hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বাংলাদেশে ইসলামি শিক্ষানীতির রূপরেখা

লেখকঃ আবদুস শহীদ নাসিম

২১
খ. ইসলামি শিক্ষানীতির মৌলিক বৈশিষ্ট্য
এখানে আমরা ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক বৈশিষ্টসমূহ উল্লেখ করার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ইসলামি করণের একটি রূপরেখা পেশ করতে চাই। এ রূপরেখা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত, তবে মৌলিক নির্দেশনামূলক। ভবিষ্যতে যারা আমাদের দেশে ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের দায়িত্ব লাভ করবেন, এটি তাদের খানিকটা হলেও সহায়তা করবে বলে আশা করি।

১. জ্ঞানের মূল উৎস ওহীর জ্ঞান: ওহী খোদায়ী জ্ঞান লাভের মাধ্যমে। বাংলা ভাষার জ্ঞানের বাহক বই। বই শব্দটিও এসেছে ওহী থেকে। মূলত বই ওহীর রূপান্তর। এভাবে : ওহী > বহি > বই।এই ওহীই জ্ঞানের মূল উৎস। ওহী হলো, মানব জাতির ইহ ও পারলৌকিক সর্বাঙ্গীন উন্নতি, কল্যাণ ও সাফল্যের উদ্দেশ্যে নবী রসূলদের মাধ্যমে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ নির্দেশনা বা হিদায়াত।আল কুরআন আল্লাহর প্রত্যক্ষ ওহী। এ গ্রন্থ সম্পূর্ণ নির্ভুল এবং সর্বপ্রকার সন্দেহ সংশয়ের ঊর্ধ্বে। সুতরাং আল কুরআনই মানবজাতির জন্যে জ্ঞানের মূল সূত্র, মূল উৎস। আল কুরআনকেই শিক্ষা ও জ্ঞান বিজ্ঞানের ভিত্তি এবং মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। অতপর গোটা শিক্ষানীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষাক্রমকে এ মানদন্ডের ভিত্তিতে সাজাতে হবে, প্রতিষ্ঠা করতে হবে এ নির্ভুল ভিত্তির উপর। রাসূলের (সা) সুন্নাহ আল কুরআনেরই ব্যাখ্যা। তিনিও সে ব্যাখ্যা করেছেন ওহীর ভিত্তিতে, নিজের খেয়াল খুশি মতো নয়। সুতরাং রসূলের (সা) সুন্নাহকে শিক্ষা ও জ্ঞানের দ্বিতীয় উৎস ও মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।কুরআন সুন্নাহর মূলনীতি ও মানদন্ডের ভিত্তিতে সাজানো শিক্ষা ব্যবস্থাই কেবল মানবতার জন্যে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। কারণ তা জ্ঞানের মূল সূত্র থেকে উৎসারিত হয়। আর এটাই ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়ার কথা।

আল কুরআনকে আল্লাহ তাআলা -হুদাল্লিন্নাস- মানুষের জীবন যাপনের সঠিক পথনির্দেশ বলে ঘোষনা করেছেন। সুতরাং মানুষকে তার জীবন যাপনের সঠিক পথ জানতে হলে কুরআনের দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। কুরআনের জ্ঞানার্জনকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আর হাদীস ও সু্ন্নাতে রসূল যেহেতু কুরআনেরই প্রাসংগিক জিনিস, তাই কুরআনের সাথে সুন্নাহকেও অপরিহার্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।২. শিক্ষার মাধ্যম হবে মাতৃভাষা: মাতৃভাষা তথা জাতীয় ভাষা শিক্ষাদানের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। জ্ঞানের সকল উৎস এবং সব ভাষা থেকেই জ্ঞানার্জন করতে হবে। তবে তা বুঝতে হবে এবং বুঝাতে হবে জাতীয় ভাষায়। নবী রসূলরা প্রত্যেকেই জাতির জনগণের ভাষায় শিক্ষাদান করেছেন:আমি যখনই কোনো রাসূল পাঠিয়েছি সে রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছে স্বজাতির ভাষায়, যেনো সে সমস্ত উপদেশ আহ্বান তাদের খুলে বলতে পারে। (সূরা ইব্রাহীম: ৪)

৩. যেহেতু জ্ঞানের মূল উৎস আল কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ ও সংরক্ষিত হয়েছে, তাই আরবি ভাষাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে শিক্ষাদান করতে হবে। প্রথমিক স্তরেই আল কুরআন পড়তে শিখাতে হবে।

৪. প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে সরাসরি দীনের মৌলিক বিষয়সমূহ শিক্ষা দান করতে হবে।

৫. উচ্চতর শ্রেণীসমূহে এবং উচ্চ শিক্ষায় জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল বিষয় ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষিত হবে। তাছাড়া কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামি আইনের বিশেষজ্ঞ তৈরির ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৬. দীনি ও জাগতিক শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হবে।

৭. শিক্ষা হবে সার্বজনীন, সহজলভ্য ও উন্মুক্ত।

৮. প্রাথমিক শিক্ষা হবে বাধ্যতামূলক।

৯. শিক্ষা হবে প্রয়োগমুখী, জীবনমুখী ও কর্মমুখী।

১০. শিক্ষকতার পেশা হবে সবচে সম্মানীয়। শিক্ষকরা হবেন সত্যের সাক্ষ্য।

১১. শিক্ষকদের নৈতিক ও প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ হবে বাধ্যতামূলক।

১২. পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচিতে সমকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্য সম্ভার ও বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি World outlook) সৃষ্টির সহায়ক বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

১৩. প্রাথমিক স্তর থেকেই সুন্দর আচার আচরণ তথা শিষ্টাচার শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকবে।

১৪. পাঠ্যসূচিতে ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে রূপায়িত করতে হবে।

১৫. প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে স্বাস্থ্য ও সামরিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হবে।

১৬. পুরুষদের মতো নারীদের শিক্ষাও হবে বাধ্যতামূলক।

১৭. অবাধ সহশিক্ষা থাকবেনা।

১৮. মসজিদসমূহকেও শিক্ষায়তনে পরিণত করা হবে।

১৯. শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হবে চিরন্তন। তবে শিক্ষা ব্যবস্থা হবে গতিশীল (Dynamic)। শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন অন্তর্গত (in built) ব্যবস্থা থাকবে, যাতে করে পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও প্রয়োজনের সাথে খাপ খাইয়ে শিক্ষার পদ্ধতি, পাঠক্রম, পরিসর, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনের পূর্ণবিন্যাস অনায়সেই করা সম্ভব হয়।২০. শিক্ষার মাধ্যমে জাতীয় চরিত্র গঠনের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে ঈমান ও আদর্শিক মূল্যবোধ তথা তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাত বিশ্বাসের চেতনাকে।

২১. শিক্ষাগ্রহণ এবং শিক্ষাদান উভয়টাই সমগুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য।

২২. শিক্ষাদান পেশা নয়, মিশন।

২৩. অর্জিত জ্ঞান অবশ্যি চরিত্র ও কর্মে প্রয়োগ করতে হবে।

২৪. ইসলাম আনুষ্ঠানিক, উপানুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সকল প্রকার শিক্ষাকেই উৎসাহিত করে।

২৫. শিক্ষা গ্রহণ ও শিক্ষাদান উভয়টাই ইবাদত।

২৬. সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সকল বিভাগের ছাত্রদের জন্যে তফসীরসহ আল কুরআন (বা আল কুরআনের নির্দিষ্ট অংশ) এবং নির্বাচিত সংখ্যক হাদীস শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকবে।

২৭. উচ্চ শিক্ষা হবে গভেষণা ও ইজতিহাদমুখী।

২৮. সকল বিভাগের ছাত্রদেরকে ইসলামের মৌলিক ইবাদতসমূহ অনুশীলন করে শিখাবার ব্যবস্থা থাকবে।

২৯. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থাকবে পাশাপাশি।

৩০. ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রশাসনের মধ্যে থাকবে সমন্বয়,যোগসূত্র ও সুসম্পর্ক।

৩১. ছাত্রদের গড়ে উঠানো হবে স্বাধীনতা রক্ষার সৈনিক, আদর্শের প্রচারক ও সত্যের সাক্ষ্য হিসাবে।

৩২. শিক্ষা প্রশাসন হবে দুর্নীতিমুক্ত, সহজ, গতিশীল ও শিক্ষা উন্নয়নের সহায়ক।

৩৩. শিক্ষানীতি হবে ইসলামি সংস্কৃতির উৎসস্থল। শিক্ষার সকল স্তরে ও সকল বিভাগে ইসলামি সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন