hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ছহীহ্‌ সুন্নাহ্‌র আলোকে বিতর নামায

লেখকঃ মুহা: আবদুল্লাহ্‌ আল কাফী

বিতর নামাযকে ওয়াজিব বলার পক্ষে দলীল এবং তার জবাবঃ
নিম্নে ওয়াজিবের অর্থ বহণ করে এমন দলীল সমূহ উল্লেখ করে তার জবাব প্রদান করা হচ্ছেঃ

১) আমর বিন আস (রাঃ) একদা জুমআর খুতবা প্রদান কালে বলেন, আবু বাছরা (রাঃ) আমার কাছে হাদীছ বর্ণনা করেছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِنَّ اللَّهَ زَادَكُمْ صَلاةً وَهِيَ الْوِتْرُ فَصَلُّوهَا فِيمَا بَيْنَ صَلاةِ الْعِشَاءِ إِلَى صَلاةِ الْفَجْرِ

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। উহা হচ্ছে বিতর নামায। তোমরা উহা ফজর ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে আদায় কর। [. মুসনাদে আহমাদ হা/২২৭৩১, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, (দ্রঃ সিলসিলা ছহীহা হা/১০৮, ইরউয়া গালীল হা/ ৪২৩, ছহীহ ইবনু মাজাহ্ হা/৯৫৮।)]

বর্তমান যুগের শ্রেষ্ট মুহাদ্দিছ ও আলেম আল্লামা শায়খ আলবানী তাঁর বিখ্যাত হাদীছের সংকলন ওসিলসিলা ছহীহাহ (১/২২২) গ্রন্থে এই হাদীছটি উল্লেখ করে বলেন,

ওএই হাদীছের বাহ্যিক অর্থ অনুযায়ী বিতর নামায ওয়াজিব প্রমাণিত হয়। হানাফী আলেমগণ একথাই বলেন। কিন্তু ইহা জমহূর তথা অধিকাংশ বিদ্বানের বিপরীত মত। অকাট্য দলীল প্রমাণ দ্বারা যদি একথা প্রমাণিত না হত যে, দিন-রাতে শুধুমাত্র পাঁচ ওয়াক্ত নামাযই ফরয এর বেশী নয়, তবে হানাফী ভাইদের কথা অধিক বিশুদ্ধ প্রমাণিত হত।হ তিনি আরো বলেন, ওহানাফী বিদ্বানগণ তাদের দাবীর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেন, বিতর নামায হুবহু পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মত ফরয নয়। উহা ফরয ও সুন্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি আবশ্যকীয় আমল। এই আমলটি প্রমাণের দিক থেকে ফরযের চাইতে নিম্নে কিন্তু তাগিদের দিক থেকে সুন্নাতের চাইতে অধিক শক্তিশালী।

জেনে রাখা আবশ্যক যে, হানাফী মাযহাবের এই পরিভাষাটি তাদের নিজস্ব এবং সম্পূর্ণ নতুন। ছাহাবায়ে কেরাম বা পূর্ববর্তী বিদ্বানগণ তার সাথে পরিচিত ছিলেন না। এই পরিভাষা মতে ওয়াজিব বিষয় মর্যাদা, গুরুত্ব ও প্রতিদানের ক্ষেত্রে ফরযের চাইতে কম।

তাদের এই কথানুযায়ী এর অর্থ দাঁড়ায়: ক্বিয়ামত দিবসে বিতর নামায পরিত্যাগকারীর শাস্তি হবে ফরয নামায পরিত্যাগকারীর চাইতে কম। এই সময় তাদেরকে আমরা বলবঃ যে লোক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অতিরিক্ত কোন নামায আদায় না করার ব্যাপারে দৃঢ় কথা বলে, কিভাবে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে বলতে পারেন, লোকটি মুক্তি পেয়ে যাবে।? [. এই হাদীছটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্রঃ পৃঃ ১৭-১৮।]

কিভাবে শাস্তির সাথে মুক্তি একত্রিত হতে পারে? কোন সন্দেহ নেই যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উক্ত বাণীই এটা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয়। আর এ জন্যই অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম ঐকমত্য হয়েছেন যে, বিতর নামায সুন্নাত; উহা ওয়াজিব নয়। আর এটাই হক ও ধ্রুব সত্য।হ [. আল মাওসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্, ২/১১৪-১১৫পৃঃ।]

২) আমর বিন শুআইব থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা থেকে তিনি তাঁর দাদা আবদুল্লাহ্‌ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ

أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ زَادَكُمْ صَلاةً فَحَافِظُوا عَلَيْهَا وَهِيَ الْوَتْرُ

রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করেছেন। তোমরা উহার সংরক্ষণ কর। উহা হচ্ছে বিতর নামায। [. মুসনাদে আহমাদ হা/ ৬৬২৫। (শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ তারতীব ছহীহুল জামে’ হা/১৪৪৪।)]

এই হাদীছ দ্বারা বিতর নামায ওয়াজিব একথা সাব্যস্ত হয় না। এখানে বৃদ্ধি করার অর্থ ইহসান ও অনুগ্রহের দিক থেকে- তথা আল্লাহ্‌ আমাদের প্রতি একটি অনুগ্রহ বৃদ্ধি করেছেন। অথবা অর্থ হবে গুরুত্ব ও ফযীলতের দিক থেকে- তথা একটি ফযীলতপূর্ণ আমল আল্লাহ আমাদের জন্য বৃদ্ধি করেছেন।

এই জন্য মুনাবী বলেন, বৃদ্ধিকৃত নামায যে মূল (ফরয) নামাযের মধ্যেই শামিল হতে হবে এটা আবশ্যক নয়। একথার পক্ষে দলীল হচ্ছে, মারফূহ সূত্রে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ, তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, নিশ্চয় তোমাদের নামাযের সাথে আরেকটি নামায আল্লাহ্‌ বৃদ্ধি করেছেন। উহা তোমাদের জন্য একটি লাল উটের চাইতে উত্তম। আর তা হচ্ছে ফজর নামাযের পূর্বে দুহরাকাত নামায। [. হাদীছটি বর্ণনা করেন বায়হাক্বী সুনানে কুবরায়]

তানক্বীহুত্‌ তাহক্কীক গ্রন্থের লিখক বলেন, ওহাদীছটি বাইহাক্বী ছহীহ সনদে বর্ণনা করেন।হ ইমাম যায়লাঈ বলেন, হাদীছটি ইমাম হাকেম মুস্তাদরাকে স্বীয় সনদে বর্ণনা করে বলেন, হাদীছটি ছহীহ। অতঃপর তিনি ইবনু খুযায়মা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যদি এই হাদীছের জন্য সফর করা আমার জন্য সম্ভব হত, তবে আমি সফর করতাম। [. দেখুন নাসবুর্ রায়া- ইমাম যায়লাঈ হানাফী ২/ ১১১ পৃঃ।]

৩) আবদুল্লাহ্‌ বিন বুরায়দা থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

الْوِتْرُ حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا الْوِتْرُ حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا الْوِتْرُ حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا .

বিতর নামায হক বা আবশ্যক। যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। বিতর নামায হক বা আবশ্যক। যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। বিতর নামায হক বা আবশ্যক। যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। [. আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ যে বিতর পড়ে না তার বিধান, হা/১২০৯।]

এই হাদীছটি যঈফ। কেননা এর সনদে উবাইদুল্লাহ্‌ বিন আবদুল্লাহ্‌ আল আতাক্বী আল মারওয়াযী যঈফ। [. দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৯ পৃঃ হা/ ১২৭৮।] এই কারণে এই হাদীছ দলীল হওয়ার উপযুক্ত নয়।

৪) আবদুল্লাহ্‌ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

الوِتْرُ واَجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ

বিতর নামায আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ওয়াজিব। [. হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায্যার। মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ ২/২৪০পৃঃ।]

এর সনদে জাবের জুফী নামক জনৈক বর্ণনাকারী আছে, অধিকাংশ মুহাদ্দেছীনের মতে সে যঈফ বা দুর্বল। [. নায়লুল আওতার, শাওকানী, ৩/৩২।] অতএব এই হাদীছ দ্বারাও দলীল গ্রহণ করা সঠিক হবে না।

৫) মুআহয বিন জাবাল (রাঃ) একদা শাম গমণ করে দেখেন সেখানকার লোকেরা বিতর নামায পড়েনা। তিনি মুআহবিয়া (রাঃ)কে বললেন, কি ব্যাপার এদেশের লোকেরা দেখছি বিতর নামায পড়ে না? মুআহবিয়া বললেন, এ নামায কি ওয়াজিব নাকি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার পালনকর্তা আমার জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করেছেন। উহা হচ্ছে বিতর নামায। এর সময় হচ্ছে এশা থেকে নিয়ে ফজর উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। [. মুসনাদে আহমাদ হা/২১০৮১।]

এই হাদীছটি যঈফ। কেননা উহা যঈফ হওয়ার পিছনে তিনটি কারণ ক্রিয়াশীল রয়েছে। ১) হাদীছের বর্ণনাকারী ওউবাইদুল্লাহ্‌ বিন যাহারহ সম্পর্কে ইবনুল জাওযী বলেন, ইবনু মাঈন বলেছেন: সে কিছুই নয়। ইবনু হিব্বান তার সম্পর্কে বলেন, সে নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের বরাত দিয়ে জাল হাদীছ বর্ণনা করত। ২) আরেক বর্ণনাকারী আবদুর রহমান বিন রাফেহ তানূখী যঈফ। ইমাম বুখারী তার সম্পর্কে বলেন, তার হাদীছে অনেক মুনকার বা অগ্রহণযোগ্য বিষয় রয়েছে। ৩) হাদীছটি মুনকাত্বা [. যে হাদীছের সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে- তথা সনদের কোন এক স্থানে এক বা একাধিক বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুনকাতা হাদীছ বলে। আর মুনকাতা’ হাদীছ যঈফ হাদীছের অন্তর্ভূক্ত।] কেননা আবদুর রহমান বিন রাফে আযের (রাঃ) সাক্ষাত পাননি। [. বিস্তারিত দেখুন নসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ ২/১১২পৃঃ।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন