hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইলমে দীন অর্জনের পথ ও পদ্ধতি

লেখকঃ সালেহ ইবন আবদুল আযীয আলে শাইখ

১১
আপনি কীভাবে বুঝবেন যে, পঠিত পরিচ্ছেদটি আপনি বুঝতে পেরেছেন?
প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কীভাবে বুঝবেন যে, পঠিত পরিচ্ছেদটি আপনি বুঝতে পেরেছেন?

কিছু কিছু ছাত্র আছে তারা অনেক পড়ে। কিন্তু যখন নিজে ব্যাখ্যা করতে আসে তখন তিনি অ-শরয়ি ভাষায় ব্যাখ্যা করেন অথবা ভুল ব্যাখ্যা করেন। কারণ, তিনি মূলতঃই ভুল বুঝেছেন। কারণ, তিনি নিজেকে পরীক্ষা করেন নি। আপনি যখন ‘ওয়াসেতিয়্যাহ্‌’ এর কোনো একটি পরিচ্ছেদ ব্যাখ্যাসহ পড়া শেষ করবেন তখন আপনি নিজে নিজে ব্যাখ্যা করবেন। যেমন ধরুন, ‘ওয়াসেতিয়্যা’র শুরুতে শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ্‌ বলছেন: এটি হচ্ছে নাজাতপ্রাপ্ত দল তথা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকিদা। আপনি যখন কিতাবটি ব্যাখ্যা করা শুরু করবেন তখন প্রথমে নাজাতপ্রাপ্ত দল কারা? -তার ব্যাখ্যা করবেন। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত কারা? -তার ব্যাখ্যা করবেন? এভাবে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনি এ কথাগুলোর অর্থ বুঝতে পেরেছেন।

বইয়ের মূল পাঠের মধ্যে যদি আল্লাহর সিফাতের (আল্লাহ গুণের) উল্লেখ আসে তখন আপনি সিফাতের ব্যাখ্যা করবেন। যেমন ধরুন, اَلْعُلُؤُّ لِلّهِ (আল্লাহ্‌র জন্য সুউচ্চ স্থান সাব্যস্ত করার) গুণ এর ব্যাখ্যা করবেন। اِسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ (আল্লাহর ‘আরশের উপর উঠা) গুণ এর ব্যাখ্যা করবেন। ব্যাখ্যাকার যে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন যা আপনি পড়েছেন অথবা শুনেছেন সে সে বিষয়গুলো আপনি উল্লেখ করবেন। আপনি যদি বলেন যে, আমি ওয়াসিতিয়্যা পড়েছি। শুধু পড়া দ্বারা আপনার ইলম হাসিল হবে না। আপনাকে পড়াতে পারতে হবে। এটাকে আলেম সমাজ মু‘আরাদাতুল ইলম ( مُعَارَضَةُ الْعِلْمِ ) বা মুদারাসাতুল ইলম ( مُدَارَسَةُ الْعِلْمِ ) বা মুযাকারাতুল ইলম ( مُذَاكَرَةُ الْعِلْمِ ) তথা পুনঃপাঠ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। অর্থাৎ পুনঃপাঠকে আলেমগণ তিনটি নামে অভিহিত করেন মু‘আরাদাহ ( مُعَارَضَةٌ ), মুদারাসা ( مُدَارَسَةٌ ), মুযাকারা ( مُذَاكَرَةٌ )। হাদীসবিশারদগণ এ ক্ষেত্রে মুযাকারা শব্দটি ব্যবহার করেন। বলা হয়ে থাকে - ذَاكَرْتُ كَذَا (আমি অমুক হাদীসটি পুনর্বার পড়েছি)। ইমাম আহমাদ সম্পর্কে একটি বর্ণনায় এসেছে যে, ইমাম আহমাদ ও প্রসিদ্ধ ইমাম আবু যুর‘আ উবাইদুল্লাহ ইবন আব্দুল কারীম আর্‌ রাযী এশার সালাত একত্রে আদায় করতেন। তারপর তাঁরা ঘরে ফিরে দু’জনে মিলে পুনঃপাঠ শুরু করতেন। এভাবে সারারাত কাটিয়ে দিতেন। ফজরের আযান শুনে তারা সম্বিত ফিরে পেতেন। তাঁরা সারারাত জেগে পুনঃপাঠ চালিয়ে যেতেন। কিন্তু তাদের পুনঃপাঠের পদ্ধতিটি কী ছিল?

একজন হাদীসের সনদ উল্লেখ করতেন, অপরজন মতন উল্লেখ করতেন। আবার একজন মতন উল্লেখ করতেন, অপরজন সনদ উল্লেখ করতেন। এভাবে ইলমকে পাকাপোক্ত করতেন।

আপনি শুধু কোনো শাইখ বা শিক্ষকের দার্‌সে হাযির হয়ে আলোচনা শুনলেন আর বাসায় চলে গেলেন, আপনার সর্বশেষ কাজ হচ্ছে কেবল শিক্ষকের কাছ থেকে শোনা, (শোনার পর পুনঃপাঠ হয় নি) তাহলে আপনার ইলম হাসিল হবে না। দার্‌স শুনে আপনি কিছুটা উপকৃত হবেন বটে, সাওয়াবও পাবেন -ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনার ইলম বাড়বে না। ইলমের ভিত্তি গড়বে না। আপনি আলোচনা শুনার পর, ব্যাখ্যা পড়ে বুঝার পর নিজে নিজে ব্যাখ্যা করবেন। বুঝতে পারার লক্ষণ হলো- কিতাব বন্ধ করে নিজে নিজে ব্যাখ্যা করতে পারা, মাসআলাগুলো বিশ্লেষণ করতে পারা। আপনি যদি শতভাগ বুঝে থাকেন তাহলে আপনি প্রতিটি মাসআলা বিশ্লেষণ করতে পারবেন। আপনার বুঝার মধ্যে কোনো প্রকার জড়তা থাকবে না। যদি আপনার বুঝের মধ্যে কমতি থাকে অথবা জড়তা থাকে অথবা আপনি বিকৃতভাবে বুঝে থাকেন তাহলে এ প্রধান গ্রন্থগুলো, যেগুলোকে মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেগুলো ব্যাখ্যা করার তা আপনার কাছে ধরা পড়বে। আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনি তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন, কীভাবে কথা বলবেন তা আপনি বুঝতে পারছেন না। মাসআলাগুলো একটির সাথে অপরটি পেঁচিয়ে ফেলছেন। অথচ যখন আপনি ব্যাখ্যা পড়েছেন তখন ঠিকই বুঝেছেন। পরীক্ষার মাধ্যমে মানুষ সম্মানিত হয় অথবা লজ্জিত হয়। সুতরাং আপনি নিজেকে যাচাই করে নিন- আপনি কি বুঝেছেন, নাকি বুঝেন নি। যখন আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, আপনি কোনো একটি অংশ ব্যাখ্যা করতে পারছেন না; অথবা কোনো একটি বাক্য ব্যাখ্যা করতে পারছেন না তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনি এ অংশটি বুঝেন নি। এ অংশটি আপনাকে পুনরায় পড়তে হবে। অতএব, এ অংশটি ভালভাবে না বুঝে আপনি পরবর্তী অংশ পড়তে যাবেন না।

আগেকার দিনে তালিবে ইলম কোনো একজন শাইখের নিকট ইলম শিখত। শাইখ তাদেরকে বিশেষ কোনো বিষয় পড়াতেন। তারা যখন রাতে বাড়িতে ফিরে আসতেন তখন বই বন্ধ করে এক সহপাঠী অন্য সহপাঠীর নিকট ব্যাখ্যা করতেন। আবার দ্বিতীয়জন প্রথম জনের নিকট ব্যাখ্যা করতেন। তালিবে ইলমের একাধিক নয়; একজন সহপাঠী থাকা বাঞ্ছনীয়। এই সহপাঠীর সাথে আপনি দৈনন্দিন পাঠ পুনঃঅধ্যয়ন করবেন। আপনি আপনার সহপাঠীকে ব্যাখ্যা করে শোনাবেন এবং আপনার সহপাঠী আপনাকে ব্যাখ্যা করে শুনাবে। তার বুঝার মধ্যে কোনো ভুল থাকলে আপনি তা সংশোধন করে দিবেন। আপনার বুঝার মধ্যে কোনো ভুল থাকলে সে সংশোধন করে দিবে। এভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করবেন।

‘ওয়াসেতিয়্যাহ’ গ্রন্থটি শেষ করার পর শুরু হবে তৃতীয় স্তর। ‘ওয়াসেতিয়্যাহ’ বুঝার পর আপনি ‘হামাবিয়া’ কিতাব পড়া শুরু করবেন। যদি আপনি চান ‘তাহাবিয়া’র ব্যাখ্যাগ্রন্থও শুরু করতে পারেন; তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। যদি আপনি ওয়াসেতিয়্যাহ্‌ ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে আপনি ইবন তাইমিয়ার অন্যান্য গ্রন্থও বুঝতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ্‌ নিজে নিজে পড়েই বুঝতে পারবেন। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে তিনি ফাতাওয়া ইবন তাইমিয়া পড়া শুরু করে দেন অথচ তিনি আকিদা শাস্ত্রের মূলনীতিগুলোও জানেন না। ক্লান্ত-শ্রান্ত, ঘুমঘুম ভাব, হাতে মাত্র ১০/১৫ মিনিট সময় আছে এমন অবস্থায় এসে তিনি বলেন, আস! আমরা ফাতাওয়া ইবন তাইমিয়া পড়ি। বই খুলেই পড়া শুরু করে দেন। এরপর কোনো একটি মাসআলা নিয়ে আলেমদের সাথে তর্ক বাঁধিয়ে দেয়, অথচ মূলতঃই তিনি মাসআলাটি বুঝেন নি। এ শ্রেণির তালিবে ইলম প্রচুর। আমরাও এ প্রকার তালিবে ইলমের মুখোমুখি হয়েছি। সে এসে বলা শুরু করে, শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া এটা এটা বলেছেন- অথচ আপনি যদি ইবন তাইমিয়ার বইটি পড়ে দেখেন দেখবেন যে শাইখুল ইসলাম এমন কথা বলেন নি। কী কারণে এই তালিবে ইলম এই ভুল করেছে- এর প্রথম কারণ সে পড়ার জন্য তার উত্তম সময় ব্যয় করে নি। দ্বিতীয় কারণ হলো, সে এই মাসআলার মূলনীতিগুলো জানে না। অর্থাৎ এই মাসআলার মূলনীতিগুলো তার স্মৃতিতে মজবুত নয়। এ কারণে আলেমদের বক্তব্য বুঝার ক্ষমতা তার মধ্যে অতি দুর্বল। এর চেয়ে বড় ভুল পদ্ধতি হলো, কোনো একজন ছাত্র সে ওয়াসেতিয়্যা বা হামাবিয়্যা বা লুম‘আতুল ই‘তিকাদই ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারে নি সে গিয়ে প্রাচীন আলেমগণের কিতাব পড়া শুরু করে দিল। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন ইমাম আহমাদের ‘আস-সুন্নাহ’ নামক কিতাব পড়া শুরু করে দিল অথবা ইবন মানদা এর ‘আল-ঈমান’ পড়া শুরু করে দিল অথবা ইবন খুযাইমার ‘আত্‌তাওহিদ’ পড়া শুরু করে দিল অথবা ইবন মানদা এর ‘আত্‌ তাওহীদ’ পড়া শুরু করে দিল। অনুরূপ বড় বড় অন্যান্য আকিদার গ্রন্থ, যে গ্রন্থগুলো যথাযথভাবে বিন্যস্ত নয়; যেভাবে পরবর্তী আলেমগণের গ্রন্থগুলো সুবিন্যস্ত। কিন্তু আপনি যদি মূলনীতিগুলো জানার পর প্রাচীন আলেমগণের কিতাবগুলো পড়েন তাহলে আপনি যথাযথভাবে সে বিষয়গুলো বুঝতে সক্ষম হবেন; ইনশাআল্লাহ। যেহেতু প্রাচীন আলেমগণের বক্তব্য বুঝার ক্ষেত্রে আপনি ইতোপূর্বে শিখে নেওয়া মূলনীতিগুলোর সহযোগিতা নিতে পারবেন। আপনি তাদের বক্তব্যের মর্মার্থ, উদ্দেশ্য এবং এ বক্তব্যের মধ্যে কি অর্ন্তভুক্ত এবং কি অন্তর্ভুক্ত নয়, কী কী উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত এবং কী কী উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত নয় সবকিছু বুঝতে পারবেন। উদাহরণতঃ লুম‘আতুল ই‘তিকাদ এর শুরুতে আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর উপর ঈমান আনার বিষয়ে গ্রন্থকার বলেন: بِلَا كَيْفٍ وَ لَا مَعْنىً (বাহ্যিক অর্থ, কোনো আকার ও অর্থ ব্যতিরেকে) এটুকুর সত্যিকার অর্থ [এর সত্যিকার অর্থ তো এই যে, আল্লাহর নাম ও গুণগুলোর কোনো ধরন নির্ধারণ করা যাবে না, যেমনিভাবে এমন অর্থও করা যাবে না যার মাধ্যমে সৃষ্টিকুলের সাথে সামঞ্জস্য তৈরি হয়। বরং বলা হবে যে, এগুলোর অবশ্যই অর্থ রয়েছে যা আমাদের জানা তবে তা সৃষ্টির সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে নয়, আবার এগুলোর সুনির্দিষ্ট ধরণও রয়েছে, তবে সেগুলোর ধরন আমাদের জানা নেই। [সম্পাদক]] যে তালিবে ইলম বুঝে না সে কি এর বাহ্যিক যে অর্থ সে বুঝেছে তাই বলে দেবে? কারণ, এর সত্যিকারের অর্থ তো কেবল সত্যনিষ্ঠ প্রাচীন আলেমগণের কিতাব পড়লেই বুঝতে সক্ষম হবে। তারপর সে এটিকে আমাদের বড় বড় আলেমগণের দিকে সম্পর্কযুক্ত করবে। কারণ, তাদের কাছে এমন ইলম রয়েছে যে ইলম অন্যদের নিকট নেই। আর যদি স্বল্প সময়ের কারণে আপনি তাদের মজলিসে হাযির হতে না পারেন, তাহলে আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে যারা তালিবে ইলম রয়েছে তাদের সাথে সম্পৃক্ত হবেন এবং ইলম হাসিলের সর্বজনবিদিত শর্তগুলো মেনে তা অর্জন করবেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন