। সাবধান ! প্রত্যেক জাতির একজন সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তি থাকে, আর আমার উম্মতের বিশ্বস্ত ব্যক্তি হচ্ছে-আবু উবাইদাহ আমের ইবনুল-যার্রাহ। [আহমাদ ও তিরমিজী]

প্রতিটি গোত্র, সম্প্রদায় ও জাতির স্বভাব-প্রকৃতি, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও চরিত্র-বৈশিষ্ট্যাবলী আপনাকে জানতে হবে, এবং নির্ণয় করতে হবে সেই ব্যাপকতর গুণগুলো যা তাদের সকলের মধ্যে সমান ভাবে পরিলক্ষিত হয়। যাতে আপনি তাদের সঙ্গে স্বার্থক ভাবে লেনদেন করতে পারেন। কতিপয় সম্প্রদায় ও জাতি এমন, যাদের কিছু সু-নির্দিষ্ট স্বভাব ও গুণাবলী আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় যখন ওমরাহ ব্রত পালন করতে আসলেন, তখন কাফেররা সে বছর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওমরাহ ব্রত পালন করতে বাধা দিয়েছিল। ঘটনার বিবরণ : কাফেররা সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিল, তাদের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাবে, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবে। অতঃপর বনু কেনানাহ’র এক ব্যক্তি এগিয়ে এসে বলল, ‘আমাকে দায়িত্ব দিন, আমি গিয়ে সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে আসি। রাসুলুল্লাহ’র সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকট যখন লোকটি আগমন করল, এবং তিনি জানতে পারলেন যে, এ ব্যক্তি বনু কিনানার অমুক ; আর ঐ গোত্রের লোকজন উটকে সীমাহীন ভক্তি করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আগন্তকের পথের নিকটতর প্রান্তরে অথবা নিশ্চিত ভাবে সে যে উপত্যকা অতিক্রম করবে- সেখানে উট ছেড়ে আসতে নির্দেশ করলেন। এরপর সে যখন আগমন করল, সাহাবায়ে কেরাম তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় তাকে স্বাগত জানালো। এবং সে দেখতে পেল উটগুলো বাধা অবস্থায় উপত্যকায় বিচরণ করছে। সে বুঝে নিল বাইতুল্লাহ শরীফে নাজরানা পেশ করার জন্য এই উটগুলো আনা হয়েছে ; অতএব সে খুব গভীরভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে পড়লো এবং বলে উঠলো এদেরকে বাইতুল্লাহ শরীফে ঢুকতে বাধা দেয়া উচিত হবে না। অতঃপর সে তার সঙ্গীদের নিকট ফিরে গেল। অতঃপর তারা তার কর্মতৎপরতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে-আমি তাদের উটগুলো বাধা এবং প্রতীক লাগানো অবস্থায় দেখেছি। সে কারণে তাদেরকে বাইতুল্লাহ থেকে ফিরিয়ে দেয়া আমি সঙ্গত মনে করিনি।

এখানে আমাদেরকে বিশেষভাবে লক্ষ করতে হবে- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ সম্প্রদায় সম্পর্কে সংগৃহিত এই তথ্যাবলী কত সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছেন। সে কারণে আলাপ-আলোচনা ও সেখানে ব্যয়িত পরিশ্রমের দায়িত্বটা তিনি নিজের কাঁধে নিয়েছেন।

রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য একটি তথ্য থেকেও উপকৃত হতে সক্ষম হয়েছিলেন, যখন তিনি জানতে পারলেন-ইথিওপিয়ায় একজন ন্যায়পরায়ণ রাজা আছে। তিনি যখন দেখতে পেলেন-মুমিনদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন ও শাস্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে, কাফেরদের অবরোধের কারণে তাদের জন্য পৃথিবী সংকীর্ণ হয়ে গেছে। সে কারণে তারা একটু শান্তিতে আল্লাহর ইবাদত পর্যন্ত করতে পারছে না।

এহেন নাজুক পরিস্থিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ইথিওপিয়ায় হিজরত করতে নির্দেশ দিলেন। যেহেতু সেখানে একজন খৃষ্টান রাজা আছে, যার নাম নাজ্জাশী। তার নিকট কেহ অত্যাচারিত হয় না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য-তোমরা যে কষ্টের মধ্যে আছো তা হতে- মুক্তির কোন পথ বের করে দেবেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিশ্চিত সত্য বলেছেন, সম্রাট নাজ্জাশী কোরাইশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ঈমান নিয়ে পালাতক সাহাবীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং তাদের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করেছিলেন। অতঃপর তারা নিরাপদে সেখানে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকেন। উপরোন্তু নাজ্জাশী ও মনে মনে ঈমান গ্রহণ করেছিল। তার পরলোক গমনের সংবাদ জানার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য গায়েবানা জানাযা পড়েছেন।

মানুষের আচার-ব্যবহার ও তাদের সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রতি লক্ষ্য রাখা ও অত্যন্ত প্রয়োজন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে আবর্জনা ফেলানোর অপরাধে এক কাফেরকে মসজিদের খুটির সঙ্গে বেধে রেখে ছিলেন তাকে শাস্তি দেয়ার জন্যে। আর লোকজন নামাজ পড়তো, মসজিদে প্রবেশ করতো ও বেরিয়ে যেত আর সে শুধু তাদের দিকে তাকিয়ে থাকত। কিছুদিন পর অবশ্য সে ইসলাম গ্রহণ করেছে। কারণ, সে মুসলমানদের সুন্দর আচরণ, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মসজিদের প্রতি শ্রোদ্ধাবোধ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন