মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সকল প্রশংসা চিরঞ্জীব সর্বসত্ত্বার ধারক আল্লাহর জন্য, তিনি শ্বাশত আর কেউ নয়। তিনি আসমান উপরে স্থাপন করেছেন এবং তারকারাজি দিয়ে সুসজ্জিত করেছেন। পাহাড়রাজি দিয়ে ভূপৃষ্ঠকে মহাশূন্যে স্থির করেছেন। আপন কুদরতে এসব দেহধারীকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তাকে মৃত্যু দিয়েছেন এবং চিহ্নটুকুও মিটিয়ে দিয়েছেন। আবার তিনি ছবিগুলোয় প্রাণ ফুঁকিয়ে দেবেন আর সহসা মৃতরা দাঁড়িয়ে যাবে। তাদের একদল নেয়ামতস্থান তথা জান্নাতে যাবে। আরেকদল শাস্তিস্থান তথা জাহান্নামে যাবে, তাদের সামনে এর দরজা উন্মুক্ত করা হবে, প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী। তাদেরকে প্রলম্বিত স্তম্ভসমূহে আবদ্ধ করে রাখা হবে চিন্তা ও কষ্টের মধ্যে। সেদিন তাদেরকে তাদের ওপর ও নিচ থেকে শাস্তি গ্রাস করবে, তাদের কেউ করুণাপ্রাপ্ত হবে না।
আমি সাক্ষ্য দেই যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই; তাঁর কোনো শরীক নেই। এমন ব্যক্তির সাক্ষ্য যে মুক্তির প্রত্যাশা করে। আমি আরও সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। যার আনীত দীনকে আল্লাহ পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের ওপর বিজয় দান করেছেন।
আল্লাহ সালাত ও সালাম বর্ষিত করুন তাঁর ওপর, তাঁর পরিবার, সাহাবী এবং যতদিন মেঘমালা মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করে ততদিন পর্যন্ত আগত তাঁর সকল অনিন্দ্য অনুসারীর ওপর।
হে মুসলিম ভাইগণ! আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে ভয় দেখিয়েছেন এবং আমাদের বিভিন্ন প্রকার আযাবের খবর দিয়েছেন। যা শুনলে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। জান ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। তিনি আমাদের ওপর করুণাময় বলেই আমাদের বিভিন্ন ধরণের ভয় দেখিয়ে সতর্ক করেছেন; যাতে আমরা ভালোভাবে সাবধান ও ভীত হতে পারি।
সুতরাং আল্লাহর কিতাব কুরআনে মাজীদে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতে জাহান্নামের আযাব সম্পর্কে যা এসেছে তা শুনুন; যাতে আপনারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারেন।
‘নিশ্চয় আমার বান্দাদের উপর তোমার কোনো ক্ষমতা নেই, তবে পথভ্রষ্টরা ছাড়া যারা তোমাকে অনুসরণ করেছে। আর নিশ্চয় জাহান্নাম তাদের সকলের প্রতিশ্রুত স্থান। তার সাতটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী।’ {সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৪২-৪৪}
‘আর কাফিরদেরকে দলে দলে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন জাহান্নামের কাছে এসে পৌঁছবে তখন তার দরজাগুলো খুলে দেয়া হবে।’ {সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৭১}
‘আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল! যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে। ক্রোধে তা ছিন্নভিন্ন হবার উপক্রম হবে।’ {সূরা আল-মুলক, আয়াত: ৬-৮}
‘তাদের জন্য তাদের উপরের দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এদ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ভয় দেখান। ‘হে আমার বান্দারা, তোমরা আমার তাকওয়া অবলম্বন কর’।’ {সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১৬}
‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের এবং পরিবার-পরিজনদের সে অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয় ও কঠিন স্বভাবের ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা‘আলা যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তাই করে।’ {সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৬}
‘তবে যারা কুফরী করে তাদের জন্য আগুনের পোশাক প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর থেকে ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। যার দ্বারা তাদের পেটের অভ্যন্তরে যা কিছু রয়েছে তা ও তাদের চামড়াসমূহ বিগলিত করা হবে। আর তাদের জন্য থাকবে লোহার হাতুড়ি। যখনই তারা যন্ত্রণাকাতর হয়ে তা থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং বলা হবে, দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন কর।’ {সূরা আল-হজ, আয়াত: ১৯-২২}
‘নিশ্চয় যারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করবে, আমি তাদের আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে পুড়ে যাবে তখন আবার আমি অন্য চামড়া দিয়ে তা পাল্টে দেব। যাতে তারা আযাব ভোগ করবে পারে।’ {সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৫৬}
‘যদি তারা পান করার জন্য প্রার্থনা করে তখন তাদের পুঁজের ন্যায় পানীয় দ্রব্য দেয়া হবে। যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। তা কতই না নিকৃষ্ট পানি এবং খুবই মন্দ আশ্রয়স্থল।’ {সূরা আল-কাহফ, আয়াত: ২৯}
‘তাদের পুঁজ মেশানো পানি পান করানো হবে। ঢোক গিলে তা পান করবে। তা গলার ভেতর প্রবেশ করলে মনে হবে চতুর্দিক থেকে তার কাছে মৃত্যু আগমন করছে। এরপরও সে মরবে না। তার পিছনে অপেক্ষা করছে কঠোর আযাব।’ {সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ১৬-১৭}
‘নিশ্চয়ই অপরাধীরা জাহান্নামে চিরকাল থাকবে। তাদের আজাব লাঘব করা হবে না। তারা তথায় হতাশ হয়ে থাকবে। আমরা তাদের প্রতি জুলুম করিনি বরং তারাই ছিল জালেম। তারা ডেকে বলবে হে মালিক! (ফেরেশতার নাম) তোমার রবকে বল, যেন আমাদের ব্যাপারে ফয়সালা করে দেন (আমাদের মৃত্যু দেন)। সে বলবে নিশ্চয়ই তোমরা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।’ {সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৭৪-৭৭}
‘নিশ্চয়ই যারা কুফুরী করে এবং যুলম করে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন না। তিনি তাদের জাহান্নামের পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ দেখাবেন না। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটা আল্লাহর জন্য সহজ।’ {সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৬৮-১৬৯}
‘দুনিয়ার আগুন থেকে জাহান্নামের আগুনের তাপ সত্তর গুণ বেশি। তখন সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ দুনিয়ার আগুনই তো শাস্তি দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তিনি উত্তর দিলেন, এর তাপ দুনিয়ার আগুনের ওপর ৬৯ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হবে। প্রত্যেকটিই এর মত গরম।’ [বুখারী: ৩২৬৫; মুসলিম: ২৮৪৩।]
* হাদীসে আরো আছে, আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذْ سَمِعَ وَجْبَةً فَقَالَ النَّبِىُّ -صلى الله عليه وسلم- « تَدْرُونَ مَا هَذَا » . قَالَ قُلْنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ « هَذَا حَجَرٌ أرسله الله في جهنم مُنْذُ سَبْعِينَ خَرِيفًا فَالآنَ حين انْتَهَى إِلَى قَعْرِهَا » .
‘আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে হাজির ছিলাম হঠাৎ আমরা একটা শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি বলেন, তোমরা কি জান এটা কিসের শব্দ? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসূলুল্লাহ এ ব্যাপারে বেশি জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা জাহান্নামের একটি পাথরের শব্দ। যা আল্লাহ ৭০ বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছিলেন, আজ তা জাহান্নামের শেষ প্রান্তে পৌঁছল।’ [মুসলিম: ২৮৪৪।]
* উৎবাহ ইবন গাযওয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু তার খুৎবার মধ্যে জাহান্নামের ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন, তিনি বলেন,
‘জাহান্নামের একটি পাথর জাহান্নামের কিনারা থেকে নিক্ষেপ করা হবে তা নিচ পর্যন্ত পৌঁছতে ৭০ বছর লাগবে। এতদসত্ত্বেও জাহান্নাম পাপীদের দ্বারা ভর্তি হয়ে যাবে। তোমরা কি আশ্চর্যাম্বিত হয়েছ?’ [মুসলিম: ২৯৬৭।]
* ‘ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদীসে আরও রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘জাহান্নামে যাকে সব চেয়ে কম শাস্তি দেয়া হবে, তাকে জাহান্নামের দু’টি স্যান্ডেল পরিধান করানো হবে যার ফিতাদ্বয় হবে আগুনের। তার উত্তাপে মাথার মগজ টগবগ করতে থাকবে ডেগের ফুটন্ত পানির ন্যায়। সে মনে করবে তাকে সবচেয়ে বেশি শাস্তি দেয়া হচ্ছে। মূলত তাকে সবচেয়ে কম শাস্তি দেয়া হচ্ছে।’ [বুখারী: ৬৫৬১, ৬৫২৬; মুসলিম: ২১৩।]
* আরও হাদীসে রয়েছে, আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘কিয়ামতের ময়দানে দুনিয়ার মধ্যে সব যেয়ে ধনাঢ্য ও সুখী ব্যক্তিকে আনা হবে, অতঃপর তাকে জাহান্নাম থেকে অল্প সময় ঢুকিয়ে এনে জিজ্ঞাসা করা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও দুনিয়াতে সুখ-শান্তিতে ছিলে? তুমি কি কখনও দুনিয়ার নিয়ামত পেয়েছিলে? সে বলবে, না-আল্লাহর কসম! হে আমার রব! আমি কখনও দুনিয়তে শান্তি পাই নি। ঠিক তদ্রুপ দুনিয়ায় যে ব্যক্তি সর্বাধিক কষ্টকর ও অশান্তিতে ছিলে, তাকে অল্প সময়ের জন্য জান্নাতে ঢুকিয়ে নিয়ে আসা হবে, অতঃপর তাকে বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও অভাব অনটনে ছিলে? সে আল্লাহর কসম করে বলবে, না, আমি কখনও কোনো অভাব-অনটনে বা কষ্টে ছিলাম না।’ [মুসলিম: ২৮০৭।]
অর্থাৎ জাহান্নামী ব্যক্তি দুনিয়ার সকল শান্তি ও নেয়ামতের কথা ভুলে যাবে। আর জান্নাতী ব্যক্তি দুনিয়ার সকল কষ্ট-ক্লেশের কথা ভুলে যাবে।
* অপর হাদীসে রয়েছে, আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘কিয়ামতের ময়দানে এক জাহান্নামী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি দুনিয়ার সমস্ত সম্পদের মালিক হলে কি তা প্রাণের ফিদয়াস্বরূপ খরচ করতে? সে বলবে হে আমার রব! আমি তা করতাম। তখন আল্লাহ বলবেন, হে আমার বান্দা! আমি তোমাকে তার চেয়েও সহজ হুকুম দিয়েছিলাম, যখন আমি তোমাকে আদম (‘আলাইহিস সালাম) এ পিঠ থেকে বের করেছিলাম। তখন বলেছিলাম তুমি আমার সঙ্গে কাউকে শরীক করবে না। কিন্তু তুমি আমার কথা অমান্য করে আমার সঙ্গে অন্যকে শরীক করেছিলে।’ [বুখারী: ৩৩৩৪, ৬৫৫৭; মুসলিম: ২৮০৫;]
‘ইয়া‘লা ইবন মুনইয়াহ – তাঁর পিতার নাম উমাইয়া আর মুনইয়াহ তার মায়ের নাম- বর্ণনা করেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাহান্নামীদের জন্য ঘন কালো মেঘ সৃষ্টি করবেন। যখন মেঘ তাদের সামনে দেখা যাবে তখন মেঘ তাদের ডেকে বলবে, হে জাহান্নামীরা! তোমরা মেঘ থেকে কি কিছু চাও, তখন তারা দুনিয়ার মেঘের কথা চিন্তা করবে এবং দুনিয়ার পানির কথা ভাববে, তাই তারা বলবে, আমরা পিপাসিত, আমরা মেঘ থেকে বৃষ্টি চাই, পানি চাই। অতঃপর মেঘ তাদের জন্য আগুনের বেড়ী, শিকল ও আগুনের কয়লা অধিক পরিমাণে বর্ষণ হতে থাকবে। আর আগুনের কয়লা আগুনের দাহ্য আরও শক্তি বাড়িয়ে দেবে।’ [ফাওয়ায়েদ তামাম: ৯৬১; তাবারানী ফিল আওসাত্ব, দেখুন: মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১০/৩৯০। দুর্বল।]
* অন্য হাদীসে রয়েছে, আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না ১. মদ্যপায়ী, ২. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ও ৩. জাদুতে বিশ্বাসী। যে ব্যক্তি মদ পান করে মারা যাবে, আল্লাহ তাকে গুওত্বাহ নদীর রক্ত পান করাবেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, নহরে গুওত্বাহ কী? তিনি উত্তরে বললেন, যে নদী দিয়ে জাহান্নামী মহিলাদের লজ্জাস্থানের দুর্গন্ধযুক্ত রক্ত বইতে থাকবে, তার দুর্গন্ধ প্রত্যেক জাহান্নামীর কষ্ট বৃদ্ধি করবে।’ [আহমাদ ৪/৩৯৯; মুস্তাদরাকে হাকেম ৪/১৪৬। দুর্বল।]
* অন্য হাদীসে জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদা; যে ব্যক্তি নেশা করবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে ‘তীনাতুল খাবাল’ থেকে পান করাবেন। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলে, হে আল্লাহর রাসূল! তীনাতুল খাবাল কি? তিনি বললেন, জাহান্নামীদের পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম।’ [মুসলিম: ২০০২।]
* বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইয়াহূদী ও নাসারাদের বলা হবে,
‘তোমরা কী চাও? তারা বলবে হে রব! আমরা পিপাসিত। আপনি আমাদেরকে পানি পান করতে দিন। তখন তাদেরকে ইঙ্গিত করে বলা হবে যে তোমরা কি হাওযে নামবে না? এরপর তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে; তারা দেখতে পাবে জাহান্নামকে মরীচিকার মত; যার একাংশ আরেক অংশকে বিধ্বংস করছে; তারপর তারা জাহান্নামে পতিত হবে।’ [বুখারী: ৪৫৮১; মুসলিম: ১৮৩।]
হাসান বছরী রহ. বলেন, ‘তোমাদের ওই জাহান্নামীদের সম্পর্কে কী ধারণা, যারা ৫০ হাজার বছর পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, যেখানে তারা কোনো খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে না এবং এক ফোঁটা পানিও পান করতে পারবে না। পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হবে। তাদের পেট ক্ষুধায় আগুনের মত জ্বলতে থাকবে। অতঃপর তাদের জাহান্নামের আগুনের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, আর সেখানে তাদেরকে ফুটন্ত গরম পানি পান করনো হবে। যার উত্তপ্ততার কোনো তুলনা নেই, যে উষ্ণতা ও উত্তপ্ততা পরিপক্কতা পেয়েছে।’ [(বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ) উমদাতুল কারী: ২৮/৪৮৩।]
ইবনুল জাওযী রহ. জাহান্নামের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, জাহান্নাম এমন ঘর যার অধিবাসীদের শান্তি থেকে দূরে রাখা হয়েছে। সকল প্রকারের আনন্দ ও শান্তি তেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তাদের সাদা চামড়া কাল রঙে পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। তাদের পাহাড়ের চেয়ে শক্ত হাতুড়ি দ্বারা পিটানো হচ্ছে। সেখানে শাস্তি দেওয়ার জন্য কঠোর হৃদয়ের ও কঠিন শাস্তিদাতা ফেরেশতা রয়েছে। হায়! যদি তুমি তাদেরকে দেখতে সেই ফুটন্ত পানিতে সাঁতার কাটতে। কঠিন ঠাণ্ডাতে নিক্ষিপ্ত হতে। চিন্তা ও কষ্ট সর্বক্ষণ তাদের সাথী থাকবে, ফরে তারা কখনও খুশী হতে পারবে না। তাদের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই তারা সে স্থান ত্যাগ করতে পারবে না। স্থায়ীভাবে, চিরকাল সেখানে তারা থাকবে, তারা তা থেকে মুক্তি পাবে না। তাদের শাস্তি দেয়ার জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করা হবে, যারা কঠোর হৃদয়ের হবে। যাদের ধমক আযাব থেকে বড় কষ্টদায়ক হবে। যাদের অনুশোচনা তাদের বিপদের চেয়েও অধিক শক্তিশালী। তাদের যৌবনকালকে পাপ দ্বারা ধ্বংস করার কারণে তার কাঁদতে থাকবে। তারা যত কাঁদবে কঠোর হৃদয় কঠিন ফেরেশতাগণ তাদেরকে তত বেশি কষ্ট দিতে থাকবে। হায় আফসোস তাদের জন্য যে তারা তাদের রবের রোষানলে পড়েছে! হায় আফসোস তাদের বড় বিপদের জন্য! আহা তাদের কত অপমান যে সকল মানুষের সামনে অপমানিত হচ্ছে। হে সৃষ্টির ঘৃণিত ব্যক্তিরা! এখন তোমাদের দুনিয়ার হারাম উপার্জন কোথায় গেল? আজ তোমাদের পাপ করার আগ্রহ কোথায় গেল? মনে হবে যেন তা ছিল তাদের আকাশ কুসুম কল্পনা। তারপর তাদের এ শরীরকে জাহান্নামে পোড়ানো হবে, যখনই তাদের শরীর পুড়ে যাবে, আল্লাহ নতুন দেহ পরিবর্তন করে দেবেন। যখন শরীরের চামড়া পুড়ে যাবে, নতুন চামড়া দ্বারা পরিবর্তন দেবেন। সেখানে তাদের শাস্তি বাড়ানোর জন্য কঠিন হৃদয়ের ফেরেশতা সর্বক্ষণ নিযুক্ত থাকবে।’
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচান। আমাদের চিরস্থায়ী আপমান ও ধ্বংস হতে বাঁচান। হে আল্লাহ আপনি আপনার রহমতে আমাদেরকে মুত্তাকীদের ঘরের বাসিন্দা করুন করুন। আর আমাদের ও আমাদের পিতা-মাতাসহ মুসলিমদের ক্ষমা করে দিন। হে করুণাময় রব!
আর আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ ও তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের ওপর সালাত পেশ করুন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/126/27
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।