মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এখানে একটি সংশয় নিরসন করা প্রয়োজন; তা হল, জাতীয়তাবাদীরা বলে বেড়ায় যে, আরব জাতীয়তাবাদ প্রচারের বিরোধিতা আরবদের হেয় করা ও তাদের মর্যাদা অস্বীকার করার নামান্তর। আসলে এটা একটা মিথ্যা দাবি ও অন্যায় ধারণা। কারণ, আমরা আগেই বলেছি যে, আরবদের মর্যাদা ও ইসলামের প্রারম্ভকালীন তাদের মহান কার্যাবলীর স্বীকৃতির ব্যাপারে ইতিহাস-জানা কোন মুসলিমের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। اقتضاء الصراط المستقيم (সঠিক পথের দাবি) গ্রন্থে আবুল আব্বাস ইব্ন তাইমিয়াসহ একাধিক পন্ডিত উল্লেখ করেছেন যে, আহলে সুন্নাতের মতে অনারবদের তুলনায় আরব জাতির লোকেরা অধিকতর মর্যাদার অধিকারী। ইব্ন তাইমিয়া কয়েকটি হাদীসও উদ্ধৃত করেছেন যেগুলো আরবদের অধিকতর মর্যাদার ইংগিতবহ। কিন্তু আরবদের মর্যাদা স্বীকার করার অর্থ এই নয় যে, তাদেরকে একটি স্তম্ভ বানিয়ে তার চারপাশে সবাইকে জড়ো হতে হবে এবং তারই ভিত্তিতে মানুষের বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুতা নির্ণীত হবে। বস্তুত: এই অধিকার একমাত্র ইসলামের, যার কল্যাণে আল্লাহ্ তাদের সম্মান ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অতএব এ দু’টো জিনিসের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে। আসলে অন্যদের চেয়ে আরবদের এই বাড়তি মর্যাদা কিংবা তাদেরকে বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারী করে ও তাদেরই ভাষায় কুরআন নাযিল করে এমনকি তাদেরই ভাষাভাষী থেকে বিশ্বজনীন রাসূল পাঠিয়ে আরবদের প্রতি আল্লাহ্ যে অনুগ্রহ করেছেন, এর কোনটাই পরকালে আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জনে তাদের কিছুমাত্র সহায়ক কিংবা তাদের মুক্তির গ্যারান্টি হবে না, যদি তাদের মধ্যে ঈমান এবং তাকওয়া না থাকে। তাছাড়া এই বাড়তি মর্যাদা ও বিশেষ অনুগ্রহ দ্বীনের দিক থেকে অন্যদের তুলনায় তাদের অধিক মর্যাদার কারণ হতে পারে না। পূর্বোল্লিখিত আয়াত ও হাদীস অনুযায়ী সর্বাধিক তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তি সকল মানুষের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী। বরং অন্যদের তুলনায় আরবদের এই বাড়তি মর্যাদার জন্য তাদের উচিত অন্যদের তুলনায় আল্লাহর বেশী শোকর করা ও যে দ্বীনের কারণে আল্লাহ তাদের ঊর্ধ্বে উঠিয়েছেন তার সাহায্যের জন্য নিজেদের প্রয়াস বৃদ্ধি করা। জাতীয়তাবাদ কিংবা অন্য কোন বিষাক্ত আদর্শ বা অশুভ প্রচারে কর্ণপাত না করে তাদের উচিত ঐ দ্বীনের জন্যই বন্ধুত্ব করা এবং ঐ দ্বীনের জন্যই শত্রুতা করা। কেবলমাত্র বংশই যদি তাদের এতটুকু কল্যাণ করতে পারত, তাহলে আবুলাহাব প্রমুখ জাহান্নামী হত না। ঈমান ছাড়া বংশ যদি আদৌ কোন কাজে আসত, তাহলে সহীহ হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন না:
«يا معشر قريش ! اشتروا أنفسكم من الله، لا أغني عنكم من الله شيئا»
“হে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা ! তোমরা আল্লাহর সাথে নিজেদের লেনদেনের সম্পর্ক ঠিক করে নাও। আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষায় আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারি না।”
অতএব ‘আরব জাতীয়তাবাদ প্রচারের বিরোধিতা করলে আরবদের হেয় করা হয় কিংবা তাদের মর্যাদা অস্বীকার করা হয়। এটা একটা অমূলক কথা। পবিত্র শরীয়াতে কিংবা গোঁড়ামিমুক্ত সুস্থ যুক্তিতে এর কোনই ভিত্তি নেই।
জাতীয়তাবাদীদের কেউ কেউ এই কথা বলে আরও একটি সংশয় সৃষ্টি করছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إذا ذل العرب ذل الإسلام»
আরবরা লাঞ্ছিত হলে ইসলাম লাঞ্ছিত হবে।” কেউ আবার হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করেছে,
«إذا عز العرب عز الإسلام»
“আরবরা সম্মানিত হলে ইসলাম সম্মানিত হবে।”
তারা বলে: এতে বোঝা যায় যে, আরব জাতীয়তাবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রচার করলে ইসলামেরই পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রচার করা হয়। এর জবাব হল: কথাগুলো শ্রবণ-বিভ্রাট, সত্যের অপলাপ এবং সত্য মিথ্যা যাই হোক হাদীসটির ভুল ব্যাখ্যাপ্রসূত। কেননা বাস্তব ঘটনা এই উক্তির বিপরীত। বদর ও খন্দকের যুদ্ধে আরবরা লাঞ্ছিত হয়েছিল, কিন্তু তাদের সেই লাঞ্ছনায় ইসলামের সম্মান ও আত্মপ্রকাশ সূচিত হয়েছিল। পক্ষান্তরে, উহুদের যুদ্ধে আরবরা জয়ী হলেও তাদের সে বিজয়ে মুসলিমদের লাঞ্ছনা ও ক্ষতি হয়েছিল। অবশ্য করুণাময় আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় বান্দাদের প্রতি সদয় হয়ে তাদের শেষ পরিণতি শুভই করেছিলেন। তাহলে কী করে বলা সম্ভব যে, আল্লাহ্কে অবিশ্বাসকারী ও তাঁর দ্বীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আরবদের বিজয় ইসলামেরই বিজয়? বস্তুত: এই উক্তি যে করেছে সে সত্যের বিপরীত কথা বলছে। সত্যকে মিথ্যার আবরণে লুকিয়ে সে চায় দুর্বল দৃষ্টিসম্পন্ন লোকদের ধোঁকা দিতে।
এরপর ফিরে আসিছি উদ্ধৃত হাদীসটির সত্যতা প্রসংগে। আমি পরিষ্কার বলতে চাই যে, এই হাদীসটির সনদ দুর্বল এবং এটি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীস নয়। হাফেয আবুল হাসান হাইসামী তাঁর ‘মাজমা আয-যাওয়াঈদ’ গ্রন্থে লিখেছেন যে, “আরবরা লাঞ্ছিত হলে ইসলাম লাঞ্ছিত হবে” হাদীসটি আবু ইয়া’লা বর্ণনা করেছেন, যার সনদে (সূত্র-তালিকায়) ইব্ন আল-খাত্তাব আল-বাসরী রয়েছেন, যাকে আল-আয্দী প্রমুখ দুর্বল বলেছেন এবং ইব্ন হিব্বান নির্ভরযোগ্য বলেছেন।
হাফেয আয-যাহাবী তার ‘মীযান’ নামক গ্রন্থে উল্লিখিত মুহাম্মাদের জীবন বৃত্তান্তে লিখেছেন: “আবু হাতেম বলেন যে, আমি তাকে চিনি না। আল-আযদী বলেছেন, তার বর্ণিত হাদীস সুপরিচিত বলে স্বীকৃত নয়।”
আমি বলি, হাদীসটির সনদে আলী যায়দ ইব্ন জাদ‘আনও আছেন যিনি অধিকাংশ হাদীস বিশারদের মতে দুর্বল। তাই প্রমাণস্বরূপ তাঁর হাদীস গ্রহনযোগ্য নয়। আর এই হাদীসে তাঁর থেকেও দুর্বলতর বর্ণনাকারী অর্থাৎ উল্লিখিত মুহাম্মাদ ইব্ন আল-খাত্তাব থাকতে কিভাবে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে? ইব্ন হিব্বান যে তাঁকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন তা মেনে নেয়া যায় না। তার কারণ, তিনি অসতর্ক বলে পরিচিত। তাছাড়া অন্যরাও তাঁর বিপরীত বলেছেন।
আর হাদীসটি যদি সত্যও হয় তাহলে তার অর্থ হবে, “সেই আরবরা লাঞ্ছিত হলে ইসলাম লাঞ্ছিত হবে যারা ইসলামের পতাকা বহান করছে ও ইসলাম প্রচার করছে, সেই আরবরা লাঞ্ছিত হলে নয় যারা ইসলামের শত্রু ও ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু প্রচার করছে।” তাছাড়া হাদীসে এমন কিছু কখনো বর্ণিত হতে পারে না যা পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসসমূহের পরিপন্থী। কেননা, আল্লাহর কালাম কিংবা রাসূলের বাণী স্ববিরোধী নয়। আর সুন্নাহ (হাদীস) কুরআনের বিরোধিতা করে না বরং সমর্থন করে ও তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেয়।
পবিত্র কুরআনের বক্তব্য অনুযায়ী কল্যাণ ও সাফল্যের জন্য আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তার দ্বীনের পৃষ্টপোষকতা অপরিহার্য শর্ত। হাদীসে এর পরিপন্থী কোন কথা থাকতে পারে না। অতএব, মুমিনদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে এবং বিভ্রান্তকর সংশয়, মিথ্যা হাদীস ও ভ্রান্ত মতবাদ সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। বিপদ কিন্তু অনেক বড় এবং আল্লাহ্ যাকে রক্ষা করবেন সে-ই রক্ষা পাবে। তাই সকলের উচিত তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা ও তাঁরই ওপর ভরসা রাখা। তাছাড়া আল্লাহর দ্বীনকে বোঝার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা ও দ্বীনের আদর্শে সর্বদা অটল থাকা সকলের কর্তব্য। এছাড়া সাফল্যের অন্য কোন বিকল্প পথ নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/733/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।