মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
জাকাত ফরজ। ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে জাকাত অন্যতম একটি রুকন। নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বৎসর অতিবাহিত হলে জাকাত দেয়া ফরজ হয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই রমজানের বিশেষ ফজিলতের কারণে রমজান মাসেই জাকাত আদায় করে থাকে। এটা ঠিক যদি রমজান মাসেই সম্পদের ওপর এক বৎসর পূর্ণ হয়, আর যদি এর আগেই সম্পদের ওপর এক বৎসর পূর্ণ হয়ে যায়, তবে যখন বৎসর পূর্ণ হল তখনই জাকাত আদায় করা জরুরি। রমজানের অপেক্ষা করা ঠিক নয়।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে ত্রিশেরও বেশি জায়গায় সালাতের সঙ্গে জাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, জাকাত আল্লাহ তাআলার নিকট বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্ববহ একটি মহান ইবাদত। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদের শুকরিয়া আদায় করা হয়, আল্লাহর নির্দেশ পালন করা হয় এবং গরীবদের সঙ্গে সহানুভুতি প্রকাশ করা হয়।
জাকাত জাকাতদাতাকে কৃপণতা ও ঘৃণ্য কিছু চরিত্র থেকে পবিত্র করে দেয় এবং তাকে নেককার লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতে সাহায্য করে। যেসব নেককার লোকদের আল্লাহ ও মানুষ মহব্বত করে, ভালবাসে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
{ خذ من أموالهم صدقة تطهرهم وتزكيهم بها } [ التوبة 103]
'তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও। এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে।' (সূরা তওবা : ১০৩)
এক. জাকাত দেয়ার ফলে যেসব উপকার হয়, জাকাত না দেয়ার ফলে জাকাত ত্যাগকারী সেসব উপকারিতা থেকে বঞ্চিত থাকে।
দুই. জাকাত না দেয়ার ফলে সম্পদ অনিরাপদ হয়ে যায়। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, 'যে সম্পদের সঙ্গে জাকাতের মিশ্রন ঘটবে, সে সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাবে।' (মুসনাদে হুমাইদি : হাদিস নং : ২৩৭, ইবনে আদি ফিল কামেল : ৬/২০৮, বায়হাকি ফি সুনানিল কুবরা : ৪/১০৫৯)
বর্তমান যুগে আমরা যে আগুনে পুড়ে, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে, ডাকাতির কবলে পড়ে, ছিনতাইয়ের ফলে, আরো বিভিন্ন কারণে অর্থনৈতিক ধস ও দৈউলিয়াত্বের সংবাদ শুনি এবং শষ্য ও ফলফলাদি যেসব বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিণ দুর্যোগের শিকার হয়, তা মূলত জাকাত না দেয়ার ফলেই হয়।
তিন. জাকাত না দেয়ার ফলে আসমান থেকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়। অথচ এ বৃষ্টিই মানুষ, জীব-জন্তু, বৃক্ষ ও ফলমুলের জীবনী শক্তি। হাদীসে এসেছে, 'যে জাতি তাদের সম্পদের জাকাত প্রদান করা বন্ধ করে দেবে, সে জাতির ওপর আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করা বন্ধ করে দেবে।' (ইবনে মাজা : ৪০১৯, হাকেম : ৪/৫৪০, হাকেম হাদিসটি সহিহ বলেছেন এবং ইমাম জাহাবি তাকে সমর্থন করেছেন। আবুনুআইম ফিল হুলইয়া : ৩/৩২০, ৮/৩৩৩-৩৩৪)
বর্তমান সময়ে আমরা বিভিন্ন দেশে যে অনাবৃষ্টি এবং এ অনাবৃষ্টির ফলে যে খরা ও খাদ্যসঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে, তা মূলত জাকাত না দেয়ার ফলেই।
জাকাত না দেয়ার এ সব শাস্তি হচ্ছে নগদ ও ইহকালীন। আর পরকালের শাস্তি এর চেয়েও ভয়াবহ। আল্লাহ তাআলা বলেন,
{ والذين يكنزون الذهب والفضة ولا ينفقونها في سبيل الله فبشرهم بعذاب أليم * يوم يحمى عليها في نار جهنم فتكوى بها جباههم وجنوبهم وظهورهم هذا ما كنزتم لأنفسكم فذوقوا ما كنتم تكنزون } [ التوبة 34، 35].
'এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। (আর বলা হবে) 'এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।' (তওবা : ৩৪-৩৫)
যে সব সম্পদের জাকাত প্রদান করা হয় না, সেসব সম্পদ হচ্ছে আয়াতে উল্লেখিত কানয। এ কানযের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন জাকাত পরিহারকারীদের শাস্তি দেবেন। একটি সহিহ হাদীসে এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। 'স্বর্ণ-চাঁদির যে কোন মালিক জাকাত প্রদান থেকে বিরত থাকবে, কেয়ামতের দিন এগুলোকে আগুনের পাত বানিয়ে জাহান্নামের আগুনে দাহ করা হবে অতঃপর এর মাধ্যমে তার পার্শ্ব, ললাট ও পিট সেঁক দেয়া হবে। আগুন ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, পুনরায় তা গরম করা হবে। যতক্ষণ না তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয় এবং সবাই নিজ নিজ স্থান জাহান্নাম কিংবা জান্নাত দেখে নেয়। আর সেদিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের ন্যায়।' (মুসলিম : ৯৮৭)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
{ ولا تحسبن الذين يبخلون بما آتاهم الله من فضله هو خيرا لهم بل هو شر لهم سيطوقون ما بخلوا به يوم القيامة }.
'আর আল্লাহ যাদেরকে তার অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকাল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে।' (সূরা আলে-ইমরান : ১৮০)
একটি সহিহ হাদীসে রয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'আল্লাহ যে ব্যক্তিকে সম্পদ দিয়েছেন, সে যদি তার জাকাত আদায় না করে, তার এ সম্পদ কেয়ামতের দিন একটি বিষধর অজগরের রূপ ধারণ করবে, যার দুই চোখের ওপর দুটি কালো চিহ্ন থাকবে। সে তাকে দংশন করবে আর বলবে, আমিই তোমার মাল, আমিই তোমার সঞ্চয়।' (বুখারি : ১৪০৩)
এ হচ্ছে জাকাত পরিহারকারীর পরকালীন শাস্তি। জাকাত পরিহারকারীর সম্পদকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে তার ওপর জাহান্নামের আগুনের তাপ দেয়া হবে। অতঃপর তা দ্বারা তার পার্শ্ব, ললাট ও পৃষ্ঠে দাগ দেয়া হবে। এবং তার সম্পদের সাপের আকৃতিও দেয়া হবে, যে সাপ তাকে দংশন করবে ইত্যাদি।
আর এ শাস্তি এমন নয় যে, এক মুহূর্তের জন্য আরম্ভ হল আবার অন্য মুহূর্তে তা বন্ধ হয়ে গেল। বরং পঞ্চাশ হাজার বছর অনবরত চলতে থাকবে। আল্লাহ আমাদের এ থেকে হিফাজত করুন।
তাই, জাকাত ত্যাগকারীর পরিচয় পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেয়া সমীচিন নয়। বরং তাকে নসিহত করা ও জাকাত দিতে বাধ্য করা জরুরি। তারপরও যদি সে জাকাত না দেয়, সরকারের উচিত তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া। যদি সে জাকাত ফরজের কথা অস্বীকার করে, তাকে তওবা করতে বাধ্য করা। যদি সে তওবা করে এবং তার সম্পদের জাকাত আদায় করে ভাল কথা, অন্যথায় সে মুরতাদ। তাকে হত্যা করা ওয়াজিব। আর যদি সে জাকাত ওয়াজিব এ কথা স্বীকার করে কিন্তু সম্পদের মহব্বত ও কৃপণতার কারণে সে জাকাত দিচ্ছে না তা হলে তাকে শাস্তি দেয়া এবং তার থেকে জবরদস্তি মূলক জাকাত উসুল করা জরুরি। যদি তাকে হত্যা ব্যতীত তার থেকে জাকাত উসুল করা সম্ভব না হয়, তবে তাকে হত্যা করাও জরুরি। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর পর সাহাবায়ে কেরাম যেমন আবুবকর রা. এর নেতৃত্বে জাকাত অস্বীকারকারীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। অতঃপর তারা জাকাত দিতে বাধ্য হয় এবং আল্লাহর হুকুম মেনে নেয়। আল-হামদুলিল্লাহ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/123/23
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।