HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহ তাআলার দশ অসিয়ত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

তৃতীয় অসিয়তঃ দারিদ্রতার কারণে সন্তান হত্যা না করা
وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ مِنْ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ .

‘‘দারিদ্রতার কারণে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি।’’

প্রথম অসিয়তে আল্লাহ নিজের অধিকারের কথা বললেন। দ্বিতীয় অসিয়তে আল্লাহ মাতা - পিতার অধিকারের কথা বললেন। তৃতীয় অসিয়তে আল্লাহ তাআলা সন্তানের অধিকারের কথা বলছেন। মাতা পিতা ও সন্তান বাদ দিলে মানুষের পারিবারিক জীবন বলতে আর কি থাকে? ইসলামে পরিবারকে এভাবেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

সমাজ জীবনের সবচেয়ে মুল্যবান ধাপ হল পরিবার। পরিবার ব্যতীত মানুষ মানুষে পরিণত হতে পারে না।

দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যা করাকে আল-কুরআনের একাধিক স্থানে কঠোর ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে। এ ধরনের কাজের নিন্দা করা হয়েছে প্রচন্ডভাবে। যেমনঃ

وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا

‘‘তোমাদের সন্তানদের দারিদ্র-ভয়ে হত্যা করবে না। তাদেরকে আমিই রিয্ক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদের হত্যা করা মহাপাপ।’’ সূরা আল-ইসরা, আয়াত ৩১

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ভবিষ্যত দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। আর সূরা আনআমের এ আয়াতে দারিদ্রতার কারণে সন্তান হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। কাজেই ফলাফল দাড়াল বর্তমান কিংবা ভবিষ্যত দারিদ্রতা, বাস্তব দারিদ্রতা কিংবা দারিদ্রতার আশংকা, যে কোন কারণেই হোক, সন্তান হত্যা করা বিরাট অপরাধ

যে সকল সন্তানদের হত্যা করা হয়, হাশরের ময়দানে তাদেরকে উপস্থিত করে হত্যাকরীদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী হিসাবে আল্লাহ প্রশ্ন করবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ

وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ ﴿৮﴾ بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ ﴿৯﴾

‘‘যখন জীবন্ত-সমাধিস্থ কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?’’ সূরা আত-তাকবীর, আয়াত ৮-৯

হাদীসে এসেছে -

يقول ابن مسعود قلت يا رسول الله أي الذنب أعظم؟ قال : أن تجعل

لله ندا وهو خلقك، قلت ثم أي؟ أن تقتل ولدك خشية أن يطعم معك، قلت ثم أي؟ قال : أن تزاني حليلة جارك، ثم تلا رسول الله صلى الله عليه وسلم : وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا . يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا .

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! সবচেয়ে বড় পাপ কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘যে আল্লাহ তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, তার সাথে তুমি যদি শরীক কর।’’ তারপর আমি প্রশ্ন করলাম, এর পরে সবচেয়ে বড় পাপ কী? তিনি বললেন, ‘‘তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তুমি যদি তোমার সন্তানকে হত্যা কর।’’ আমি আবার প্রশ্ন করলাম তারপরে বড় পাপ কী? তিনি বললেন, ‘‘তুমি যদি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করো।’’ এ কথা বলে তিনি আল-কুরআনের এ আয়াতগুলো পাঠ করলেন

وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا . يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا .

অর্থঃ ‘‘যারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহ আহবান করে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়।’’ সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৬৮-৬৯

হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে

সর্বাবস্থায়ই সন্তান হত্যা করা হারাম। দারিদ্রের কারণে হোক বা অন্য কোন কারণে বা কোন কারণ ব্যতীত। এ আয়াতে দারিদ্রতার কারণে সন্তান হত্যা করার নিষেধ এসেছে এ জন্য যে, জাহেলী যুগে দারিদ্রতার কারণে বা অপমানের ভয়ে সন্তান হত্যার প্রচলন ছিল।

সন্তান-সন্তদি, স্ত্রী পরিজন আল্লাহর নেআমাতসমূহের মধ্যে একটি বিরাট নেআমাত। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَنِينَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَةِ اللَّهِ هُمْ يَكْفُرُونَ . ( النحل :৭২)

‘‘আর আল্লাহ তোমাদের থেকেই তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদের জন্য সন্তান-পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছেন। তবুও কি তারা মিথ্যায় বিশ্বাস করবে এবং তারা আল্লাহর নেআমাত অস্বীকার করবে?’’ সূরা আন-নাহল, আয়াত ৭২

মাতা পিতা, স্ত্রী, সন্তানাদি, নাতী-নাতনী নিয়ে সংসার ও পরিবার যে আল্লাহ তাআলার কত বড় দান, কত বিশাল নেআমাত তা ঐ ব্যক্তি কিছুটা অনুধাবন করেছে যার এগুলো ছিল এখন নেই। কিংবা এখন আছে কিন্তু থেকেও নেই।

তাই সন্তান হত্যা করা একজন মানুষ হত্যা করার অপরাধ তো বটেই, সাথে সাথে আল্লাহর এ বিশাল নেআমাতকে প্রত্যাখ্যান করার অপরাধে অপরাধী হবে।

বর্তমান পাশ্চাত্যের ভোগবাদী সমাজে পরিবার গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। আমাদের সমাজেও এর হাওয়া লেগেছে। ইসলামী সমাজে পরিবারের গুরুত্ব ও ভূমিকাকে কোন অবস্থাতে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। যা কিছু পারিবারিক শৃংখলার বিরুদ্ধে যায়, ইসলাম অবশ্যই তার বিরুদ্ধে দন্ডায়মান।

মানুষ একটি ভুল দৃষ্টিভংগির উপর ভিত্তি করে সন্তান হত্যা করত। সেটি হল দারিদ্রতা বা দারিদ্রতার ভয়। পিতা মনে করত এ সন্তানের খাবার দাবারে দায়িত্বটা আমার নিজের। আমি কিভাবে এ দায়িত্ব পালন করব? কিন্তু তার এ ধারণাটা মোটেই ঠিক নয়। প্রতিটি প্রাণীর রিযক তথা জীবনোপকরণের দায়িত্ব আল্লাহ রাববুল আলামীনের। তিনি বলেনঃ

وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا .

‘‘ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই।’’

সূরা হুদ, আয়াত ৬

তিনি আরো বলেনঃ

وَكَأَيِّنْ مِنْ دَابَّةٍ لَا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

‘‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য বহন করে না। আল্লাহই রিয্ক দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকেও, এবং তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’’ সূরা আনকাবুত, আয়াত ৬০

এখন প্রশ্ন থেকে যায় যে, সন্তান হত্যা করা হারাম। কিন্তু সন্তান যেন জন্ম গ্রহণ করতে না পারে এ জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করলে কি হারামের মধ্যে গন্য হবে? সেটা কি আল্লাহর এ নিষেধের আওতায় পড়বে?

দারিদ্রতার ভয়ে নয়, বরং অন্য কোন কারণে যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তবে তা জায়েয বলে অনেক আলেম মতামত দিয়েছেন। কিন্তু যদি দারিদ্রতার কারণে কিংবা দারিদ্রতার ভয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা যে হারাম হবে, এতে কারো দ্বিমত নেই। এ আয়াতও তার প্রমাণ। আর আমাদের সমাজে দারিদ্রতার ভয় দেখিয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য মানুষকে উৎসাহ দেয়া হয় এবং প্রচার চালানো হয়। এটা জায়েয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে দারিদ্রতার ভয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা পৃথিবীতে চলে আসা একটি জীবন্ত সন্তান হত্যা করার মত সমান অপরাধ যে নয়, তাতে সন্দেহ নেই। তবে তা যে অপরাধ, এটা নি:সন্দেহে বলা যায় আল্লাহ রাববুল আলামীনের এ অসীয়তের আলোকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন