মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অর্থাৎ আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করা অথবা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে সমকক্ষ দাঁড় করানো- চাই সেটা ইবাদাতের ক্ষেত্রে হোক অথবা প্রার্থনার ক্ষেত্রে অথবা ভয়-ভীতির ক্ষেত্রে অথবা ভালোবাসার ক্ষেত্রে অথবা আনুগত্যের ক্ষেত্রে অথবা অন্যান্য যে কোন ক্ষেত্রেই হোক না কেন। এ ক্ষেত্রে মূলনীতিটি হচ্ছে, যেসব বিষয় শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট, সেসব বিষয়ে তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করলে ব্যক্তির ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে মুশরিক হিসেবে গণ্য হবে। এদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (ফলে) তার আবাস হবে জাহান্নাম। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়েদা– ৭২)
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরীক করার গুনাহ (একনিষ্ঠ তাওবা ব্যতীত) ক্ষমা করেন না; তবে এটা ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করল, সে তো মহাপাপে জড়িয়ে মিথ্যা রচনা করল। (সূরা নিসা- ৪৮)
শিরক মূলত তিন প্রকার। যথা:
(ক) اَلشِّرْكُ فِى الرُّبُوْبِيَّةِ তথা আল্লাহর ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বে শিরক।
(খ) اَلشِّرْكُ فِى الْاَسْمَاءِ وَالصِّفَاتِ তথা আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে শিরক।
(গ) اَلشِّرْكُ فِى الْاُلُوْهِيَّةِ তথা আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে শিরক।
কোন ব্যক্তির ইসলাম ভঙ্গ হয়ে যাওয়াটা সাব্যস্ত করার জন্য এই তিন প্রকার শিরকই হচ্ছে মূলভিত্তি। ইসলাম ভঙ্গের অন্যান্য যেসব কারণ রয়েছে, সেগুলোও মূলত কোন না কোনভাবে এই তিন প্রকারের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর যা কিছু শিরকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ সেটি মূলত তাওহীদ তথা আল্লাহর তা‘আলা একত্ববাদের সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা তাওহীদের ঠিক বিপরীত ক্ষেত্রটিই হচ্ছে শিরক ও কুফর। নিম্নে উপরোক্ত তিন প্রকার শিরক সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ পেশ করা হলো :
(ক) اَلشِّرْكُ فِى الرُّبُوْبِيَّةِ তথা আল্লাহর ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বে শিরক :
অর্থাৎ এমন বিশ্বাস পোষণ করা, যার দ্বারা আল্লাহর রুবূবিয়্যাত তথা আল্লাহর কর্তৃত্ব, ক্ষমতা এবং সার্বভৌমত্বে অন্য কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা হয়। অতএব যে ব্যক্তি দাবি করবে যে, এসব বিষয়ে আল্লাহর সাথে তার অথবা অন্য কোন সৃষ্টির কোনরূপ অংশ রয়েছে, তাহলে তার ইসলাম ভঙ্গ হয়ে যাবে। মিশরের রাজা ফিরাউন দাবি করেছিল, اَنَا رَبُّكُمُ الْاَعْلٰى অর্থাৎ আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব- (সূরা নাযিয়াত- ২৪)। ফিরাউনের এ দাবিটি ছিল তাওহীদের মারাত্মক পরিপন্থী এবং এই প্রকার শিরকের আওতাধীন। যার কারণে তার উপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ পতিত হয়েছিল এবং সে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ফিরাউন যে গুণের দাবি করেছিল সেটি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। আল্লাহর উক্ত গুণটি নিজের জন্য দাবি করাটাই ছিল তার মূল অপরাধ। অতএব বর্তমানে যুগেও কেউ যদি ইসলামী সীমারেখার বাইরে গিয়ে ফিরাউনের মতো নির্দিষ্ট ভূখন্ডের কর্তৃত্বের অধিকারী হয়ে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী মনে করে অথবা জনগণের রিযিকদাতা বা বিধানদাতা মনে করে অথবা জনগণের কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক মনে করে, তাহলে সেও আল্লাহর ক্রোধে পতিত হবে এবং ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে আরো একটি উদাহরণ হচ্ছে, নমরূদের মিথ্যা দাবি। সে দাবি করেছিল যে, সে সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী। অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) তার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হন। আল্লাহ তা‘আলা এই বিতর্কের কথাসমূহ কুরআন মাজীদে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন-
আপনি কি তার দিকে লক্ষ্য করেননি, যে ইবরাহীমের সাথে তার রব সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল? এজন্য যে, তাকে আল্লাহ রাজত্ব দান করেছিলেন। যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, আমার রব তো তিনি যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তখন সে বলেছিল, আমিই জীবন এবং মৃত্যু দিয়ে থাকি। এবার ইবরাহীম বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সূর্যকে পূর্ব দিকে উদিত করেন। সুতরাং তুমি সেটাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করে নিয়ে আসো। অতঃপর সে কাফির হতবুদ্ধি হয়ে গেল। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না। (সূরা বাক্বারা– ২৫৮)
খ. اَلشِّرْكُ فِى الْاَسْمَاءِ وَالصِّفَاتِ তথা আল্লাহর নাম এবং গুণাবলীর ক্ষেত্রে শিরক :
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা নিজের জন্য যেসব নাম ও গুণাবলি নির্ধারণ করেছেন, সেগুলোর সাথে সৃষ্টির কোন গুণাবলীর তুলনা করা। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ৩ ভাবে শিরক সংঘটিত হয়। যেমন-
১. আল্লাহর নাম ও গুণাবলি অথবা এর কিছু অংশ অস্বীকার করা।
২. আল্লাহর নাম ও গুণাবলির ক্ষেত্রে তার অর্থকে অস্বীকার করা অথবা তার সঠিক অর্থকে বিকৃত করা অথবা ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা তার মূল অর্থকে সরিয়ে ফেলা অথবা আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ গুণাবলি থেকে দূরে রাখা। এদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করো; অচিরেই তাদের কৃতকর্মের ফল তাদেরকে দেয়া হবে। (সূরা আ‘রাফ- ১৮০)
৩. সৃষ্টির সাথে আল্লাহর কোন গুণাবলির তুলনা করা অথবা আল্লাহকে এমন গুণে গুণান্বিত করা, যা তাঁর সাথে মানায় না। যেমন- একথা বলা যে, আল্লাহর হাত আমাদের হাতের মত। অথবা এ আক্বিদা পোষণ করা যে, আল্লাহর যেসব গুণ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, অন্য কোন সৃষ্টির মধ্যেও অনুরূপ গুণ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
গ. اَلشِّرْكُ فِى الْاُلُوْهِيَّةِ তথা আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে শিরক :
অর্থাৎ যেসব কর্মকান্ড আল্লাহর ইবাদাত হিসেবে সাব্যস্ত হয়, সেগুলো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে করা। যেমন- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দু‘আ করা, অন্য কাউকে সিজদা করা, অন্যের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, অন্যের নামে মান্নত মানা, অন্যকে আল্লাহর মত ভয় করা, ভালোবাসা, আল্লাহর আইন ব্যতীত অন্য আইনের কাছে বিচার চাওয়া এবং বিচার করা ইত্যাদি। ইসলাম ভঙ্গের অধিকাংশ কারণ এই প্রকার শিরকেরই আওতাভুক্ত।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।