hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও বাস্তবতার আলোকে আরব জাতীয়তাবাদ

লেখকঃ শাইখ আব্দুল আযীয ইব্‌ন আব্দিল্লাহ্ ইব্‌ন বায -রাহেমাহুল্লাহ্-

১৪
প্রশ্নোত্তরে আরব জাতীয়তাবাদ
হিজরী ১৩৮০ সনের মুহাররাম মাসে আল-বিলাদ পত্রিকার প্রতিনিধি আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিল যার মধ্যে কয়েকটি প্রশ্ন ছিল জাতীয়তাবাদ সংক্রান্ত। প্রশ্নগুলো আমার জবাবসহ ঐ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে আমি সেই প্রশ্নকটি ও তার জবাব এখানে উল্লেখ করছি:

প্রথম প্রশ্ন: কিছু কিছু বিদেশী এজেন্ট প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, আরব জাতীয়তাবাদ আরবদের প্রথম পারস্পরিক বন্ধন। এ সম্পর্কে আপনার মত কি?

উত্তর: আরব জাতীয়তাবাদ আরবদের প্রথম পারস্পরিক বন্ধন’ এই প্রচার নিঃসন্দেহে একটি মিথ্যা প্রচার। এর স্বপক্ষে যুক্তি কিংবা শরী‘আতের কোন ভিত্তি নেই। এটা একটা জাহেলী ও দ্বীনবিরোধী প্রচার। যারা এই প্রচার চালাচ্ছে তাদের লক্ষ্য ইসলামের বিরোধিতা করা এবং তার বিধানমালা ও শিক্ষাসমূহ এড়িয়ে যাওয়া। অবশ্য কিছু কিছু লোক অন্যদের অনকরণে কিংবা ভাল মনে করে এই প্রচার করে থাকে। কিন্তু এরা তার আসল উদ্দেশ্য জানলে অবশ্যই তার বিরোধিতা করত এবং নিজেদেরকে ঐ প্রচার থেকে দূরে সরিয়ে রাখত। ইসলামের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আরবদের ইতিহাস সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞানের অধিকারী সকলেই জানে যে ইসলাম ব্যতীত আরবদের অন্য কোন মূল্য কিংবা ভয় করার মত অন্য কোন কারণ ছিল না। এই ইসলামের জোরেই তারা দেশ জয় করেছিল, মানুষের ওপর কর্তৃত্ব করেছিল। ইসলামেরই কল্যাণে তারা মাথা উঁচু এক মহান জাতীতে পরিণত হয়েছিল এবং সবাই তাদেরকে ভয় করত ও তাদের অধিকারকে শ্রদ্ধা করত। এরপর তাদের মাঝে পরিবর্তন ঘটল। কারণ আল্লাহই তো বলেছেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنفُسِهِمۡۗ ﴾ [ سورة الرعد : 11]

“আল্লাহ নিশ্চয়ই কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।” [. আর-রাদ,১১]

এ প্রসংগে আমি দীর্ঘ আলোচনা করব না। কেননা, পত্রিকায় তা ছাপানোর অবকাশ নেই। তাছাড়া দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন আছে বলেও আমি মনে করি না। কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার। আরবদের অবস্থা ও ইসলাম সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞানের অধিকারী কেউই এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করবে না।

আল্লাহ তাঁর নবীকে কত সুন্দর কথা বলেছেন:

﴿ فَٱسۡتَمۡسِكۡ بِٱلَّذِيٓ أُوحِيَ إِلَيۡكَۖ إِنَّكَ عَلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ٤٣ وَإِنَّهُۥ لَذِكۡرٞ لَّكَ وَلِقَوۡمِكَۖ وَسَوۡفَ تُسۡ‍َٔلُونَ ٤٤﴾ [ سورة الزخرف : 43-44]

“তোমার কাছে যে কিতাব অহীর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে তা শক্ত করে ধরে থাক, নিশ্চয়ই তুমি সঠিক পথে রয়েছ। এটা তোমার ও তোমার জাতির জন্য একটা মর্যাদার বিষয়। আর তোমাদেরকে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে।” [.আয্‌-যুখরূফ, ৪৩-৪৪]

তিনি আরও বলেছেন:

﴿ لَقَدۡ أَنزَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ كِتَٰبٗا فِيهِ ذِكۡرُكُمۡۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ١٠﴾ [ سورة الأنبياء : 10]

“তোমাদের নিকট আমরা এমন এক গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমাদের মর্যাদার কথা রয়েছে। তোমরা কি বুঝতে পারছনা? ” [. আল-আম্বিয়া, ১০]

আর আরব জাতীয়তাবাদ প্রচারের লক্ষ্য যদি এই হয় যে, আরবরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের স্বার্থে সবাই কাজ করবে এবং দেশ থেকে শত্রুকে বিতাড়িত করবে, তাহলে এ মহৎ লক্ষ্যে উপনীত হবার পথতো এটা নয়। এর একমাত্র পথ হল, যে দ্বীনের কারণে তাদের সম্মান বেড়েছিল, পৃথিবীতে তারা পরিচিত হয়েছিল ও ময়দানে আত্মপ্রকাশ করেছিল এবং অন্যান্য জাতির ওপর কর্তৃত্ব করেছিল, সেই দ্বীনের দিকে ফিরে আসা ও তার উদার শিক্ষা ও সঠিক বিধানসমূহ শক্ত হাতে ধরা এবং সেই দ্বীনের স্বার্থে বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুতা করা। তাহলেই পারস্পরিক ঐক্য, সকলের স্বার্থ ও শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জিত হবে। এই পথে দুনিয়া আখেরাতে শুভ পরিণামের গ্যারান্টিও আছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن تَنصُرُواْ ٱللَّهَ يَنصُرۡكُمۡ وَيُثَبِّتۡ أَقۡدَامَكُمۡ ٧﴾ [ سورة محمد :7]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করলে তিনিও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন ও তোমাদের পদক্ষেপসমূহ সুদৃঢ় করে দিবেন।” [. মুহাম্মাদ, ৭]

﴿ وَلَيَنصُرَنَّ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ ٤٠ ٱلَّذِينَ إِن مَّكَّنَّٰهُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ أَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَمَرُواْ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَنَهَوۡاْ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۗ وَلِلَّهِ عَٰقِبَةُ ٱلۡأُمُورِ ٤١﴾ [ سورة الحج : 40-41]

“আল্লাহ্‌কে যারা সাহায্য করবে আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন। নিশ্চই আল্লাহ শক্তিশালী, পরক্রান্ত। তারা এমন লোক, যাদেরকে আমরা ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করলে তারা নামায কায়েম ও যাকাত আদায় করে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে আল্লাহই সকল কাজের পরিণামের মালিক।” [. আল-হজ্জ, ৪০-৪১]

﴿ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَيَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ كَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِينَهُمُ ٱلَّذِي ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡنٗاۚ يَعۡبُدُونَنِي لَا يُشۡرِكُونَ بِي شَيۡ‍ٔٗاۚ ﴾ [ سورة النور : 55]

“আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার হয়ে সংকাজ করে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে উত্তরাধিকারী করবেন, যেমন তাদের পূর্ববর্তীদের করেছিলেন। আর তাদের জন্য সেই দ্বীনকে শক্তিশালী করে দিবেন, যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতিজনক অবস্থার পর আবার নিরাপত্তা দান করবেন। তখন তারা আমারই ইবাদাত করবে এবং আমরা সাথে কোন কিছু শরীক করবেনা।” [. আন-নূর, ৫৫]

এ প্রসংগে আরও অনেক আয়াত রয়েছে যা সকলেই জানেন। মালিক ইব্‌ন আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বড় সুন্দর কথা বলেছেন:

" لن يصلح آخر هذه الأمة إلا ما أصلح أولها "

“যা দ্বারা এ জাতির প্রথম পর্যায়ের লোকদের সংশোধন সাধিত হয়েছে, এ জাতির শেষাংশের সংশোধন কেবলমাত্র তদ্বারাই সম্ভব হবে।”

এই মনীষীর ছোট্ট এই কথাটি অত্যন্ত সত্য ও তাৎপর্যপূর্ণ। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে, আমাদের শাসকদেরকে ও সকল মুসলিমকে সংশোধন করে দাও।

দ্বিতীয় প্রশ্ন: আজকাল ইসলামের সাথে জাতীয়তার তুলনা এবং এ দুইয়ের মাঝে সমন্বয় বিধান করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোন কোন সৌদী পত্র পত্রিকায়ও এই প্রবণতা দেখা যায়। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?

উত্তর: ইসলাম ও আরব জাতীয়তার মধ্যে কিংবা সমন্বয় বিধান প্রচেষ্টা একটি বড় অন্যায় কাজ ও চরম বোকামী। আবু জাহল, উত্‌বা ইবন রাবী‘আ, শাইবা ইব্‌ন রাবী‘আ প্রমুখ ইসলামের শত্রুরা বেঁচে থাকলে এরাই আরব জাতীয়তার নেতা ও প্রধান প্রচারক হত। পক্ষান্তরে সব যুগ ও সব দেশের উপযোগী দ্বীন ইসলামের প্রচারক ও পৃষ্ঠপোষক হলেন মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর সিদ্ধীক রাদিয়াল্লাহু আনহু, ওমর ইব্‌ন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু, ওসমান ইব্‌ন আফ্‌ফান রাদিয়াল্লাহু আনহু, আলী ইব্‌ন আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু ও ইসলামের নেতা ও সংরক্ষক অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম ও তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণকারী মহৎ ব্যক্তিবর্গ। এমতাবস্থায় আরব জাতীয়তা ও ইসলামের মধ্যে তুলনা কিংবা সমন্বয় বিধানের চেষ্টা কোন বুদ্ধিমান লোকের পক্ষে সম্ভব কি? একমাত্র বিকৃত মস্তিষ্ক কিংবা অন্ধ অনুকরণকারী অথবা ইসলাম ও তার নবীর জীবন শত্রুই তা করতে পারে। এই তুলনা গোবরের সাথে মুক্তার এবং রাসূলের সাথে শয়তানের তুলনার মতই অসামঞ্জস্যকর। বিচক্ষণ লোকেরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন যে, জাতীয়তা ও ইসলামের মধ্যে এই তুলনা ও সমন্ববিধান প্রচেষ্টা ইসলামের জন্য কত বিপদজ্জনক। আল্লাহ ! তুমি আমাদেরকে ও আমাদের জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত কর।

তৃতীয় প্রশ্ন : কিছু কিছু নিবেদিত প্রচারক দ্বীন সম্পর্কিত কতিপয় সাধারণ খুঁটিনাটি বিষয় যেমন মাথা কামানোর নিয়ম, পোশাকের আকৃতি ইত্যাদিকে তাদের প্রচারের বিষয়বস্তু করে থাকেন। অথচ আকীদা সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় রয়েছে, যেগুলোর প্রতি এই নিবেদিত প্রচারকদের মনোযোগ দেয়া উচিৎ। এ ব্যাপারে আপনি কি মনে করেন?

উত্তর: বস্তুত: পথ-প্রর্দশকগণ সমাজের চিকিৎসক। চিকিৎসকের কাজ প্রথমে রোগসমূহ নির্ণয় করা, তারপর বড় থেকে শুরু করে একে একে সেগুলোর চিকিৎসা করা। বিশ্বের সেরা চিকিৎসক বনী আদমের নেতা মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রীতিও তাই। আল্লাহ যখন তাঁকে নবী করে পাঠালেন তখন সর্বপ্রথম তিনি সমাজের বড় ব্যাধি শির্কের চিকিৎসা শুরু করেন। অর্থাৎ আল্লাহর সাথে শির্ক করতে লোকদের নিষেধ করেন। নবুওয়াত লাভ থেকে শুরু করে একাধারে দশ বছর তিনি মানুষকে শির্ক থেকে সাবধান করত: আল্লাহর একত্ব প্রচার করলেন। তারপর দিলেন নামাযের নির্দেশ এবং তারপর অন্যান্য বিধানসমূহ। এমনিভাবে তাঁর পরবর্তী প্রচারকদেরও দায়িত্ব তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বড় থেকে শুরু করে একে একে অগ্রসর হওয়া। তবে মুসলিম সমাজ হলে প্রচারকদের জন্য এই পদ্ধতি অপরিহার্য নয়। সেক্ষেত্রে একজন প্রচারকের বড়-ছোট সব ব্যাপারে প্রচারের অনুমতি আছে। বরং যার যতটুকু করার সামর্থ, তার জন্য ততটুকুই ওয়াজিব। কেননা, তখন উদ্দেশ্য মুসলিম সমাজের সংশোধন, শির্ক ও তার উপলক্ষণ থেকে এই সমাজের বিশ্বাসাকে মুক্ত রাখার চেষ্টা এবং সমাজের ক্ষতি করতে পারে কিংবা তার ঈমানকে দুর্বল করতে পারে এমন কাজকর্ম থেকে সমাজের চরিত্রকে মুক্ত রাখা। সুতরাং বড় বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলতে না পারলে কোন কোন সময়ে ছোটটি দিয়ে শুরু করতে কোন আপত্তি নেই। তেমনি ছোটটি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বড়টিতে হাত দিতেও কোন বাধা নেই, যদি প্রচারক তা সঙ্গত মনে করেন কিংবা দুটো একসাথে করতে গেলে দুটোতেই ব্যর্থ হবার আশঙ্কা বোধ করেন। সংস্কারক ও বড় বড় চিকিৎসকগণও তাই করে থাকেন। তারা সংস্কার ও চিকিৎসার সকল পথকে গুরুত্ব দেন এবং যে পথে দ্রুত সন্তোষজনক ফল পাওয়ার আশা, সে পথে অগ্রসর হন। তারা যদি একসঙ্গে একাধিক উপকার করতে কিংবা ক্ষতি রোধ করতে না পারেন তাহলে গুরুত্ব হিসেবে সবচেবয়ে বড় উপকারটি করেন কিংবা বড় ক্ষতিটি রোধ করেন। শরী‘আতের বিধান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোলাফায়ে রাশেদীন ও ইমামদের জীবনচরিত চিন্তা করলে আমার একথার সত্যতা প্রমাণিত হেব এবং লোকদের হেদায়েত করার ও রোগ-ব্যাধি হতে তাদেরকে উদ্ধার করে আনার সঠিক পদ্ধতি জানা যাবে। সৎ নিয়তে যে সত্যকে জানতে চেষ্টা করে, আল্লাহর নিকট দ্বীন প্রচারের জন্য উৎকৃষ্ট ও কল্যাণকর পথ কামনা করে এবং জটিল ব্যপারে জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শ নেয়, সে সফল ও সৎপথপ্রাপ্ত হয়। আল্লাহ তাই বলেছেন:

﴿ وَٱلَّذِينَ جَٰهَدُواْ فِينَا لَنَهۡدِيَنَّهُمۡ سُبُلَنَاۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩﴾ [ سورة العنكبوت : 69]

“যারা আমাদের পথে সংগ্রাম করে আমরা তাদেরকে আমাদের পথ দেখিয়ে দেই। আর আল্লাহ নিষ্ঠাবান লোকদের সঙ্গে রয়েছেন।’ [. আল- আনকাবুত, ৬৯]

চতুর্থ প্রশ্ন: আল-বিলাদ পত্রিকা তার বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠকদের নিকট আপনার কিছু মূল্যবান উপদেশ পৌঁছে দিতে চায়। আপনি তাদের জন্য কী উপদেশ দিবেন:

উত্তর: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ যে তাকওয়ার নির্দেশ দান করেছেন সবাই তা পালন করুক, পাঠকদের জন্য আমার উপদেশ এটাই। আল্লাহ বলেছেন:

﴿وَلِلَّهِ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ وَلَقَدۡ وَصَّيۡنَا ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِيَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ﴾ [ سورة النساء : 131]

আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর। তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদেরকে আমরা নির্দেশ দিয়েছিলাম এবং তোমাদেরকেও দিয়েছি যে, আল্লাহকে ভয় কর।” [. আন-নিসা, ১৩১]

এই তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় একটি ব্যাপকার্থক শব্দ। যার প্রকৃত অর্থ হল: মানুষ জ্ঞান, বিশ্বাস, আন্তরিকতা, ভালবাসা, আগ্রহ ও ভয়ের সাথে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ মেনেও আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও শাস্তিকে ভয় করবে। আর এটা করতে পারলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ ও সুফল লাভ করতে সক্ষম হবে। পাঠকদের জন্য আমার আর একটা উপদেশ আছে। অবশ্য এটাও তাকওয়ারই অংশ। তাহল, তারা যেন কোন বিষয় সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে বিষয়টি ভালভাবে পরীক্ষা করেন, সবদিক থেকে তা পূংখানুপুংখরূপে বিশ্লেষণ করে দেখেন এবং শরী‘আত অর্থাৎ কুরআন ও সহীহ হাদীসের মানদন্ডে তার তাৎপর্য যাচাই করে নেন। এই মানদন্ডের অনুকূল হলে তা যেন গ্রহণ করেন আর বিপরীত তা বর্জন করেন। বিষয়সমূহকে বিশ্লেষণ ও শরী‘আতের মানদন্ডে যাচাইকালে অবশ্যই ভাবাবেগ অথবা ঢিলেমী এবং গোঁড়ামী অথবা স্বেচ্ছানুবর্তিতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকতে হবে। এইসব ত্রুটি হতে মুক্ত থেকে তারা যদি আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার সাথে বিষয়সমুহ যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই তারা সত্যের সন্ধান পাবেন এবং শুভ পরিণাম লাভে সমর্থ হবেন। ভাবাবেগ ও তাড়াহুড়ার কারণে কত দুর্যোগ ও বিপদ এসেছে। যুগ যুগ পরেও তার জের ও ফলাফল শেষ হয়নি। আল্লাহ আমাদেরকে সেসব থেকে রক্ষা করুণ। পাঠকদের জন্য আমার আরও একটি উপদেশ আছে, সেটিও তাকওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁরা যেন মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকেন। অর্থাৎ সত্য ও সহিষ্ণুতার জন্য একে অপরকে উপদেশ দিতে, সততা ও তাকওয়ার জন্য পরস্পর সহযোগিতা করতে, বুদ্ধি ও সদুপদেশ দ্বারা সৎকাজের নির্দেশ ও অন্যায় কাজে বাধা দিতে এবং সাধ্যমত অন্যায়ের প্রতিরোধ করে যেতে বলেন। হাদীসে আছে:

«من رأى منكم منكرا فليغيره بيده فإن لم يستطع فبلسانه فإن لم يستطع فبقلبه وذلك أضعف الإيمان»

“তোমাদের কেউ কোন অন্যায় দেখলে যেন হাত দিয়ে (শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে) তা প্রতিরোধ করে। হাত দিয়ে না পারলে মুখ দিয়ে আর মুখ দিয়েও না পারলে অন্তর: অন্তর দিয়ে। আর এটা হচ্ছে দুর্বলতম ঈমান।”

আল্লাহর কাছে কামনা করি, তিনি যেন সকলকে সত্যে অটল থাকার তাওফীক দেন এবং সবরকম বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেন।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন