মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলাম ভঙ্গের দ্বিতীয় কারণ আল্লাহ এবং তাঁর বান্দার মাঝখানে কোন মাধ্যম স্থির করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/10/5
অর্থাৎ এরূপ মনে করা যে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার জন্য অথবা নিজের গোনাহ মাফের জন্য সরাসরি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করাটা যথেষ্ট নয়; বরং এ কাজের জন্য এমন কোন সুপারিশকারীর প্রয়োজন রয়েছে, যাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারলে তারা আল্লাহর নিকট তার ব্যাপারে সুপারিশ করবেন এবং আল্লাহ তা‘আলা তার সুপারিশ কবুল করবেন। আল্লাহর ব্যাপারে এরূপ ধারণা পোষণ করলে নিঃসন্দেহে ব্যক্তির ইসলাম ভঙ্গ হয়ে যাবে। কেননা-
প্রথমতঃ এসব আক্বীদা-বিশ্বাসের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতার সাথে অন্য কারো ক্ষমতাকে সাদৃশ্য করা হয় অথবা আল্লাহর সার্বভৌমত্বে অন্য কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা হয়। সুতরাং এ দিক থেকে বিষয়টি তাওহীদে রুবূবিয়াতের পরিপূর্ণ লঙ্ঘন।
দ্বিতীয়তঃ এসব আক্বীদা-বিশ্বাস গাইরুল্লাহকে উপাস্যে পরিণত করে। ফলে মানুষ কবর, মাযারসহ বিভিন্ন ধরনের মূর্তিপূজার দিকে ধাবিত হয়। সুতরাং এ দিকে থেকে বিষয়টি তাওহীদুল উলুহিয়াতের সম্পূর্ণ বিপরীত।
পূর্বযুগ থেকে অধিকাংশ মানুষ নিজেদের ঈমান এই পদ্ধতিতে ভঙ্গ করে আসছে। মূর্তিপূজাও ঠিক এসব ধারণার ভিত্তিতেই আবিস্কৃত হয়েছিল। মক্কার মুশরিকরাও অনুরূপ আক্বিদা-বিশ্বাস পোষণ করত। আর এসব ধারণার উপর নির্ভর করেই তারা বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করত। আল্লাহ তা‘আলা তাদের এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস খন্ডন করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আয়াত নাযিল করেছেন। যেমন- তিনি বলেন,
তারা আল্লাহ ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এগুলো আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বলো, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দেবে, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে। (সূরা ইউনুস- ১৮)
যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং বলে যে, আমরা তাদের ইবাদাত এজন্যই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ (কিয়ামতের দিন) তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফায়সালা করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফিরদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (সূরা যুমার- ৩)
তোমরা তো আমার নিকট নিঃসঙ্গ অবস্থায় এসেছ, যেমনিভাবে আমি তোমাদেরকে প্রথমে সৃষ্টি করেছিলাম। আর তোমাদেরকে আমি যা দিয়েছিলাম তা তোমরা পেছনে ফেলে এসেছ। তোমরা যাদেরকে তোমাদের ব্যাপারে শরীক মনে করতে, তোমাদের সেই সুপারিশকারীদেরকেও তো তোমাদের সাথে দেখছি না। অবশ্যই তোমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে এবং তোমরা যা ধারণা করেছিলে তাও নিষ্ফল হয়েছে। (সূরা আন‘আম- ৯৪)
উল্লেখ্য যে, বর্তমান যুগের অনেক মানুষ নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করা সত্ত্বেও মক্কার মুশরিকদের অনুরূপ আক্বীদা পোষণ করে থাকে। আর এর উপরই ভিত্তি করে তারা গড়ে তুলেছে মাজার, দর্গাসহ বিভিন্ন ধরনের আস্তানা। অতএব এদের ব্যাপারে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এরা কোনভাবেই মুসলিম নয়; বরং মুশরিক। এই প্রক্রিয়ায় যারা মুশরিকে পরিণত রয়েছে তাদের স্মরণ রাখার প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা একক সত্তা। আর সর্বদিক থেকে এককত্বের অধিকারী। কোন দিক থেকে তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। চাই সেটা সত্তাগত দিক থেকে হোক অথবা উপাস্য হিসেবে হোক অথবা প্রার্থনা শ্রবণ করা ও তা গ্রহণ করার ক্ষেত্রেই হোক।
কিয়ামতের দিন তিনি যেসব বান্দাকে শাফায়াত করার সুযোগ দিবেন, সেটি হবে সম্পূর্ণ তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। সেদিন তাঁর অনুমতি ব্যতীত কারো সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না। যেমন- কুরআন মাজীদে এসেছে,
সেদিন দয়াময় যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথা তিনি পছন্দ করবেন সে ব্যতীত অন্য কারো সুপারিশ কোন কাজে আসবে না।
(সূরা ত্বা-হা- ১০৯)
তাদের আরো স্মরণ রাখার প্রয়োজন যে, সেদিন আল্লাহ তা‘আলা যার জন্য সুপারিশ করার অনুমতি দেবেন শুধুমাত্র তার জন্যই শাফা‘আত করা হবে। যে কারো জন্য সুপারিশ করার ইখতিয়ার কারো থাকবে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আকাশসমূহে কত ফেরেশতা রয়েছে! তাদের কোন সুপারিশ কাজে আসবে না, যতক্ষণ না আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এবং তিনি যার প্রতি সন্তুষ্ট তার ব্যাপারে অনুমতি না দেন। (সূরা নাজম- ২৬)
আরো স্মরণ রাখার প্রয়োজন যে, সুপারিশ একমাত্র তারাই প্রাপ্ত হবে, যারা কোন প্রকার কুফর বা শিরকের সাথে যুক্ত নয়। বরং তারা যথাযথভাবে আল্লাহর একত্ববাদের উপর বিশ্বাসী। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
কোন নবী এবং ঈমানদারদের জন্য এটা উচিত নয় যে, তারা কোন মুশরিকদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবে, যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়; তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হওয়ার পরও যে, তারা জাহান্নামবাসী।
(সূরা তওবা- ১১৩)
আরো স্মরণ রাখার প্রয়োজন যে, মুশরিক হওয়ার কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সবেচেয়ে প্রিয় বান্দা, যাকে তিনি খলীল হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন, তিনি তথা ইবরাহীম (আঃ)-ও নিজের পিতার জন্য সুপারিশের অনুমতি পাবেন না। হাদীসে এসেছে,
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, কিয়ামতের দিন ইবরাহীম (আঃ) তার পিতা আযরের সাক্ষাৎ পাবেন। আযরের মুখমন্ডলে মলিনতা থাকবে। তখন ইবরাহীম (আঃ) তাকে বলবেন, আমি কি পৃথিবীতে আপনাকে বলিনি যে, আমার অবাধ্যতা করবেন না? তখন তাঁর পিতা বলবে, আজ আর তোমার অবাধ্যতা করব না। এরপর ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর কাছে আবেদন করবেন, হে আমার রব! আপনি আমার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, হাশরের দিন আপনি আমাকে লজ্জিত করবেন না। আমার পিতা রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার চাইতে অধিক অপমান আমার জন্য আর কী হতে পারে? তখন আল্লাহ বলবেন, আমি কাফিরদের জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। পুনরায় বলা হবে, হে ইবরাহীম! তোমার পদতলে কী? তখন তিনি নিচের দিকে তাকাবেন। তখন দেখতে পাবেন তার পিতার স্থানে সমস্ত শরীরে রক্তমাখা একটি জানোয়ার পড়ে রয়েছে। অতঃপর এটাকে চারপাশ দিয়ে বেঁধে জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলা হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৩৩৫০; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/২৯৩৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪৩১০; মিশকাত, হা/৫৫৩৮।]
অতএব শাফায়াতের নামে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার জন্য অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অথবা আল্লাহর কাছে নিজেদের গোনাহসমূহ মাফ করানোর জন্য অথবা পরকালীন মুক্তি লাভ করার জন্য যে কোন ভ্রান্ত মাধ্যম গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য একান্ত জরুরি।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।