hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বাংলাদেশে ইসলামি শিক্ষানীতির রূপরেখা

লেখকঃ আবদুস শহীদ নাসিম

১৭
বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা
ইংরেজরা আমাদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে গেছে সেটাকেই আমরা বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা বলছি। এই শিক্ষা ব্যবস্থা নিরেট কতিপয় উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখেই তৈরি করা হয়েছিল। তাই এটাকে বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা বলাটাই যুক্তিযুক্ত।

ইংরেজ শাসকরা এদেশে এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে, যার উদ্দেশ্য ছিলো ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে থেকে একদল শিক্ষিত মানসিক গোলাম ও প্রভু ভক্ত লোক তৈরি করা, যারা জাতিগতভাবে ভারতীয় থাকবে, কিন্তু মানসিকভাবে হানাদার শাসক ইংরেজদের ধ্যান ধারণায় পরিগঠিত হবে।বৃটিশরা এসেছিল এদেশে শাসন শোষণ করতে। তাই এদেশীয়দের মধ্যে থেকে তাদের এমন একদল লোক প্রয়োজন ছিলো, যারা তাদেরেক প্রভু মনে করবে, তাদের সভ্যতা সস্কৃতিকে শ্রেষ্ঠ মনে করবে, তাদের আচার আচরণ ও চিন্তা দর্শনকে চমৎকার মনে করবে এবং একান্ত অনুগত বাধ্যগত দাসের ন্যায় দেশ পরিচালনার কাজে তাদের সেবা সহযোগিতা করবে। যে ব্যক্তি তাদের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে যতো বেশি নিষ্ঠার সাথে সেবা করবে সে নিজেকে ততোবেশি গৌরবান্বিত মনে করবে।তাদের নিজেদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু ছিলো, তা ছিলো রাজ্য শাসন, রাজ্য বিস্তার ও নিজেদের চিন্তা দর্শন বিস্তারের উপযোগী লোক তৈরি করার উদ্দেশ্যে প্রণীত। সুতরাং নিজেদের দেশে তারা যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে, তা তৈরি হচ্ছিলো সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানের উপযুক্ত লোক আর জবর দখল করা দেশগুলোতে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে তা থেকে লাভ করছিল প্রভু ভক্ত ও আনুগত্য পরায়ণ লোক। এভাবেই তারা শাসক ও সেবক শ্রেণীর লোক তৈরি করছিল। তাদের চালু করে যাওয়া সেই শিক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের দেশে এখনো চালু আছে। এই বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থাটিই আমাদের দেশে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে চালু রয়েছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদেরকে একটি স্বতন্ত্র ও আদর্শ সভ্যতা সংস্কৃতির অধিকারী জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি। এ শিক্ষা আমাদের জাতিকে মানসিকভাবে করেছে বহুগামী। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু আমাদের চিন্তাধারা বিচিত্রগামী। এই শিক্ষার অসংখ্য ত্রুটি আছে। তবে এর প্রধান প্রধান ত্রুটিগুলো নিম্নরূপ:

১. আল্লাহ বিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থা: বৃটিশদের চালু করে যাওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন সময় কিছু কিছু সংস্কার ও মেরামতের কাজ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই শিক্ষা ব্যবস্থার মূলধারা নিরেট আল্লাহ বিমুখ জড়বাদী দর্শনের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। এই পৃথিবী এবং এই মহাবিশ্ব কে সৃষ্টি করেছেন? কি উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন? আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এর জবাব নাস্তিকতার ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। কিংবা সংশয়বাদী ধারণা পেশ করা হয়েছ। এই বিশ্ব জগতের যে একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন, তিনিই যে গোটা মহাবিশ্ব অত্যন্ত বিজ্ঞতার সাথে পরিচালনা করেছেন, তিনিই যে মানুষকে বিশেষ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, মানুষের জীবন যাপনের জন্যে জীবন দর্শন ও জীবন বিধান দিয়েছেন, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুপুস্থিত।

২. ঈমানি দর্শন বর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা: আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষকে সঠিক জীবন দর্শন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আল্লাহ, আল্লাহর একত্ব, রিসালাত, আল্লাহ প্রদত্ত হিদায়াত, পরকাল, আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতা, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি ঈমানি দর্শনের ধারণা বিবর্জিত এ শিক্ষা ব্যবস্থা আর্দশবাদী মানুষ তৈরি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এ শিক্ষা ব্যবস্থা পরকাল বিমুখ দুনিয়া পূজারী মানুষ তৈরি করে। মানুষকে তার শাশ্বত জীবনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা এখানে নেই। মানুষের প্রকৃত কল্যাণ অকল্যাণ, জীবনের আসল ব্যর্থতা ও সার্থকতা জানবার ব্যবস্থা এখানে নেই। ঈমান বিবর্জিত বস্তুবাদী দর্শনই এ শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি।

৩. জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশনা বর্জিত শিক্ষা : আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার মূলধারাই যেহেতু আল্লাহ বিমুখ ও ঈমান আকীদা বিবর্জিত দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত, তাই এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আদর্শিক জীবন ও জীবন পদ্ধতি লাভ করার তো কোনো প্রশ্নই আসে না। মহান আল্লাহ অহী ও নবুওয়তের মাধ্যমে মানুষের জন্যে যে হিদায়াত ও জীবন যাপন পদ্ধতি পাঠিয়েছেন, এ শিক্ষা ব্যবস্থা সে সম্পর্কে নীরব। শুধু নীরবই নয়, বরং বিরূপ। এ শিক্ষা ব্যবস্থায় যারা শিক্ষিত হচ্ছে, তারা না ইসলামি জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পাচ্ছে, না সত্যিকার মুসলিম হয়ে গড়ে উঠতে পারছে আর না জীবন যাপনের সঠিক পথ খুঁজে পাচ্ছে। এর ফলে এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত যুবকদের মধ্যে বহুরংগী জীবন যাপনের প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

৪. প্রকৃত লক্ষ্য বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা: ইসলামি শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মাঝে এক আল্লাহর গোলামি করার প্রবণতা সৃষ্টি করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের মুক্তিলাভের প্রেরণা সৃষ্টি করা, আল্লাহ প্রদত্ত সত্যের সাক্ষ্য হিসেবে নিজেদেরকে পেশ করার যোগ্যতা অর্জন এবং খিলাফত পরিচালনা এবং মানবতার সেবা করার দক্ষতা ও যোগ্যতা অর্জন করা। কিন্তু আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভাবধারা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা লাভকারীরা জীবনের কোনো মহত লক্ষ্য অর্জন করেনা এবং উপরোল্লিখিত শ্রেষ্ঠ গুনাবলী ও যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনা।

৫. নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ব্যর্থতা: এই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের নৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ দেউলিয়া করে ছেড়েছে। গোটা জাতিকে নৈতিক অধ:পতনের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত করে দিয়েছে। এখানে নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টির কোনো মানদন্ড নেই। আদর্শ ও লক্ষ্য বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থার ফল এ রকমই হয়। যে শিক্ষা ব্যবস্থা এক আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস সৃষ্টি করেনা, পরকালের জবাবদিহিতার অনুভূতি সৃষ্টি করেনা, আদর্শ জীবন পদ্ধতির প্রতি উদ্বুদ্ধ করেনা, সে শিক্ষা ব্যবস্থাতো আদতেই মেরুদন্ডহীন। এরূপ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়। এ শিক্ষা ব্যবস্থার কুফলে আমাদের জাতি দিন দিন নৈতিক অধ:পতনের দিকে তলিয়েই চলেছে।

৬. নেতৃত্ব ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ব্যর্থতা: আমরা আগেই আলোচনা করে এসেছি, এ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল বৃটিশদের মানসিক দাস আর অনুগত সেবক তৈরি করার জন্য। এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে স্বাধীন দেশ ও জাতিকে পরিচালনা করার যোগ্য নেতৃত্ব ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবার আশা করা যায়না। নিজ দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্যে আত্মত্যাগী শিক্ষিত মানুষ এখান থেকে বের হবার আশা করা যায়না। তাইতো দেখা যায়, জাতির মেধাবী লোকেরা স্বদেশ থেকে বিদেশকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

৭. জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টিতে ব্যর্থতা : এ শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এ শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে মানসিকভাবে বহুমত ও পথের অধিকারী বানিয়ে দেয়। একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা মানসিকভাবে পারস্পরিক শত্রু হয় গড়ে উঠে। ছাত্র জীবন শেষে তারা বিভিন্ন মত ও পথে পরিচালিত হয় এবং জাতিকেও বিভিন্ন পথ ও মতের দিকে ধাবিত করবার চেষ্টা করে। ফলে জাতির মধ্যে দিন দিন হানাহানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনৈক্য প্রসারিত হচ্ছে। ঐক্য ও সংহতির বন্ধন একেবারে শিথিল হয়ে পড়েছে। জাতি অসংখ্য মত ও পথের অনুসারী হয়ে পড়েছে।

৮. সংকীর্ণ মতপার্থক্য সৃষ্টি ও লালন করা এ শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

৯. সন্ত্রাস : এ শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক দেউলিয়াত্বের কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সন্ত্রাস আজ আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার অপরিহার্য অংগে পরিণত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এখানকার শিক্ষকরা পর্যন্ত সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

১০. এ শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উন্নত জীবনবোধ সৃষ্টি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।১১. এ শিক্ষা ব্যবস্থা স্বার্থপর, স্বার্থন্বেষী নিরেট বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গির লোক তৈরি করছে। এ শিক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি অকল্যাণকর বৈশিষ্ট হলো সহশিক্ষা। সহশিক্ষা শিক্ষার পরিবেশকে বিনষ্ট করে দিয়েছে। ইসলামি জীবনবোধ ও মূলবোধকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশার চরম কুফল জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে।

১২. দুর্নীতির প্রসার: দুর্নীতি আমাদের জাতি সত্তার অংশে পরিণত হয়েছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছে জঘণ্য ঘুষখোর, চোরাকারবারী, মানুষের অধিকার হরণকারী, আইনকানুন ও নিয়মশৃংখলা লংঘনকারী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, স্বজনপ্রীতিকারী, যুলুমবাজ, মদখোর, জুয়াবাজ, ফাঁকিবাজ, প্রতারক, চোর, ডাকাত ইত্যাদি। শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্যে, আদর্শ মানুষ তৈরির মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। আর আমাদের ভাগ্যে জুটেছে এর বিপরীত ফল। আমরা এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রেখেছি, যা দুর্নীতি শিক্ষা দিচ্ছে এবং এর শিক্ষার্থীরা দুর্নীতির কাজে দক্ষ হয়ে বেরুচ্ছে।১৩. ধর্মীয় শিক্ষার লেজুড়: অবস্থার প্রেক্ষিতে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার গোটা ধর্মীয় ভাবধারার সাথে ইসলামিয়াত ও ইসলামের ইতিহাসের লেজুড় জুড়ে দেয়া হয়। ইসলামিয়াতকে নিচের শ্রেণীগুলোতে কখনো ঐচ্ছিক, কখনো বাধ্যতামূলক রাখা হয়। উক্ত শ্রেণীতে ইসলামিয়াত ও ইসলামের ইতিহাস ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে রাখা হয়।

ইসলামের ইতিহাস নামে এমন ইতিহাস ছাত্রদের পড়ানো হয়, যাতে ইসলামকে বিকৃত এবং ইসলামের ইতিহাসকে স্বার্থপরতা ও যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাস হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ফলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যারা পাশ করে বের হয় তারা ইসলামের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যায়। বরং অনেকেই একেবারে ইসলাম বিদ্বেষী হয়ে বের হয়। ইংরেজ শাসকরা মুসলিম যুবকদের ইসলাম বিদ্বেষী বানাবার একটি মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ইসলামের ইতিহাস বিভাগ চালু করে। অমুসলিমদের লেখা ইতিহাস এখানে ছাত্রদের পড়ানো হয়। এ বিভাগের মাধ্যমে ইসলামকে একটি জঘণ্য মানবতা বিরোধী ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এ বিভাগের মাধ্যমে বৃটিশরা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতি গ্রহণ করে। ইসলামিয়াত বা ইসলামি শিক্ষা নামে এ বিষয়টি চালু করা হয়েছে তাতে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেয়া হয়না। তবে যতটুকু ধারণাই দেয়া হয় তার ফলাফল ইসলামের পক্ষে খুব একটা যায়না। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে।

পহেলা কারণ হলো, নিচের শ্রেণীগুলোর ইসলামিয়াত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি শিক্ষা বিভাগে ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন দর্শন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষা দেয়া হয়না। ইসলামি জীবন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করবার প্রতিও গুরুত্বরোপ করা হয়না।

ইসলামিয়াত বিষয়টি গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে পরগাছার মতো। ছাত্রদের অন্য সকল জ্ঞান বিজ্ঞান এমনভাবে শিক্ষা দেয়া হয়, যার ফলে গোটা বিশ্বজগত আল্লাহ ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে এবং সফলভাবে পরিচালিত বলে তারা অনুভব করে। আল্লাহ রসূল ও পরকালের প্রয়োজনীয়তাই তারা অনুভব করেনা। ছাত্রদের গোটা চিন্তাধারাই এ দৃষ্টিভঙ্গিতে গড়ে তোলা হয়। অতপর ইসলামিয়াতের ক্লাসে মৌলভি সাহেব আল্লাহ, রসূল, কিতাব ও পরকাল আছে এবং এগুলোর প্রতি ঈমান আনতে হবে বলে শিক্ষা দেন।

একদিকে সামগ্রিকভাবে ছাত্রদের মধ্যে আল্লাহ বিমুখ দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করা হচ্ছে, অপরদিকে ইসলামিয়াতে ক্লাসে আল্লাহমুখী শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। ছাত্রদের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ইসলামিয়াতের শিক্ষাটা পরগাছার মতোই থেকে যাচ্ছে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গির কাছে চরমভাবে মার খাচ্ছে। নিরানব্বই মণ লবণের সাথে এক মণ চিনি মিশালে সে চিনি লবণের সাথে বিলীন হয়ে যেতে বাধ্য।

এভাবেই প্রবল আল্লাহ বিমুখ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলে তার উপর আল্লাহমুখী হালকা ধারণা পেশ করে ছাত্রদের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দেয়া হয় এবং সে দ্বন্দ্বে বেচারা পরগাছা ইসলামিয়াত চরমভাবে পরাজিত হয়। এর ফলে ইসলামের বিরোধিতায় তারা সাহসী হয়ে উঠে।

এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের কথায় আসা যাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব চাইতে ঘৃণীত বিভাগ সম্ভবত এটি। এ বিভাগের ছাত্র শিক্ষকরা মোল্লা মৌলবাদী খেতাবে ভূষিত। এ বিভাগের ছাত্রদের কর্মপোযোগী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়। এ বিষয়ে পাশ করার পর তাদের না সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয় আর না সিভিল প্রশাসনে। কোনো প্রকারে ইসলামিয়াতের শিক্ষকতা করে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তাদের সামাজিক মর্যাদাকে হেয় করে দেখা হয়। মোট কথা ধর্মীয় শিক্ষার এই লেজুড় ও পরগাছা থেকে ছাত্ররা:

ক. ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন দর্শন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে জানতে পারে না।

খ. ইসলামকে হানাহানি কাটাকাটির ধর্ম ও মানবতা বিরোধী বলে শিক্ষা লাভ করে।

গ. তাদের মনে ইসলাম সম্পর্কে খারাপ ধারণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়।

ঘ. ইসলামকে একটি খেল তামাশার বিষয় হিসেব গ্রহণ করে।

ঙ. এটাকে সমাজের জন্যে কল্যাণকর মনে করা হয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন