HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহ তাআলার দশ অসিয়ত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

পঞ্চম অসিয়তঃ মানুষ হত্যা না করা
وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ

‘‘আল্লাহ যা হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত তোমরা তা হত্যা করবে না।’’

আল্লাহ রাববুল আলামীন মানুষের প্রাণ দান করেছেন, তিনি তা রক্ষা করবেন। এ প্রাণ হরণ করার অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। তার স্পষ্ট নির্দেশ ব্যতীত কোন মানুষকে হত্যা করা বা মৃত্যুদন্ড দেয়া যাবে না। যে সকল ব্যাপারে তিনি মৃত্যুদন্ডের বিধান দিয়েছেন শুধু সে সকল ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবেন। যেখানে তিনি মৃত্যুদন্ডের বিধান শিথিল করে নিহত ব্যক্তির আত্নীয়-স্বজনের সাথে বোঝা পড়া করে বা রক্ত পণ দিয়ে অব্যাহতি লাভের ব্যবস্থা দিয়েছেন সেখানে সে ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাও হত্যার মত অপরাধ।

একটু বিস্তারিত না বললে বিষয়টি হয়তো স্পষ্ট হবে না। মনে করুন কাবীল নামের এক ব্যক্তি হাবীল নামক ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করল। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণে রায় দিল যে, কাবীল, হাবীলের হত্যাকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই কাবীল-কে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলো। এখানে ইসলামী বিধান হল হাবীলের পরিবার যদি কাবীল-কে ক্ষমা করে দেয় কিংবা কাবীলের কাছ থেকে রক্তপণ গ্রহণ করে, তাহলে কাবীলের প্রাণটা বেঁচে যায়। এতে কাবীলের পরিবারের যেমন কাবীলকে হারানোর বেদনা বহন করতে হবে না। তেমনি হাবীলের অসহায় পরিবারটি অর্থ পেয়ে নিজেদের অবস্থার উন্নতিতে কাজে লাগাতে পারবে। আর যদি হাবীলের পরিবার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার দাবীতে অটল থাকে, তাহলে অবশ্যই মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে। অন্য কোন শক্তির ক্ষমতা নেই তা রোধ করার। এটা হলো ইসলামের বিধান। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা মুসলমান হয়েও ইসলামের এ কল্যাণকর বিধান থেকে বঞ্চিত। আমাদের দেশের আইনে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা রয়েছে কোন মৃত্যুদন্ড রহিত করার। এটি সম্পূর্ণ মানবতাবিরোধী। রাষ্ট্রপতি যদি কাবীলের মৃত্যুদন্ড রহিত করেন তাহলে হাবীলের পরিবারের লাভ কি হলো? অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে কাবীল জেল থেকে বের হয়ে নিহত হাবীলের পরিবারের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। হাবীলের পরিবার হাবীলকে হারানোর বেদনা বহন করে এখন কাবীলের ভয়ে বাড়ী-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বৃটিশের গড়া মানুষগুলো এটতা ইসলাম বিদ্বেষী যে, তারা মনে করে ইসলামী আইন-কানুন যতই কল্যাণকর হোক তা বাস্তবায়ন করা যাবে না। এ দেশে বৃটিশর রাজত্ব শেষ হয়েছে, কিন্তু তাদের গোলামী ও দাসত্বের অবসান হয়নি।

অন্যায়ভাবে শুধু মুসলমানদের হত্যা করা অপরাধ নয়। যে কোন মানুষকে হত্যা করাই অপরাধ। এ আয়াতে তাই মানুষকে হত্যা হারাম করা হয়েছে। হোক সে মুসলিম বা হিন্দু কিংবা অন্য ধর্মালম্বী।

মানুষ হত্যা কত জঘন্য অপরাধ তা আল্লাহ তাআলার এ বানী থেকেও অনুধাবন করা যায়ঃ

أَنَّهُ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا

‘‘যে ব্যক্তি প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করল, সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারো প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’’ সূরা আল- মায়েদা, আয়াত ৩২

আল্লাহর এ অসিয়তের ভাষায় ‘যথাযথ কারণ ব্যতীত হত্যা করা’ হারাম বলা হয়েছে। এখন প্রশ্ন তাহলে যথাযথ কারণ কী, যা পাওয়া গেলে হত্যা করা যায় বা মৃত্যুদন্ড দেয়া যায়?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে দিয়েছেন সে কারণগুলো। তিনি বলেছেনঃ

لا يحل دم إمرىء مسلم إلا بإحدى ثلاث- الثيب الزاني والنفس بالنفس والتارك لدينه المفارق للجماعة . متفق عليه

‘‘তিনটি কারণের কোন একটি কারণ ব্যতীত মুসলমানের রক্ত প্রবাহ বৈধ নয় - বিবাহিত ব্যভিচারকারী, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ ও ইসলাম ধর্ম ত্যাগকারী মুসলিম সমাজে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টিকারী।’’ বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম

অর্থাত এ তিন কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করা বা মৃত্যুদন্ড দেয়া বৈধ নয়। যদি বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় ও তার ব্যভিচার প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া যায়। যদি কেহ কাউকে হত্যা করে, তাহলে এর শাস্তি হিসাবে হত্যাকারীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া যায়। যদি কোন মুসলামান ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায় এবং মুসলিম সমাজ বা রাষ্ট্রে বিভেদ কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তাহলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া যায়।

এ সকল অপরাধে মৃত্যুদন্ড দেয়া ও তা কার্যকর করার দায়িত্ব রাষ্ট্র বা সরকারের। কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দল মৃত্যুদন্ড দিতেও পারবে না। কার্যকর করতেও পারবে না। এটা ইসলামের বিধান।

মানুষ হত্যা কত বড় অন্যায়, আল্লাহ তাআলার আরেকটি বাণী থেকে আমরা বুঝতে পারি। তিনি ইরশাদ করেনঃ

وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا

‘‘কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি ক্রোধান্বিত হবেন, তাকে অভিসম্পাত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্ত্তত রাখবেন।’’

সূরা আন-নিসা, আয়াত ৯৩

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অনেক দল নিরীহ নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করে থাকেন। তাদের আক্রমনে যারা নিহত হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই নিরাপরাধ। এ সকল নির্বিচার আক্রমণ দ্বারা তারা শত্রুকে আতংকিত করতে চান কিংবা নিজেদের প্রচার প্রসারের লক্ষ্য স্থির করেন। বাস্তবে দেখা যায় এ ধরনের নির্বিচার আক্রমণ দিয়ে শত্রুকে আতংকিত করা যাচ্ছেনা বরং এতে তাদের হিংস্রতা, পাশবিকতা ও বর্বরতা আরো বেড়ে যায়। সবেচেয়ে বড় কথা হলো এ ধরনের আক্রমণ যাতে নিরাপরাধ মানুষ নিহত হয়, ইসলাম কখনো অনুমোদন করে না। এ রকম কার্যকলাপ সম্পর্কে আল-কুরআনে যেমন নিষেধ আছে, আছে হাদীসেও। এ ছাড়া ইসলামে জিহাদের দেড় হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের সামনে। সে ইতিহাসে এ ধরনের কোন দৃষ্টান্ত চোখে পড়ে না। শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে শুধুমাত্র শত্রুদের আঘাত করতে হবে অন্যকে নয়। এ ধরনের কার্যকলাপ দ্বারা তারা যেমন মানুষ হত্যার অপরাধে অপরাধী, তেমনি ইসলামের নামে এ অপকর্ম করে ইসলামের নকল চেহারা প্রদর্শনের অপরাধেও তারা অপরাধী।

হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে নির্বোধ ব্যক্তিরা যা করছে সে কারণে আমাদের পাকড়াও করো না। তাদের কারণে আমাদের শাস্তি দিও না।

এ পাঁচটি অসিয়ত করার পরে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

‘‘তোমাদেরকে তিনি এ অসিয়ত করলেন যেন তোমরা অনুধাবন কর।’’

এ পাঁচটি অসিয়ত দুর্বোধ্য নয়। একেবারে সহজ সরল ভাবে, সহজ ভাষায় বলা হলো। যাতে তোমরা বুঝতে পারো। ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারো। আর এটা কোন হালকা বিষয় নয়। তোমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহর চুরান্ত অসিয়ত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন