hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুমিনদের জন্য মাহে রমজানের হাদিয়া

লেখকঃ শায়খ সালেহ বিন ফাওযান আল ফাওযান

দ্বিতীয় পাঠ: রমজান মাস নিশ্চিতকারী বিষয়
মহান আল্লাহ বলেন,

{ فمن شهد منكم الشهر فليصمه } [ البقرة 185]

সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। (সূরা বাকারা:১৮৫)

এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা রমজানের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত, এক কথায় পূর্ণ মাসের রোজাকে আবশ্যিক করেছেন।

রমজান মাসের সূচনা সম্পর্কে দু’বিষয়ের যে কোনো একটির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়।

প্রথম বিষয়:

চাঁদ দেখতে পাওয়া । ইমাম বোখারি, মুসলিম ও অন্যন্য হাদিস বিশারদরা বর্ণনা করেছেন,

أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : " إذا رأيتم الهلال فصوموا وإذا رأيتموه فأفطروا فإن غم عليكم فاقدروا له " [ أخرجه البخاري رقم 1900 ، ومسلم رقم 1080/8].

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা চাঁদ দেখতে পেলে রোজা রাখবে আবার চাঁদ দেখতে পেলে রোজা ভঙ্গ করবে। আর আকাশ (মেঘাচ্ছন্ন হয়ে) ঢেকে থাকলে গণনা করবে। (বোখারি ১৯০০ ও মুসলিম ৮/১০৮০)

ইমাম আহমাদ ও ইমাম নাসায়ি রহ. আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

" لا تصوموا حتى تروا الهلال ولا تفطروا حتى تروه "

চাঁদ না দেখে তোমরা রোজা রাখবে না আবার চাঁদ না দেখে ইফতার (ভঙ্গ) করবে না।

ইমাম তাবারানী রহ. তালক্ব বিন আলী রা. থেকে উদ্ধৃত করেছেন,

" أن الله جعل هذه الأهلة مواقيت فإذا رأيتموه فصوموا وإذا رأيتموه فأفطروا " [ أخرجه الطبراني في معجمه الكبير 8/397 رقم 8237].

আল্লাহ তাআলা এ চাঁদসমূহকে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারক হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং তোমরা তা দেখতে পেলে রোজা পালন করবে আবার দেখতে পেলে ভঙ্গ (ইফতার) করবে। (আল মু’জাম আল কাবির)

وروى الحاكم عن ابن عمر رضي الله عنهما : " جعل الله الأهلة مواقيت للناس فصوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته " [ أخرجه الحاكم في المستدرك 1/423 وأحمد في المسند 4/ 23 والدارقطني في سننه 2/163 وقال الحاكم : صحيح على شرط الشيخين ووافقه الذهبي ].

ইমাম হাকেম রহ. ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তাআলা চাঁদসমূহকে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারক বানিয়েছেন। সুতরাং তোমরা তা দেখে রোজা রাখবে আবার তা দেখেই রোজা ভঙ্গ করবে। [হাকেম/আল মুস্তাদরাক:১/৪২৩, আহমাদ/আল-মুসনাদ:৪/২৩, দারাকুতনী/সুনান:২/১৬৩, ইমাম হাকেম একে ইমাম বোখারি ও ইমাম মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহিহ বলে মন্তব্য করেছেন। ইমাম যাহাবী এর সমর্থন করেছেন।]

উদ্ধৃত হাদিসসমূহে রমজানের রোজার আবাশ্যকীয়তাকে চাঁদ দেখার সাথে সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে। চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখতে বলা হয়েছে। আর না দেখে রোজা রাখতে বারণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ চাঁদসমূহকে মানব জাতির জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারক সাব্যস্ত করেছেন। চাঁদের মাধ্যমে তারা নিজেদের ইবাদত-বন্দেগী ও লেন-দেনের সময় সম্বন্ধে অবহিত হবে।

যেমন আল্লাহ বলেন,

{ يسألونك عن الأهلة قل هي مواقيت للناس والحج } [ البقرة 189]

তারা তোমাকে নতুন চাঁদসমূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা মানুষের ও হজের জন্য সময় নির্ধারক। (সূরা বাকারা:১৮৯)

এটি বান্দাদের প্রতি মহা করুণাময় আল্লাহর বিশেষ রহমত এবং তাদের তরে সহজীকরণ। তিনি সিয়ামের আবশ্যকীয়তাকে এমন সুস্পষ্ট বিষয় ও বাহ্য নিদর্শনের সাথে সংশ্লিষ্ট করেছেন, যে কেউ তা অনুধাবন করতে পারবে আপাত দৃষ্টিতে নিতান্ত অনায়াসে। চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যক্তিকেই নিজ চোখে দেখতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। কিছু লোক বরং ক্ষেত্র বিশেষে একজন দেখলেই সকলের তরে সিয়াম পালন আবশ্যিক হয়ে যাবে।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জনৈক বেদুঈন এসে বলল, আমি চাঁদ দেখেছি- অর্থাৎ রমজানের চাঁদ। নবীজী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে,আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই? লোকটি বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ বললেন, বেলাল- আগামী কাল রোজা পালন করতে হবে, এ মর্মে লোকদের ঘোষণা দিয়ে দাও। (আবু দাউদ)

ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, লোকেরা চাঁদ দেখাদেখি করল। আমি চাঁদ দেখেছি মর্মে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সংবাদ দিলাম। তিনি নিজে রোজা রাখলেন এবং লোকদের রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন। (আবু দাউদ:২৩৪২)

দ্বিতীয় বিষয়:

চাঁদ দেখা না গেলে রমজান মাস সাব্যস্ত হবার দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে পূর্ববর্তী শাবান মাসকে ত্রিশ দিনে পূর্ণ করা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

" فإن غم عليكم فاقدروا له "

যদি (আকাশ) ঢেকে থাকে তাহলে তোমরা গণনা কর। (বোখারি ও মুসলিম)

" غم عليكم " এর অর্থ, শাবান মাসের ত্রিশতম রাত্রিতে কোনো বস্তু আকাশকে ঢেকে রাখার কারণে যদি চাঁদ দেখা না যায় তাহলে তোমরা শাবান মাসকে ত্রিশ দিনে পূর্ণ করে গণনা কর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ মর্মে বর্ণিত একটি হাদিস বিষয়টিকে খোলাসা করছে,

" فإن غم عليكم فأكملوا العدة ثلاثين "

যদি (আকাশ কিছুতে) ঢেকে থাকে তাহলে তোমরা মাসের গণনাকে ত্রিশ দিনে পূর্ণ কর। (বোখারি মুসলিম)

এর অর্থ হচ্ছে, ইয়াওমুশ শক্ক তথা সন্দেহের দিনে রোজা রাখা হারাম। বিশিষ্ট সাহাবি আম্মার বিন ইয়াসির রা. বলেন,

" من صام اليوم الذي يشك فيه فقد عصى أبا القاسم صلى الله عليه وسلم " [ أخرجه أبو داود رقم 2334 والترمذي 686 والنسائي 2190 وابن ماجه 1645 وقال أبو عيسى الترمذي : حسن صحيح ].

সন্দেহের দিনে যে ব্যক্তি রোজা পালন করল সে প্রকারান্তরে আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অমান্য করল। (তাঁর বিরোধিতা করল।) ( আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী, ইবনু মাজা। ইমাম তিরমিজি একে হাসান-সহিহ বলে মন্তব্য করেছেন।)

সুতরাং রোজাসহ যাবতীয় ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ ও রাসূল থেকে আগত বিষয়াদির উপর পরিপূর্ণ নির্ভর করা। তাঁদের দেওয়া নীতি-বিধান মেনে চলা। উপরোক্ত আলোচনায় আমরা স্পষ্টরূপে দেখতে পেয়েছি, আল্লাহ তাআলা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসের আগমন নিশ্চিত কারী দু’টো নিদর্শন নির্দিষ্টি করে দিয়েছেন। যা সাধারণ-বিশিষ্ট সকল শ্রেণীর মানুষই অনুধাবন করতে সক্ষম। চাঁদ দেখা কিংবা শাবান মাসকে ত্রিশ দিন পূর্ণ করে গণনা করা। এখন কেউ যদি আল্লাহ বা তাঁর রাসূল নির্ধারিত পন্থা ব্যতীত রমজান নির্ধারণী নতুন কোনো পন্থা উদ্ভাবন করে রোজা পালন শুরু করে। তাহলে তাকে আল্লাহ ও রাসূলের বিরোধিতাকারী, আল্লাহ ও রাসূল প্রদত্ত বিধি-বিধানে পরিবর্ধন সাধনকারী এবং দ্বীনের ভেতর নতুন বেদআতের সংযোজনকারী হিসাবে বিবেচনা করা হবে। আর সকলেরই জানা, সর্ব প্রকার বেদআত গোমরাহী।

যেমন, কেউ প্রস্তাব পেশ করল যে, রমজান মাসের সূচনা সংক্রান্ত বিষয়ে চাঁদ দেখা বা মাসের গণনা বহু পুরাতন পন্থা। এখন থেকে এগুলো বাদ দিয়ে বিজ্ঞান সম্মতভাবে সৌর-হিসাব অনুযায়ী নির্ধারণ করে আমল করতে হবে। এসব কথায় গুরুত্ব দেয়া যাবে না। কারণ রমজানের রোজা একটি ইবাদত, তার নিয়ম-নীতি শরিয়তের পক্ষ হতে নির্ধারিত। ফলে এ ক্ষেত্রে শরিয়ত নির্ধারিত পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হবে। অন্যথা হলে শরিয়ত অপরিবর্তিত থাকবে না। তাছাড়া এটি একটি সুক্ষ্ম ও জটিল বিষয় সর্ব সাধারণের পক্ষে বুঝা খুব কঠিন। আর সৌর-গণনায় ভুল হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে।

শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন :আমি কিছু লোক সম্বন্ধে জানি তারা নিজেদের রোজা ও অন্যান্য মাসের ক্ষেত্রে গণনাকারী যন্ত্র ও এ জাতীয় যন্ত্রবিদদের অজ্ঞতাপ্রসূত কথা ‌‌‌‌‌‌‌ ‘চাঁদ দেখা যাক বা না যাক’-এর উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এমন কি কতিপয় বিচারক সম্পর্কেও আমার নিকট খবর পৌঁছেছে, তারা নাকি অজ্ঞ-অবাস্তব-ভুলে ভরপুর গণকযন্ত্র ‘চাঁদ দেখা যাক বা না যাক’ জাতীয় ম্যাসেজের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদেলের কথা রদ করে দিয়েছে। ব্যাপারটি যদি সত্যি হয় তাহলে তাদের এ কাজটি ঠিক সে ব্যক্তির মতই হল যে, হক আসার পর তাকে মিথ্যপ্রতিপন্ন করল।

তিনি আরো বলেন :দ্বীন-ইসলামের অলঙ্ঘনীয় বিধান সম্বন্ধে আমরা যতটুকু জানি; রোজা, হজ্জ, ইদ্দত, ঈলা সহ যে সব আমল চাঁদ দেখার সাথে সম্পৃক্ত সে সব আমল চাঁদ না দেখে গনকযন্ত্র জাতীয় যন্ত্রের ম্যাসেজ ‘চাঁদ দেখা যাক বা না যাক’-এর উপর নির্ভর করা বৈধ নয়। এ সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি বিদ্যমান। এ ব্যাপারে মুসলমানদের ইজমাও হয়েছে। পূর্ববর্তী বা পরবর্তী কারো কোনো দ্বিমত পাওয়া যায়নি। (ফতোয়া শায়খিল ইসলাম:২৫/১৩১-১৩২)। তাছাড়া যন্ত্রের ওপর নির্ভর করার মধ্যে উম্মতের কষ্ট ও অসুবিধা বিদ্যমান। আর আল্লাহ তাআলা বলছেন,

{ وما جعل عليكم في الدين من حرج } [ الحج 78]

দ্বীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেননি। (হজ্জ: ৭৮)

সুতরাং রোজা, চাঁদ দেখা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে, শরিয়তের অন্যান্য বিষয়ের মত আল্লাহ ও রাসূল কর্তৃক মনোনীত নিয়ম-নীতির উপর নির্ভর করা। সে পর্যন্ত সীমিত থাকা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন