hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা

লেখকঃ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল কাফী

১২
সপ্তম বিষয়: রাজনীতি
কুরআন রাজনীতির মূলনীতি বিবৃত করেছে, তার নিয়ম-কানুন প্রকাশ করেছে এবং রাজনীতির সকল পথ সুস্পষ্ট করেছে।

রাজনীতি হচ্ছে, মানুষের কর্মকাণ্ডকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার পদ্ধতির নাম। এটা দু'ভাগে বিভক্ত: আভ্যন্তরীন ও বাইরের।

বাইরের রাজনীতি দু'টি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত:

প্রথমটি: শত্রুর মূলো‌ৎপাটন ও তাকে পরাজিত করার জন্য উপযুক্ত শক্তি সঞ্চয় করা। আল্লাহ বলেন,

وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ

"আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী সর্বাধিক পরিমাণ শক্তি ও সদাপ্রস্তুত ঘোড়া তাদের মোকাবিলার জন্য যোগাড় করে রাখো। এর মাধ্যমে তোমরা ভীতসন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রুকে ও তোমাদের নিজেদের শত্রুকে।" (আনফাল: ৬০)

দ্বিতীয়টি: ঐ শক্তিকে ঘিরে মজবুত ঐক্য গড়ে তোলা। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا

"তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধর এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ো না।" (আল ইমরান: ১০৩) তিনি আরো বলেন,

وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ

"তোমরা পরস্পর ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। তাহলে তোমরা ব্যর্থ হয়ে যাবে- তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দেবে এবং তোমাদের শক্তি ও প্রতিপত্তি নষ্ট হয়ে যাবে।" (আনফাল: ৪৬)

কুরআন নিয়ম ব্যক্ত করেছে যে, এই রাজনীতি রক্ষা করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে সন্ধি ও চুক্তি করতে হবে এবং তা মেনে চলতে হবে। আবার দরকার পড়লে শত্রুদের মুখের উপর চুক্তিপত্র ছিঁড়েও ফেলতে হবে।

আল্লাহ বলেন,

فَأَتِمُّوا إِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ إِلَى مُدَّتِهِمْ

"এ ধরণের লোকদের সাথে তোমরাও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পালন করবে।" (তাওবা: ৪) তিনি আরো বলেন,

فَمَا اسْتَقَامُوا لَكُمْ فَاسْتَقِيمُوا لَهُمْ

"যতক্ষণ তারা তোমাদের জন্য সোজা-সরল থাকে ততক্ষণ তোমরাও তাদের জন্য সোজা-সরল থাকো।" (তাওবা: ৭)

আল্লাহ আরো বলেন,

وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِنْ قَوْمٍ خِيَانَةً فَانْبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَى سَوَاءٍ

"আর যদি কখনো কোন জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের খেয়ানতের (চুক্তি ভঙ্গের) আশঙ্কা থাকে, তাহলে তার চুক্তি প্রকাশ্যে তার সামনে ছুড়ে দাও।" (আনফাল: ৫৮)

তিনি আরো বলেন,

وَأَذَانٌ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ وَرَسُولُهُ

"আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে বড় হজ্জের দিনে সমস্ত মানুষের প্রতি সাধারণ ঘোষণা হচ্ছেঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রসূল মুশরিকদের থেকে দায়িত্বমুক্ত।" (তাওবা: ৩) অর্থা‌ৎ তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিচ্ছেন।

কুরআন আরো হুকুম দিচ্ছে যে, শত্রুদের ষড়যন্ত্র ও কুটচাল থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তাদেরকে কোন প্রকার সুযোগ না দেয়া যাবে না। আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا خُذُوا حِذْرَكُمْ

"হে ঈমানদারগণ! শত্রুর ষড়যন্ত্র ও আক্রমণ থেকে সবসময় সতর্ক ও প্রস্তুত থাকো।" (নিসা: ৭১)

তিনি আরো বলেন,

وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ

"আর তারাও সতর্ক থাকবে এবং নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র বহন করবে। কারণ কাফেররা সুযোগের অপেক্ষায় আছে, তোমরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্রের দিক থেকে সামান্য গাফেল হলেই তারা তোমাদের ওপর আকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়বে।" (নিসা: ১০২)

এরূপ আয়াত আরো অনেক রয়েছে।

আভ্যন্তরীণ রাজনীতি: এর মূল পয়েন্ট হচ্ছে সমাজের মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অন্যায় প্রতিহত করা এবং অধিকার সমূহ ন্যায্য পাওনাদারের কাছে প্রত্যার্পণ করা।

আভ্যন্তরীণ রাজনীতি যে ৬টি বড় মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত তা হচ্ছে,

প্রথমত: দ্বীন বা ধর্মকে হেফাজত করা। ইসলামী শরীয়ত দ্বীনকে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করতে তাগিদ দিয়েছে। এই জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,"যে মুসলিম তার দ্বীনকে পরিবর্তন করবে, তাকে তোমরা হত্যা কর।" [. (বুখারী, ইবনে আব্বাস (রা.) অধ্যায়: জিহাদ, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর শাস্তির অনুরূপ কাউকে শাস্তি না দেয়া ৪/২১)]এই আইনের উদ্দেশ্য, দ্বীনকে ইচ্ছামত পরিবর্তন ও তা নিয়ে খেলা করার পথ চুড়ান্তভাবে রোধ করা।

দ্বিতীয়ত: জীবন রক্ষা করা। এই কারণে আল্লাহ মানুষের জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যেই কিসাস তথা হত্যার বদলে হত্যার বিধান চালু করেছেন। তিনি বলেন,

وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ

"কিসাসের মধ্যে আছে তোমাদের জন্য জীবন।" (বাকারা: ১৭৯) তিনি বলেন,

كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى

"কাউকে বিনা কারণে হত্যা করা হলে তার কিসাস নেয়ার বিধান আল্লাহ তোমাদের উপর আবশ্যক করে দিয়েছেন।" (বানী ইসরাঈল: ৩৩)

তিনি আরো বলেন,

وَمَنْ قُتِلَ مَظْلُومًا فَقَدْ جَعَلْنَا لِوَلِيِّهِ سُلْطَانًا

"আর যে ব্যক্তি মজলুম অবস্থায় তথা বিনা কারণে নিহত হয়েছে তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি।" (বানী ইসারঈল: ৩৩)

তৃতীয়ত: আকল বা বিবেক রক্ষা। মানুষের বিবেক রক্ষা করার তাগিদ দিয়েছে পবিত্র কুরআন। আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

"হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানী কার্যকলাপ। এগুলো থেকে তোমরা দূরে থাকো, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে।" (মায়েদা: ৯০) কেননা এগুলো- বিশেষ করে মদ-জুয়া মানুষের বিবেক লোপ করে দেয়।

হাদীছে এসেছে: "নেশা জাতীয় সকল দ্রব্য হারাম। যে বস্তু বেশী পরিমাণ সেবন করলে নেশা হয়, তার অল্পও হারাম।" [. ইবনে মাজাহ, অধ্যায়: খাদ্য-পাণীয়, অনুচ্ছেদ: যে বস্তু বেশী পরিমাণ সেবন করলে নেশা হয়, তার অল্পও হারাম। হা/৩৩৯২।এই হাদীছের প্রথম অংশ "নেশা জাতীয় সকল দ্রব্য হারাম।" বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী, আবু মূসা রা. থেকে, অধ্যায়: মাগাযী, অনুচ্ছেদ: বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মূসা ও মুয়াযকে ইয়ামান প্রেরণ, হা/৩৯৯৭। মুসলিম, অধ্যায়: পাণীয়, অনুচ্ছেদ: প্রত্যেক নেশা জাতীয় দ্রব্যই মদ, হা/ ২০০১।]

আর মানুষের বিবেককে রক্ষার স্বার্থেই মদপানকারীকে দণ্ডিত করার আইন করা হয়েছে।

চতুর্থত: বংশ রক্ষা। বংশের ধারাকে সংরক্ষণ করার জন্য আল্লাহ ব্যভিচারের দণ্ড প্রণয়ন করেছেন। তিনি এরশাদ করেন,

الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ

"ব্যভিচারী নারী হোক বা পুরুষ, প্রত্যেককে একশত করে বেত্রাঘাত করো।" (নূর: ২)

পঞ্চমত: মান-ইজ্জত রক্ষা। মানুষের মান-সম্মানকে রক্ষা করার জন্য অপবাদ প্রদানকারীকে আশি বার বেত্রাঘাত করার হুকুম দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন,

وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً

"আর যারা সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ লাগায়, তারপর চারজন সাক্ষী না আনতে পারে, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করো।" (নূর: ৪)

ষষ্ঠত: সম্পদ। ধন-সম্পদের সংরক্ষণের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ চোরের হাত কাটার আইন করেছেন। আল্লাহ বলেন,

وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِنَ اللَّهِ

"চোর- পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন, উভয়ের হাত কেটে দাও। এটা তাদের কর্মফল এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।" (মায়েদা: ৩৮)

অতএব সুস্পষ্ট হলো যে, কুরআনের অনুসরণই মানুষের আভ্যন্তরীন ও বাইরের সকল স্বার্থ ও কল্যাণকে নিশ্চিত করার জিম্মাদার।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন