মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
হে মুসলিম ভাইয়েরা! নিফাককে কঠিন ভয় করতে হবে। আমরা যাতে আমাদের মনের অজান্তে নেফাকের মধ্যে নিপতিত না হই সেদিকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে নিফাক অত্যন্ত খারাপ গুণ যা একজন মানুষের সামাজিক মর্যাদা থেকে নিয়ে সব কিছুকেই ধ্বংস করে দেয়। মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানকে ধ্বংস করে দেয়। সমাজে সে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।
সাহাবীগণ এবং তাদের পর সালফে সালেহীনরা নিফাককে কঠিন ভয় করতেন। এমনকি আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি যখন সালাতে তাশাহহুদ পড়ে শেষ করতেন, তখন তিনি আল্লাহর নিকট নিফাক হতে পরিত্রাণ কামনা করতেন এবং তিনি বেশি বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করত। তার অবস্থা দেখে একজন সাহাবী তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
«ومالك يا أبا الدرداء أنت والنفاق؟، فقال دعنا عنك، فو الله إن الرجل ليقلب عن دينه في الساعة الواحدة فيُخلع منه»
“কি ব্যাপার হে আবু দারদা! তুমি নিফাককে এত ভয় কর কেন? তখন সে বলল, আমাকে আপন অবস্থায় থাকতে দাও। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, একজন লোক মুহূর্তের মধ্যেই তার দ্বীনকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। ফলে সে দীন হতে বের হয়ে যায়”। [সীয়ারে আ-লামুন নুবালা ৬/৩৮২, আল্লামা যাহাবী বলেন হাদীসের সনদটি বিশুদ্ধ।]
বড় বড় সাহাবীরাও নিফাককে ভয় করত। হানযালা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিফাককে ভয় করার ঘটনা আমাদের নিকট সুপ্রসিদ্ধ। তিনি নিজেই তার ঘটনার বর্ণনা দেন।
«لقيَني أبو بكر فقال كيف : أنت يا حنظلة؟ قال قلت يذكّرنا بالنار والجنة حتى كأنّا رأي عين، فإذا خرجنا من عند رسول الله عافسنا الأزواج والأولاد والضيعات، فنسينا كثيرا . قال أبو بكر : فو الله، إنا لنلقى مثل هذا . فانطلقت أنا وأبو بكر حتى دخلنا على رسول الله قلت : نافق حنظلة يا رسول الله، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «وَمَا ذَاكَ ؟» قلت : يا رسول الله، نكون عندك تذكّرنا بالنار والجنة حتى كأنّا رأي عين، فإذا خرجنا من عندك عافسنا الأزواج والأولاد والضيعات نسينا كثيرا، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم «وَالَّذِي نَفْسي بيِدِهِ، لَوْ تَدُومُونَ عَلَى مَا تَكُونونَ عِنْدِي، وَفي الذِّكْر، لَصافَحتْكُمُ الملائِكَةُ عَلَى فُرُشِكُم وَفي طُرُقِكُم، لَكنِْ يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةً وسَاعَةً»
“একদিন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে আমার সাক্ষাত হলে, সে আমাকে বলে, হে হানযালা তুমি কেমন আছ? আমি উত্তরে তাকে বললাম, হানযালা মুনাফিক হয়ে গেছে! আমার কথা শুনে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলল, সুবহানাল্লাহ! তুমি কি বল? তখন আমি বললাম, আমরা যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে থাকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জান্নাত ও জাহান্নামের কথা আলোচনা করে তখন আমরা যেন জান্নাত ও জাহান্নামকে দেখতে পাই। আর যখন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবার থেকে বের হয়ে আসি এবং স্ত্রী, সন্তান ও দুনিয়াবি কাজে লিপ্ত হই, তখন আমরা অনেক কিছুই ভুলে যাই। তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলল, আল্লাহর শপথ করে বলছি! আমাদের অবস্থাও তোমার মতোই। তারপর আমি ও আবু বকর উভয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে তার নিকট প্রবেশ করি এবং বলি হে আল্লাহর রাসূল! হানজালা মুনাফিক হয়ে গেছে! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলল, তা কীভাবে? আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমরা যখন আপনার দরবারে উপস্থিত থাকি তখন আপনি আমাদের জান্নাত জাহান্নামের আলোচনা করেন, তখন আমাদের অবস্থা এমন হয়, যেন আমরা জান্নাত ও জাহান্নামকে দেখছি! আর যখন আমরা আপনার দরবার হতে বের হই এবং স্ত্রী, সন্তান ও দুনিয়াবি কাজে লিপ্ত হই, তখন আমরা অধিকাংশই ভুলে যাই। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেন, আমি ঐ সত্ত্বার শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার জীবন, যদি আমার নিকট থাকা অবস্থায় তোমাদের যে অবস্থা হয়, সে অবস্থা যদি তোমাদের সব সময় থাকতো, তাহলে ফিরিশতারা তোমাদের সাথে তোমাদের বিছানায় ও চলার পথে সরাসরি মুসাফা করত। তবে হে হানাযালা! কিছু সময় এ অবস্থা হবে, আবার কিছু সময় অন্য অবস্থা হবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৫০।] (এ নিয়ে তোমাদের ঘাবড়ানোর কিছু নাই। এতে একজন মানুষ মুনাফিক হয়ে যায় না।)
হাদীসে হানযালা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মুনাফিক হয়ে গেছে, এ কথার অর্থ হলো, তিনি আশংকা করেন যে, তিনি মুনাফিক হয়ে গেছেন। কারণ, তিনি দেখলেন যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিশে তার অবস্থার যে ধরন হয়ে থাকে, সেখান থেকে উঠে চলে গিয়ে যখন স্ত্রী, সন্তান, পারিবারিক কাজ ও দুনিয়াদারিতে লেগে যান, তখন তার অবস্থা আর ঐ রকম থাকে না। হানযালা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার এ দ্বৈত অবস্থাকেই মুনাফেকী বলে আখ্যায়িত করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানিয়ে দেন যে, এ তো কোনো নিফাক নয়, আর মানুষ সর্বদা একই অবস্থার ওপর থাকার বিষয়ে দায়িত্বশীল নয়। কিছু সময় এক রকম থাকবে আবার কিছু সময় অন্য রকম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। [শরহে নববী লি-মুসলিম ১৭/৬৬-৬৭।] (একজন মানুষের ঈমানও সব সময় এক রকম থাকে না। কখনো ঈমান বাড়ে আবার কখনো ঈমান কমে। আল্লাহ তা‘আলা কথা, আল্লাহর দীনের কথা জান্নাত জাহান্নামের কথা আলোচনা হলে, তখন মানুষের ঈমান বাড়ে আর যখন মানুষ দুনিয়ার কাজ কর্মে লিপ্ত হয় তখন মানুষের ঈমান কমে। আমাদের উচিত হলো, আমরা বিজ্ঞ আলিম উলামা ও সালফে সালেহীনদের মজলিশে গিয়ে তাদের থেকে কুরআনের আলোচনা ও হাদীসের আলোচনা শোনা। তবে এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, যারা বাণিজ্যিক বক্তা, মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কিচ্ছা কাহিনী, দুর্বল হাদীস, বানোয়াট হাদীস ও মিথ্যা কল্প কাহিনী দিয়ে ওয়াজ করে তাদের মজলিশে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবে)।
খলিফাতুল মুসলিমিন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যাকে দুনিয়াতে জান্নাতের সু-সংবাদ দেওয়া হয়েছে, তিনিও নিফাককে ভয় করতেন। যেমন, হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন,
دُعي عمر لجنازة فخرج فيها أو يريدها، فتعلّقتُ به فقلتُ : اجلس يا أمير المؤمنين، فإنّه من أولئك أي : من المنافقين، فقال : نشدتك الله، أنا منهم؟ قال : لا، ولا أبرئ أحداً بعدك
“একবার উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে একটি জানাযায় হাজির হতে দাওয়াত দেওয়া হলে, তিনি তাতে অংশ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অথবা বের হওয়ার ইচ্ছা করেন। আমি তার পিছু নিয়ে তাকে বললাম! হে আমিরুল মুমিনীন আপনি বসুন! কারণ, আপনি যে লোকের জানাযায় যেতে চান সে ঐসব মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি! তুমি বলতো আমি কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন, না। তোমার পর আমি আর কাউকে এভাবে দায়মুক্ত ঘোষণা করব না”। [ইবন আবি শাইবা এটি বর্ণনা করেছেন, আল-মুসান্নাফ ৮/৬৩৭।]
ইবন আবি মুলাইকা রহ. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ত্রিশজন সাহাবীকে স্বচক্ষে দেখতে পেয়েছি, তারা প্রত্যেকেই নিজের নফসের ওপর নিফাকের আশংকা করেন। তাদের কেউ এ কথা বলেনি: তার ঈমান জিবরীল বা মিকাইলের ঈমানের মতো মজবুত। [সহীহ বুখারী ১/২৬।]
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, কাওমের লোকদের অন্তরসমূহ ঈমান ও বিশ্বাস এবং নিফাকের কঠিন ভয়ে ভরে গেছে। তাদের ছাড়া অনেক এমন আছে যাদের ঈমান তাদের গলদেশ অতিক্রম করে নি। অথচ তারা দাবি করে তাদের ঈমান জিবরীল ও মিকাইলের ঈমানের মতো। [মাদারেজুস সালেকীন ১/৩৫৮।]
তাদের উল্লিখিত উক্তির অর্থ এ নয় যে, তারা ঈমানের পরিপন্থী আসল নিফাক বা বড় নিফাককে ভয় করছে। বরং তারা ভয় করছে ঈমানের সাথে যে নিফাক একত্র হতে পারে তাকে। অর্থাৎ ছোট নিফাক। সুতরাং এ নেফাকের কারণে সে মুনাফিক মুসলিম হবে মুনাফিক কাফির হবে না। [এহইয়াউ ‘উলুমুদ্দিন ৪/১৭২।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/719/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।