HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে ইবাদত ভাব ও তাৎপর্য

লেখকঃ ইকবাল হোছাইন মাছুম

১১
ইবাদত বিষয়ে একটি বিভ্রান্তি
ইবাদয় বিষয়ক আলোচনা থেকে আশাকরি আমরা এর মর্ম সম্বন্ধে মোটামুটি ধারণা পেয়েছি যে, জীবনের সার্বিক পর্বে আল্লাহর রেজামন্দি ও সন্তুষ্টির জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ-অনুকরণে যাবতীয় কার্যাদি পরিচালনা করাই হচ্ছে ইবাদত। এক কথায় জীবন পরিচলানায় আল্লাহ তাআলার দাসত্বকে বরণ করে নেয়ার নামই ইবাদত। সুতরাং ইবাদত কেবলমাত্র কিছু নিয়মতান্ত্রিক ও আনুষ্ঠানিক বিষয়াদির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং জীবনের প্রতিটি পর্ব ও অনুষঙ্গের সাথে এটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই কোনো নিয়মতান্ত্রিক আনুষ্ঠানিকতার সাথে তাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা ইবাদত সম্বন্ধে অজ্ঞানতারই বহি:প্রকাশ। অতীব পরিতাপের সাথে বলতে হচ্ছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ইবাদতের এই মর্ম বুঝতে ভুল করেছে এবং এর সঠিক জ্ঞান থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে। এসব লোকদের তিনভাগে ভাগ করা যায়।

এক.

এরা ইবাদতকে আংশিকভাবে বুঝেছে। ইবাদত সম্বন্ধে তাদের বুঝ অসম্পূর্ণ। তাদের মতে ইবাদত আল্লাহ প্রদত্ত কতিপয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে কোনো ইবাদত নেই। যেমন সালাত, সওম, হজ্জ, জাকাত ইত্যাদি। সুতরাং এসব কাজে আল্লাহর দাসত্ব চলবে অন্যসব কাজে বান্দা মুক্ত-স্বাধীন। এসব লোক মসজিদে তো আল্লাহর ইবাদতকারী। তাঁর বিধানকে মান্যকারী। কিন্তু মসজিদ হতে বের হলেই সুদ, জিনা ব্যভিচার, মদ্যপান ইত্যাদি অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। কাজের সাথী-সঙ্গী, অধীনস্থ কর্মচারিদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। তাদের স্ত্রী-সন্তানরা বেপর্দায় ঘুরে বেড়ায়। এরা মসজিদে আল্লাহর সাথে একরকম চেহারায় অবতীর্ণ হয় আর মসজিদের বাইরে আল্লাহ ও মানুষের সাথে মিলিত হয় ভিন্ন চেহারায়। সূরা বাকারায় বর্ণিত রোজা সংক্রান্ত আল্লাহর নিম্নোক্ত বিধান তো বাস্তবায়ন করে। আল্লাহ বলেন,

(আরবি)

মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে... [সূরা বাকারা:১৮৩] কিন্তু একই সূরায়, একই আঙ্গিকে বর্ণিত কিসাস সংক্রান্ত বিধান অমান্য করে। আল্লাহ বলেন,

(আরবি)

মুমিনগণ, তোমাদের উপর কিসাস ফরজ করা হয়েছে... [সূরা বাকারা:১৭৮]

সূরা মায়েদায় বর্ণিত ওজু ও সালাত সংক্রান্ত নির্দেশ তো পালন করে। আল্লাহ বলেন,

(আরবি)

হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। [সূরা মায়েদা:৬]

কিন্তু একই সূরা বর্ণিত বিচার ও শাসন সংক্রান্ত বিধান অমান্য করে। আল্লাহ বলেন,

(আরবি)

আর যারা আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান মতে ফয়সালা করে না, তারাই কাফের। [সূরা মায়েদা:৪৪]

এইটি ইবাদত সম্বন্ধে অসম্পূর্ণ বুঝ। ভুল ধারণা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

(আরবি)

তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আজাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন। [সূরা বাকারা: ৮৫]

এটি ইবাদত সম্বন্ধে একটি অন্যায় ও ভ্রান্ত ধারণা।

দুই.

এরা ইবাদত আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নিমিত্তে সম্পাদন করে। গাইরুল্লাহর বিধানের আনুগত্য করে। গাইরুল্লাহর নামে জবেহ করে। গাইরুল্লাহর নামে শপথ করে। গাইরুল্লাহর সম্মানার্থে বাইতুল্লাহ ব্যতীত অন্য ঘরের তাওয়াফ করে। গাইরুল্লাহর নামে মানত করে। গাইরুল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে। বিপদ ও রোগ মুক্তির জন্য গাইরুল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে। তাদের সাহায্য প্রার্থনা করে। নিজ প্রয়োজন ও আরাধনা গাইরুল্লাহর প্রতি ন্যস্ত করে। গাইরুল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে। পৃথিবীর রাজা-বাদশা ও মানুষের প্রতি আকাশ-জমিনের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর চেয়েও বেশি আস্থা পোষণ করে। তাদের কেউ কেউ বলে,

إذا تعاسرت الأمور فعليكم بأصحاب القبور .

উপায় যদি নাই দেখ, কবর ওয়ালার দামান ধর।

আবার এমন কথাও কেউ কেউ বলে, আমরা আব্দুল কাদের জিলানির উরশ করি, যিনি জলে-স্থলে সবার ডাকে সাড়া দেন। অথচ মহান আল্লাহ বলছেন,

(আরবি)

বরং তিনি, যিনি নিরুপায়ের আহ্বানে সাড়া দেন এবং বিপদ দূরীভূত করেন আর তোমাদেরকে জমিনের প্রতিনিধি বানান। আল্লাহর সাথে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ করে থাক। [সূরা নমল:৬২]

সুতরাং জলে-স্থলে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির আহ্বানে সাড়াদানকারী আল্লাহর সাথে আর কোনো ইলাহ আছে কি? মহান আল্লাহ বলছেন,

(আরবি)

আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোনো দুর্দশা দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূরকারী কেউ নেই। আর যদি কোনো কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন তবে তিনিই তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। [সূরা আনআম:১৭]

তিন.

এদের অবস্থা হল, এরা ইবাদত আল্লাহর উদ্দেশ্যেই সম্পাদন করে। তাঁর সন্তুষ্টিই তাদের কামনা। এদের ইখলাসে কোনো ত্রুটি নেই। কিন্তু ইবাদতটি সম্পাদন করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদর্শিদ পদ্ধতি ভিন্ন অন্য পদ্ধতিতে। রাসূল অনুসৃত পন্থা ভিন্ন অন্য পন্থায়। তাদের ইবাদতও প্রত্যাখ্যাত। আল্লাহর কাছে এসব ইবাদতের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নাই। কোনোভাবে তা কবুল করা হবে না। ইরশাদ হচ্ছে,

(আরবি)

সুতরাং যে তার রবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে। [সূরা কাহফ:১১০]

সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিমে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد .

যে ব্যক্তি আমাদের এই দীনে নতুন কিছু সংযোজন করবে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা পরিত্যাগ করা হবে।

সুতরাং যেই ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত দীনের উপর কিছু বাড়ালো, তাঁর দেওয়া বিধানের সাথে নিজের পক্ষ থেকে সংযোজন করল সে কি ইবাদত ও দাসত্বের পরিপূর্ণ হক আদায় করল? দাসত্বে নিজের পক্ষ থেকে সংযোজন-বিয়োজনের চিন্তা করা যায়? তাহলে তা কবুল হবার আশা করা যায় কিভাবে?

এমনিকরে যারা লেন-দেন, আচার-আচরণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে, যাদের কাজ-কর্ম নাজায়েজ পদ্ধতি হতে মুক্ত ও নিরাপদ নয়, যারা মানুষকে ধোকা দেয়, তাদের উপর জুলুম করে, তারা কি দাসত্ব ও ইবাদতের হক আদায় করতে পারল?

যারা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিল, এর বিলাস সামগ্রী দ্বারা প্রতারিত হল, ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করল তারা কি দাসত্বের দায়িত্ব পুরোপুরি আদায় করতে পারল? এসব কিছু কেয়ামতের দিন তাদের আফসুস ও অনুতাপের কারণ হবে। যেদিন রাজাধিরাজ মহান আল্লাহর সম্মুখে দণ্ডায়মান হবে আর তিনি বিলাস সামগ্রী ও মাল-সম্পদ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করবেন, কোথা হতে তা উপার্জন করেছ এবং কোথায় ব্যয় করেছ? যারা আল্লাহর অবাধ্যতায়, অন্যায়-অনৈতিক কাজে সময় ব্যয় করেছে এবং নিজের জীবন শেষ করেছে খেলাধুলা ও রং তামাশায় তারা কি দাসত্বে হক আদায় করল? যেসব মূল্যবান সময় এসব অহেতুক কাজে ব্যয় করল এ সময়গুলোর ইবাদতের অংশ কোথায় ? আল্লাহ তাদেরকে জীবন সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করবেন কি কাজে তা শেষ করেছ, আরো জিজ্ঞেস করবেন তাদের ব্যয়িত সময় সম্বন্ধে, সে বিষয়টি কি তারা ভুলে গেছে ? এরা এবং এদের মত যারা তারা আল্লাহর ইবাদত ত্যাগ করেছে। আর নিজ প্রবৃত্তি ও শয়তানের দাসত্ব গ্রহণ করেছে। আল্লাহ তাআলা শয়তান ও প্রবৃত্তি পুজা থেকে তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে,

(আরবি)

হে বনী আদম, আমি কি তোমাদেরকে এ মর্মে নির্দেশ দেইনি যে, তোমরা শয়তানের উপাসনা করো না। নি:সন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? আর আমারই ইবাদত কর। এটিই সরল পথ। [সূরা ইয়াসিন:৬০-৬১]

(আরবি)

তবে তুমি কি তাকে লক্ষ্য করেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে আপন ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? তার কাছে জ্ঞান আসার পর আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন এবং তিনি তার কান ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। আর তার চোখের উপর স্থাপন করেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে হেদায়াত করবে? তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? [সূরা আল জাসিয়া: ২৩]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন