HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

স্ত্রী নির্বাচন

লেখকঃ মফিজুল ইসলাম

যেসকল নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়
যেসকল নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি। তারা হলো-

১. পর্দাহীন নারী :

মহান আলস্নাহ বলেন,

﴿وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا﴾

‘‘আর মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানকে হেফাযত করে। আর তারা যেন সাধারণভাবে যা প্রকাশ পায় তা ব্যতীত তাদের আবরণ প্রদর্শন না করে’’ (সূরা নূর ২৪ঃ ৩১)।

﴿يَاۤأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيْبِهِنَّ ذٰلِكَ أَدْنٰۤى أَنْ يُّعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا﴾

‘‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও মুমিন নারীদেরকে বলে দাও, তারা যেন চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়, এতে তাদেরকে চেনা অধিক সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু (সূরা আহযাব ৩৩ঃ ৫৯)।

হাদীসে এসেছে,

عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ أَنْ نُخْرِجَهُنَّ فِيْ يَوْمِ الْفِطْرِ وَالنَّحْرِ قَالَ قَالَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ فَقُلْنَا أَرَأَيْتَ إِحْدَاهُنَّ لَا يَكُوْنُ لَهَا جِلْبَابٌ قَالَ فَلْتُلْبِسْهَا أُخْتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا

উম্মে আতিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালাতে বের হওয়ার নির্দেশ দিলেন। উম্মে আতিয়া বলেন, আমরা বললাম, হে আলস্নাহর রাসুল ﷺ! যদি আমাদের মধ্যে কারো চাদর না থাকে? রাসুল ﷺ বললেন, তার বোন তাকে চাদর পরাবে। [বুখারী হা: ৩৫১; মুসলিম হা: ৮৯০; ইবনু মাজাহ হা: ১৩০৭ আহমাদ হা: ২০৮১২; মিশকাত হা: ১৪৩১]

অতএব যে নারী আলস্নাহর জমিনে থেকে আলস্নাহর চোখের সামনে তাঁরই নির্দেশের অবাধ্যচারী হয়ে বেপর্দায় ঘুরে বেড়ায়; সে তো আপনারও অবাধ্যচারী হবে, যার মধ্যে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই। আর আপনার অধীনে থেকে যত দিন সে বেপর্দায় ঘুরে পাপ করবে, সেই পাপের ভাগ আপনাকেও নিতে হবে। তাছাড়া আপনার পরিবারটাকেও সে পর্দাহীন পরিবারে পরিণত করতে পারে। কাজেই এমন বৈশিষ্ট্যের নারীকে স্ত্রী বানানোর ক্ষেত্রে সাবধান থাকা জরুরি।

২. ঝগড়াটে :

জগত সংসারে এমন অনেক নারী রয়েছে যারা তাদের স্বামীর সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া-ফাসাদ করে। আর আলস্নাহর কাছে ঝগড়াটে মানুষই সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

إنَّ أبْغَضَ الرِّجَالِ إلَى اللهِ الْألَدُّ الْخَصِمُ

‘‘আলস্নাহর নিকট অধিক ঘৃণিত ব্যক্তি সেই, যে অত্যধিক ঝগড়াটে ও অত্যমত্ম কলহ প্রিয়। [বুখারী মা.শা.২য় খন্ড,পৃ.৮৬৭, হা:২৩২৫; মুসলিম ৪র্থ খন্ড, পৃ.২০৫৪, হা:৫-২৬৬৮]

কাজেই ঝগড়াটে নারী থেকে দূরে থাকা চির কল্যাণকর। কারণ সে নিকৃষ্ট গুণের অধিকারিণী এবং সংসারে অশামিত্ম সৃষ্টিকারিণী।

৩. গীবতকারিণী :

আলস্নাহ তা‘আলা গীবত করার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। [সূরা হুজুরাত ৪৯ঃ১২] এতদ্বসত্ত্বেও এক শ্রেণির নারীর বৈশিষ্ট্যই হলো একজনের কাছে আরেকজনের দোষ-ত্রম্নটি বর্ণনা করা বা গীবত করা। কাজেই গীবতকারী নারী থেকে দূরে থাকা জরুরি।

৪. চোগলখোরিণী :

কবরে যেসকল পাপের কারণে শাসিত্ম হয়, তন্মধ্যে অন্যতম একটি পাপ হলো, চোগলখোরী করা। [বুখারী হা: ৬০৫৫; মুসলিম, মিশকাত হা: ৬০৭৫]

একজনের কথা অন্য জনের কাছে বলে উভয়ের মধ্যে ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করে সম্পর্কের অবনতি ঘটানোই হলো চোগলখোরী। নারীদের মধ্য হতে এক শ্রেণির নারীর নিত্যনৈমত্তিক কর্মই হলো এ কাজের সাথে লেগে থাকা। কাজেই এদের থেকে সাবধান।

৫. ছবি ও মূর্তির প্রতি আকৃষ্ট নারী :

ছবি ও মূর্তি ইসলামে নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ كَلْبٌ وَلَا صُوْرَةٌ

‘‘ঐ ঘরে (রহমত ও বরকতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর ও জীব-জন্তুর ছবি থাকে’’। [বুখারী হা:৩২২৫,৩২২৬,৩৩২২,৪৩০২,৪০০২৫৯৪৯,৫৯৫৮; মুসলিম হা:২১০৬; তিরমিযি হা:২৮০৪; আবুদাউদ হা:৪১৫৩; ইবনু মাজাহ হা:৩৬৪৯; আহমাদ হা:১৫৯১০; মুয়াত্তা মালেক ১৮০২]

এতদ্বসত্ত্বেও এক শ্রেণির বোকা নারী তাদের ছেলে-মেয়ের বা নিজেদের ছবি, বাজার থেকে ক্রয়কৃত মূর্তির সাদৃশ্য প্লাস্টিকের পুতুল, খেলনা ইত্যাদি বাড়িতে ঝুলিয়ে রাখে। আবার কেউ কেউ কোমলমতি শিশুদেরকে ছবি ও মূর্তির আর্ট শেখায় বা আর্ট স্কুলে ভর্তি করে বিভিন্ন প্রাণির ছবি আঁকা শেখায়। অথচ রাসূল ﷺ বলেন, ‘কিয়ামতের দিন ছবি ও মূর্তি নির্মাতাদের কঠিন শাসিত্ম দেয়া হবে’। [বুখারী হা:৫৯৫০; মুসলিম হা:২১০৯]

এমন বৈশিষ্ট্যের নারী থেকে সাবধান থাকা আবশ্যক। কারণ তার উক্ত কর্মের কারণে গৃহ থেকে বরকত চলে যাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাপ শিরকের সাথে আপনার পরিবার জড়িয়ে পড়বে। ফলে ইহকালে ও পরকালে আপনি ও আপনার পরিবার ক্ষতিগ্রসত্ম হবে।

৬. হিংসুটে নারী :

হিংসা একটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ। যার মধ্যে বিন্দুমাত্র হিংসা-অহংকার আছে, সে জান্নাতে যেতে পারবে না। এ পৃথিবীতে হিংসামুক্ত মানুষ পাওয়া বড়ই দুঃসাধ্য ব্যাপার। নারী জাতির মধ্যে হিংসার ভাবটা অনেকাংশে বেশি আছে বলে মনে হয়। কাজেই যে নারীর মধ্যে হিংসার ভাব আছে বলে মনে করা হয়, তার থেকে দূরে থাকা কল্যাণকর।

৭. অভিশাপকারিণী :

কোন মুসলিমকে অভিশাপ দেয়া একটি কবীরা গুনাহ। অভিশাপ প্রদানকারী নারী জাহান্নামে যাবে বলে হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। অথচ অনেক নারীর অভ্যাস হচ্ছে, সন্তানকে গালি-গালাজ করা এবং নানা ধরনের অভিশাপ দেয়া। কাজেই এমন নারীকে স্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করা থেকে দূরে থাকা জরুরি। মনে রাখবেন, সত্যবাদী নারী অভিশাপকারিণী হতে পারে না।

৮. ব্যভিচারিণী :

ব্যভিচার করা একটি মারাত্মক অন্যায়। এটি হচ্ছে মানবজাতিকে ধ্বংস করার জন্য শয়তানের মূল হাতিয়ার। শয়তান যখন কোন জাতির অধঃপতন ঘটাতে চায় তখন সে যেকোন মূল্যেই হোক তাদেরকে ব্যভিচারের দিকে ধাবিত করে। এ কারণেই ইসলাম এটিকে হদ্দের আওতাভুক্ত করে দিয়েছে। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿اَلزَّانِيَةُ وَالزَّانِيْ فَاجْلِدُوْا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ وَّلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِيْ دِيْنِ اللهِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ﴾

ব্যভিচারিণী নারী ও ব্যভিচারী পুরম্নষ তাদের প্রত্যেককেই একশত বেত্রাঘাত করবে। আলস্নাহর এ বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে অভিভূত না করে- যদি তোমরা আলস্নাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাক। (সূরা নূর ২৪ঃ ২)

তাছাড়া ব্যভিচার ও ব্যভিচারিণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াটা হচ্ছে কিয়ামতের একটি আলামত। [বুখারী হা: ৮০,৮১,৬৮০৮, মুসলিম হা: ১৬৭১] আর বর্তমান সমাজও সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে। যার কারণে এখন শিক্ষিতা-অশিক্ষিতা, সুন্দরী-অসুন্দরী অনেক নারী পাওয়া যায়; কিন্তু ব্যভিচারমুক্ত নারী পাওয়া খুবই মুশকিল।

অতএব আমাদের উচিত ব্যভিচারী নারীকে বিবাহ করা থেকে বিরত থাকা এবং তাদের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা।

৯. নগ্ন-অর্ধনগ্ন পোশাক পরিহিতা :

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন,

وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيْلَاتٌ مَائِلَاتٌ رُءُوْسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيْحَهَا وَإِنَّ رِيْحَهَا لَيُوْجَدُ مِنْ مَسِيْرَةِ كَذَا وَكَذَ

‘‘এমন এক শ্রেণির নারী যারা (এমন নগ্ন-অর্ধনগ্ন) পোশাক পরবে যে, (বাস্তবে) তারা উলঙ্গ থাকবে, (পর পুরম্নষকে) নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে ও নিজেরাও (পর পুরম্নষের প্রতি) আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা হবে উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মতো। এ ধরনের মহিলা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সুগন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ এত এত দূর থেকে পাওয়া যাবে’’। [মুসলিম হা: ২১২৮; আহমাদ হা: ৮৪৫১]

আজ অসংখ্য পিতা-মাতার প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে নগ্ন-অর্ধনগ্ন পোশাক পরে হাট-বাজারে, মার্কেটে, স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগানা পুরম্নষদের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ এ শ্রেণির নারীকে জাহান্নামী বলে উলেস্নখ করেছেন। কাজেই এমন বৈশিষ্ট্যের নারী যতই শিক্ষিত হোক, সুন্দরী হোক, চাকুরিজীবী হোক, সম্পদশালী হোক এদেরকে স্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করার ব্যাপারে সতর্ক থাকা বুদ্ধিমানের কাজ।

১০. সালাত ত্যাগকারিণী :

কুরআন সুন্নাহর দলীলাদি থেকে প্রমাণিত যে, সালাত ত্যাগকারী নারী হোক কিংবা পুরুষ হোক তারা কাফিরদের সমতুল্য। সুতরাং সালাত ত্যাগকারী কোন নারী ঈমানদার পুরুষের স্ত্রী হতে পারে না। কেননা মহান আলস্নাহ বলেন,

﴿وَلَا تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتّٰى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّنْ مُّشْرِكَةٍ وَّلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ﴾

‘‘আর তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনবে। অবশ্যই মুসলিম ক্রীতদাসী মুশরিক (সুন্দরী) নারী অপেক্ষা উত্তম। যদিও তাদেরকে তোমাদের ভালো লাগে’’ (সূরা বাকারা ২ঃ ২২১)।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

بَيْنَ الرَّجُلِ وَالْكُفْرِ وَالشِّرْكِ تَرْكُ الصَّلَاةِ

‘‘মুসলিম ও কাফির এবং মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হলো, সালাত পরিত্যাগ করা।’’ [মুসলিম ‘কিতাবুল ঈমান’ হা:১১৬]

কাজেই যে নারী সালাত আদায় করে না, তার মাঝে ও মুশরিক নারীর মাঝে পার্থক্য কোথায়? সালাত ত্যাগকারিণী নারী যতই সম্পদশালী ও সুন্দরী হোক না কেন, তাদেরকে বিবাহ করা বৈধ নয়, যতক্ষণ না তারা পুরোপুরিভাবে ইসলামে প্রবেশ করে। আফসোসের বিষয় হলো, আজ অসংখ্য মুসলিম পুরম্নষের স্ত্রী সালাত আদায় করে না। আশা করি আপনার স্ত্রী এমন হবে না।

১১. বিলাসিনী :

অতিরিক্ত বিলাসিতা কোন ভালো নারীর গুণ নয়। এটা হলো সর্বনিকৃষ্ট মানুষের গুণ। যেমন মহানবী ﷺ বলেন,

شِرَارُ أُمَّتِيْ قَوْمٌ وُلِدُوْا فِي النَّعِيْمِ وغُذُّوْا بِهٖ يَأْكُلُوْنَ مِنَ الطَّعَامِ أَلْوَانًا يَتَشَدَّقُوْنَ فِي الْكَلَامِ

‘‘আমার উম্মতের সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক তারা, যারা নিয়ামতের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে, নানা রঙের খাদ্য ভক্ষণ করে, নানা রঙের বস্ত্র পরিধান করে অথচ কথায় আলস্য ভাব ও কৌশল প্রকাশ করে। [মু‘জামুল কাবীর লিত- তাবরানী পৃ.১০৭; খন্ড ৮; হা:৭৫১৩]

অন্য বর্ণনায় আছে,

وَيَرْكَبُوْنَ مِنَ الدَّوَابِّ أَلْوَانًا

‘‘তারা নানা রঙের সওয়ারীতে (গাড়িতে) চড়ে’’। [সিলসিলা সহীহাহ হাঃ ১৮৯১]

সুতরাং অতিরিক্ত খাওয়া-পরা ও চলা-ফেরা এই নিকৃষ্ট গুণগুলো যেসকল নারীর মধ্যে আঁচ করা যাবে তাদের থেকে দূরে থাকা জরুরি। কারণ তারাই সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। উলেস্নখ্য যে, জুতা জোড়া ভালো হওয়া, পোশাক ভালো হওয়া ইত্যাদি দোষের নয়। তবে অবশ্যই তা অহংকারমুক্ত হতে হবে।

১২. বাদ্যযন্ত্র ও গান-বাজনা শুনতে অভ্যসত্ম নারী :

আধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে টিভি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি যন্ত্রের ব্যবহার শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যমত্ম অঞ্চল পর্যমত্ম প্রত্যেক মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় প্রত্যেক মানুষই এ যন্ত্রগুলো ব্যবহার করছে অশস্নীল ছবি দেখা ও গান বাজনা শোনার কাজে। নারীরাও এ ধরনের নোংরা ও ধ্বংসাত্মক কর্ম থেকে দূরে নেই; বরং তারা আরো এ ধরনের কর্মে বেশি অগ্রগামী। অথচ হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ : إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ الْخَمْرَ وَالْمَيْسِرَ، وَالْكُوْبَةَ

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, নিশ্চয় আলস্নাহ তা‘আলা মদ, জুয়া ও সকল ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন। [বায়হাকী মা.শা. হা: ২১৫১৯, মিশকাত হা: ৪৫০৩]

আবু আমের ও আবু মালিক আল-আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন,

لَيَكُوْنَنَّ مِنْ أُمَّتِىْ أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّوْنَ الزِّنٰى وَالْحَرِيْرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ

অবশ্যই আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায় হবে, যারা ব্যভিচার, (পুরুষের জন্য) রেশমি পোশাক, মদ পান এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে (হারাম হওয়া সত্ত্বেও)। [বুখারী হা: ৫৫৯০, মিশকাত হা: ৫৩৪৩; তিরমিযি, দারেমী, সহীহুল জামে‘ হা: ৫৪৬৬]

বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আগ্রহী ব্যক্তির জন্য অপমানকর শাসিত্মর কথা উলেস্নখ করে আলস্নাহ বলেন,

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَّيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ﴾

‘‘মানুষের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা অজ্ঞতাবশত অনর্থক কথা অর্থাৎ অশস্নীল গান-বাজনা ক্রয় করে এবং সেটা নিয়ে তামাশা করে। এদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাসিত্ম’’ (সূরা লুকমান ৩১ঃ ৬)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ قَالَ : الْجَرَسُ مَزَامِيرُ الشَّيْطَانِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘ঘণ্টা বা ঘুঙুর শয়তানের বাঁশি’। [মুসলিম হা:২১১৪; আবু দাউদ হা:২৫৫৬]

আব্দুলস্নাহ ইবনে আমর (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ‘‘অবশ্যই আলস্নাহ আমার উম্মতের জন্য মদ, জুয়া, ঢোল-তবলা এবং বীণা জাতীয় বাদ্যযন্ত্রকে হারাম করেছেন...’’। [সিলসিলা সহীহা হা: ১৭০৮]

অত্র বিবরণ থেকে প্রমাণিত হয় যে, অশস্নীল গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র, বিভিন্ন টিভি-সিরিয়াল বা চলচ্চিত্র দেখা হারাম এবং পাপের কাজ। কাজেই যে নারী বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আগ্রহী ও টিভি দেখতে অভ্যস্ত সে কেমন করে আলস্নাহভীরম্ন মানুষের স্ত্রী হতে পারে? এ শ্রেণির নারী দেশের, সমাজের, জাতির ও স্বামীর জন্য বিপদজনক। এ ধরনের নারীকে স্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করলে আলস্নাহর পক্ষ থেকে নানা গযব নেমে আসতে পারে। যেমন-

গৃহ থেকে আল্লাহর রহমত দূর হবে :

আপনার গৃহে যদি আপনার স্ত্রী বা অন্য কেউ অশস্নীল গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র বাজায়, তাহলে আপনার গৃহ থেকে রহমত ও বরকত চলে যাবে এবং শয়তান এসে বাসা বাধবে। যেমন- হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : لَا تَصْحَبُ الْمَلَائِكَةُ رُفْقَةً فِيْهَا كَلْبٌ وَلَا جَرَسٌ

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘ফেরেশতা সেই কাফেলার সঙ্গী হন না; যে কাফেলায় কুকুর কিংবা ঘুঙুরের শব্দ থাকে’। [মুসলিম হা:২১১৩; তিরমিযি হা:১৭০৩; আবু দাউদ হা:২৫৫৫; আহমাদ ৭৫১২] যেখানে ঘুঙুরের শব্দে রহমতের ফেরেশতা থাকে না, সেখানে যদি আধুনিক জমিন কাঁপানো বাদ্যযন্ত্র বাজে, সেই গৃহে কীভাবে আলস্নাহর রহমত থাকতে পারে? জ্ঞাতব্য যে, আপনার স্ত্রীকে আপনি আপনার জন্য নূপুর পরাতে পারেন। তবে তা অবশ্যই ঘুঙুরমুক্ত হতে হবে।

পাপের অংশীদার হতে হবে :

আপনার নির্বাচিত স্ত্রী আপনার অধীনে থেকে অশস্নীল ছবি, নাটকের সিরিয়াল, বিভিন্ন নগ্ন-অর্ধনগ্ন নৃত্য, গান ইত্যাদি নিয়ে নিমগ্ন থেকে যে পাপ করবে; তার একটা অংশ আপনার আমলনামায়-ও যোগ হবে। কেননা মহান আলস্নাহ বলেন,

﴿وَمَنْ يَّشْفَعْ شَفَاعَةً سَيِّئَةً يَّكُنْ لَّهٗ كِفْلٌ مِّنْهَا﴾

‘‘যে মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে’’

(সূরা নিসা ৪ঃ ৮৫)।

উক্ত কর্মে আপনি শুধু সুপারিশই করছেন না, বরং আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে খেতে দিয়ে, পরতে দিয়ে, থাকতে দিয়ে এবং উক্ত যন্ত্রাদি ক্রয় করে দিয়ে সহযোগিতা করছেন। এক্ষেত্রে আপনি কত বড় পাপের সহযোগিতাকারী ভেবে দেখেছেন? সুতরাং উক্ত বৈশিষ্ট্যের নারীর কারণে আপনাকে পাপের ভাগিদার হতে হবে। কাজেই সাবধান!

মুনাফেকীর সৃষ্টি হবে :

গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র মানুষের মনে মুনাফেকীর জন্ম দেয়। কাজেই যে নারী গান-বাজনা শুনতে অভ্যসত্ম, তার মধ্যে মুনাফেকীর চরিত্র বিরাজ করাই স্বাভাবিক। ফলে সে আপনার সাথেও মুনাফেকী আচরণ করবে- যা আপনার জন্য কষ্টকর হবে। যার বাসত্মব প্রমাণ আজ শত-শত পরিবারে বিদ্যমান।

পৃথিবীতে আল্লাহর গযব অবতীর্ণ হবে :

আপনার নির্বাচিত স্ত্রী যদি গান-বাজনায় মত্ত থাকে, তাহলে আলস্নাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের গযব নেমে আসতে পারে। যেমন-

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

لَيَكُوْنَنَّ فِيْ هٰذِهِ الْأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ فِيْ مُتَّخِذِي الْقِيَانِ وَشَارِبِي الْخَمْرِ وَلَابِسِي الْحَرِيْرِ

‘‘অবশ্যই এই উম্মতের মধ্যে ভূমিধ্বস, আসমান থেকে নিক্ষিপ্ত গযব ও দৈহিক আকার আকৃতির রূপামত্মরের শাসিত্মর প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে। এসব তখনই ঘটবে যখন তারা মদ পান করবে, গায়িকা গ্রহণ করবে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজাবে’’। [তিরমিযি হা: ২১৮৫; সিলসিলা সহীহাহ্ হা: ২২০৩]

আবু মালেক আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ‘‘অবশ্যই আমার উম্মতের কিছু লোক তাদের মাথার উপর বাদ্যযন্ত্র বাজাবে ও নর্তকী নাচাবে। আলস্নাহ তাদেরকে মাটিতে ধ্বসিয়ে দেবেন এবং বানর ও শুকরে পরিণত করবেন’’। [সাহিহুল জামে হা: ৫৪৫৪]

কাজেই যে নারীর মাঝে নর্তকী নিয়ে গান-বাজনা শোনা ও দেখার অভ্যাস আছে সে হলো নিজের উপর, পরিবারের উপর ও পৃথিবীর উপর গযব আনয়নকারিণী, শুকর-বানরের মতো নিকৃষ্ট প্রাণীর সাথে তুলনীয়। অতএব এমন বৈশিষ্ট্যের নারী থেকে সাবধান।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন