মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আরব জাতীয়তাবাদ আন্দোলন নিষিদ্ধ হবার তৃতীয় কারণ এই যে, এই মতবাদ অমুসলিমদের বংশধর কাফির ও ধর্মবিরোধী আরবদের বন্ধু ভাবতে, এদের সাথে মেলামেশা করতে এবং মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে জাতীয়তাবাদীদের সকল শত্রুর বিরুদ্ধে এদের সাহায্য নিতে উৎসাহিত করে। এতে একদিকে যেমন বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে তেনি অন্যদিকে এটা কুরআন-সুন্নাহর সেইসব উদ্ধৃতিরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যাতে আরব-অনারব নির্বেশেষে কাফিরদের শত্রু জ্ঞান করার নির্দেশ এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন ও মেলামেশার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সম্পর্কিত অনেক উদ্ধৃতির মধ্যে একটি আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:
“হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইয়াহূদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করোনা, তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের কেউ তাদের সাথে বন্ধুত্ব করলে সে তাদেরই দলভুক্ত হবে। আল্লাহ জালিম কওমকে হেদায়েত করেন না। তুমি দেখছ, যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা ওদের মাঝে ধাবিত হয় আর বলে: আমাদের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।” [.আল-মায়েদাহহ,৫১-৫২]
সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর কথা কত খাঁটি, তাঁর বক্তব্য কত স্পষ্ট ! এই জাতীয়তাবাদীরা আরব জাতীয়তার চারপাশে মুসলিম ও কাফির সবাইকে সংঘবদ্ধ হবার ডাক দিয়ে বলে: আমাদের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের ভয়, সাম্রাজ্যবাদ আমাদের দেশকে গ্রাস করতে পারে। আমাদের ভয়, শত্রুর হাতে আমাদের সম্পদ লুট হতে পারে। আর তাই তারা ইয়াহূদী, খ্রীস্টান, পারসিক, পৌত্তলিক, ধর্মত্যাগী প্রত্যেকটি আরবকে আরব জাতীয়তাবাদের মাপকাঠিতে বন্ধু জ্ঞান করে আর বলে: এই জাতীয়তাবাদের নীতি ধর্মের বিভিন্নতা সত্ত্বেও আরবে আরবে কোন পার্থক্য করে না। তাহলে এটা কুরআনের সাথে সংঘাত ও আল্লাহর নির্ধারিত সীমামূহের পরিষ্কার লঙ্ঘন নয় কি? এতে কি দ্বীনের জন্যই বন্ধুত্ব-বৈরিতা ও প্রেম-ঘৃণার নির্দেশ লঙ্ঘিত হয় না? কী এক ভয়ানক ভ্রান্তি আর জঘন্য নীতি এই আরব জাতীয়তাবাদ ! কুরআন যেখানেই থাকুক, যেভাবেই থাকুক, মুমিনদের সাথে বন্ধুত্বের আর কাফিরদের সাথে শত্রুতার আহবান জানায়। কিন্তু আরব জাতীয়তাবাদ এটা অস্বীকার করে এবং এই নীতির বিরোধিতা করে।
“তোমাদের জন্য তিনি দ্বীনের সেই বিধানই দিয়েছেন যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছিলেন, যা এখন তোমার কাছে অহির মাধ্যমে পাঠিয়েছি এবং যার নির্দেশ আমরা ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে দিয়েছিলাম। তা এই যে, তোমরা দ্বীন কায়েম কর এবং দ্বীনের ব্যপারে ভিন্ন ভিন্ন হয়োনা।” [. আশ-শূরা , ১৩]
ইব্রাহীম ও তাঁর সংগীদের মাঝে তোমাদের জন্য এক সুন্দর আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের কওমকে বলে দিয়েছিল: তোমাদের সাথে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদের ইবাদাত করছ তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের নীতি ও আদর্শের সাথে বিরোধ ঘোষণা করলাম এবং আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষ সূচিত হল, যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।” [. আল-মুমতাহানা, ৪]
“আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী লোকদেরকে তুমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দুশমনদের ভালবাসতে দেখবেনা, তারা তাদের বাপ-দাদা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বন্ধু কিংবা স্বগোত্রীয় হলেও।” [. আল-মুজাদালা, ২২]
পক্ষান্তরে জাতীয়তার নীতি কিংবা বলা যায় জাতীয়তাবাদ প্রচারকদের নীতি বলে: ধর্মকে জাতীয়তা থেকে দূরে সরাও, ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা রাখ এবং নিজেদের জাতীয়তার চারপাশে সংঘবদ্ধ হও। তা হলেই তোমাদের স্বার্থ উদ্ধার হবে এবং গৌরব ফিরে পাবে। ইসলাম যেন তাদের একটি বাধা ও তাদের গৌরব অর্জনের পথে একটি অন্তরায়। আসলে এটা মূর্খতা, বিভ্রান্তি ও ধোঁকাবাজি এবং ইসলামের বিরুদ্ধে বড় রকমের এক মিথ্যা অপবাদ।
পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব ও কাফিরদের সাথে বৈরিতা বজায় রাখার নির্দেশ উচ্চারিত হয়েছে। অধিকন্তু কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে। যেহেতু কুরআনের অনুসারীদের এসব আয়াত অজানা নয়, তাই সেগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন। কোন বুদ্ধিমান লোক কিছু্তেই মানতে পারেনা যে, আবু জাহ্ল, আবু লাহাব, উক্বা ইব্ন আবি মু‘ঈত, নাদার ইব্ন হারিস এবং রাসূলুল্লাহর সময় ও তাঁর পরবর্তী যুগের অন্যান্য বড় বড় কাফিররা আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু, ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণকারী আরবদের ভাই কিংবা বন্ধু হতে পারে। এটা জঘন্যতম ভ্রান্তি ও চরম মূর্খতা। তবু জাতীয়তার নীতি অনুযায়ী এটাই অপরিহার্য হয়ে পড়ে। যদিও তার কোন কোন প্রচারক অজ্ঞতাবশত: কিংবা বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একথা অস্বীকার করে।
মুসলিমদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ, তারা যেন ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ ও জোটবদ্ধ হয় এবং শত্রুর বিরুদ্ধে একটি একক দেহ ও এক সুদৃঢ় অট্রালিকায় পরিণত হয়। এ জন্য তিনি তাদের সাহায্য, সম্মান ও শুভ পরিণামের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পূর্বে বর্ণিত অনেক আয়াতেও এর উল্লেখ রয়েছে।
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনে সৎকাজ করে, তিনি তাদেরকে যমীনে উত্তরাধিকারী করবেন, যেমন তাদের পূর্ববর্তীদের করেছিলেন। আর তাদের জন্য সেই দ্বীনকে শক্তিশালী করে দিবেন যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পর আবার নিরাপত্তা দান করবেন। যখন তারা আমারই ইবাদাত করবে এবং আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না।” [. আন-নূর, ৫৫]
“আমার রাসূল বান্দাদের জন্য আমার কথা পূর্বেই নির্ধারিত হয়ে আছে। তাঁরা সাহায্যপ্রাপ্ত এবং আমার সৈন্যরা বিজয়ী।” [. আস-সাফ্ফাত, ১৭১-১৭৩]
এভাবে আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মুমিন সৈনিকদের সাহায্য ও বিজয়দান, পৃথিবীতে তাঁদের উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাঁদের দ্বীনকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্যই হয়। তিনি বলেন:
“ এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি, আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি বঙ্গ করেন না।” [. আয-যুমার, ২০]
অবশ্য কখনও কখনও এই প্রতিশ্রুতি অনুপস্থিত দেখা যায়। তার কারণ মুসলিমদের ত্রুটি এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাঁর দ্বীনের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত আল্লাহর নির্দেশ পালনে তাদের ব্যর্থতা। সেটা আমাদের অপরাধ, ইসলামের অপরাধ নয়। বিপদ আমাদের পাপের ফলেই এসেছে।
“তোমাদের যে বিপদ আসে তা তোমাদের কৃতকর্মের ফলে, আর অনেকগুলো তিনি নিজগুণে ক্ষমা করে দেন।” [. আশ-শূরা, ৩০]
অতএব আরব-অনারব সকল নেতা ও সর্বসাধারণের উচিত আল্লাহর নিকট তওবা করে তাঁর দ্বীনকে শক্ত হাতে ধরা, আল্লাহর হক সম্পর্কে পরস্পরকে সদুপদেশ দেয়া, তাঁর শরী‘আতের বিধান মেনে নেয়া এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করা। তাহলেই তারা বিজয় লাভ করবে এবং তাদের শত্রু পরাস্ত হবে। আর আমরা তা করতে পারলে সংখ্যা ও সাজ-সরঞ্জাম স্বল্প হলেও পৃথিবীতে আমাদের প্রতিষ্ঠা অর্জিত হবে। আর একটা কথা, শত্রু সম্পর্কে সতর্ক থাকা ও তার বিরুদ্ধে সম্ভব সকল শক্তি প্রস্তুত রাখা আমাদের এক গুরুত্বপূর্ণ ঈমানী কর্তব্য। একে কোনমতেই অবহেলা করা যায় না। আল্লাহ বলেছেন:
“তাদের বিরুদ্ধে যত পার শক্তি প্রস্তুত রাখ।” [. আল-আন্ফাল, ৬০]
মুসলিমদের জন্য কাফিরদের বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুর বিরুদ্ধে ওদের সাহায্য গ্রহণ অবৈধ। কেননা ওরাও শত্রু এবং সুযোগ পেলে ওরাও বড় রকমের ক্ষতি করতে পারে। আল্লাহ কাফিরদের সাতে বন্ধুত্ব হারাম করেছেন এবং তাদের সাথে মেলামেশা করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, যারা ওদের বন্ধুজ্ঞান করবে তারা ওদেরই অন্তর্ভুক্ত এবং জানিয়ে দিয়েছেন যে, এরা সবাই জালিম। ইতোপূর্বে বর্ণিত স্পষ্ট আয়াতসমূহে এর উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া মুসলিম শরীফে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদীসে আছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর পানে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ‘হার্রা আল-ওয়াবরা’তে ছিলেন তখন একটি লোক সেখানে রাসূলুল্লাহর সাথে মিলিত হয়। লোকটির সাহস ও বীরত্বের কথা সবাই বলাবলি করত। রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংগীরা তাই লোকটিকে দেখে অত্যন্ত খুশী। কিন্তু সে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথে মিলিত হয়ে যখন তাঁকে বলল, “আমি আপনার সহযাত্রী হয়ে আপনার কষ্টের অংশীদার হতে এসেছি”। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : تؤمن بالله ورسوله؟ “তুমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছ? লোকটি ভলল, “না”। তিনি বললেন: فارجع فلن أستعين بمشرك “তাহলে তুমি ফিরে যেতে পার, আমি কোন মুশরিকের সাহায্য নেব না।” লোকটি চলে গেল। তারপর আমরা যখন ‘আশ-শাজারা’তে পৌঁছি, তখন লোকটি আবার এসে পূর্বের ন্যায় একই কথা বলল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাকে একই জবাব দিলেন। অর্থাৎ তিনি ‘না’ বলে দিলেন। তিনি বললেন فارجع فلن أستعين بمشرك “তুমি ফিরে যাও, আমি কোন মুশরিকের সাহায্য নেব না।’ লোকটি ফিরে গেল। কিন্তু ‘আল –বীরা’ নামক স্থানে সে আবার এল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এবারও প্রথমবারের মতই বললেন: تؤمن بالله ورسوله؟ “তুমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছ? লোকটি এবারে বলল, ‘হ্যাঁ’। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: فانطلق “তাহলে চল।” এই মহান হাদীস আমাদেরকে মুশরিকদের সাহায্য বর্জন এবং কেবলমাত্র মুমিনদের সাহায্য গ্রহণ করার পথনির্দেশ দেয়। এই হাদীসেই প্রমাণিত হয় যে, নিজেদের সৈন্যদলে বিধর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়া মুসলিমদের উচিত নয়। এই বিধর্মীরা আরব হোক কিংবা অনারব। তার কারণ, কাফির মাত্রই মুসলিমদের শত্রু। তাকে বিশ্বাস করা যায় না। তাছাড়া আল্লাহর শত্রুদেরও জানতে দেয়া দরকার যে, মুসলিমরা তাদের সাহায্যের মুখাপেক্ষী নয়। কেননা, মুসলিমদের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে, এবং তারা সে সম্পর্ক রক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ। আর বিজয়? সেতো আল্লাহরই হাতে, আর কারো হাতে নয়। সংখ্যা ও সরঞ্জাম স্বল্প হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহই মুসলিমদের সে বিজয়ের ওয়াদা করেছেন। ইতোপূর্বে বর্ণিত কুরআনের আয়াতসমূহে এই ওয়াদার উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া ইসলামের প্রথম যুগে মুসলিমদের সে বিজয় অর্জিত হয়েছিল। কাফিরদের সাহায্যগ্রহণ ও তাদের সাথে বন্ধূত্ব ও মেলামেশার বিপক্ষে আল্লাহ বলেছেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা অন্যদের সাথে গোপন সম্পর্ক স্থাপন করো না। তারা তোমদের মনে অশান্তি সৃষ্টির কাজে কখনও ক্ষান্ত হয় না। তোমাদের যাতে কষ্ট হয় তারা তাই চেয়েছে। তাদের মুখ থেকেই শত্রুতা প্রকাশ পেয়েছে। আর অন্তরে যা লুকানো আছে সেতো আরও ভয়াবহ। আমরা তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী প্রকাশ করলাম। তোমরা যদি বুঝতে ......। [. আল-ইমরান, ১১৮]
অতএব দেখা যাচ্ছে পবিত্র কুরআন ও মহানবীর সুন্নত কাফিরদের বন্ধুত্ব, সাহায্যগ্রহণ ও তাদের সাথে গোপন সম্পর্ক স্থাপনের কঠোর বিরোধী। বান্দার কল্যাণ আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন এবং তাদের নিজেদের চেয়েও বান্দার প্রতি তিনি অধিক সদয়। অতএব আরব বা অনারব কাফিরদের বন্ধুত্ব ও সাহায্য গ্রহণের মধ্যে যদি বড় কোন কল্যাণ থাকতই তাহলে আল্লাহ তার অনুমতি অবশ্যই দিতেন। কিন্তু তিনি এর বিরাট অকল্যাণ ও অশুভ পরিণামসমূহ জানেন বলেই তা নিষিদ্ধ করেছেন এবং যারা একাজ করে, তাদের নিন্দা করেছেন। তিনি অন্যান্য আয়াতে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কাফিরদের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও মুসলিমদের সৈন্যবাহিনীতে তাদের যোগদান মুসলিমদের ক্ষতি করে এবং এতে তাদের উদ্বেগ বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছু ফল হয় না। তিনি বলেন:
“হে ঈমানদারগণ ! তোমরা যদি কাফিরদের কথা অনুযায়ী চল, তাহলে তারা তোমাদের পশ্চাতে ঠেলে দেবে এবং তোমরা এতে ক্ষতিগ্রস্তই হবে। বরং আল্লাহই তোমাদের বন্ধু, আর তিনি শ্রেষ্ঠতম পৃষ্ঠপোষক।” [. আল-ইমরান, ১৪৯-১৫০]
“তারা যদি তোমাদের সাথে যোগ দেয় তাহলে তোমাদের উদ্বেগ বাড়ানো ছাড়া আর কিছু করবে না। তারা তোমাদের মাঝে গোলযোগ সৃষ্টির জন্য তৎপর থাকবে। তোমাদের মধ্যে তাদের গুপ্তচর আছে। আল্লাহ জালিমদের ভালই জানেন।” [. আত-তওবা, ৪৭]
কাফিরদের সাথে ঘনিস্ঠতা বজায় রাখা ও তাদের নিকট সাহায্য চাওয়া যে কত ক্ষতিকর এবং এর পরিণাম যে কত মারাত্মক, তা বোঝানোর জন্য এসব আয়াত যথেষ্ট। সেই পরিণাম থেকে আল্লাহ মুসলিমদের রক্ষা করুন।
“আর যারা কাফির তারা একে অপরের বন্ধু। তোমরা যদি তা না মান তাহলে পৃথিবীতে অশান্তি ও বিরাট গোলযোগ সৃষ্টি হবে।” [. আল-আনফাল , ৭৩]
মহান আল্লাহ পরিষ্কার বলে দিয়েছেন যে, মুমিন মুমিনের বন্ধু আর কাফির কাফিরের বন্ধু। অতএব মুসলিমরা যদি তা না মানে, আর কাফিররা মুসলিমদের সাথে মেলামেশা করে একে অপরের বন্ধুতে পরিণত হয়, তাহলে সেই অশান্তি ও বিরাট গোলযোগ হবেই। শত্রুদের সাথে মুসলিমদের সংমিশ্রণ ও পারস্পরিক বন্ধুত্বের ফলে তাদের অন্তরে সংশয় ও অন্যায়পন্থীদের প্রতি এক ধরণের টান সৃষ্টি হয়। ফলে তাদের কাছে সত্য অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। অশান্তি ও গোলযোগ সৃষ্টির মূল কারণ এখানেই। আজকের বাস্তব ঘটনাও ঠিক তাই। ইসলামের দাবিদার অধিকাংশ লোক আজ কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলেছে, তাদের সাথে মেলামেশা করছে। সে কারণে সবকিছু তাদের কাছে বিজড়িত হয়ে পড়েছে। তারা না পারছে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করতে, না সুপথ-কুপথ তারতম্য করতে এবং না পারছে নির্ণয় করতে কারা আল্লাহর বন্ধু, আর কারা শয়তানের সুহৃদ। তাই গোলযোগ সৃষ্টি ছাড়াও এমনসব ক্ষতি সাধিত হয়েছে যার হিসাব আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
জাতীয়তাবাদের কোন এক প্রচারকের মতে খ্রীস্টানদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা ও তাদের সাহায্য নেয়া বৈধ। তার যুক্তি এই আয়াত:
“তুমি দেখবে, সব মানুষের মধ্যে ইয়াহূদী ও মুশরিকরা মুমিনদের সব চেয়ে বড় শত্রু, আর যারা বলে যে, আমরা খ্রীষ্টান, বন্ধু হিসেবে তারা মুমিনদের অধিকতর নিকটবর্তী।” [, আল-মায়েদাহ, ৮২]
উক্ত প্রচারকের দাবি, যেহেতু এই আয়াতে অন্যদের তুলনায় খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে মুমিনদের অধিক নিকটবর্তী বলা হয়েছে, তাই আয়াতটি খ্রীস্টানদের সাথে বন্ধুত্বের বৈধতা প্রমাণ করে। আসলে এটা পরিষ্কার ভুল এবং কুরআনের মনগড়া ব্যাখ্যা, যা স্পষ্ট আয়াতসমূহের পরিপন্থী। এই ব্যাখ্যা সেইসব হাদীসেরও পরিপন্থী, যাতে আহলে কিতাব (ইয়াহূদী ও খ্রীষ্টান) ও অন্যান্য কাফিরদের বন্ধুত্ব থেকে সাবধান করে দেয়া হয়েছে এবং তাদের সহায়তা বর্জন করতে বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«من قال في القرآن برأيه فليتبوأ مقعده من النار»
“কুরআন সম্পর্কে যে নিজের মনগড়া কথা কলবে, সে যেন জাহান্নামে তার স্থান ঠিক করে নেয়।”
কুরআনের এক আয়াত দিয়ে অন্য আয়াতের ব্যাখ্যা করতে হবে। কোন আয়াতের এমন কোন ব্যাখ্যা দেয়া যাবে না যা অন্যান্য আয়াতের পরিপন্থী। আর আল্লাহর মর্জি এই আয়াতটিতে খ্রীষ্টান ও অন্যান্য কাফিরদের বন্ধুত্ব নিষিদ্ধকারী আয়াতসমূহের পরিপন্থী কিছু নেই। উক্ত প্রচারক যা বলেছে তা তার ভুল বোঝার জন্য এবং আয়াতটির তাৎপর্য উপলব্ধিতে অক্ষমতার কারণে। তাছাড়া আয়াতটির ব্যাখ্যাকালে পন্ডিত, বিশ্বস্ত ও নেতৃস্থানীয় তাফসীরকারদের উক্তির সাহায্য নিতেও সে ব্যর্থ হয়েছে। তাফসীরকারকদের মতে আয়াতটির অর্থ-যা তার শব্দাবলী থেকেও পরিষ্কার বোঝা যায় এই যে, খ্রীস্টানরা ইয়াহূদী ও মুশরিকদের তুলনায় মুমিনদের বন্ধুত্বের অনেকটা কাছাকাছি। এর অর্থ এই নয় যে, তারা মুমিনদের ভালোবাসে কিংবা মুমিনরা তাদের ভালবাসে। যদি ধরেও নেয়া যায় যে, খ্রীস্টানরা মুমিনদের ভালোবেসেছে কিংবা তারা তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছে তা হলেও মুমিনরা তাদের ভালোবাসতে পারে না কিংবা তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে পারে না। কেননা, আল্লাহ তাদেরকে এটা নিষেধ করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কিত আয়াত আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন:
“আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী লোকদের তুমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শত্রুদের ভালোবাসতে দেখবে না।” [. আল-মুজাদালা, ২২]
আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, খ্রীষ্টানরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে শক্রতা করেছে। তারা আল্লাহর বিধান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করেছে। তাহলে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসীরা কী করে তাদের ভালোবাসতে পারে কিংবা তাদের সাথে মেলামেশা করতে পারে? নাউযুবিল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে লাঞ্ছনা, প্রবৃত্তিপরায়ণতা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করুন।
আর এক প্রচারক দাবি করেছে যে, যে-সব কাফির আমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি কিংবা আমাদেরকে বাড়িঘর থেকে বের করে দেয়নি, আল্লাহ তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখার সুযোগ দিয়েছেন। তার যুক্তি কুরআনের আয়াত:
“যারা তোমাদের সাথে দ্বীনের ব্যাপারে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে বাড়িঘর থেকে বের কের দেয়নি, তাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শণ ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না।” [. আল-মুমতাহানা, ৮]
এ যুক্তিও আগেরটার মতই ভ্রান্ত। এটাও কুরআন সম্পর্কে মনগড়া উক্তি ও আয়াতটির ভুল ব্যাখ্যাদান। স্পষ্ট আয়াতসমূহে আল্লাহ কাফিরদের বন্ধুত্ব হারাম করে দিয়েছেন এবং তাদের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি তাদের শ্রেণীভেদের কোন তারতম্য করেন নি। কারা আমাদের সাথে যুদ্ধ করল আর কারা করল না, তিনি সে পার্থক্যও করেন নি। তাহলে আল্লাহ যা বলেন নি মুসলিম কী করে নিজের থেকে সেই ব্যাখ্যা দিতে পারে, যা কুরআন ও সুন্নাহ সমর্থন করে না? সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ কত সহিষ্ণু ! জ্ঞানীদের মতে উক্ত আয়াতটির মর্মার্থ: শন্তি-চুক্তি কিংবা মুসলিমদের বিশেষ নিরাপত্তা ও তত্ত্বাবধানের অধীন কাফিরদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন ও তাদেরকে দান-দক্ষিণা করার অনুমতি দান। সহীহ হাদীসে এই ব্যাখ্যার সমর্থন পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ: রাসূলুল্লাহর সাথে মক্কাবাসীদের সম্পাদিত শান্তি-চুক্তির মেয়াদের মধ্যে আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কন্যা আসমার মুশরিক মা পার্থিব কিছু সুযোগ-সুবিধার জন্য মদীনায় আসমার নিকট এসেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসমাকে তাঁর মায়ের প্রতি সৌহার্দ্য দেখানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। একবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে একটি রেশমের জামা দান করেছিলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেটি মক্কায় তাঁর মুশরিক ভাইকে উপহার পাঠিয়ে দেন। এই ধরনের অনুগ্রহ অনেক সময় ইসলাম গ্রহণ, ইসলামের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি ও অন্য ধর্মের তুলনায় ইসলামকে অগ্রাধিকারদানের কারণ হতে পারে। তাছাড়া এতে আত্মীয়তার সংযোগরক্ষা ও অভাবগ্রস্তদের সাহায্য হয়। এতে মুসলিমদের উপকার বৈ ক্ষতির কোন আশঙ্কা নেই। আর এটা যে আদৌ কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব নয় একটু চিন্তা করলেই তা পরিষ্কার বোঝা যায়।
জাতীয়তাবাদীরা যুক্তি দেখায়, “মুসলিম-কাফির পার্থক্য না করে আরব জাতীয়তার ভিত্তিতে জোটবদ্ধ হলে আরবরা একটি শক্তিশালী ইউনিটে পরিণত হবে। ফলে শত্রু তাদেরকে ভয় করবে ও তাদের অধিকারসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে। আর মুসলিমরা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তারা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং শত্রুর লালসার শিকারে পরিণত হবে।” ওরা আরও বলে, “আরবরা যদি ইসলামের আশ্রয় নিয়ে তার পতাকাতলে সমবেত হয় তাহলে ইসলামের শত্রুরা তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে এবং তাদের আশু ধ্বংস কামনা করবে। কেননা শত্রুর তখন আশঙ্কা, অতীত গৌরব ফিরে পাবার জন্য আরবরা ইসলামী লড়াইকে উস্কানি দিতে পারে। পরিণামে আমাদের ক্ষতি হবে, শত্রুর সাথে সংশ্লিষ্ট অধিকার ও স্বার্থ আদায় বিলম্বিত হবে, আমাদের ওপর ওদের ক্রোধ আরো বেড়ে যাবে।” এই যুক্তির জবাব: যদি মুসলিমরা ইসলামকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়, আল্লাহর রজ্জুকে শক্তহাতে ধরে, তার শরী‘আতের বিধান মেনে চলে এবং শত্রু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদেরকে প্রকাশ্যে শত্রু ঘোষণা করে, তবে আল্লাহই তাদের সাহায্য করবেন ও শত্রুর ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করবেন। তিনি কাফির শত্রুর মনে এমন ভীতি সঞ্চার করবেন যাতে তারা ভয়ে মুসলিমদের অধিকারসমূহ পুরোপুরি ফিরিয়ে দেয়। তাঁদের ঈমানদার পূর্বপুরুষদের ক্ষেত্রে ঠিক যেমনটি ঘটেছিল। তাঁদের মধ্যে বিরাট সংখ্যক ইয়াহূদী ও খ্রীস্টান ছিল। কিন্তু তাঁরা সেই বিধর্মীদের সাথে বন্ধুত্ব করেন নি কিংবা তাদের সাহায্য চান নি। তাঁরা বন্ধুত্ব করেছিলেন এক আল্লাহ্র সাথে, সাহায্য চেয়েছিলেন একমাত্র তাঁরই। যে কারণে শত্রুর বিরুদ্ধে আল্লাহ্ তাঁদের সাহায্য করেছিলেন, তিনি তাঁদেরকে শত্রুর ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছিলেন। কুরআন ও সুন্নাহ এর সাক্ষী এবং ইসলামের ইতিহাসও তাই বলে। আর মুসলিম ও কাফির সবাই একথা জানে। মুশরিকদের মোকাবিলার জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের যুদ্ধে রওয়ানা হলেন। মদীনায় তখন ইয়াহূদীরা আছে। কিন্তু তিনি তাদের সাহায্য চাইলেন না। অথচ সংখ্যায় মুসলিমরা তখনও কম এবং সাহায্যকারীর প্রয়োজন তাঁদের অনেক। আল্লাহর নবী ও মুসলিমরা কখনও ইয়াহূদীদের সাহায্য চাননি। না বদরে না উহুদে। যদিও সেসব দিনে বিশেষ করে উহুদের যুদ্ধে সাহায্যকারীর প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছিল। এতে পরিষ্কার প্রমাণ হয় যে, শত্রুদের সাহায্য নেয়া, তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রক্ষা করা কিংবা নিজেদের সেনাবাহিনীতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা মুসলিমদের জন্য জায়েয নয়। কেননা, শত্রুকে বিশ্বাস নেই। তাদের সাথে সংমিশ্রণের ফলে মুসলিমদের বড় রকম সর্বনাশ হতে পারে, তাদের নৈতিকতার পরিবর্তন এবং নিজেদের মধ্যে সন্দেহ, ঘৃণা ও শত্রুতা সৃষ্টি হতে পারে। আল্লাহর নবী ও ঈমানদার পূর্বপুরুষদের অনুসৃত সেই রীতি যাদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না, আল্লাহ্ যেন কোনদিন তাদের সন্তুষ্ট না করেন। যেহেতু ইসলামকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হলে আল্লাহ মুসলিমদের ওপর সন্তুষ্ট হন এবং তাদের জন্য আল্লাহর সাহায্য সুনিশ্চিত হয়, তাই তাদের বিরুদ্ধে অমুসলিমদের বিদ্বেষ। তাদের এই বিদ্বেষ কোন দিনও শেষ হবে না। তারা চায়, মুসলিমরা নিজেদের দ্বীন ছেড়ে দিয়ে বিধর্মীদের দলভুক্ত হয়ে যাক। মুসলিমদের একথা ভালভাবে উপলব্ধি করা উচিত। তারা যদি অমুসলিমদের ইচ্ছানুযায়ী নিজেদের দ্বীন ছেড়েই দেয় তাহলে তারা অবশ্যই ভ্রষ্ট হবে এবং কাফির হয়ে ইহ-পরকালের শাস্তি ও চরম দুর্দশার শিকার হবে।
“যতক্ষণ না তুমি ওদের ধর্ম অনুসরণ করবে, ইয়াহূদী ও খ্রীষ্টানরা তোমার ওপর সন্তুষ্ট হবেনা। তুমি বল, আল্লাহর পথই একামাত্র পথ। আর তোমার কাছে যে জ্ঞান এসেছে তার পরে তুমি যদি ওদের ইচ্ছানুযায়ী চল, তাহলে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষার জন্য তুমি কোন বন্ধু বা সাহায্যকারী পাবে না।” [. আল-বাকারা, ১২০]
“তারা তোমাদের সাথে লড়তেই থাকবে; যতক্ষণ না তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে। অবশ্য তারা যদি তা করতে সক্ষম হয়। আর তোমাদের মধ্যে যারা দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে কাফির অবস্থায় মারা যাবে, তাদের ইহ-পরকালের সকল কাজ নষ্ট হয়ে গেল। তারা জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।” [. আল – বাকারা, ২১৭]
“অতঃপর তিনি তোমাকে দ্বীনের একটি বিধান দান করলেন। তুমি তা অনুসরণ কর, আর যারা জানে না তাদের ইচ্ছানুসারে চলো না। তারা আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষায় তোমার এতটুকু উপকার করবে না। জালিমরা একে অপরের বন্ধু, আর মোত্তাকীদের বন্ধু আল্লাহ।” [. আল- জাসিয়া, ১৮]
এসব সুস্পষ্ট আয়াতে আল্লাহ পরিস্কার বলে দিয়েছেন যে, কাফিররা আামাদের শরী‘আত ছেড়ে ওদের পথ অনুসরণ না করা পর্যন্ত আমাদের ওপর কখনও সন্তুষ্ট হবেনা। ওরা আমাদেরকে আমাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত না করা পর্যন্ত আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই থামাবে না। এসব আয়াতের মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, আমরা যদি ওদের কথা ও মর্জি রক্ষা করে চলি এবং সে অবস্থায় আমাদের মৃত্যু হয় তা হলে চিরকাল আমাদের জাহান্নামে থাকতে হবে। আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা, যেসব কাজে তিনি অসন্তুষ্ট এবং যেসব কাজে তাঁর শাস্তির কারণ নিহিত, তিনি যেন আমাদের সেসব কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/733/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।