HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহ তাআলার দশ অসিয়ত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

১০
অষ্টম অসিয়তঃ কথা ও কাজে ন্যায় ও সততা রক্ষা করা
وَإِذَا قُلْتُمْ فَاعْدِلُوا وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى

যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায় পরায়ণতা অবলম্বন করবে, স্বজনের সম্পর্কে হলেও।

যখন কারো সম্পর্কে কোন কথা বলা হয়, হোক তা সমালোচনামুলক বা কারো পক্ষে-বিপক্ষে স্বাক্ষ্য অথবা করো সম্পর্কে মুল্যায়ন কিংবা বিচার-ফয়সালা করা হয়, তখন অবশ্যই সততা ও ন্যায়পরায়ণতা অবলম্বন করতে হবে। ন্যায়পরায়ণতার সাথে কথা বললে তা যদিও শত্রুর পক্ষে যায় কিংবা আপনজনের বিপক্ষে যায় তবুও কোন ছাড় নেই। সত্য ও ন্যায়ভিত্তিক কথাই বলতে হবে। এমনিভাবে যখন বিচার- ফয়সালা, শালিসি করা হবে তখন ন্যায় ভিত্তিক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজ দলীয় - ভিন দলীয়, আত্নীয়-পর, উচ্চ বংশীয়-নিম্ন বংশীয়, ধনী-গরীব নির্বিশেষে কারো সাথে বৈষম্য করা যাবে না।

আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَى أَنْفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ إِنْ يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقِيرًا فَاللَّهُ أَوْلَى بِهِمَا فَلَا تَتَّبِعُوا الْهَوَى أَنْ تَعْدِلُوا وَإِنْ تَلْوُوا أَوْ تُعْرِضُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا

‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায় বিচারে দৃঢ় থাকবে আল্লাহর স্বাক্ষী স্বরূপ; যদিও তা তোমাদের নিজেদের অথবা পিতা-মাতা এবং আত্নীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়; সে ধনী হোক বা বিত্তহীন হোক আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং তোমরা ন্যায় বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। যদি তোমরা পেঁচালো কথা বল অথবা পাশ কেটে যাও তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তো তার সম্যক খবর রাখেন।’’ সূরা নিসা, আয়াত ১৩৫

তিনি আরো বলেনঃ

وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآَنُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ

‘‘কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের যেন কখনো ন্যায় বিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। ন্যায় বিচার করবে, এটা তাকওয়ার নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় করবে, তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ তার সম্যক খবর রাখেন।’’ সূরা মায়িদা, আয়াত ৮

আল্লাহ তাআলার এ নির্দেশ বাস্তবায়নে সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত রেখেছেন তাঁরই প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচারের ক্ষেত্রে কোন পক্ষপাতিত্ব করতেন না। কেহ করতে শুপারিশ করলে তিনি তা সহ্য করতেন না। তিনি আরো বলেছেন, বিচারের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব ও জুলুম করার কারণে দেশ, জাতি ধ্বংস হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে মাত্র একটি হাদীস পেশ করা হল:

َعَنْ عَائِشَةَ رضِيَ اللَّهُ عَنْهَا ، أَنَّ قُرَيْشاً أَهَمَّهُمْ شَأْنُ المرْأَةِ المخْزُومِيَّةِ الَّتي سَرَقَتْ فَقَالُوا : منْ يُكَلِّمُ فيها رَسُولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فَقَالُوا : وَمَنْ يَجْتَريءُ عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بْنُ زَيدٍ، حِبُّ رسولِ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ،فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم :্র أَتَشْفَعُ في حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ تَعَالى ؟ গ্ধ ثم قام فاحتطب ثُمَّ قَالَ :্র إِنَّمَا أَهلَكَ الَّذينَ قَبْلَكُمْ أَنَّهمْ كَانُوا إِذا سَرَقَ فِيهم الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ ، أَقامُوا عَلَيْهِ الحَدَّ ، وَايْمُ اللَّهِ لَوْ أَنَّ فاطِمَةَ بِنْبتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتَ لَقَطَعْتُ يَدَهَا গ্ধ متفقٌ عليه .

‘‘আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, কুরাইশ বংশের লোকেরা তাদের বংশীয় মাখযুম গোত্রের এক মহিলার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পড়ল। যে মহিলা চুরি করছিল। কুরাইশরা বলল, কোন ব্যক্তি এ মহিলার ব্যাপারে আললাহর রাসূলের সাথে কথা বলতে পারে? তারাই বলল, যে উসামা বিন যায়েদ রাসূলের কাছে প্রিয়। সে এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বলবে। উসামা মহিলাকে শান্তি না দেয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আবেদন করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘আল্লাহর বিধানের ব্যাপারে তুমি আমার কাছে শুপারিশ করছ?’’ অথঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাড়ালেন, বক্তব্যে বললেন, ‘‘তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিগুলো এ কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে যে, তাদের মধ্যে যখন প্রভাবশালী, বংশীয় লোক চুরি করত তাকে ছেড়ে দিত (বিচার না করে)। আর যখন দুর্বল ব্যক্তি চুরি করত তখন তার উপর শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর শপথ! যদি মুহাম্মাদের মেয়ে ফাতেমা চুরি করত, তাহলে আমি তার হাতও কেটে দিতাম।’’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম।

লোকদের ধারনা ছিল, কুরাইশ হল আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিজ বংশ। তার বংশের এক মহিলা চুরি করেছে। তাঁর কাছে শুপারিশ করলে হয়ত তিনি নিজের বংশ ও মহিলার সম্মানের দিক বিবেচনা করে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর রাসূল সাফ জানিয়ে দিলেন, বিচারে কোন পক্ষপাতিত্ব চলতে পারে না। বংশ তো পরের কথা, আমার কলিজার টুকরা ফাতেমা যদি চুরি করে তাহলে তার উপরও শাস্তি প্রয়োগ করা হবে যথাযথভাবে। আর এ ধরনের অন্যায়-অবিচার ও আইন প্রয়োগ ও বিচারে বৈষম্য করা দেশ, জাতি ধ্বংশের একটি বড় কারণ।

এ জন্য অনেক মনীষি বলেছেন, ‘আল্লাহ কাফের রাষ্ট্র বা সরকারকে টিকে থাকতে দেন, সহ্য করেন, কিন্ত জালেম রাষ্ট্র ও সরকারকে বরদাশত করেন না, ধ্বংস করে দেন।’ যদি তারা মুসলিম হয় তবুও। জুলুম করে ইসলামের দোহাই দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া যাবে না।

এ জন্য আল্লাহ রাববুল আলামীন তাঁর দশ অসিয়তের মধ্যে ন্যায়-বিচারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে স্থান দিয়েছেন।

আমাদের সমাজে আইন-প্রয়োগ, বিচার ও শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য মুলক আচরণ ব্যাপক ভাবে দেখা যায়। যাদের টাকা-পয়সা, প্রভাব-প্রতিপত্তি বা দাপট আছে, তাদের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ ও শাস্তি এক ধরনের। এমনকি তাদের জন্য আদালত ও জেল ভি আই পি গোছের। আর যাদের তেমন কিছু নেই তাদের ক্ষেত্রে আইন ও শাস্তির প্রয়োগ হয় কঠোরের চেয়েও কঠোর। বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা যেন আগেকার যুগের রাজা-বাদশাদের রাজপুত্র আর রাজ-কন্যার মত। তারা সাতটি খুন করলেও তা খুন বলে ধরা হতো না। এ দেশে রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল অবরোধের নামে যত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, যত মানুষ পিটিয়ে মেরেছে, তার কি কোন একটিরও বিচার হয়েছে? কেহ কি এর বিচারের দাবী তুলেছে? এটাইতো জুলুম। এ জুলুমের জন্যইতো দেশ, জাতি ধ্বংস হয়ে যায় বলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গেছেন। ইতিহাসও তাই বলে।

যারা সংবাদ-পত্র বা বিভিন্ন মিডিয়াতে কাজ করেন, তাদের জন্য রয়েছে এ আয়াতে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। অনেক সময় দেখা যায় তারা সংবাদ পরিবেশনে ন্যায়নীতির ধার ধারে না। সত্য ও মিথ্যা বলতে যেন তাদের অভিধানে কিছু নেই। যা ইচ্ছা তা প্রচার করে অপরকে অপমানিত করতে তাদের বিবেক কোন বাধা দেয় না।

এমনকি অনেক আলেম-উলামাকে দেখা যায় যে, কোন তুচ্ছ বিষয়ে কারো সাথে মতভেদ হলে তারা তাদের বিরোধী পক্ষকে গালিগালাজ করেন। গোমরাহ, বিভ্রান্ত, মুর্খ, ইসলামের শত্রু ইত্যাদি বাক্য প্রয়োগ করতে দ্বিধা করে না। এটা আল্লাহর এ অসিয়তের চরম লংঘন। মানুষ যা বলে তার সব কিছুর ব্যাপারে আল্লাহর কাছে জওয়াবদিহি করা হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন