hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রতিপক্ষের মতামত খন্ডনে ইসলামি শিষ্টাচার

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা ও বিতর্কের গুরুত্ব
আল্লাহ রাববুল আলামিন যত নবী-রাসূলকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তাদের সকলেই আপন দাওয়াতের প্রতিপক্ষের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এ বিতর্কের ও তাদের মতামত খন্ডনের অনেকগুলো ঘটনা আল্লাহ তাআলা আল-কুরআনে বর্ণনা করেছেন। নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জাতির সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন, সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ إِنِّي لَكُمْ نَذِيرٌ مُبِينٌ ﴿২৫﴾ أَنْ لَا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّهَ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ أَلِيمٍ ﴿২৬﴾ فَقَالَ الْمَلَأُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَوْمِهِ مَا نَرَاكَ إِلَّا بَشَرًا مِثْلَنَا وَمَا نَرَاكَ اتَّبَعَكَ إِلَّا الَّذِينَ هُمْ أَرَاذِلُنَا بَادِيَ الرَّأْيِ وَمَا نَرَى لَكُمْ عَلَيْنَا مِنْ فَضْلٍ بَلْ نَظُنُّكُمْ كَاذِبِينَ ﴿২৭﴾ قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِنْ كُنْتُ عَلَى بَيِّنَةٍ مِنْ رَبِّي وَآَتَانِي رَحْمَةً مِنْ عِنْدِهِ فَعُمِّيَتْ عَلَيْكُمْ أَنُلْزِمُكُمُوهَا وَأَنْتُمْ لَهَا كَارِهُونَ ﴿২৮﴾ وَيَا قَوْمِ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مَالًا إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ وَمَا أَنَا بِطَارِدِ الَّذِينَ آَمَنُوا إِنَّهُمْ مُلَاقُو رَبِّهِمْ وَلَكِنِّي أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ ﴿২৯﴾ وَيَا قَوْمِ مَنْ يَنْصُرُنِي مِنَ اللَّهِ إِنْ طَرَدْتُهُمْ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿৩০﴾ وَلَا أَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَا أَقُولُ إِنِّي مَلَكٌ وَلَا أَقُولُ لِلَّذِينَ تَزْدَرِي أَعْيُنُكُمْ لَنْ يُؤْتِيَهُمُ اللَّهُ خَيْرًا اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا فِي أَنْفُسِهِمْ إِنِّي إِذًا لَمِنَ الظَّالِمِينَ ﴿৩১﴾ قَالُوا يَا نُوحُ قَدْ جَادَلْتَنَا فَأَكْثَرْتَ جِدَالَنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَا إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ ﴿৩২﴾ قَالَ إِنَّمَا يَأْتِيكُمْ بِهِ اللَّهُ إِنْ شَاءَ وَمَا أَنْتُمْ بِمُعْجِزِينَ ﴿৩৩﴾ وَلَا يَنْفَعُكُمْ نُصْحِي إِنْ أَرَدْتُ أَنْ أَنْصَحَ لَكُمْ إِنْ كَانَ اللَّهُ يُرِيدُ أَنْ يُغْوِيَكُمْ هُوَ رَبُّكُمْ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ ﴿৩৪﴾ ( سورة هود : ২৫-৩৪)

‘আর অবশ্যই আমি নূহকে প্রেরণ করেছিলাম তার জাতির কাছে (এই বার্তা দিয়ে) যে, ‘আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। যেন তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের ভয় করছি। অতঃপর তার জাতির নেতৃস্থানীয়রা, যারা কুফরী করেছিল, তারা বলল, ‘আমরা তো তোমাকে আমাদের মত একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু দেখছি না এবং আমরা দেখছি যে, কেবল আমাদের নীচু শ্রেণীর লোকেরাই বিবেচনাহীনভাবে তোমার অনুসরণ করেছে। আর আমাদের উপর তোমাদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব আমরা দেখছি না; বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করছি। সে বলল, ‘হে আমার জাতি, তোমরা কি মনে কর, যদি আমি আমার রবের পক্ষ থেকে প্রেরিত প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত হই এবং তিনি আমাকে তাঁর পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে থাকেন, আর তা তোমাদের কাছে গোপন রাখা হয়, তবে কি আমি তোমাদের উপর তোমাদের অপছন্দ হওয়া সত্বেও তা চাপিয়ে দেব? আর হে আমার জাতি, এর বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো সম্পদ চাই না। আমার প্রতিদান শুধু আল্লাহর কাছে। যারা ঈমান এনেছে, আমি তাদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয় তারা তাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এমন এক জাতি যারা অজ্ঞ থাকতে চায়। হে আমার জাতি, যদি আমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেই, তবে আল্লাহর আযাব থেকে কে আমাকে সাহায্য করবে? এরপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? আর আমি তোমাদের বলছি না যে, ‘আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডারসমূহ আছে। এবং আমি গায়েব জানি না, আর আমি এও বলছি না যে, ‘আমি ফেরেশতা।’ তোমাদের চোখে যারা হীন, তাদের সম্পর্কে আমি বলছি না যে, ‘আল্লাহ তাদেরকে কখনো কোনো কল্যাণ দান করবেন না।’ তাদের অন্তরে যা আছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ অধিক অবগত। (যদি এরূপ উক্তি করি) তাহলে নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হব। তারা বলল, ‘হে নূহ, তুমি আমাদের সাথে বিতর্ক করছ এবং আমাদের সাথে অতিমাত্রায় বিতর্ক করেছ। অতএব যার প্রতিশ্রুতি তুমি আমাদেরকে দিচ্ছ, তা আমাদের কাছে নিয়ে আস, যদি তুমি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও। সে বলল, ‘আল্লাহই তো তোমাদের কাছে তা হাজির করবেন, যদি তিনি চান। আর তোমরা তাকে অক্ষম করতে পারবে না। ‘আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের কোনো উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ তোমাদের বিভ্রান্ত করতে চান। তিনি তোমাদের রব এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।’ (হুদ : ২৫-৩৪)

এ আয়াতগুলোতে নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে, কী ভাষা প্রয়োগ করে তাঁর প্রতিপক্ষের সাথে বিতর্ক করেছেন আমরা তা দেখতে পেলাম। তাঁর সম্প্রদায়ের কথা, ‘হে নূহ, তুমি আমাদের সাথে বিতর্ক করছ এবং আমাদের সাথে অতিমাত্রায় বিতর্ক করেছ।’ দ্বারা আমরা জানতে পারলাম যে, আল্লাহর রাসূল নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কওমের সাথে গুরুত্ব ও দৃঢ়তার সাথে বিতর্ক করেছেন।

ইবরাহিম আলাইহি ওয়া সাল্লাম নমরুূদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। যেমন : ইরশাদ হয়েছে -

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِي حَاجَّ إِبْرَاهِيمَ فِي رَبِّهِ أَنْ آَتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّيَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا أُحْيِي وَأُمِيتُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ فَإِنَّ اللَّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِي كَفَرَ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ﴿سورة البقرة :২৫৮﴾

‘তুমি কি সে ব্যক্তিকে দেখনি, যে ইবরাহিমের সাথে তার রবের ব্যাপারে বিতর্ক করেছে যে, আল্লাহ তাকে রাজত্ব দিয়েছেন? যখন ইবরাহিম বলল, ‘আমার রব তিনিই’ যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, ‘আমিই জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটাই।’ ইবরাহিম বলল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ পূর্ব দিক থেকে সূর্য আনেন। অতএব তুমি তা পশ্চিম দিক থেকে আন।’ ফলে কাফির ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।’ (বাকারা : ২৫৮)

এমনিভাবে তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন। তাদের মতামত খন্ডন করেছেন। এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে সূরা আম্বিয়া (আয়াত ৫১-৬৭) ও আরও কয়েক স্থানে।

মুসা ও হারুন আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফেরআউনের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে বিনম্র্ ভাষায় বিতর্ক করতে আদেশ করেছেন। (ত্বাহা : ৪৩-৬২)

নবী সালেহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সম্প্রদায়ের ক্ষমতাসীনদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। (দেখুন সূরা হুদ : ৬১-৬৩)

নবী শুআইব আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সম্প্রদায়ের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। (দেখুন সূরা হুদ : ৮৪- ৯৩)

আল্লাহ রাববুল আলামিন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে প্রতিপক্ষের সাথে বিতর্ক করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে -

ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ( النحل : ১২৫)

‘তুমি তোমার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দাও এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর।’ (নাহাল : ১২৫)

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল র.-কে প্রশ্ন করা হল, ‘এক ব্যক্তি নফল নামাজ পড়ে, নফল রোজা রাখে এবং ইতেকাফ করে। সে আপনার কাছে প্রিয় না কি ওই ব্যক্তি যে বিদআতে লিপ্তদের সাথে বিতর্ক করে।’ তিনি বললেন, ‘যে নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, ইতেকাফ করে সে তো তা নিজের জন্য করে। কিন্তু যে বিদআতপন্থীদের সাথে কথা বলে, বিতর্ক করে সে তা মুসলমানদের জন্য করে থাকে। আমার নিকট এ ব্যক্তিই প্রিয়তম ও শ্রেষ্ঠ।’ (মাজমুউল ফাতাওয়া : ইবনে তাইমিয়া, ২৮/২৩১)

আমর ইবনে সালামা আল-হামদানি বলেন, আমরা কয়েকজন লোক জোহর নামাজের পূর্বে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.- এর দরজায় তিনি বের হলে আমরা তাঁর সাথে মসজিদের দিকে যাব এ অপেক্ষায় বসা ছিলাম। ইতিমধ্যে আবু মুসা আল-আশআরি রা. আসলেন। তিনি বললেন, আবু আব্দুর রহমান (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ) কি বের হয়েছেন? আমরা বললাম, ‘না।’ তিনিও আমাদের সাথে বসলেন তাঁর বের হওয়ার অপেক্ষায়। যখন তিনি বের হলেন আমরা সকলে রওনা হওয়ার জন্য দাঁড়ালাম। আবু মুসা রা. তাকে বললেন, ‘হে আব্দুর রহমানের পিতা, আমি মসজিদে কিছুক্ষণ পূর্বে একটি বিষয় প্রত্যক্ষ করলাম। আমার দেখে ভাল লাগেনি। তবে আল্লাহর প্রশংসা- আমি এতে খারাপ কিছু দেখিনি। ইবনে মাসউদ রা. বললেন, বিষয় কী? তিনি বললেন, ‘যদি আপনি বেঁচে থাকেন তাহলে নিজ চোখে দেখবেন।’ অতপর আমরা মসজিদে গিয়ে দেখলাম, কতগুলো মানুষ বৃত্তাকারে মসজিদে বসে আছে নামাজের অপেক্ষায়। প্রত্যেকের হাতে আছে পাথরের দানা। একজন বলছে, একশত বার আল্লাহ আকবর পড়ুন। সকলে তাই করছে। আবার বলছে, একশত বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়ুন, তারা তাই পড়ছে। আবার বলল, একশত বার আল-হামদুলিল্লাহ পড়ুন। তারা তাই পড়ছে। আবার বলছে, একশত বার ছুবহানাল্লাহ পড়ুন! তারা তাই পড়ছে।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আবু মূসা আল-আশআরি রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি তাদের কী বলছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমি কিছু বলিনি। আপনার অপেক্ষায় আছি।’ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, আপনি তাদের বলতে পারতেন, ‘তোমরা তোমাদের পাপগুলোকে গণনা কর। তাহলে তোমাদের পুণ্যগুলো যেন বরবাদ না হয়ে যায় আমি সে নিশ্চয়তা দেব।’ তারপর তিনি (আমরাও তার সাথে ছিলাম) তাদের কাছে আসলেন। তাদের কাছে দাঁড়ালেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা এ কী করছ ? আমি কী দেখছি ?’

তারা বলল, ‘হে আবু আব্দুর রহমান, আমরা পাথরের দানা দিয়ে তাকবির, তাসবিহ, তাহলিল ও তাহমিদ গণনা করে পড়ছি।’ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, ‘তোমরা তোমাদের পাপগুলোকে গণনা কর। তাহলে আমি তোমাদের পুণ্যগুলো যেন বিনষ্ট না হয় সে নিশ্চয়তা দেব। হে উম্মাতে মুহাম্মদি, ধিক তোমাদের! এত তাড়াতাড়ি তোমরা ধ্বংসের পথ ধরলে? এই যে তোমাদের সামনে এখনো তোমাদের নবীর অনেক সাহাবি উপস্থিত। তাঁদের পোশাকগুলো এখনো পুরাতন হয়নি। তাঁদের বর্তনগুলো এখনো ভেঙ্গে যায়নি। যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, তোমরা কি উম্মাতে মুহাম্মাদির মধ্যে সবচেয়ে বেশি হেদায়েতের অধিকারী হয়ে গেলে ? না তোমরা একটি ভ্রান্ত পথ খুলতে বসেছ ?’

তারা বলল, ‘হে আবু আব্দুর রহমান, আল্লাহর শপথ! আমরা ভাল উদ্দেশ্যেই এ কাজ করছি।’ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, ‘ভাল উদ্দেশ্যে কাজ করছে এমন কত লোক আছে, কিন্তু তারা সঠিক পথে পৌঁছতে পারেনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এমন সম্প্রদায় আসবে যারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠ অতিক্রম করে ভেতরে যাবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর তার ধনুক থেকে বের হয়ে যায়।’ আল্লাহর কসম! আমার মনে হয় তাদের অধিকাংশ তোমাদের থেকে হবে।’ এ কথা বলে ইবনে মাসউদ রা. তাদের থেকে চলে গেলেন। আমি তাদের অধিকাংশকে নাহরাওয়ানের যুদ্ধে খারেজীদের দলে দেখতে পেলাম। (সুনানে দারেমি : ১/৭৯। হাদিসটি সহিহ। দেখুন সিলসিলাতুস সাহিহা লিল-আলবানি : ২০০৫)

এ হাদিস থেকে আমরা কয়েকটি বিষয় জানতে পারলাম-

এক. সাহাবায়ে কেরাম যা বুঝেছেন সেটাই সঠিক। ইবনে মাসউদের সাথে অন্যান্য সাহাবি যারা ছিলেন তাদের বক্তব্যও ইবনে মাসউদের মতামতের অনুরূপ ছিল। কেউ ওই কাজটিকে সমর্থন করেননি। তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সুন্নাহ সম্পর্কে বেশি জ্ঞাত ছিলেন, তেমনি সুন্নাহ পালনে ছিলেন অন্য সকলের চেয়ে অগ্রগামী। তাঁরা আল-কুরআন নাজিল প্রত্যক্ষ করেছেন। উম্মতের কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর হাদিস পৌঁছিয়েছেন। যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেন নি। তাঁর সাহাবায়ে কেরাম করেন নি তা কখনো দীন ইসলামের অংশ নয়। দীনের কাজ হিসাবে স্বীকৃত নয়। এর উদ্দেশ্য যতই ভাল থাক।

দুই. বেদআতের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সাহাবিগণ অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন।

তিন. যারা বিভিন্ন বেদআতি কাজ করেন সন্দেহ নেই তারা ভাল ও সুন্দর উদ্দেশ্যে কাজটি সম্পাদন করেন। কিন্তু কথা হল, কাজের উদ্দেশ্য ও নিয়্যত ভাল হলেই কাজটি ভাল হয় না। কাজটি কুরআন বা সুন্নাহ দ্বারা সঠিক পদ্ধতিতে অনুমোদিত হতে হয়। যেমন : ইবনে মাসউদ রা. হাদিস উল্লেখ করে সে সব মানুষের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যারা কুরআন তেলাওয়াত করবে কিন্তু তাদের কুরআন হৃদয়ে প্রবেশ করবে না.....। তাদের উদ্দেশ্য অবশ্যই ভাল থাকবে কিন্তু সুন্নাহ মোতাবেক তাদের আমল হবে না।

চার. বেদআত যখন শুরু হয় তখন তার ব্যাপ্তি থাকে কম। আস্তে আস্তে এর ব্যাপ্তি বেড়ে যায়। শুরুতে এর পরিমাণ অর্ধ হাত হলে তা সামান্য সময়ের মধ্যেই এক হাত হয়ে যায়। যেমন এ হাদিসে দেখা গেল ‘তারা পাথর দিয়ে তাসবিহ পাঠের বেদআতে লিপ্ত হল। পরে তারা খারেজিদের সাথে যোগ দিয়ে মুসলিম উম্মাহ তথা আহলে সুন্নাহর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করল। তাদের হত্যা করতে শুরু করল।

পাঁচ. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বেদআতি কাজে লিপ্তদের সাথে বিতর্ক করলেন। কিন্তু তিনি তাদের গালি দিলেন না। অভিশাপ দিলেন না। তাদের আঘাত করে কোনো কথা বললেন না।

এ সকল আয়াত ও হাদিস দিয়ে আমরা ইসলামের প্রতিপক্ষের সাথে বিতর্ক করার গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে পারি।

অবশ্য যে সকল হাদিসে বিতর্ক না করতে উৎসাহিত করা হয়েছে সে সকল হাদিস বৈষয়িক বিষয়ে বিতর্ক পরিহার করা সম্পর্কে এসেছে। ইসলামি বিষয়ে যখন হক ও বাতিলের প্রসঙ্গ আসবে তখন অবশ্যই বিতর্ক করতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন