hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুমিনদের জন্য মাহে রমজানের হাদিয়া

লেখকঃ শায়খ সালেহ বিন ফাওযান আল ফাওযান

৩২
ত্রিশতম পাঠ: রমজান বাদ মুসলমানদের করণীয় কাজ
সমস্ত প্রশংসা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহ তাআলার জন্য, যিনি কাল ও সময়ের পরিচালক। শুকরিয়া আদায় করছি তার অগণিত নেয়ামতের। এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে শরিক হীন এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। আরও সাক্ষ দিচ্ছি যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাও তার রাসূল। যিনি ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদ বাহক এর উজ্জ্বল বাতি সাদৃশ্য। দরুদও সালাম নাযিল হোক তার উপর ও তার পরিবার পরিজনের উপর।

জগতের মানুষ সকল! সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করবে। রাত-দিনের দ্রুত গামিতার প্রতি লক্ষ কর। এ পৃথিবী হতে বিদায় নেয়ার কথা স্মরণ কর, নেক-আমল করে পরপারের পুঁজি জোগাড় কর। সমস- কল্যাণও বরকতময় রমযান-মাস আগমন পর দ্রুত তোমাদের হতে বিদায় নিয়েছে। যারা তার মূল্যায়ন করেছে, এবং ইবাদত বন্দেগী দ্বারা তা হতে উপকৃত হয়েছে রমযান তাদের স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। পক্ষান্তরে যে রমযানকে অবমূল্যায়ন করেছে, অন্যায়ও অনর্থক কাজে তা অতিবাহিত করেছে রমযান তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। সুতরাং প্রতিটি ব্যক্তিকে গভীর ভাবে চিন্তা করতে হবে যে, সে রমযানকে কতটুকু কাজে লাগিয়েছে। ভাল করে থাকলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং আল্লাহর দরবারে তা কবুল হওয়ার জন্যে দোয়া করবে, এবং ভবিষ্যতে নিয়মিত সে নেক আমল করতে থাকবে। আর যারা মন্দ করেছে তারা তওবা করবে এবং আগামীতে নেক-আমল করার জন্যে প্রস্তুতি নেবে, হয়ত মহান আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وأقم الصلاة طرفي النهار وزلفا من الليل إن الحسنات يذهبن السيئات ذلك ذكرى للذاكرين } [ هود : 114]

আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতেরও প্রান-ভাগে, পুণ্য কাজ অবশ্যই পাপ দুর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক। (সূরা হুদ ১১৪)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন -

وأتبع الحسنة السيئة تمحها " [ أخرجه الترمذي رقم : 1987 ، والدارمي رقم 2719 ، وأحمد 5/153 ، والحاكم 1/45]،

মন্দ কাজের পর ভাল কাজ করে নাও যাতে মন্দের জন্যে কাফ্‌ফারা হয়ে যায়।

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

إلا من تاب وآمن وعمل عملا صالحا فأولئك يبدل الله سيئاتهم حسنات وكان الله غفورا رحيما } [ الفرقان ৭০].

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা আল-ফুরকান ৭০)

আল্লাহর বান্দাগণ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহে-রমযানকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। শুরু অংশ রহমত, মধ্যাংশ ক্ষমা আর শেষাংশ মুক্তি। কারণ মানুষও তিন ভাবে বিভক্ত ১ম শ্রেণীর মানুষ যারা রমযানের পূর্ব হতেই ছোট বড় সব ধরণে গুনাহ হতে বেচে থাকতো ইবাদত বন্দেগীর প্রতিও যত্নবান ছিল। অতঃপর রমযান আসাতে আরও অধিক আমলে সচেষ্ট হল। তারা শুরু হতেই আল্লাহ রহমত পেতে থাকবে, কারণ তারা প্রকৃত সৎকর্মশীল। মহান আল্লাহ তালা বলেন:

{ إن رحمة الله قريب من المحسنين } [ الأعراف 56].

নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী (সূরা আল-আরাফ ৫৬)

২য় শ্রেণীর মানুষ যারা ইতিপূর্বে ইবাদত বন্দেগী করতেন এবং রমযান মাসেও নামায রোযার প্রতি যথেষ্ট অনুরাগী, কিন্তু তার ঘাড়ে ছোট খাট কিছু গুনাহ ছিল। তাই সে কিছুদিন সিয়াম সাধনার পর কৃত অপরাধ হতে ক্ষমা পাবে। মহান আল্লাহ তালা বলেন:

إن تجتنبوا كبائر ما تنهون عنه نكفر عنكم سيئاتكم وندخلكم مدخلا كريما } [ النساء ৩১]

যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহগুলো হতে বেচে থাকতে পার, তবে আমি তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মানজননক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব। (সূরা আন-নিসা ৩১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة ورمضان إلى رمضان كفارة لما بينهن إذا اجتنبت الكبائر " [ أخرجه مسلم رقم 233 ، والترمذي رقم 214 ، وأحمد 2/359

যদি কবিরা গুনাহ হতে বেচে থাক তাহলে পাঁচওয়াক্ত নামায এবং এক জুমআ হতে অপর জুমআ এক রমযান হতে অপর রমযান মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফ্‌ফারা হিসাবে গৃহিত হয়।

৩য় শ্রেণীর মানুষঃ যারা মাহে-রমযানে ইবাদত বন্দেগী করেছে সত্য, কিন' তার ঘাড়ে শিরক ব্যতীত অন্য কবিরা গুনাহ রয়েছে, যার কারণে তার জাহান্নামে প্রবেশ অনিবার্য হয়ে গিয়েছে। সেসব লোক যখন এ মাসে তওবা-ইস্তিগফারের সাথে সাথে সাধ্যমতে ইবাদত বন্দেগী করবে মহান আল্লাহ তালা তদেরকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দেবেন।

আবার কিছু মানুষ এমনও আছে যারা এ মাস পেয়েছে সত্য, কিন্তু তারা এ মাস হতে কোনরূপ উপকৃত হতে পারে নেই। বরং ক্ষতির মাত্রাই বাড়ছে তাদের। তারা না করছে অপরাধ ত্যাগ আর না করছে ফরয ইবাদত। তারা ছিল স্বীয় অপরাধের উপর অবিচল। এরাই হল প্রকৃত হতভাগা। রমযান অতিবাহিত হল, কিন' তারা স্বীয় অপরাধ হতে মুক্তি পেল না। এদের সম্পর্কে ফেরেশরতা জিবরাঈল বলেছেন,

ومن أدركه شهر رمضان فلم يغفر له فأبعده الله، قل آمين، فقال النبي صلى الله عليه وسلم : آمين "

যে ব্যক্তি রমযান মাস পেল অথচ স্বীয় অপরাধ ক্ষমা নিতে পারে নাই, আল্লাহ তাকে নিজ রহমত হতে বঞ্চিত করুন। আপনি বলেন, আমীন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমীন।

নিতান- হতভাগ্য আর বঞ্চিত সে যে আল্লাহর দয়া ও রহমত হতে বঞ্চিত রইল।

আল্লাহর বান্দাগণ! মৃত্যুর পূর্বে আল্লাহর ইবাদতের কোন সমাপ্তি নেই। মহান আল্লাহ তালা বলেন:

واعبد ربك حتى يأتيك اليقين } [ الحجر 99] وقال تعالى : { يا أيها الذين آمنوا اتقوا الله حق تقاته ولا تموتن إلا وأنتم مسلمون } [ آل عمران 102]،

এবং পালনকর্তার ইবাদত করুন, যে পর্যন- আপনার কাছে নিশ্চিত কথা না আসে। (সূরা হিজর ৯৯) হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না (সূরা আল-ইমরান১০২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

إذا مات الإنسان انقطع عمله إلا من ثلاث " الحديث [ أخرجه مسلم رقم 1631 ، والبخاري في الأدب المفرد رقم 38 ، وأبو داود رقم 2880 ، والترمذي رقم 1376 ، والنسائي رقم 3653.

মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথে তিনটি কাজ ব্যতীত সমস্ত আমলের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়ে যায়। মনে রাখবে মৃত্যু খুবই কাছে। তুমি যে কোন সময় আক্রান- হতে পার।

মুসলমানদের ইবাদত হবে জীবনব্যাপী। কারণ আল্লাহর ইবাদতের মাঝে কিছু আছে দৈনিক ইবাদত, যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামায। যা ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ, কালিমায়ের শাহাদাতের পরই এর স্থান। আর কিছু আছে সাপ্তাহিক ইবাদত, যেমন জুমআর নামায। যা মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীক। সকল মুসলমান একত্রিত হয়ে সুনির্দিষ্ট স্থানেও সুনির্দিষ্ট দিনে সম্মিলিতভাবে আদায় করে থাকে। আবার কিছু আছে বাৎসরিক ইবাদত, যেমন যাকাত। মালের যাকাত দেবে বছরে একবার এবং তা যেকোন সময় হতে পারে। আর ফসলের যাকাত দেবে যখন তা হস-গত হয়। রোযাও রাখবে বছরে একবার। তবে তা হবে পুরা রমযান-মাস ব্যাপী। ব্যয় ভার বহন করতে সক্ষম ব্যক্তি হজ ওমরা করবে জীবনে একবার। একাধিক বার করতে পারলে তা হবে নফল। উপরোল্লিখিত ফরয ইবাদতগুলোর পাশাপাশি রয়েছে নফল ইবাদত। যেমন নফল নামায নফল রোযা নফল সদকা ইত্যাদি। উল্লিখিত আলোচনা হতে প্রতিয়মান হয়, যে মুসলমানদের জীবনের কোন অংশ ইবাদত হতে খালি নয়। হয়ত ফরয ইবাদত হবে না হয় নফল। যারা এরূপ ভাবে যে আমরা শুধু রমযান মাসে ইবাদত করতে আদিষ্ট অন্য সময় নয়। তাদের এ ধারনা ভুল। তারা আল্লাহর হক সম্পর্কে অজ্ঞ তারা তাদের প্রভুকে চিনতে পারে নাই। পারে নাই বুঝতে তাদের প্রভূর আদেশের মর্যাদা। কারণ, তারা শুধু রমযানেই তার হুকুমের মূল্যায়ন করছে অন্য সময় নয়। রমযানেই তাকে ভয় করেছে অন্য সময়ে করেনি। রমযানেই পূণ্যের আশা রেখেছে অন্য সময় রাখেনি। এ সমস- ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সুসম্পর্ক রাখে নাই। অথচ সে আল্লাহর দয়া ছাড়া একমুহুর্তও বাঁচতে পারে না। শুধু রমযান মাসের ইবাদত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয় যদিও তা পরিমাণে অনেক বেশী হয়। কারণ তার আমলগুলো আগেও পরের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। রমযানের আমল দ্বারাতো শুধু তারাই উপকৃত হবেন, যারা বিশ্বাস করে যে সমস্ত মাসের প্রভূ এক আল্লাহ এবং তিনি সার্বক্ষনিক আমাদের সকল আমল অবলোকন করছেন। দরুদও সালাম নাযিল হোক মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার পরিবার পরিজনও সাহাবীগণের উপর।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন