hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পিতামাতার অবাধ্যতা কারণ, কিছু বাহ্যিক চিত্র ও প্রতিকারের উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম আল-হামাদ

ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আর দুরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথী ও যারা তাঁকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাদের প্রতি।

অতঃপর,

পিতামাতার অধিকারের বিষয়টি অনেক বড় ও মহান এবং দীনের মধ্যে তাদের মর্যাদা ও অবস্থান অনেক উপরে; সুতরাং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার বিষয়টি তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের মতই গুরত্বপূর্ণ; আর তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার বিষয়টি আল্লাহ তা‘আলার প্রতি কৃতজ্ঞতার সাথে সম্পৃক্ত; আর তাদের প্রতি ইহসান করা সবচেয়ে মহান কাজের অন্তর্ভুক্ত এবং মহান আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿۞ وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا ﴾ [ النساء : ٣٦ ]

“আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকে তাঁর শরীক করো না; আর পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করো।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ ۞قُلۡ تَعَالَوۡاْ أَتۡلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمۡ عَلَيۡكُمۡۖ أَلَّا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗاۖ ﴾ [ الانعام : ١٥١ ]

“বলুন, ‘এসো তোমাদের রব তোমাদের উপর যা হারাম করেছেন তোমাদেরকে তা তিলাওয়াত করি, তা হচ্ছে, ‘তোমরা তাঁর সাথে কোনো শরীক করবে না, পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫১]

আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ ۞وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعۡبُدُوٓاْ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنًاۚ إِمَّا يَبۡلُغَنَّ عِندَكَ ٱلۡكِبَرَ أَحَدُهُمَآ أَوۡ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَآ أُفّٖ وَلَا تَنۡهَرۡهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوۡلٗا كَرِيمٗا ٢٣ وَٱخۡفِضۡ لَهُمَا جَنَاحَ ٱلذُّلِّ مِنَ ٱلرَّحۡمَةِ وَقُل رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٣، ٢٤ ]

“আর তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ‘ইবাদত না করতে এবং পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তাদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে ‘উফ্’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; আর তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বলো। আর মমতাবেশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করো এবং বলো, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া কর, যেভাবে তারা শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩ - ২৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ أَنِ ٱشۡكُرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيۡكَ إِلَيَّ ٱلۡمَصِيرُ ١٤ ﴾ [ لقمان : ١٤ ]

“আর আমরা মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে, আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে। কাজেই আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। ফিরে আসা তো আমারই কাছে।” [সূরা লোকমান, আয়াত: ১৪]

তাছাড়া এ প্রসঙ্গে বহু হাদিসও বর্ণিত আছে; তন্মধ্যে অন্যতম একটি হাদিস, আবদুল্লাহ ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : أَيُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إلَى اللَّهِ ؟ قَالَ : «الصَّلاةُ عَلَى وَقْتِهَا » . قُلْتُ : ثُمَّ أَيُّ ؟ قَالَ : « بِرُّ الْوَالِدَيْنِ » , قُلْتُ : ثُمَّ أَيُّ ؟ قَالَ : « الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ » . ( رواه البخاري و مسلم ) .

“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম: আল্লাহ তা‘আলার নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয়? জবাবে তিনি বললেন: সময় মত সালাত আদায় করা। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম: তারপর কোনটি? তিনি বললেন: পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার করা। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম: তারপর কোনটি? তিনি বললেন: আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।” [বুখারী, হাদিস নং- ৫০৪ ও ৬৫২৫; মুসলিম, হাদিস নং- ২৬৪]

বস্তুত পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার বিষয়টি এমন একটি বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যা সুস্থস্বভাব ও বিশুদ্ধ প্রকৃতি কর্তৃক স্বীকৃত, যার ব্যাপারে আসমানী শরী‘য়ত একাট্টা; আর তা হল নবীদের চরিত্র এবং সৎকর্মশীল ব্যক্তিগণের স্বভাব।

যেমনিভাবে তা ঈমানের সত্যতা, ব্যক্তির মহত্ব ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনের উপর উৎকৃষ্ট দলীল ও প্রমাণ।

আর পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার বিষয়টি ইসলামী শরী‘য়তের মহান সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত; এটা হল অনুগ্রহের স্বীকৃতি, মর্যাদা সংরক্ষণ, শরী‘য়তের পরিপূর্ণতার উপর প্রমাণ এবং তা অন্তর্ভুক্ত করে সকল প্রকার অধিকারকে।

বস্তুবাদী পৃথিবীর মানব রচিত আইনকানুন তার বিপরীত, যা পিতামাতার জন্য কোনো বিশেষ মর্যাদা নির্ধারণ করে নি এবং তাদের জন্য কোনো অধিকার সংরক্ষণ করে নি; বরং তা তাদেরকে অবজ্ঞা করেছে এবং হেয় প্রতিপন্ন করেছে।

আর প্রযুক্তিতে অগ্রগামী পশ্চিমা বিশ্বই হলো এর জ্বলন্ত সাক্ষী; কারণ, ঐ শাসন ব্যবস্থায় মা হলেন এমন এক যন্ত্রের মত, যখন তার কার্যকারিতার সময়কাল শেষ হয়ে যায়, তখন তাকে মাটিতে ছুড়ে ফেলা হয়।

আর তাদের চিন্তা-চেতনা থেকে পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহারের অতি সীমিত এক পন্থার উদ্ভব হয়েছে যে, তারা একটি বার্ষিক দিবস চালু করেছে, যার নাম দিয়েছে ‘মা দিবস’। সে দিন ছেলে ও মেয়েরা ভালবাসা ও সদ্ব্যবহারের প্রতীক হিসেবে তাদের মাকে একগুচ্ছ গোলাপ ফুল উপহার হিসেবে প্রদান করে।

এটাই হলো তাদের পক্ষ থেকে পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করার চূড়ান্ত নমুনা; বছরে একদিন, অন্য কোনো দিন নয়! তাহলে সেবা-যত্ন কোথায়? অথবা সহানুভূতি কোথায়? আর দায়িত্ব পালনের বিষয়টি বা কোথায়?

এসব মার্জিত মর্যাদাপূর্ণ অর্থবোধক শব্দের কোনো জ্ঞান তাদের নেই এবং তাদের নিকট এর কোনো অংশের বাস্তবতা নেই।

অপরদিকে ইসলামে মাতাপিতার অধিকারের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং এটাই শুধু নয়, বরং ইসলাম পিতামাতার অবাধ্য হতে নিষেধ করেছে এবং তার ব্যাপারে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে; কারণ, তা কবীরাগুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম এবং শিরকের সমমানের অপরাধ। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার বাণীই যথেষ্ট, তিনি বলেন:

﴿ فَلَا تَقُل لَّهُمَآ أُفّٖ وَلَا تَنۡهَرۡهُمَا ﴾ [ الاسراء : ٢٣ ]

“তাদেরকে ‘উফ্’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩]

আর এ প্রসঙ্গে অনেক হাদিস বর্ণিত আছে; তন্মধ্যে অন্যতম একটি হাদিস, আবদুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনিল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« الكبائرُ : الإشراكُ بالله ، وعُقوقُ الوالدين ، وقتْلُ النفس ، واليمينُ الغموسُ» . ( رواه البخاري ) .

“অন্যতম কবীরা গুনাহসমূহ হল: আল্লাহ তা‘আলার সাথে শরীক করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।” [বুখারী, হাদিস নং- ৬২৯৮]

পিতামাতার জন্য এই মর্যাদা, বিশেষ করে তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার ব্যাপারে জোরালো নির্দেশ এবং তাদের অবাধ্য হতে নিষেধ করে কঠোর ধমক আসা সত্ত্বেও একদল মানুষ তাদেরকে দেওয়া উপদেশের একটা বিরাট অংশকে ভুলে গেছে; ফলে তারা পিতামাতার অধিকারকে সংরক্ষণ করে না এবং পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার বিষয়টিকে পরোয়া করে না।

পৃষ্ঠাসমূহের ধারাবাহিকতায় অচিরেই নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা হবে:

অবাধ্যতার সংজ্ঞা

পিতামাতার অবাধ্যতার বাহ্যিক রূপ-প্রকৃতি

অবাধ্যতার নমুনা কাহিনী

অবাধ্যতার কারণ

প্রতিকারের উপায়

পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহারের পরিচয়

পিতামাতার সাথে আচার-আচরণের লক্ষণীয় দিক

- সদ্ব্যবহারে সহায়ক বিষয় বা কর্মকাণ্ডসমূহ

স্ত্রী ও পিতামাতার মাঝে সমন্বয়

সদ্ব্যবহারের কিছু নমুনা কাহিনী।

পরিশেষে আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর সুন্দর নামসমূহ ও তাঁর মহান গুনাবলীর দোহাই দিয়ে তাঁর কাছে আবেদন করছি যে, তিনি যেন আমাদেরকে আল্লাহভীরু পুণ্যবান ব্যক্তি ও যুগশ্রেষ্ঠ খাঁটি বন্ধুগণের অন্তর্ভুক্ত করেন; তিনি হলেন এর অভিভাবক ও এই বিষয়ে ক্ষমতাবান। আর আল্লাহই সকল বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী।

و صلى الله و سلم على نبينا محمد وآله و صحبه .

(আর আল্লাহ তা‘আলা সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সঙ্গী-সাথীর উপর)।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন