hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পিতামাতার অবাধ্যতা কারণ, কিছু বাহ্যিক চিত্র ও প্রতিকারের উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম আল-হামাদ

অবাধ্যতার নমুনা কাহিনী
১. আসমা‘য়ী বলেন: “আমাকে আরবের কেউ কেউ সংবাদ দিয়েছেন যে, আবদুল মালেক ইবন মারওয়ান-এর যামানায় এক ব্যক্তি ছিল এবং তার ছিল এক বৃদ্ধ পিতা; আর যুবকটি ছিল তার পিতার অবাধ্য এবং ঐ যুবকটিকে বলা হত ‘মানাযিল’। অতঃপর এক পর্যায়ে বৃদ্ধ পিতা বলেন:

جَزَتْ رحمٌ بيني وبينَ منازلٍ جزاءً كما يستنجزُ الدَّينَ طالبُه

(আমার ও মানাযিলের মাঝে সম্পর্ক এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, তার পরিণাম হচ্ছে

যেমনিভাবে ঋণের দাবিদার ঋণ পূর্ণ করতে চায়)।

تَرَبَّت حتى صار جعدًا شمردلًا إذا قام ساوى غاربَ الفحلِ غاربُه

(সে বেড়ে উঠেছে এমনকি সে লম্বা শক্তিশালী যুবকে পরিণত হয়েছে,

যখন সে দাঁড়ায়, তখন তার কাঁধ শক্তিশালী পুরুষের কাঁধ সমান হয়ে যায়)।

تظلَّمني مالي كذا ولوى يدي لوى يدَه اللهُ الذي لا يغالبُه

(সে আমাকে আমার এ রকম সম্পদ ছাড়া করেছে এবং আমার হাত বাঁকা করে দিয়েছে,

ঐ আল্লাহ তার হাত বাঁকা করে দিবেন, যাঁকে সে পরাজিত করতে পারবে না)।

وإني لداعٍ دعوةً لو دعوتُها على جبل الريان لانْهَدَّ جانِبُه

(আর আমি (তার জন্য) এমন বদদো‘আ করব, যদি সেই বদদো‘আ আমি করি

রাইয়ান পর্বতের জন্য, তাহলে তার পার্শ্ব ধ্বসে পড়ে যেত)।

এ সংবাদ তাদের বাদশা’র নিকটে পৌঁছে; তারপর তিনি যুবককে ধরে নিয়ে আসার জন্য দূত প্রেরণ করলেন; অতঃপর তাকে তার বৃদ্ধ পিতা বলল: তুমি ঘরের পিছনের দিক দিয়ে বের হয়ে চলে যাও; ফলে সে বাদশা’র দূতের আগে আগে চলে গেল এবং বাদশার পাকড়াও থেকে বেঁচে গেল। কিন্তু এ মানাযিল যুবকটি তার শেষ জীবনে তার এক অবাধ্য ছেলের দ্বারা কষ্টকর পরিস্থিতির শিকার হল; ছেলেটির নাম ‘খালিজ’। অতঃপর সে (মানাযিল) বলল:

تظلمني مالي خليجٌ وعقني على حين كانت كالحَنيِّ عظامي

(খালিজ আমাকে আমার সম্পদ ছাড়া করেছে এবং সে আমার অবাধ্য হয়েছে

এমন এক সময়, যখন আমার হাড্ডি ধনুকের মত বাঁকা হয়ে গেছে)।

تخيَّرتُه وازددته ليزيدني وما بعضُ ما يزدادُ غيرُ عرامِ

(আমি তাকে পছন্দ করেছি এবং তাকে বেশি বেশি দিয়েছি, যাতে সে আমার প্রতি বেশি যত্নবান হয়, অথচ কিছু অসুবিধা ও দুঃখ-কষ্ট ছাড়া আর তেমন কিছু বাড়েনি)।

لعمري لقد ربَّيته فرحًا به فلا يفرحنْ بعدي امرؤٌ بغلامِ

(আমার জীবনের কসম! আমি তার প্রতি খুশি হয়েই তাকে লালন-পালন করেছি,

সুতরাং আমার পরে কোনো ব্যক্তিই যেন ছেলেকে নিয়ে এত খুশি না হয়)।

অতঃপর শাসনকর্তা তাকে (ছেলেটিকে) মারতে চাইল; তখন ছেলেটি শাসনকর্তাকে বলল: আমাকে মারার ব্যাপারে এত তাড়াহুড়ো করবেন না; এই হলেন (আমার পিতা) মানাযিল ইবন ফার‘আন, যার ব্যাপারে তার পিতা বলেছিলেন:

جَزَتْ رحمٌ بيني وبينَ منازلٍ جزاءً كما يستنجزُ الدَّينَ طالبُه

(আমার ও মানাযিলের মাঝে সম্পর্ক এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, তার পরিণাম হচ্ছে

যেমনিভাবে ঋণের দাবিদার ঋণ পূর্ণ করতে চায়)।

অতঃপর শাসনকর্তা বলল: হে এই তুমি! তুমি তোমার পিতার সাথে অবাধ্য আচরণ করেছ; আর তাই আজ তোমার সাথেও অবাধ্য আচরণ করা হয়েছে।” [ইবনু কুতাইবা, ‘উয়ূনুল আখবার’ ( عيون الأخبار ): ৩/৮৬ - ৮৭; ‘কিতাবুল ইখওয়ান’ ( كتاب الإخوان ); আরও দেখুন: আল-হানাভী, ‘বির্রুল ওয়ালিদাইন’ ( بر الوالدين ), পৃ. ১৩৮ - ১৩৯]

২. আরেক ব্যক্তি তার চরম দুঃখ ও কষ্টের অভিযোগ করে এবং তার অবাধ্য সন্তানকে তিরস্কার করে বলেন:

غَذَوْتُك مَوْلُودًا وَمُنْتُكَ يَافِعًا تَعُلُّ بِمَا أَجْنِي عَلَيْك وَتَنْهَلُ

(আমি তোমাকে শিশু অবস্থায় খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় তোমার ব্যয়ভার বহন করেছি,

আমি তোমার জন্য যা উপার্জন করেছি, তা আমাকে দুর্বল ও ক্লান্ত করে দিয়েছে)।

إذَا لَيْلَةٌ نالتْك بالشكوِ لَمْ أَبَتْ لِشكواك إلَّا سَاهِرًا أَتَمَلْمَلُ

(যখন কোনো রাত্রে তুমি অসুস্থ হয়ে যেতে, তখন আমি রাত্রি যাপন করেছি

তোমার অসুস্থতার কারণে বিনিদ্র অবস্থায় বিছনায় গড়াগড়ি দিয়ে)।

كَأَنِّي أَنَا الْمَطْرُوقُ دُونَك بِاَلَّذِي طَرَقْت بِهِ دُونِي فَعَيْنِي تُهْمِلُ

(সে কাঁটা যেন তোমাকে নয় আমাকেই আঘাত করেছে,

ফলে আমার চোখ অশ্রু বর্ষণ করেছে)।

تَخَافُ الرَّدَى نَفْسِي عَلَيْك وَإِنَّهَا لَتَعْلَمُ أَنَّ الْمَوْتَ وقتٌ مُؤجلُ

(আমার মন তোমার ব্যাপারে ধ্বংসের আশঙ্কা করেছিল, যদিও সে

জানত যে, মৃত্যু নির্দিষ্ট সময়েই হবে)।

فَلَمَّا بَلَغْت السِّنَّ وَالْغَايَةَ الَّتِي إلَيْها مدى ما كُنْت فِيك أُؤَمِّلُ

(অতঃপর তুমি যখন এমন বয়স ও গন্তব্যে পৌঁছে গেছ, যে পর্যন্ত যেখানে পৌঁছার আশা আমি তোমার জন্য করেছি)

جَعَلْت جَزَائِي غِلْظَةً وَفَظَاظَةً كَأَنَّك أَنْتَ الْمُنْعِمُ الْمُتَفَضِّلُ

(তুমি আমার পুরস্কার নির্ধারণ করেছ কঠোরতা ও অভদ্রতা,

মনে হয় যেন তুমি অনুগ্রহশীল ও দানশীল)।

فَلَيْتُك إن لَمْ تَرْعَ حَقَّ أُبُوَّتِي فَعَلْت كَمَا الْجَارُ الْمُجَاوِرُ يَفْعَلُ

(হায়রে তুমি! যদি তুমি পিতামাতার অধিকার সংরক্ষণ নাই করতে পার,

তাহলে তুমি এমন আচরণ করতে, যেমন আচরণ প্রতিবেশী তার প্রতিবেশী’র সাথে করে)।

فَأَوْلَيْتَنِي حَقَّ الْجِوَارِ وَلَمْ تَكُنْ عَلَيَّ بِمَالي دُونَ مَالِك تَبْخَلُ

(সুতরাং তুমি আমাকে প্রতিবেশিত্বের অধিকার প্রদান করেছে, অথচ তুমি

তোমার সম্পদ ছাড়া শুধু আমার সম্পদ দ্বারাই আমার উপর কৃপণতা করছ)।

تراه مُعِدًا للخلاف كأنه بردٍّ على أهل الصواب موكَّلُ .

(তুমি তাকে দেখতে পাবে— সে যেন বিরোধিতার জন্যই তৈরী হয়েছে; মনে হয় যেন তাকে

দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সত্যপন্থীদের প্রত্যাখ্যান করার জন্য)। [এই পংক্তিগুলো ইয়াহইয়া ইবন সা‘ঈদ, ইবনু আবদুল আ‘লা ও আবূল ‘আব্বাস আল-আ‘মা-এর বলে উল্লেখ করা হয়; তাছাড়া উমাইয়া ইবন আবি সালত-এর সাথেও এই পংক্তিগুলো সম্বন্ধযুক্ত করা হয়। দেখুন: ইবনু কুতাইবা, ‘উয়ূনুল আখবার’ ( عيون الأخبار ): ৩/৮৭; আল-‘আজলুওনী, ‘কাশফুল খাফা’ ( كشف الخفاء ): ১/২০৭ - ২০৮; ইমাম তারতূশী, ‘বির্রুল ওয়ালিদাইন’ ( بر الوالدين ), পৃ. ১০৮ - ১০৯]

৩. ডক্টর মুহাম্মদ আস-সাব্বাগ বলেন: “আমি শুনেছি যে, অধঃপতিত পথভ্রষ্ট এক ছেলে তার পিতাকে বৃদ্ধাশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেছে, যাতে সে তাকে কষ্ট দিতে না পারে অথবা তার স্ত্রীকে বিরক্ত করতে না পারে।” [ড. মুহাম্মাদ ইবন লুতফী আস-সাব্বাগ, ‘নাযরাত ফিল উসরাতিল মুসলিমা’ ( نظرات في الأسرة المسلمة ), পৃ. ৪৯]

৪. অধ্যাপক আবদুর রউফ আল-হানাভী র. বলেন: “আমার এক নিকটাত্মীয় ছিল, তার জন্য তার পিতা অনেক নগদ স্বর্ণ, উপকারী মালামাল ও বহু জমি রেখে গিয়েছিলেন; আর সে ছিল ব্যবসায়ী দলের অন্যতম একজন; কোনো একদিন তার উপর তার মাতা ক্ষুব্ধ হলেন এবং তার জন্য তিনি কঠিনভাবে একবার বদদো‘আ করলেন; আর যখন তার বদদো‘আর কারণে তার ক্ষতি অবধারিত হয়ে গেল, তখন সে ফকীর অবস্থায় মারা গেল; অথচ সে কখনও অশ্লীল ও হারাম পথে চলেনি।

আর আমার পিতা (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন) তাকে দান-সাদকা করতেন এবং আমাদের বাড়ি থেকে আমাকে খাবার নিয়ে তার নিকট এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিকট পাঠাতেন।” [আল-হানাভী, ‘বির্রুল ওয়ালিদাইন’ ( بر الوالدين ), পৃ. ১৩৫]



অবাধ্যতার কারণ

পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে, তন্মধ্যে কতগুলো কারণ নিম্নরূপ:

১. অজ্ঞতা ও মূর্খতা: কেননা, মূর্খতা হল প্রাণ বিধ্বংসী ব্যাধি; আর মূর্খব্যক্তি তার নিজ জীবনের শত্রু; সুতরাং যখন কোনো ব্যক্তি মাতাপিতার অবাধ্যতার ইহকালীন ও পরকালীন খারাপ পরিণতির কথা না জানে এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার ইহকালীন ও পরকালীন সুফলের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকে, তখন এই অজ্ঞতা ও মূর্খতা তাকে অবাধ্যতার দিকে পরিচালিত করে এবং সদ্ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখে।

২. কুশিক্ষা: কেননা, পিতামাতা যখন তাদের সন্তানদেরকে তাকওয়া (আল্লাহভীতি), উত্তম আচরণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ও উচ্চ মর্যাদা অনুসন্ধানের বিষয়ে শিক্ষা না দিবে, তখন এটা তাদেরকে ঔদ্ধত্য ও অবাধ্যতার দিকে নিয়ে যাবে।

৩. অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণ: এটা হল পিতামাতা যখন সন্তানকে কোনো (ভালো) বিষয়ে শিক্ষা দেয়, অথচ তারা তাদের প্রদত্ত শিক্ষা অনুযায়ী আমল করে না, বরং এর বিপরীত কাজ করে, তখন এই বিষয়টি ঔদ্ধত্য ও অবাধ্যতার উপলক্ষ হয়ে উঠে।

৪. সন্তানদের অসৎ সঙ্গ: এটা এমন একটি কারণ, যা সন্তানদেরকে নষ্ট করে ফেলে এবং তাদেরকে পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার ব্যাপারে দুঃসাহস যোগায়। যেমনিভাবে তা পিতামাতার প্রতি অত্যাচার ও নির্দয় ব্যবহার করতে উস্কানি দেয় এবং সন্তানদেরকে সুশিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে তাদের প্রভাব ঐতিহ্যকে দুর্বল করে দেয়।

৫. পিতামাতা কর্তৃক তাদের পিতামাতার অবাধ্যতার কারণে সন্তান কর্তৃক তাদের অবাধ্যতা: এটা হল অবাধ্য হওয়ার আবশ্যকীয় কারণসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ; কেননা, যখন পিতামাতা তাদের পিতামাতার সাথে অবাধ্য আচরণ করে থাকে, তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদেরকে তাদের সন্তানদের অবাধ্যতা দ্বারা শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে; আর এটা দুইভাবে হয়ে থাকে—

প্রথমত: সন্তানগণ অবাধ্য আচরণ করার ক্ষেত্রে তাদের পিতামাতার অনুসরণ করে।

দ্বিতীয়ত: একই রকম কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিদান পাওয়া।

৬. বিবাহ বিচ্ছেদ অবস্থায় আল্লাহর ভয়ের কমতি: কেননা, কোনো কোনো পিতামাতার মাঝে যখন বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, তখন তারা এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে না এবং তাদের মধ্যকার বিবাহ বিচ্ছেদের কাজটি উত্তম পদ্ধিতিতে সম্পাদন হয় না।

বরং দেখা যায়, তাদের প্রত্যেকে একে অপরের বিরুদ্ধে সন্তানদেরকে উত্তেজিত করে তোলে; কেননা, তারা যখন মায়ের কাছে যায়, তখন সে তাদের পিতার দোষ-ত্রুটি চর্চায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং তাদেরকে তার সাথে কথা না বলতে ও তাকে এড়িয়ে চলতে উপদেশ দেয়; আর অনুরূপভাবে তারা যখন পিতার কছে যায়, তখন সে তাদের মায়ের মত একই কাজ করতে বলে।

ফলে সন্তানেরা পিতামাতা সকলেরই অবাধ্য হয়ে উঠে; আর এই অবাধ্য হয়ে উঠার পিছনে পিতামাতা উভয়ে দায়ী, যেমনটি আবূ যুয়াইব আল-হুযালী বলেন:

فلا تغضبَنْ في سيرةٍ أنت سرتَها وأول راضٍ سُنَّةً من يسيرها

(সুতরাং তুমি এমন আচরণের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ হয়ো না, যে আচরণ তুমি করেছ,

আর তুমি এ পথে চলতে প্রথম পছন্দ করেছিলে)।

৭.সন্তানদের মাঝে বিভেদ: কেননা, এ কাজটি সন্তানদের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতার জন্ম দেয়, ফলে তাদের আত্মা কলুষিত হয় এবং এটা তাদেরকে পিতামাতার প্রতি ঘৃণা পোষণ ও তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার দিকে নিয়ে যায়।

৮. সুখ-শান্তি ও আবেগকে অগ্রাধিকার দেওয়া: কারণ, কোনো কোনো মানুষের নিকট যখন বৃদ্ধ ও অসুস্থ পিতামাতা বিদ্যমান থাকে, তখন সে তার ধারণা ও বিশ্বাস অনুযায়ী নিজের সুখ-শান্তিকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে তাদের থেকে মুক্তি পেতে চায়— হয় তাদেরকে অক্ষম অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে, অথবা তাদেরকে বাড়িতে রেখে অন্য কোথাও বসবাস করার মাধ্যমে, অথবা অন্য কোনোভাবে; অথচ সে জানে না যে, তার সুখ-শান্তি নিহিত রয়েছে তার পিতামাতার সাথে সার্বক্ষণিক অবস্থান ও তাদের সেবা-যত্ন করার মধ্যে।

৯. সঙ্কীর্ণ মানসিকতা: কেননা, কিছু কিছু সন্তান সঙ্কীর্ণ মানসিকতার হয়ে থাকে; ফলে সে চায় না যে, তার ঘরে কেউ সার্বক্ষণিক অবস্থান ও চলাফেরা করুক; সুতরাং সে যখন একটা গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে, অথবা ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট করে, তখন সে এ কারণে ভীষণভাবে রেগে যায় এবং ঘরকে সোজাসুজি আগের অবস্থায় ফিরেয়ে নিয়ে যায়। আর এটা পিতামাতাকে কষ্ট দেয় এবং তাদের হৃদ্যতাকে নষ্ট করে দেয়।

অনুরূপভাবে আপনি কোনো কোনো সন্তানকে দেখতে পাবেন যে, সে তার পিতামাতার আদেশ-নিষেধ পালন করতে বিরক্তি প্রকাশ করে, বিশেষ করে পিতামাতা উভয়ে অথবা কোনো একজন যখন রূঢ় ও কঠোর প্রকৃতির হয়, তখন আপনি দেখতে পাবেন যে, সন্তান তাদের ব্যাপারে হাত গুটিয়ে নেয় এবং তাদের জন্য তার হৃদয়কে উদার করে দেয় না।

১০. সন্তানদেরকে সদ্ব্যবহার করার ব্যাপারে পিতামাতা কর্তৃক সহযোগিতার কমতি: কোনো কোনো পিতামাতা সদ্ব্যবহার করার ব্যাপারে তাদের সন্তানদেরকে সহযোগিতা করে না এবং তারা যখন ইহসান তথা ভাল ব্যবহার করে, তখন তারা তাদেরকে সুন্দর আচরণের জন্য উৎসাহিত করে না। বস্তুত পিতামাতার অধিকারের বিষয়টি অনেক বড় বিষয় এবং এই অধিকার আদায় করা সকল অবস্থায় ওয়াজিব। কিন্তু সন্তানগণ যখন পিতামাতার পক্ষ থেকে উৎসাহ-উদ্দীপনা, দো‘আ ও সহযোগিতা না পায়, তখন অনেক সময় তারা বিরক্তিবোধ করে এবং পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার করা ছেড়ে দেয় অথবা এই ক্ষেত্রে কমতি করে।

১১. স্ত্রীর দুশ্চরিত্র: কখনও কখনও মানুষ তার মন্দ চরিত্রের অধিকারী স্ত্রীর দ্বারা বিপদগ্রস্ত হয়, সে আল্লাহকে ভয় করে না এবং কারও অধিকার সংরক্ষণ করে না; কারণ সে তার (স্বামীর) গণ্ডিতে মানসিক কষ্টে থাকে; ফলে আপনি তাকে দেখতে পাবেন যে, সে তার স্বামীকে তার পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার জন্য অথবা তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য অথবা তাদের প্রতি ইহসান তথা উত্তম ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করে, যাতে তার স্বামীর দ্বারা তার পরিবেশ ঝামেলামুক্ত হয়ে যায় এবং নিজেকে শুধু স্বামীর জন্য নির্দিষ্ট করে নিতে পারে।

১২. পিতামাতার কষ্ট অনুভবের কমতি: ছেলেদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যারা পিতার খোজ-খবর নেয় না; আর মেয়েদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যারা মাতার খোজ-খবর রাখে না; ফলে এমতাবস্থায় আপনি দেখতে পাবেন যে, সে তার পিতামাতার প্রতি কোনো খেয়ালই রাখে না, চাই যখন সে রাতের বেলায় বাসায় আসতে বিলম্ব করুক, অথবা সে যখন তাদের থেকে দূরে থাকে, অথবা সে (সরাসরি) তাদের প্রতি দুর্ব্যবহার করে।

এ হল কতগুলো কারণ, যা পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার দিকে ধাবিত করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন